BDDude Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from BDDude, Book & Magazine Distributor, Barangaroo.

আমরা গল্প, উপন্যাস, ভ্রমণ ভিডিও, মোটিভেশনাল ও সমাজের না বলা কন্টেন্ট নিয়ে কাজ করি, যেখানে বিনোদন ও শিক্ষার এক অনন্য সংমিশ্রণ রয়েছে।

✅ আমাদের BDDude page টি ফলো করুন, শেয়ার করুন, এবং আমাদের পাশে থাকার অনুরোধ রইলো! 🚀

🌿📚 গল্পের নাম: "ফিরে পাওয়া আর-রহমান" 📚🌿✦ লেখক: BDDUDE📚১.রাতের আকাশটা আজ একটু বেশি নীল। মেঘ নেই, তারা যেন মুখ খুলে কথা ব...
24/06/2025

🌿📚 গল্পের নাম: "ফিরে পাওয়া আর-রহমান" 📚🌿

✦ লেখক: BDDUDE

📚

১.

রাতের আকাশটা আজ একটু বেশি নীল। মেঘ নেই, তারা যেন মুখ খুলে কথা বলছে।
মুহিব নামের ছেলেটি হাসপাতালে শুয়ে আছে। জীবন থেকে বিদায় নেওয়ার অপেক্ষায়। শরীর ভেঙে পড়েছে, কিন্তু মনটা শান্ত। মুখে এক চিলতে হাসি। আশেপাশে কেউ নেই। পরিবার তো অনেক আগেই ছিঁড়ে গেছে।

তিনি চোখ বন্ধ করলেন। কিন্তু মন খুলে গেল।

২.

হঠাৎ, এক আলোর ঝলক। একেবারে অদ্ভুত অনুভূতি। চোখ খুললেন মুহিব – কিন্তু এটি আর পৃথিবী নয়।

একটা সবুজ উপত্যকা, ঝর্ণার শব্দ, মৃদু বাতাস। সামনে দাঁড়িয়ে এক ফিরিশতা, মুখে অপার্থিব হাসি।

– “স্বাগতম, মুহিব। তোমার প্রতীক্ষা শেষ।”

মুহিব বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকেন।
– “আমি কি... জান্নাতে?”
– “তুমি একজন নিঃস্ব, কিন্তু ধৈর্যশীল মুমিন ছিলে। তুমি আল্লাহর প্রিয় ছিলে, তাই এই সম্মান।”

৩.

দিন যায়, মুহিব জান্নাতে ঘুরে বেড়ান। প্রতিটি ফুল, প্রতিটি শব্দ যেন জিকির করে। তবু তাঁর মনে একটিই প্রশ্ন—"আমি কি কখনও আল্লাহকে দেখতে পাবো?"

একদিন ঘোষণা এলো—
"আজ আরশের নিচে সমবেত হবেন জান্নাতবাসীরা। আজ তাঁদের সাথে কথা বলবেন তাঁদের প্রভু।"

মুহিবের হৃদয় কাঁপছে। তিনি সেই স্থানটিতে পৌঁছান। অসংখ্য মানুষ বসে আছে, কিন্তু নিরবতা এমন যেন আকাশ নিঃশব্দে হাঁটছে।

হঠাৎ, একটি শব্দ—কোন কণ্ঠ নয়, যেন হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা সুর:

> الرَّحْمَـٰنُ، عَلَّمَ الْقُرْآنَ...
"পরম করুণাময়, তিনি শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন।"

এটা কার কণ্ঠ?
এটা তো... আল্লাহর কণ্ঠ!

চারদিক কাঁপছে না, বরং শান্ত হচ্ছে। সমস্ত জান্নাতবাসী নত হয়ে পড়েছে। যখন তিনি বললেন:

> فَبِأَيِّ آلَاءِ رَبِّكُمَا تُكَذِّبَانِ
“তোমরা তোমার প্রভুর কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে?”

সেই মুহূর্তে সমস্ত জান্নাতবাসী একসাথে কাঁদতে কাঁদতে বলল—

> "হে আল্লাহ, আমরা তোমার কোনো অনুগ্রহ অস্বীকার করি না!"

৪.

মুহিবের চোখে জল। তাঁর দুনিয়ার সব কষ্ট, অভাব, অপমান যেন আজ এক সুরে মিশে গেল।
এই কণ্ঠ – এই মুহূর্ত – এই ভালোবাসা – এটাই তো তাঁর জীবনের সব চেয়ে বড় প্রাপ্তি।

---

🔸 শেষ কথা:

এই গল্প শুধু মুহিবের না, আমাদের সবার।
এই পৃথিবীর কষ্ট, মানুষের বঞ্চনা, চোখের জল – সব কিছুর পরেও, যদি আমরা ধৈর্য ধরি, আল্লাহকে ভালোবাসি –
তাহলে একদিন তিনিই আমাদের সামনে সূরা আর-রহমান তিলাওয়াত করবেন।

🌿🌿 গল্পের নাম: ভালো মানুষ হবার প্রতিজ্ঞা 🌿🌿✍️ লেখক: পারভেজ মাসুম 📖 বৃষ্টি হচ্ছিল দুপুর থেকে। টিপটিপ, টুপটাপ, নরম আর ধীর ...
24/06/2025

🌿🌿 গল্পের নাম: ভালো মানুষ হবার প্রতিজ্ঞা 🌿🌿

✍️ লেখক: পারভেজ মাসুম

📖

বৃষ্টি হচ্ছিল দুপুর থেকে। টিপটিপ, টুপটাপ, নরম আর ধীর বৃষ্টির শব্দে যেন আকাশ কাঁদছিল। ঢাকার উত্তরা ১১ নম্বর সেকশনের একটি ফ্ল্যাটবাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে একা একজন পুরুষ, মাথার চুলে জল, চোখে অব্যক্ত এক ক্লান্তি—তার নাম রাশেদ।

রাশেদ বয়সে মধ্যত্রিশের। চোখে বুদ্ধিদীপ্ত চাহনি, ঠোঁটে হালকা গোঁফ, হাতে সস্তা এক ঘড়ি। সে একসময় ভালোবাসত গান গাইতে। রবিন উইলিয়ামসের “Better Man” গানটা তার প্রিয় ছিল। বিশেষ করে প্রথম দুই লাইন শুনলেই তার বুক কেঁপে উঠত:

“Send someone to love me, I need to rest in arms...”

সে সত্যিই কারো ভালোবাসায় বিশ্রাম নিতে চেয়েছিল। অথচ জীবনের বাঁকে বাঁকে শুধুই আঘাত পেয়েছে।

🌿

রাশেদের এক সময় ছিল—সাদামাটা একটা জীবন। বাবা ছিলেন স্কুল শিক্ষক, মা গৃহিণী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পড়তেই প্রেম হয়েছিল রুনার সাথে। রুনা খুব মিষ্টি মেয়ে, শান্ত, তবে কড়া মেরুদণ্ডের মানুষ। দু’জনই স্বপ্ন দেখত—ছোট একটা বাসা, একটা ছিমছাম সংসার, গান আর ভালোবাসায় ভরা জীবন।

কিন্তু সেই স্বপ্নে একদিন বড়সড় ফাটল ধরল।

রাশেদের চাকরি হলো মালয়েশিয়াতে। সেখানে গিয়ে একা থাকাকালীন সময় তার জীবনে এল একজন নারী—জেসমিন। কয়েক মাসের আবেগ, কিছু ভুল সিদ্ধান্ত, আর দূরত্বের হাওয়া—রুনা ভেঙে পড়ল। সম্পর্কটা রক্ষা করা গেল না।

রাশেদ ফিরল একা। বুকের ভেতর বোঝা, আত্মগ্লানি, আর নিজের ঘৃণায় সে ভেঙে যাচ্ছিল। মানুষ তাকে বলত, “ভালো ছেলেটা খারাপ হয়ে গেল।”

কিন্তু সে ভেতরে ভেতরে ঠিক জানত—সে খারাপ মানুষ নয়। সে শুধু ক্লান্ত। সে শুধুই একটা আশ্রয় চেয়েছিল। একটু বিশ্রাম, একটু কোমলতা।

🌿

বৃষ্টির ভেতর সে ছাদে দাঁড়িয়ে গানটি বাজাচ্ছিল মোবাইল স্পিকারে:

🎶 “Give me endless summer, Lord, I fear the cold...”

সে শীতকে ভয় পায়—শুধু আবহাওয়ার শীত নয়, মনোবেদনার শীত। সেই শীত যেখানে কেউ পাশে থাকে না। মা-বাবা হারিয়ে গেছে এক দুর্ঘটনায়। ভাইরা ব্যস্ত তাদের নিজের পরিবারে। বন্ধুরাও দূরে।

তবু সে নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিল—সে বদলাবে।
সে চেষ্টা করবে “better man” হবার।

🌿

একদিন তার জীবনে এল একটা চিঠি।
একজন সামাজিক সংগঠনের মেয়ে—মাইশা—যে অবহেলিত শিশুদের নিয়ে কাজ করে। রাশেদ তার এক বন্ধুর অনুরোধে ওখানে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যুক্ত হলো।

প্রথম দিনেই একটি ছেলেকে জড়িয়ে ধরেছিল সে—ছেলের চোখে ছিল ভয়, ক্ষুধা, অথচ স্পষ্ট নির্ভরতার খোঁজ। রাশেদ তাকে বুকে টেনে নিয়েছিল।

সেই মুহূর্তে গানটা যেন আবার বাজল তার ভেতরে:

🎶 “Rest assured my angels will catch my tears...”

তার চোখ ভিজে গিয়েছিল।

সেই দিন থেকেই সে নতুন করে শিখল—ভালোবাসা মানেই শুধু কোনো নারী নয়।
ভালোবাসা মানে একটি শিশু, একটি কুকুরছানা, একটি বৃষ্টিভেজা বিকেল, কিংবা এক কাপ চায়ের পাশে একজন মানুষ—যে বলে, “তুমি ঠিক আছো তো?”

🌿

আজ রাশেদ কারো প্রেমে পড়েনি ঠিকই, তবে কারো পাশে দাঁড়িয়েছে।
সে আর “ভালোবাসা চায়”—না। সে ভালোবাসা দেয়।

সে জানে—ভালো মানুষ হবার পথটা কঠিন, কাঁটায় ভরা।
কিন্তু সে গাইতে জানে… একনাগাড়ে…

🎵
“As my soul heals the shame
I will grow through this pain
Lord, I'm doing all I can
To be a better man…”

🌿

বৃষ্টিটা থেমে গেছে অনেকক্ষণ।
আকাশে এখন থেমে থাকা মেঘের মাঝে লুকিয়ে থাকা চাঁদ। চারপাশে শহরের নিঃশব্দতা যেন হৃদয়ের একান্ত আর্তনাদকে শ্রবণ করছে। রাশেদ ছাদ থেকে নেমে এসেছে, কিন্তু বুকের ভেতর ছাদটাই রয়ে গেছে—এক খোলা আকাশ, এক নির্জনতা, আর অপূর্ণ স্বপ্নের কবর।

সে আজ রাতটাকে চিরদিনের মতো মনে রাখতে চায়। একটানা ভিজে যাওয়া শরীর, বুকের ভেতর জমে থাকা কথারা, আর সেই গান—
“I will grow through this pain...”

নিজের ঘরে ফিরে এসে সে প্রথমবারের মতো চিঠি লিখতে বসে।
চিঠি—যা লেখা হবে না পাঠানোর জন্য, লেখা হবে নিজেকে জানানোর জন্য।

🌿

“প্রিয় রুনা,”
আমি জানি, এই চিঠি তুমি কখনো পাবে না।
আমি জানি, তুমি এখন অন্য কারো পাশে হয়তো অনেকটা নিরাপদ, স্থির।
কিন্তু আমি তোমায় আজ বলব সেই কথাগুলো, যেগুলো বলা হয়নি তখন… কারণ তখন আমি ব্যস্ত ছিলাম নিজেকে ভুলে যাওয়ার কাজে।

তোমার চলে যাওয়া আমাকে ভেঙে দিয়েছে, আবার গড়ে তুলেছে।
আমি শিখেছি, মানুষ কাঁদতে জানলে দুর্বল হয় না, মানুষ কাঁদতে জানলে মানুষ হয়।
আমি জানি না আমি এখন কে।
কিন্তু আমি আর সেই রাশেদ না, যে শুধু নিজের কষ্ট নিয়ে ব্যস্ত ছিল।
আমি এখন এমন একজন হতে চেয়েছি, যাকে দেখে একজন শিশু নির্ভরতা খুঁজে পায়, একজন বৃদ্ধ বলে—‘তুমি পাশে থাকো।’
আমি ‘ভালোবাসা’ চাই না রুনা।
আমি ভালোবাসা হয়ে থাকতে চাই।

তুমি ভালো থেকো। আর যদি কোনোদিন একা লাগেও, মনে রেখো—একজন মানুষ ছিল, যে তোমায় সত্যিই চেয়েছিল, কিন্তু নিজের অপরিণতিকে সামাল দিতে পারেনি।
ভালোবাসা নয়, ক্ষমা দিয়ো।
– রাশেদ।

🌿

চিঠিটা শেষ করে রাশেদ বারান্দায় গিয়ে দাঁড়াল।
শহর তখন নিস্তব্ধ, কিন্তু তার ভেতরের কোলাহল যেন শান্ত হয়েছে।
তার মোবাইলে হঠাৎ একটা ম্যাসেজ আসে—মাইশার।

“কাল আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে এক নতুন ছেলেকে আনছে। ও ভয় পায়, কেউ কথা বলে না। তুমি আসবে?”

রাশেদ মুচকি হাসে।
জানালা দিয়ে দেখা যায় দূরে একটা তারা। হয়তো খুব ছোট, তবু অন্ধকারে পথ দেখায়।

🌿

পরদিন সকাল:
রাশেদ ছোট একটা খেলনা গাড়ি কিনে নিয়ে শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে হাজির হয়। মাইশা দরজা খুলে বলে,
“এই যে রাশেদ ভাই! জানেন, আপনার সাথে ওরা যখন কথা বলে, ওদের চোখে নতুন আলো আসে।”

রাশেদ ছেলেটার পাশে গিয়ে বসে। ছেলেটা ভয় পেয়ে তার দিকে তাকায়।
রাশেদ ধীরে ধীরে বলে,
“ভয় পেয়ো না। আমি তোমার মতোই। আমিও একদিন খুব একা হয়ে গিয়েছিলাম।”

ছেলেটা ধীরে ধীরে তার হাতের দিকে হাত বাড়ায়।

রাশেদের চোখে জল আসে।
সেই জল লুকোতে লুকোতে সে মনে মনে গানটা গায়—

🎵
“Send someone to love me
I need to rest in arms
Keep me safe from harm...”

সে বুঝে যায়, সে একা নেই।
ভালো মানুষ হবার যাত্রা—শেষ হয় না।
এটা চলতে থাকে… কারো চোখে জল মুছে দেওয়া অবধি।

🪻

শেষ লাইন:

> “যেদিন তুমি আর ভালোবাসা খুঁজবে না—বরং অন্য কারো চোখে ভালোবাসা হয়ে উঠবে, সেদিনই তুমি সত্যিকারের ভালো মানুষ হয়ে যাবে।”

🌿

📌 BDDude-এর পাঠকদের জন্য উপসংহার:

এই পৃথিবীতে কেউ নিখুঁত নয়। আমরা ভুল করি, আমরা ভাঙি, আবার গড়ে উঠি।
‘ভালো মানুষ’ হওয়া কোনো খেতাব নয়—এটা এক অন্তহীন যাত্রা, প্রতিদিনের আত্মজিজ্ঞাসা।
আপনি হয়তো কোনো দিন একা ছাদে দাঁড়িয়ে ভাববেন, “আমি কেন এইভাবে বাঁচছি?”
ঠিক তখনই মনে পড়বে এই গল্পের রাশেদের কথা—
একজন যে ভাঙা বুক নিয়েও অন্যের বুকের ব্যথা ভাগ করে নিতে চেয়েছিল।

আর এই চেষ্টাটাই—সবচেয়ে সুন্দর ভালোবাসা। 💧💙

🕌 মায়ের নীরব জুলুম: এক পুত্রের শিক্ষণীয় গল্প✍️ লিখেছেন: পারভেজ মাসুম | BDDude Original২০০৭ সাল।তখন আমার বয়স ৩৩। বিদেশে স...
23/06/2025

🕌 মায়ের নীরব জুলুম: এক পুত্রের শিক্ষণীয় গল্প

✍️ লিখেছেন: পারভেজ মাসুম | BDDude Original

২০০৭ সাল।
তখন আমার বয়স ৩৩। বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করি প্রায় এক যুগ হয়ে গেছে। হঠাৎ খবর এলো, বাবা আর নেই। বুকটা হাহাকার করে উঠল। যে মানুষটা একদিন আমার হাত ধরে স্কুলে নিয়ে যেত, আজ সে নেই।

সব ছেড়ে দেশে গেলাম। বাবার কবরের পাশে দাঁড়িয়ে শুধু বললাম,
“বাবা, আমি আর কখনও তোমার মতো কাউকে পাবো না।”

🌿

বাবা আমাদের তিন ভাইয়ের জন্য অনেক কিছু রেখে গেছেন।
অনেক জমি, কিছু দোকানঘর, এবং একটা ৪ তলা পাকা বাড়ি।
কিন্তু সবকিছু ছিল মায়ের তত্ত্বাবধানে। আমি ভাবলাম,
"আমার মা, আমার মায়ের মতোন কে-ই বা চাইবে আমাকে বঞ্চিত করতে?"

কিন্তু সময়ের সঙ্গে বুঝলাম—বিষয়টা এতটা সহজ নয়।

🌿

বাবা মারা যাবার পাঁচ বছর পর, আমি ফোনে মাকে বললাম,
“মা, আমরা তিন ভাই।আমাদের বাবা আমাদের জন্য অনেক কিছু রেখে গেছেন। ওসব আমাদের মাঝে ভাগ করে দাও।”

মা একটু চুপ করে ছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে বললেন,
“তোর কিসের সম্পদ? তুই তো কিছু কিনিস নাই। এসব তোর না।”

আমি স্তব্ধ। আমি কি শুনলাম ঠিক?

এক মা—যিনি দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন,
দুইবার হজ করেছেন, তাবলীগে নিয়মিত যান—তিনি বলছেন
“তোর কিছু নেই।”

🌿

আমি আবার জিজ্ঞাসা করলাম,
“মা, ইসলাম কি এই শিক্ষা দেয়?”

তিনি রাগ করে ফোন কেটে দিলেন।

🌿

এরপর আমি খোঁজ নিতে শুরু করলাম কুরআন, হাদিস আর ইসলামী ফতোয়ার।
যা জানলাম, তা আমাকে আরও বিস্মিত করল।

🕋 আল্লাহ বলেন:

> “আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেনঃ একজন পুরুষের অংশ দু?জন নারীর অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু নারীই হয় দু' এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্যে অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিস হয়, তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অতঃপর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যতের পর, যা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান না। এটা আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদ।”
📚 সূরা আন-নিসা, আয়াত ১১

অর্থাৎ, বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি তিন ছেলের মধ্যে ভাগ হওয়াই ইসলামের স্পষ্ট নির্দেশ।

🌿

📖 রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন:

> “যে ব্যক্তি অন্যের জমি এক বিঘত জবরদস্তি নিয়ে নেয়,
কিয়ামতের দিন তার গলায় তা সাত তলা পর্যন্ত বেড়ি হবে।”
📚 সহীহ বুখারী

অর্থাৎ, যিনি হক নষ্ট করেন, তিনি যত ইবাদতকারী হোন না কেন, জবাবদিহিতা থেকে রেহাই পাবেন না।

🌿

আমার মায়ের যুক্তি ছিল—তিনি এগুলো দেখাশোনা করেন,
তাই তিনিই মালিক। কিন্তু ইসলাম বলে—
“যার নামে দলিল, সে নয়—যার হক আল্লাহ দিয়েছেন, সে-ই মালিক।”

আমার চোখে পানি চলে এলো।
একজন মা—যিনি জানেন হজ কী, নামাজ কী—তিনি যদি সন্তানের হক নষ্ট করেন,
তবে সমাজে বাকিরা কী শিখবে?

🌿

আজ আমি ৫০ বছর বয়সে দাঁড়িয়ে বুঝি—
সম্পত্তি না পাওয়ার চেয়ে, মায়ের কাছ থেকে "অযোগ্য" শোনাটা বেশি কষ্টের।

📚

📌 এই গল্পের শিক্ষা:

1. ইসলামে হক কেউ “উপহার” দেয় না, বরং তা “আল্লাহ নির্ধারণ” করেন।

2. মা-বাবার সম্মান অপরিহার্য, কিন্তু হক নষ্ট হলে প্রতিবাদ করাও ইসলামের শিক্ষা।

3. ধর্মীয় রূপ নয়, অন্তরের ন্যায়ই আল্লাহর কাছে মূল্যবান।

4. জুলুম শুধু শাসকের মাধ্যমে হয় না, পরিবার থেকেও হয়।

🌿

আপনার পরিবারে যদি এরকম কিছু ঘটে,
তাহলে মনে রাখুন—চুপ থাকা সবসময় ইবাদত নয়।
মাঝেমাঝে হকের পথে কথা বলা-ই আল্লাহর সবচেয়ে বড় পরীক্ষার উত্তীর্ণ হওয়া।

🌿

📺 এইরকম আরও বাস্তব জীবনের শিক্ষণীয় গল্প পেতে BDDude-এ সাথেই থাকুন।
তুমি যদি কখনও বঞ্চিত হও, কুরআনই হবে তোমার সবচেয়ে বড় আইনজীবী।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হক বুঝে নেওয়ার শক্তি ও ধৈর্য দান করুন।

🤲 آمين يا رب العالمين

© BDDude

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿📚 অধ্যায় ১০: ছাদের বাইরে এক পৃথিবীসায়েম আর রুকাইয়া এখন প্রায়ই ছাদে বসে।চা হয় দু’কাপে, কথা হ...
22/06/2025

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿

📚 অধ্যায় ১০: ছাদের বাইরে এক পৃথিবী

সায়েম আর রুকাইয়া এখন প্রায়ই ছাদে বসে।
চা হয় দু’কাপে, কথা হয় অল্প—কিন্তু এখন সেই কথাগুলো আগের চুপ থেকেও গভীর।

তবে এই গল্প শুধু ছাদে শেষ হয় না।
একদিন না একদিন দরজা খুলে বাইরে তাকাতেই হয়।
বাইরে মানুষ থাকে। সমাজ থাকে।
আর থাকে—"এই সম্পর্কটা কি?"—এই প্রশ্ন।

🌿

একদিন অফিস থেকে ফেরার পর রুকাইয়া বলল,
“তুমি কি কখনো ভাবো—আমরা একসাথে কোথাও যাব?
মানে… একসাথে থাকা, সবসময়?”

সায়েম কিছু বলল না।
চুপ করে ওর দিকে তাকাল।
রুকাইয়া জিজ্ঞেস করল,
“তোমার পরিবার জানে আমার কথা?”

সায়েম মাথা নিচু করে বলল,
“না… এখনও না।
তারা হয়তো ভাববে, তুমি এমন মেয়ে, যে হুট করে চলে গিয়েছিলে।
তারা আমাকে একবার ভেঙে যেতে দেখেছে। তারা ভয় পায়, আমি আবার ভেঙে পড়ব।”

🌿

রুকাইয়া মৃদু হাসল।
“আর তুমি?”
সায়েম বলল,
“আমি ভেঙে পড়লেও এবার তোমার পাশে বসে থাকতে চাই।
আগের মতো একা থাকতে নয়।”

রুকাইয়া তখন বলল,
“তাহলে আমাদের শুরুটা ছাদের বাইরে হতে হবে।”

🌿

কিন্তু পরিবার মানে শুধু মানুষ নয়—
পরিবার মানে তাদের ভয়, তাদের ধারণা, সমাজের মুখ, আত্মীয়ের কটাক্ষ।
সায়েমের মা বলেছিলেন,
“এই মেয়েটা তো আগেও তোকে ফেলে গিয়েছিল। আবার যদি যায়?”

সায়েম কিছু বলেনি।
শুধু মা’র দিকে তাকিয়ে বলেছিল,
“সে গেলেও আমি এবার জানি—সে কোথায় থাকে। আমার ভিতরে।”

🌿

সেদিন রাতে সায়েম ছাদে চুপচাপ বসেছিল।
রুকাইয়া পাশে বসে ছিল।
বসে থেকেই বলল,
“আমি একদিন তোমার মাকে চা বানিয়ে খাওয়াতে চাই।”
সায়েম অবাক হয়ে তাকাল।

“চা দিয়ে সব সম্পর্ক শুরু করা যায় না?”
সায়েম মৃদু হাসল,
“আমার মা মিষ্টি চা খায়।”
রুকাইয়া বলল,
“আমি মিষ্টি হতে পারব না। কিন্তু আমি চেষ্টাটা করব।”

🌿

সেদিন সায়েম খাতায় লিখল:

> “ভালোবাসা শুধু একে অপরকে পাওয়ার নাম নয়,
ভালোবাসা মানে—পরিবার, সমাজ, ভয়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ‘আমরা’ হয়ে ওঠা।

আমি চাই, আমার নীরবতার গল্পটা এবার শব্দে রূপ নিক—তাকেই পাশে রেখে,
যে আমার চুপ থাকাকে ভাষা বানিয়ে দিয়েছে।”

🌿

📖 শিক্ষার কথা:

ভালোবাসা তখনই পরিণত হয়, যখন তা শুধু অনুভব নয়—দায়িত্ব হয়ে ওঠে।

একসাথে থাকা মানেই চা ভাগ করা নয়, বরং জীবন ভাগ করে নেওয়া।

ভালোবাসা যদি সত্যি হয়, তবে পরিবারকেও শেখাতে হয়—ভুল বোঝার চেয়ে বোঝাটা সুন্দর।

(চলবে...)

✍️ পারভেজ মাসুম © BDDude

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿📚 অধ্যায় ৯: ফিরে আসার চুপচাপ মুহূর্ত🪻ছয় সপ্তাহ হয়ে গেছে।সায়েম এখনো প্রতিদিন ছাদে ওঠে।আগের ম...
22/06/2025

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿

📚 অধ্যায় ৯: ফিরে আসার চুপচাপ মুহূর্ত

🪻

ছয় সপ্তাহ হয়ে গেছে।

সায়েম এখনো প্রতিদিন ছাদে ওঠে।
আগের মতো নিয়ম করে চা বানায়, খাতায় কিছু লেখে, আবার ফেলে রাখে।
রুকাইয়ার চিঠিটা খামসহ একটা পাতার নিচে রেখে দিয়েছে—
ঠিক এমনভাবে যেন সে ফিরে এলে বলবে, “তোমার জিনিস এখনো রেখে দিয়েছি।”

🌿

সেদিন দুপুরে আকাশ ভারী।
বৃষ্টি নামবে কি নামবে না, এমন এক ধূসর সংকট।

সায়েম ছাদে গেল না।
বরং জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছিল।

এমন সময় কলিং বেল বাজল।

সে দরজা খুলল।

রুকাইয়া দাঁড়িয়ে।

চোখে গভীরতা, কাঁধে ব্যাগ, ঠোঁটে এক অদ্ভুত শান্ত হাসি।
কোনো নাটকীয়তা নেই।
না কান্না, না জড়িয়ে ধরা।
শুধু একটি মৃদু অভিবাদনের মতো নরম উচ্চারণ:

"তুমি কি এখনো চা খাও?"

---

সায়েম চুপচাপ তাকিয়ে রইল।

তারপর বলল,
“আমি তোমার জন্য চা বন্ধ করিনি কখনো।”

রুকাইয়া ঘরে ঢুকে জানালার পাশে বসল।
সায়েম চা বানাল, খাতার পাতায় একটা বাক্য লিখে ফেলল:

> “যারা ভালোবাসে, তারা একদিন ফিরে আসে।
কিন্তু যারা সত্যি ভালোবাসে, তারা ফিরে আসে চুপ করে—
যেন কখনো দূরে যায়নি।”

🌿

চা-পানের সময় রুকাইয়া বলল,
“আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
ভাবলাম, তোমার নীরবতার মাঝে হয়তো আর জায়গা থাকবে না আমার জন্য।”

সায়েম একটু হাসল।
বলল,
“আমার নীরবতাটা তো তোমারই জন্য গড়া ছিল।
তুমি গেলে সেটারও দরজা বন্ধ হয়ে গেল।”

রুকাইয়া এবার আস্তে বলল,
“আমি থাকতে চাই।
শব্দ দিয়ে নয়—তোমার ছাদের কোণটায়,
যেখানে বিকেলের আলো পড়ে,
আর তুমি চা খাও চুপচাপ।”

---

সেদিন রাতে দুজনেই ছাদে গেল।
রুকাইয়া চুপ। সায়েমও।

কিন্তু সেই চুপ এবার কষ্টের ছিল না—
সেই চুপ এবার ছিল একটা পূর্ণতা।

পাশাপাশি দুটো কাপ।
একটা খাতা।
আর এক প্রস্থ শান্ত বিকেল, যেটা কোনো প্রশ্ন আর রাখেনি।

---

📖 শিক্ষার কথা:

ভালোবাসা নাটকীয় না হলেও গভীর হতে পারে।

ফিরে আসার জন্য কান্না বা ক্ষমা দরকার হয় না, দরকার হয় সাহস—চুপচাপ ফিরে এসে আবার বসে পড়ার।

যে সম্পর্ক চুপ থেকেও টিকে থাকে—সে সম্পর্ক ভাঙে না, গেঁথে যায় আত্মায়।

(চলবে...)

✍️ পারভেজ মাসুম© BDDude

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿📚অধ্যায় ৮: চিঠি খোলার আগেরুকাইয়া চলে গেছে।ছাদের কোণে এখন শুধু সায়েমের চা-র কাপ, ফাঁকা খাতা ...
22/06/2025

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿

📚অধ্যায় ৮: চিঠি খোলার আগে

রুকাইয়া চলে গেছে।
ছাদের কোণে এখন শুধু সায়েমের চা-র কাপ, ফাঁকা খাতা আর হাওয়ার আওয়াজ।

সেই খামটা সে টেবিলের ডান পাশে রেখেছে।
নিত্যদিন চোখে পড়ে, কিন্তু খোলে না।
সে জানে, চিঠির ভিতরে রুকাইয়ার সমস্ত ‘না বলা’ কথাগুলো অপেক্ষা করছে।

কিন্তু ভয় পায় সায়েম।
ভয়—চিঠির শেষ লাইনে যদি লেখা থাকে:
“আমি আর ফিরছি না।”

---

তিন সপ্তাহ কেটে গেছে।
রুকাইয়া মেসেজ করে না। ফোনও না।
সায়েম প্রথমবার অনুভব করল—
ভালোবাসা কেবল পাশে বসে থাকা নয়,
ভালোবাসা হতে পারে প্রতিদিন চুপচাপ অপেক্ষা করাও।

একদিন, ছুটির বিকেলে ছাদে বসে সে খামটা খুলে ফেলল।
চিঠির ভিতরে একটা কাগজ, আর একটুকরো শুকনো লাল পাতা।

সায়েম কাগজটা খুলল।

---

> “সায়েম,

যদি তুমি এই চিঠি পড়ছো, তাহলে হয়তো আমি চলে গেছি অনেক দূরে।

আমি জানি, তুমি খুব সাহসী। কিন্তু চুপ থাকা সবসময় সাহস না—কখনো কখনো সেটা নিজেকে আড়াল করা।

আমি চাই, তুমি নিজেকে খুলে ধরো—একদিন, কাউকে।

হয়তো সেটা আমি হব না।

কিন্তু বিশ্বাস করো, তোমার নীরবতা আমাকে বদলে দিয়েছে।

আমি যদি ফিরি, শুধু এইটুকু বোঝো—আমি ফিরে এসেছি শব্দের জন্য নয়, ফিরে এসেছি সেই ছায়ার জন্য, যেখানে তুমি আমাকে নিঃশব্দে আশ্রয় দিয়েছিলে।

– রুকাইয়া”

---

সায়েম চিঠিটা শেষ করল ধীরে ধীরে।
চোখের কোণে জমা জল গড়িয়ে পড়ল না।
কিন্তু তার বুকের ভিতর শব্দ হলো—অদৃশ্য একটা কাঁপুনি।

সে খাতায় লিখল সেদিন:

> “ভালোবাসা একরকম প্রতীক্ষা।
কেউ বলে যায়—‘ফিরে আসব’,
কেউ কিছু না বলেই ফিরে আসে।

কিন্তু সবচেয়ে গভীর ভালোবাসা হলো—
যার প্রতীক্ষা চিঠির ভিতরেও লেখা থাকে না,
কেবল চোখের পাতায় জমে থাকে।”

---

সেই রাতে ছাদে বসে চাঁদের দিকে তাকিয়ে সায়েম ফিসফিস করে বলল,
“তুমি ফিরে এলে, আমি আর কিছু বলব না।
শুধু এক কাপ চা এগিয়ে দেব… ঠিক আগের মতো।”

---

📖 শিক্ষার কথা:

প্রতীক্ষা সবসময় কষ্টের হয় না। প্রতীক্ষা কখনো কখনো আত্মার প্রশান্তি।

ভালোবাসা যদি সত্যি হয়, তাহলে সে ফিরে আসে—না শরীর নিয়ে, অন্তত স্মৃতি হয়ে।

চিঠি দিয়ে সব বলা যায় না, কিছু অনুভব কেবল নিঃশব্দ হৃদয়ে লেখা থাকে।

📚

✍️ পারভেজ মাসুম © BDDude

🌿❤️ গল্পের নাম: "চায়ের কাপ ও সময়ের স্যার” ❤️🌿📚ঢাকা শহরের এক মধ্যবিত্ত পাড়ায় থাকেন প্রফেসর আনিসুর রহমান। বয়স পঁয়তাল্লিশ প...
21/06/2025

🌿❤️ গল্পের নাম: "চায়ের কাপ ও সময়ের স্যার” ❤️🌿

📚

ঢাকা শহরের এক মধ্যবিত্ত পাড়ায় থাকেন প্রফেসর আনিসুর রহমান। বয়স পঁয়তাল্লিশ পেরিয়েছে, চুলে পাক ধরেছে, কিন্তু মনটা এখনও ‘ফেসবুক ফ্রেন্ডলি’। তিনি এক সরকারি কলেজের শিক্ষক, তবে পড়ানোর চেয়ে ছাত্রদের সঙ্গে গল্প করা আর টিচার্স রুমে “নগদ” ও “বিকাশ” নিয়ে তর্ক করতেই বেশি সময় কাটে।

একদিন সকালে চায়ের কাপ হাতে, তিনি তার স্ত্রী শামসুন্নাহারকে বললেন—

—"শোনো না, আজকাল ছাত্ররা আর পড়াশোনার কথা জিজ্ঞেসই করে না। সবাই জিজ্ঞেস করে—‘স্যার, ChatGPT ব্যবহার করাই কি পাপ?’”

শামসুন্নাহার মাথা নাড়লেন, “তুমিও তো প্রতিদিন ওটাই ইউজ করো, আমার রেসিপির নামও এখন জিপিটি দিয়ে রাখো!”

প্রফেসর আনিস হালকা হেসে বললেন, “একদিন ও বললো—‘স্যার, গুগল করলেই তো উত্তর পাই। আপনাদের দরকার কী?’ আমি বললাম—‘তুমি কি মা বাবার চেহারা গুগলে খুঁজো?’”

সেদিন বিকেলবেলা কলেজে গিয়ে দেখলেন, টিচার্স রুমে গুঞ্জন। কলেজে নাকি "ডিজিটাল রূপান্তর" হচ্ছে। মানে কিছু সিনিয়র শিক্ষককে “অ্যাক্টিভ রিটায়ারমেন্ট” দেওয়া হবে—আধুনিক যুগের নতুন নামান্তর!

প্রফেসরের নাম সেই লিস্টে! চায়ের কাপ হাতে মুখ ফাঁকা করে তাকিয়ে রইলেন। চোখে জল নয়, বরং মুখে একটা চিহ্নিত রম্য হাসি।

“আমি তো ভাবছিলাম আমাকে জাতীয় পুরস্কার দেবে! হায়, আমাকে ছাঁটাই দেবে?” বলে উঠলেন তিনি।

কলেজের পিয়ন রফিক পাশ থেকে ফিসফিস করে বলল, “স্যার, ChatGPT তো ভাইরাল, আপনি তো শুধু ভাইরালির শিকার!”

তিনি বাড়ি ফিরে এলেন মন খারাপ করে। রাতের খাবারে স্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন, “আজ খুব চুপচাপ কেন?”

প্রফেসর আনিস উত্তর দিলেন—“আজকাল শিক্ষকরা আর বাতির মতো নন, যাদের আলো ছড়াতে হয়। তারা এখন ‘পাওয়ার ব্যাঙ্ক’—শুধু তখনই চার্জ দেবেন যখন ছাত্র চাইবে। তাও যদি তার মোবাইলে অ্যাডাপ্টার থাকে!”

স্ত্রী হেসে ফেললেন।

পরদিন সকালেই প্রফেসর আনিস একটা পোস্ট দিলেন ফেসবুকে—

“আজ আমাকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে, কারণ আমি বই পড়াতে চেয়েছিলাম। ছাত্ররা ভিডিও দেখতে চেয়েছিল। সময় পাল্টেছে, আমিও পাল্টাবো। এবার থেকে আমি ‘কন্টেন্ট ক্রিয়েটর প্রফেসর আনিস’। আমার নতুন চ্যানেল: ‘চায়ের কাপ ও পাঠশালা’। জয় হোক চায়ের, জয় হোক চিন্তার!”

গল্পটা এখানেই শেষ নয়।

প্রথম ভিডিওতেই তিনি বললেন,
“জীবন হচ্ছে এক কাপ চা। কে কবে শেষ চুমুক খাবে, বলা যায় না। কিন্তু ততক্ষণ পর্যন্ত গল্প চলবে...।”

🌿

🎬 বার্তা:

বাংলাদেশের বর্তমান সমাজে প্রযুক্তি, শিক্ষা আর মূল্যবোধ—তিনটি শক্তির মাঝে যে টানাপোড়েন চলছে, সে জায়গাটাকেই রম্যভাবে তুলে ধরা হয়েছে। একজন আদর্শ শিক্ষকের চোখ দিয়ে সমাজ ও সময়ের পরিবর্তন বুঝে নেওয়ার এই গল্পে আছে হালকা হাস্যরস, রসিকতা, এবং শেষবেলায় একটা ভাবনার খোরাক।

✍️ লেখক: পারভেজ মাসুম © BDDude

#জীবনবদলেরগল্প

21/06/2025

🌿🌿 "ড. জো ডিসপেনজার ‘Sweet Spot’—একটি গভীর আত্মউন্নয়নের পাঠ" 🌿🌿

✍️ লিখেছেন: পারভেজ মাসুম

আমরা প্রতিদিন জীবনের নানা দোটানায় পড়ে থাকি। একদিকে দায়িত্ব, অন্যদিকে স্বপ্ন। একদিকে ভয়, অন্যদিকে সম্ভাবনা। ঠিক এই দ্বন্দ্বের মাঝখানে কোথাও একটা জায়গা আছে, যেটাকে ড. জো ডিসপেনজা বলেন “Sweet Spot”—অর্থাৎ এমন একটি জায়গা যেখানে আমাদের মন, দেহ এবং আত্মা একসাথে সামঞ্জস্যে আসে।

এই ‘Sweet Spot’ খুঁজে পাওয়া মানে নিজেকে এমন এক অবস্থানে নিয়ে যাওয়া, যেখানে আমরা আমাদের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে আত্মউন্নয়নের পথে হাঁটতে পারি। চলুন দেখা যাক, এটি কীভাবে আমাদের জীবন বদলে দিতে পারে।

🧠 কে এই ড. জো ডিসপেনজা?

ড. জো ডিসপেনজা একজন নিউরোসায়েন্টিস্ট, স্পিকার এবং লেখক, যিনি ব্রেইন, কনশাসনেস এবং হিউম্যান ট্রান্সফর্মেশন নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁর মতে, আমরা আমাদের চিন্তাভাবনা দিয়ে আমাদের শরীর, মস্তিষ্ক এবং বাস্তবতা বদলে দিতে পারি।
তিনি বলেন—

> “Where you place your attention is where you place your energy.”
অর্থাৎ আপনি যেখানে মনোযোগ দেন, সেখানেই আপনার শক্তি প্রবাহিত হয়।

🧘‍♀️ ‘Sweet Spot’ কী?

‘Sweet Spot’ হলো এমন একটি মানসিক ও আধ্যাত্মিক অবস্থা, যেখানে আপনার চিন্তা, অনুভব, এবং বিশ্বাস এক জায়গায় মিলে যায়। এটি এমন একটা মুহূর্ত যখন:

আপনি অতীতের যন্ত্রণা ভুলে যান
ভবিষ্যতের ভয় দূরে ঠেলে দেন
শুধু বর্তমান মুহূর্তে নিজেকে অনুভব করেন
এটি হল চেতনার কেন্দ্রে স্থিত থাকা—যেখানে আপনি নিজেকে নতুনভাবে রিকনফিগার করতে পারেন।

🌱 কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

১. আত্মউন্নয়ন ও হিলিং-এর পথ

যখন আপনি Sweet Spot-এ থাকেন, তখন আপনার শরীর রিল্যাক্স অবস্থায় যায়। কর্টিসল কমে, ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়, সেল রিনিউয়াল ঘটে।

২. মনোযোগ ও ফোকাস বৃদ্ধি পায়

মস্তিষ্ক তখন আলফা বা থিটা ব্রেইন ওয়েভে কাজ করতে থাকে, যেটা সৃজনশীলতা, ইনোভেশন এবং গভীর ধ্যানের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

৩. বাস্তবতা গঠনের শক্তি বৃদ্ধি পায়

ড. জো বলেন, আপনি যখন কোনো কিছুকে বিশ্বাস করে অনুভব করেন, তখন তা বাস্তব রূপ পেতে শুরু করে।

🔍 কিভাবে খুঁজে পাবেন এই Sweet Spot?

১. ধ্যান (Meditation):

প্রতিদিন মাত্র ১০-২০ মিনিট গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস ও আত্মনিরীক্ষার মাধ্যমে আপনি আপনার মনকে প্রশান্ত করতে পারেন।

২. কৃতজ্ঞতা অনুশীলন (Gratitude):

প্রতিদিন ৩টি করে বিষয় লিখুন যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞতাবোধ আপনাকে Sweet Spot-এ নিয়ে যেতে সাহায্য করে।

৩. নিজের ভেতরের ভয় চিহ্নিত করুন:

যে চিন্তাগুলো আপনাকে আটকে রাখে সেগুলো লিখে ফেলুন। এরপর নিজেকে জিজ্ঞেস করুন—“এই ভয়টা কি সত্যি?”

৪. নতুন আত্মপরিচয় গড়ে তুলুন:

নিজেকে শুধু অতীত দিয়ে সংজ্ঞায়িত করবেন না। নিজের নতুন একটি পরিচয় তৈরি করুন—যেমন: “আমি নির্ভীক”, “আমি সুস্থ”, “আমি ভালোবাসায় পূর্ণ”।

💡 শিক্ষণীয় বার্তা:

Sweet Spot খুঁজে পাওয়া মানে শুধু কিছুটা শান্তি খোঁজা না। এটি হলো নিজের জীবনের স্টিয়ারিং হুইল নিজের হাতে তুলে নেওয়া। ড. জো ডিসপেনজার ভাষায়, আপনি যখন চিন্তার জগতে পরিবর্তন আনেন, তখন আপনার জীবনও পরিবর্তিত হয়।

আমরা যারা প্রতিদিন যান্ত্রিক জীবনের চাপে নুয়ে পড়ছি, তাদের জন্য এই ‘Sweet Spot’ হতে পারে পুনর্জন্মের দরজা। একবার নিজেকে সেখানে নিয়ে যেতে পারলে, আপনি নিজেই হয়ে উঠবেন আপনার জীবনের সবচেয়ে শক্তিশালী নির্মাতা।

📌 উপসংহার:

যদি আপনি সত্যিই বদলাতে চান, তাহলে Sweet Spot খুঁজে বের করুন। তা হতে পারে সূর্য ওঠার আগের কিছু নিস্তব্ধ সময়, কোনো স্নিগ্ধ নদীর পাশে দাঁড়িয়ে মনের কথা ভাবা, বা কেবল নিজের শিশুকে জড়িয়ে ধরা এক অনন্য মুহূর্ত।

সেই মুহূর্তগুলোকে আঁকড়ে ধরুন। কারণ সেইখানেই আছে নিজেকে নতুন করে গড়ার ক্ষমতা।

👉 আপনি কি আজ আপনার Sweet Spot খুঁজে পেয়েছেন?

#জীবনবদলেরগল্প #মনশক্তি #আত্মউন্নয়ন

🌿 “সে ছিল তোমার জন্যই বানানো”—ভালোবাসার ১১টি নীরব লক্ষণ✍️ লেখা: BDDUDEআমরা প্রায়ই প্রেমকে চোখ ধাঁধানো কিছু বলে ভাবি—যেখা...
20/06/2025

🌿 “সে ছিল তোমার জন্যই বানানো”—ভালোবাসার ১১টি নীরব লক্ষণ

✍️ লেখা: BDDUDE

আমরা প্রায়ই প্রেমকে চোখ ধাঁধানো কিছু বলে ভাবি—যেখানে ফুল, কবিতা, উপহার আর বড় বড় প্রতিশ্রুতি থাকে। কিন্তু আসল ভালোবাসা সবসময় এতটা নাটকীয় হয় না। মাঝে মাঝে ভালোবাসা আসে চুপিচুপি, নীরবে, খুব সাধারণ কিছু মুহূর্তের মধ্যে।

তেমনই কিছু লক্ষণ আজ তুলে ধরা হলো—যেগুলো বলবে, “হয়তো সে-ই সেই মানুষ, যাকে আল্লাহ তোমার জীবনের জন্য বেছে রেখেছেন।”

✨ ১. সে মন দিয়ে শুনে—বিচার না করে

রাফি রাতে একটু মন খারাপ করে বলল, “আজ অফিসে খুব খারাপ লাগছিল।”
নীলা কোনো প্রশ্ন না করে শুধু বলল, “চলো এক কাপ চা খাই, তারপর বলো তোমার যা বলতে ইচ্ছা করে।”

এটাই ভালোবাসা—যেখানে কেউ শুনে বোঝে, সমাধান খুঁজে দেয়ার আগেই মন বোঝে।

✨ ২. তোমার নীরবতাতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে

একটা দুপুরে তারা দু’জনেই বারান্দায় বসে ছিল—কোনো কথা ছিল না।
শুধু বাতাস বইছিল, আর রাফির মনে হচ্ছিল, “এটাই শান্তি।”
ভালোবাসা মানেই সবসময় কথা নয়—কখনো কখনো নীরবতা সব বলে দেয়।

✨ ৩. তোমাদের বিকাশ ঘটে একসাথে

রাফি যখন অনলাইন কোর্স করতে শুরু করল, নীলা নিজেও পাশে বসে তার ড্রয়িং ক্লাস করত।
তারা আলাদা হলেও একে অপরকে এগিয়ে নিতে চায়।

ভালোবাসা শুধু একসাথে থাকা নয়, বরং একজন আরেকজনকে আরও ভালো মানুষ বানাতে চায়।

✨ ৪. সে তোমার ছোট বিষয়গুলো মনে রাখে

নীলা জানে রাফি চায়ের সাথে লেবু চায় না, খালি আদা।
এমন ছোট ছোট খেয়াল রাখা প্রমাণ করে—সে মন দিয়ে খেয়াল রাখে।

এটাই প্রেমের সবচেয়ে নীরব অথচ শক্তিশালী ভাষা।

✨ ৫. তোমার দুর্বলতাগুলো সে মেনে নেয়

রাফির রাগ একটু বেশি, আর সে মাঝে মাঝে ভুলে যায় সময়মতো খাওয়া-দাওয়া।
নীলা তাকে বদলাতে চায় না, বরং বলে, “তুমি যেমন, আমি তোমাকেই চাই।”

ভালোবাসা মানে কাউকে ‘নিখুঁত’ বানানো নয়, বরং তাকে ‘আপন করে নেয়া’।

✨ ৬. সে তোমাকে প্রশ্ন করে না, বিশ্বাস করে

একদিন রাফি অফিস থেকে দেরিতে ফিরল।
নীলা বলল না, “তুমি কোথায় ছিলে?”
সে শুধু জিজ্ঞাসা করল, “খেয়েছো তো? ক্লান্ত লাগছে তোমার মুখে।”

বিশ্বাসের চেয়ে বড় উপহার আর কিছু নেই ভালোবাসায়।

✨ ৭. সে তোমাকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে

রাফি যখন নতুন একটা স্টার্টআপ শুরু করতে চাইল, সবাই বলল, “ঝুঁকি নিও না।”
শুধু নীলা বলল, “তুমি পারবে। আমি পাশে আছি।”

ভালোবাসা মানে—যখন সবাই পেছনে টানে, কেউ একজন সামনে ঠেলে দেয়।

✨ ৮. সে তোমাকে ভালো থাকার প্রেরণা দেয়

তুমি তার পাশে থেকে নিজেকে ভালো মানুষ ভাবতে পারো?
তাহলে বুঝে নাও—সে তোমার জীবনের জন্য আশীর্বাদ।

✨ ৯. তোমরা একে অপরকে বদলাতে বল না—ভালবাসো যেমন আছো

রাফি একটু বাউন্ডুলে টাইপের, আর নীলা খুব গোছানো।
কিন্তু তারা কেউ কাউকে বদলাতে চায় না।
তারা নিজেদের ভিন্নতা মেনে নিয়েই এক ছাদের নিচে সুখ খুঁজে নেয়।

✨ ১০. তোমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একই রকম

জীবনকে যেভাবে রাফি দেখে, প্রার্থনা, পরিবার, ভবিষ্যৎ—নীলাও প্রায় একইভাবে ভাবে।
একমত না হলেও, দৃষ্টিভঙ্গি মিল থাকলে জীবনটা সহজ হয়।

✨ ১১. চোখে চোখে বোঝাপড়া

প্রতি সন্ধ্যায় নীলা বারান্দায় দাঁড়ালে, রাফি জানে—চা চাই।
না বললেও চা বানিয়ে নিয়ে আসে।

যখন কথা না বলেও সব বুঝে যায়, তখন সেই সম্পর্কটাই হয় সত্যিকারের।

✨ উপসংহার

এই লক্ষণগুলো পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, বিকাশের আকাঙ্ক্ষা ও ভিত্তিপ্রাপ্তভাবে স্ট্যাবিলিটি ইঙ্গিত করে—যেমন:

👉 প্রশ্ন না জিজ্ঞাসা করেই বোঝা

👉 একসাথে সময়টা উপভোগ করা

✍️ একজন আরেকজনকে বাড়িয়ে দেওয়া

ভালোবাসা নাটকীয় না, বরং শান্তিময়।
যদি এমন কেউ থাকে যার সঙ্গে এসব অনুভব করো, তাহলে তাকে আঁকড়ে ধরো।
কারণ এমন মানুষ বারবার আসে না। সে-ই হয়তো সেই—“যে সবসময় তোমার জন্যই ছিল।”

🌿

👉 আপনি কি এমন কাউকে পেয়েছেন? নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে ভুলবেন না! ❤️

| #ভালোবাসা | #সতেজসম্পর্ক

(এই লেখাটি কোনো নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট থেকে অনুবাদ বা কপি করা হয়নি, তবে ধারণাটি অনুপ্রাণিত হয়েছে কিছু বিখ্যাত আধুনিক সম্পর্ক মনোবিজ্ঞানভিত্তিক নিবন্ধ থেকে।)

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿🪻অধ্যায় ৭: সম্পর্ক যেখানে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়দুজন মানুষ একে অপরের পাশে চুপচাপ বসে থাকলেই কি ভ...
20/06/2025

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿

🪻

অধ্যায় ৭: সম্পর্ক যেখানে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়

দুজন মানুষ একে অপরের পাশে চুপচাপ বসে থাকলেই কি ভালোবাসা জন্ম নেয়?
নাকি ভালোবাসা জন্ম নেয় সেই সময়—যখন একজন ভেঙে পড়ে আর অন্যজন তা বুঝেও কিছু না বলে শুধু পাশে বসে থাকে?

সায়েম এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিল।

🌿

রুকাইয়া এখনো আসে ছাদে।
তবে তার চোখে এক অদ্ভুত অপরাধবোধ।
সে সবসময় যেন কিছু বলতে চায়, কিন্তু মুখ থেকে শব্দ ফসকে বেরিয়ে আসে না।

একদিন সে এসে বলল,
“আমার একটা জব অফার এসেছে—চট্টগ্রামে।”
সায়েম চুপ।

“ছয় মাসের জন্য প্রজেক্ট। কিন্তু স্থায়ীও হতে পারে।”
সায়েম এবার মাথা হেঁট করে শুধু বলল,
“তুমি যাচ্ছো?”

রুকাইয়া উত্তর দিল না।
শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকল—যেখানে সূর্য আর চাঁদ একসঙ্গে ছিল।

🌿

পরের কয়েকটা দিন দুজনেই নিঃশব্দ।
অফিসে দেখলে কেবল একটুখানি চোখাচোখি।
ছাদে আর দেখা হয় না।
সায়েম আবার একা হয়ে গেছে।

তার খাতায় আবার ফাঁকা পৃষ্ঠা বাড়ছে, আর চায়ের কাপ ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।

🌿

রুকাইয়া যাওয়ার দিন এসে গেল।

বিমানের আগে সে একবার ছাদে এল।
সায়েম তখন ছাদের এক কোণে বসে ছিল, খুব চেনা ভঙ্গিতে।

রুকাইয়া বলল,
“তুমি কি একটুও কিছু বলবে না?”
সায়েম বলল,
“তুমি তো যাচ্ছো সিদ্ধান্ত নিয়ে।
আমি কিছু বললে সেটা কি বদলাবে?”

রুকাইয়া চোখের পানি লুকিয়ে বলল,
“জানো, আমি ভয় পেয়েছিলাম—যদি তোমার চুপ থাকার মাঝে আমি হারিয়ে যাই।
তুমি তো বলো না কিছুই…”

সায়েম এবার একটু এগিয়ে এল।
বলল,
“তুমি যদি বুঝতে পারো, আমি চুপ থেকেও তোমার জন্য চিন্তা করি, অপেক্ষা করি—
তাহলে বোঝো, আমি কিছু না বললেও ভালোবাসি।”

🌿

রুকাইয়া কোনো কথা না বলে এক পা পিছিয়ে দাঁড়াল।
তারপর একটা খাম এগিয়ে দিল।

> “এটা খুলবে না এখন।
যদি কখনো মনে হয়, আমি আর ফিরে আসব না—তবে খুলো।”

সায়েম কিছু বলল না।
শুধু চিঠিটা হাতে নিয়ে ছাদের দিকে তাকাল।
বাতাসে তখন অদ্ভুত একটা গন্ধ—চলে যাওয়ার, আবার ফিরে আসারও।

🌿

সেদিন রাতের খাতায় সায়েম লিখল:

> “ভালোবাসা অনেক সময় প্রশ্নের মত দাঁড়িয়ে থাকে সামনে,
যার উত্তর হয়তো কখনো জানা যাবে না।
তবু কিছু প্রশ্ন ভালোবাসা হয়েই বেঁচে থাকে।
উত্তর না থাকলেও…”

🌿

📖 শিক্ষার কথা:

👉 ভালোবাসা সবসময় নিশ্চিত হয় না। কিছু ভালোবাসা থাকে—অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপে, অথচ নিঃশব্দে প্রবল।

👉 কখনো কাউকে ভালোবাসা মানে তাকে ধরে রাখা নয়, বরং তাকে যেতে দেওয়ার সাহস রাখা।

👉 তুমি যদি কারো অপেক্ষায় চুপ করে থেকেও ভালোবাসতে পারো, তবে তুমি পরিপূর্ণ।

(চলবে...)

✍️ পারভেজ মাসুম © BDDude

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿🪻📚 অধ্যায় ৬: রয়ে যাওয়ার সাহসশীতটা এবার একটু বেশি পড়েছে।সায়েমের চা এখন ঠান্ডা হয়ে যায়, লেখার...
20/06/2025

🌿❤️ উপন্যাস: নীরবতার ছাদে ❤️🌿

🪻

📚 অধ্যায় ৬: রয়ে যাওয়ার সাহস

শীতটা এবার একটু বেশি পড়েছে।
সায়েমের চা এখন ঠান্ডা হয়ে যায়, লেখার খাতা থাকে ফাঁকা, আর ছাদে সে একা।
রুকাইয়া আর আসে না।
হঠাৎ করেই যেন একটা নীরব দেয়াল উঠে গেছে তাদের মাঝে।

তবে নীরবতা কি কেবল ফাঁকির নাম?
না কি সে নিজেই একরকম উত্তর?

🌿

একদিন দুপুরে অফিসে সায়েমের ডেস্কে একটা ছোট খাম পাওয়া গেল।
লাল পাতায় মোড়া, হাতের লেখা রুকাইয়ার।

> “সায়েম,
আমি মাঝে মাঝে তোমার পাশে থেকেও নিজেকে হারিয়ে ফেলি।
তুমি জানো না, এই না বলা কথাগুলো আমার ভেতর কতটা ওজন নিয়ে থাকে।
আমি শুধু চেয়েছিলাম—একটা নির্ভরতা।
কিন্তু ভয় পাই… যদি তুমি একদিন ক্লান্ত হয়ে যাও আমার ভেতরের জটিলতা থেকে?”

সায়েম চিঠিটা পড়ে কিছুক্ষণ চুপ করে রইল।
তারপর নিজেই ভাবল,
“ভালোবাসা কি কখনো ক্লান্ত করে? নাকি ক্লান্তি মানেই ভালোবাসা কমে যাওয়া?”

🌿

সেদিন সন্ধ্যায়, রুকাইয়া ছাদে এল।
তাকে দেখে মনে হচ্ছিল—সে বহুদিন পর নিজের ছায়ার সাথেও কথা বলেনি।

সায়েম আস্তে বলল,
“তুমি চলে যেতে চাইলে আমি থামাবো না।
কিন্তু যাওয়ার আগে একটা প্রশ্ন করি—
আমার চুপ থাকা কি তোমার কষ্টের কারণ?”

রুকাইয়া বলল,
“না, বরং সেটা ছিল আমার একমাত্র আশ্রয়।
কিন্তু ভয় পেতাম—তুমি চুপ থেকেও যদি একদিন অন্য কারো কাছে শব্দ খুঁজে পাও!”

সায়েম মৃদু হেসে বলল,
“আমি শব্দ খুঁজি না। আমি সেই চোখ খুঁজি—যা আমার চুপ থাকাটাকে ভাষা ভাবে।”

রুকাইয়া এবার এক ধাপ এগিয়ে এল।
তার চোখে জল, কিন্তু ঠোঁটে সায়েমের মতোই মোলায়েম হাসি।

সে বলল,
“আমি রয়ে যেতে চাই। যদি তুমি বুঝতে পারো—আমার সব জটিলতা শুধু ভালোবাসার আরেক রূপ।”

সায়েম আর কিছু বলল না।
শুধু চায়ের কাপ এগিয়ে দিল তার দিকে।
ছাদের কোণে দু’জন মানুষ চুপচাপ বসে রইল।
আকাশে সূর্য অস্ত যাচ্ছিল, কিন্তু মনের মধ্যে যেন এক নতুন আলো ফুটছিল।

🌿

📖 শিক্ষার কথা:

👉 ভালোবাসা মানে শুধু একে অপরের পাশে থাকা নয়, বরং একে অপরের নীরবতা বোঝার চেষ্টাও।

👉 কখনো কখনো, সম্পর্ক রক্ষা করতে গিয়ে ‘চলে যাও’ বলার চেয়ে বড় সাহস লাগে ‘থেকে যাও’ বলতে।

👉 ভয়ের ভেতর থেকেও যদি কেউ থেকে যেতে চায়—তবে সে-ই সত্যিকার আপন।

(চলব...)

✍️ পারভেজ মাসুম © BDDude

🌤 গল্প: “আল্লাহ আমাকে ভুলে যাননি!”(সূরা আদ-দুহা থেকে অনুপ্রাণিত শিশুতোষ গল্প)🧒 চরিত্র:নোমান, একজন ছোট ছেলে। বয়স ৮ বছর। স...
19/06/2025

🌤 গল্প: “আল্লাহ আমাকে ভুলে যাননি!”

(সূরা আদ-দুহা থেকে অনুপ্রাণিত শিশুতোষ গল্প)

🧒 চরিত্র:

নোমান, একজন ছোট ছেলে। বয়স ৮ বছর। সে মাদরাসায় পড়ে, নামাজ পড়ে, আর মাঝে মাঝে খুব ভাবনায় পড়ে যায়— “আল্লাহ কি আমার কথা শুনছেন?”

🌿

📖 একদিনের ঘটনা

একদিন বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে নোমান মন খারাপ করে বিছানায় শুয়ে পড়ল।

মা জিজ্ঞেস করলেন,
— "কী হয়েছে বাবা, মন খারাপ কেন?"

নোমান বলল,
— "মা, আমি অনেক দোয়া করি। আল্লাহ আমাকে ভালো নম্বর দেন না। আমি খেলাধুলা করতেও পারি না ঠিক মতো। মনে হয় আল্লাহ আমাকে ভালোবাসেন না!"

মা মৃদু হেসে বললেন,
— "তুমি কি জানো, একদিন আমাদের প্রিয় নবী মোহাম্মদ (ﷺ)–এর মনও খুব খারাপ হয়েছিল?"

নোমান চোখ বড় করে বলল,
— "সত্যি মা?"

🌿

🌙 মা বললেন গল্পটা:

"একবার নবীজি (ﷺ)-এর ওপর ওহী বা আল্লাহর পক্ষ থেকে বার্তা আসা কিছুদিন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তিনি খুব দুঃখ পেয়েছিলেন। ভাবছিলেন,
— 'আমার রব কি আমাকে ভুলে গেছেন?'

চারদিকে মানুষও বলতে লাগল,
— 'তোমার আল্লাহ তো তোমাকে ছেড়ে দিয়েছেন!'

ঠিক তখনই আল্লাহ ﷻ তাঁকে শান্তনার জন্য একটি সূরা পাঠালেন — সূরা আদ-দুহা।"

🌿

🌤 সূরার অর্থ দিয়ে মা বললেন:

— “ওহে নোমান, শুনো কী সুন্দর কথায় আল্লাহ বললেন:

> ‘আমি তোমাকে ত্যাগ করিনি, তোমার প্রতি বিরক্তও নই। তোমার আগামী দিন আরও ভালো হবে। আমি তোমাকে এতিম পেয়েছিলাম, আমি তোমাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। আমি তোমাকে গরিব পেয়েছিলাম, আমি তোমাকে ধনী করেছি।’”

🌿

🌈 নোমানের চোখে জল চলে এল

— "মা, তাহলে আল্লাহ আমাকেও ভুলে যাননি, তাই না?"
— "না বাবা, আল্লাহ কখনো কাউকে ভুলে যান না। হয়তো এখন কিছু সময় নিচ্ছেন। কিন্তু ঠিকই তোমার জন্য ভালো কিছু রেখেছেন।"

নোমান মুচকি হেসে বলল,
— "তাহলে আমি আবার দোয়া করব। এবার মনে বিশ্বাস নিয়ে!"

🌿

📘 শিক্ষণীয় বার্তা শিশুদের জন্য:

1. আল্লাহ কখনো আমাদের ভুলে যান না।

2. সময় লাগলেও তিনি ঠিকই আমাদের জন্য ভালো কিছু দেন।

3. নবীজী (ﷺ)-এর জীবনের গল্প থেকে আমরা ধৈর্য আর বিশ্বাস শিখি।

4. আমরা যতই ছোট হই না কেন, আল্লাহ আমাদের কথা শুনেন।

🌿

🕊 শেষ কথা:

❝ যখন মন খারাপ হবে, তখন সূরা আদ-দুহা মনে রেখো। তোমার রব তোমাকে ভালোবাসেন, কখনো ছেড়ে যান না। ❞

✍️ BDDude

Address

Barangaroo, NSW

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when BDDude posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to BDDude:

Share