16/08/2024
একটা মেয়ে বাঁচার জন্য চিৎকার করছে। আর্তনাদ করছে। বাঁচার জন্য আকুতি করছে। কিন্তু তাকে বাঁচতে দেওয়া হচ্ছে না। দম বন্ধ করে রাখা হয়েছে। চোখ ফেঁটে রক্ত বেরিয়ে এসেছে। মেয়েটা আশপাশে কাউকে খুঁজছে যেন তাকে বাঁচিয়ে নেয়।
হঠাৎ চোখ মেলে দেখে পাশেই তার কলিগ। সে ভেবে নেয় হয়তো এবার বেঁচে যাবে। কিন্তু কি আশ্চর্য, তার কলিগ ই তাকে চেপে রেখেছে। মুখ বন্ধ রেখেছে। শ্বাস নিতে দিচ্ছে না। রক্তচোখে মেয়েটা হয়তো তার কলিগ কে বলছে, আমাকে বাঁচিয়ে নাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেবো। কাউকে কিছু বলবোনা। তোমাদের থেকে অনেক দূরে চলে যাবো।
শেষ রক্ষা হয়নি মেয়েটার। মেয়েটাকে খু'ন করা হয়। শুধু খু'ন করেই ক্ষান্ত হয়নি। তাকে সংঘবদ্ধভাবে ধ'র্ষণ করা হয়েছে। শরীরে পাওয়া যায় ১৫০ গ্রাম সিমেন, ১১৩ টা দাগ।
একটা পুরুষ সর্বোচ্চ ১৫ গ্রাম সিমেন ক্যারি করে। সেখানে ১৫০ গ্রাম! কল্পনা করা যায়? তারমানে তাকে মিনিমাম ১০ জন ধর্ষণ করেছে।
কল্পনা করতে পারেন?
বলছি কলকাতার ডাক্তার মৌমিতা দেবনাথের কথা। কি এক জীবন মৌমিতার, মৃ'ত্যুর আগেই নরক দর্শন করে গেলো।
সবচে দুঃখের বিষয় কি জানেন, যারা এই খু'ন এবং ধ'র্ষণের সাথে জড়িত, তাদের শাস্তি দেওয়ার পরিবর্তে বাঁচানোর লড়াই চলছে। প্রমাণ লোপাটের লড়াই চলছে।
আমি পুরুষ, তাই সহ্য করতে পারছিনা। মেয়েরা এটা কিভাবে সহ্য করবে?
আজ কলকাতাসহ সারা ভারত উত্তাল। শিক্ষার্থীদের আলোড়নে ভারত কাঁপছে। কিছুদিন আগে আমাদের আবু সাঈদ এবং মুগ্ধদের দেখেই আমরা কান্না আটকাতে পারিনি, মৌমিতার এই ব্যথা আমরা কিভাবে সহ্য করবো?
ভারতের শিক্ষার্থীদের সাথে আমি সংহতি প্রকাশ করে বলতে চাই, এই ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিচার চাই। এমন কঠিন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে কেবল ভারত নয়, পুরো পৃথিবীতে মেয়েদের শরীর স্পর্শ করার সাহস কোনো পুরুষের না হয়।
মৌমিতার সাথে যে করুণ ঘটনা ঘটেছে, তা হয়তো পৃথিবীর কোনো লেখক বা ঔপন্যাসিকের ক্ষমতা নেই এভাবে বর্ণণা করার। এভাবে লেখার। হয়তো তার কলম চলবেনা, নয়তো দম আটকে যাবে।
এজন্যই হয়তো উইলিয়াম শেক্সপিয়র বলে গেছেন, লাইফ ইজ মোর দ্যান ড্রামা।
মানুষ হিসেবে আমাদের শুধু হাত পা আর মাথাই আছে। মনুষ্যত্বের সারফেস লেভেল পর্যন্ত নেই। আমরা ডাক্তার হতে চাই, ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই, ব্যারিস্টার হতে চাই, ম্যাজিস্ট্রেট হতে চাই। বড় বড় কর্পোরেট অফিসার হতে চাই।
মানুষ হইলাম কই?