
02/05/2025
উপজেলা আ'লীগের সহ সভাপতির স্ত্রী ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা বুবলির বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ (সূত্র : দৈনিক সময়ের আলো)
----------------------------------------------------------------------
বিশেষ প্রতিনিধি: সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুন নাহার বুবলির বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও দুর্নীতির অভিযোগে ফেনী জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।
বুবলি সোনাগাজীর আলোচিত সমালোচিত ৫ অগাস্টের পর পলাতক উপজেলা আ'লীগের সহ সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান শাখাওয়াতুল হক বিটুর স্ত্রী।
গত বছরের ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পলায়নের মধ্য দিয়ে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের জেরে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মানুষের প্রত্যাশা ছিল ঘুষ, অনিয়ম-দুর্নীতি ও হয়রানি ছাড়াই নাগরিক সেবা মিলবে।
কিন্তু মানুষের সে স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে ঘুষ ও দুর্নীতি ছাড়া সেবা না দিয়ে সমালোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছেন ফেনীর সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুন নাহার বুবলী।
তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে গত ৩ মার্চ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ইউনিয়নের বাসিন্দা জসিম উদ্দিন।
অভিযোগে জানা গেছে, ইউনিয়নের সোনাপুর বাদামতলী গ্রামের বাসিন্দা বাহরাইন প্রবাসী জামশেদ আলমের জন্ম নিবন্ধন করার আগে ২০০৭ সালে পাসপোর্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে জন্মনিবন্ধনের অনলাইনে ভুল থাকায় পাসপোর্ট অনুযায়ী সংশোধন করতে ইউনিয়ন পরিষদের দ্বারস্থ হন। তখন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বুবলী ওই প্রবাসীর নিকট ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।
এ দিকে সফরপুর সাহেবের হাট এলাকার জার্মান প্রবাসী মাঈন উদ্দিনের জন্ম নিবন্ধন বয়স সংশোধন বাবদ তার নিকট থেকে ৩৫ হাজার টাকা ও আব্দুল্লাহ নামক জনৈক ব্যক্তি থেকে ১২ হাজার টাকা ঘুষ নেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বুবলি।
এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, জন্ম নিবন্ধন সনদ সংশোধন, মৃত্যু সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, বিভিন্ন ভাতা ও টিসিবিসহ পরিষদের সেবামূলক কার্যক্রমে চাহিদা মোতাবেক ঘুষ না দিলে নানাভাবে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।
এনামুল হক নামে এক ভুক্তভোগী জানান, পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুন নাহার বুবলীর স্বামী সোনাগাজী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ছিলেন। ফলে বুবলির ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তখন কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। তার স্বামী বিটুর হাত ধরেই ঘুষ-দুর্নীতিতে হাতেখড়ি বুবলির। বিটু বগাদানা ইউপি চেয়ারম্যান থাকাকালে বুবলি সেখানে ইউপি সচিব পদে চাকুরি পায়। সে সুবাধে দু'জন পরিণয়ে আবদ্ধ হয়।
আ'লীগ সরকারের পতনের পরেও বুবলীর অপকর্ম বন্ধ হয়নি। অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুন নাহার বুবলী জানান, স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী অন্যায় আবদার করে সুবিধা করতে না পেরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্র করছে। তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে বলে দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার বিভাগ ফেনীর উপ-পরিচালক গোলাম মো. বাতেন জানান, অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(তথ্যসূত্র: সময়ের আলো)