10/06/2025
স/শ/স্ত্র মহড়া: ফরিদপুরে যুবদল নেতাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নে যুবদল নেতাদের বাড়িতে গিয়ে প্রকাশ্যে স/শ/স্ত্র মহড়া দিয়েছে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।
স্থানীয় যুবদল ও বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, সোমবার (৯ জুন) বিকেল ও মঙ্গলবার (১০ জুন) কামারগ্রামে দেশীয় অ/স্ত্র/শ/স্ত্রে সজ্জিত হয়ে যুবদলের দুই নেতাকে লা/ঞ্ছি/ত করা হয় এবং প্রাণ/না/শের হু/ম/কি দেওয়া হয়।
লা/ঞ্চি/ত ও হু/ম/কির শিকার যুবদল নেতারা
স্থানীয় কাঞ্চন একাডেমির পাশে একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন কামারগ্রাম ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি শাহেদ ও গোপালপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য ঐশিক। এসময় ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইনামুল হাসান, তার ভাই মাহবুব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য তারিকুল ইসলাম মেম্বার এবং আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী কাউসার হোসেন টিটোসহ দলবল নিয়ে হাজির হন।
তারা হঠাৎ মব তৈরি করে দুই যুবদল নেতাকে লা/ঞ্ছিত করেন। ঘটনার পর শাহেদ ও ঐশিক আলফাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ঘরে ঘরে গিয়ে খোঁজ ও হু/ম/কি
পরদিন (১০ জুন) দুপুরে ইনামুল হাসানের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী হেলমেট পরে এবং হকি/স্টিক, রা/মদা, টাটা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রসহ স/শ/স্ত্র অবস্থায় আবারো জড়ো হয়।
প্রথমে তারা কাঞ্চন একাডেমির মাঠে অবস্থান নেয়। এরপর শাহেদ ও ঐশিকের বাড়িতে গিয়ে তাদের খুঁজতে থাকে। না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সামনে নানা রকম হু/মকি দিয়ে আসে। পরে একইভাবে ছাত্রদল নেতা রিবন খানের বাড়িতেও যায় তারা।
শাহেদের বক্তব্য
ভুক্তভোগী যুবদল নেতা শাহেদ বলেন,
"আমরা দোকানে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ ইনামুল এসে বলেন, ‘এটা আওয়ামী লীগের এলাকা, এখানে বিএনপি চলবে না।’ আমি প্রতিবাদ করলে তিনি আরও ক্ষি/প্ত হন এবং মব তৈরি করে আমাদের লা/ঞ্ছিত করে। পরদিন তারা বাড়িতে গিয়ে গু/ম কিংবা খু/ন করে লা/শ গু/ম করে দেওয়ার হু/মকি দেয়। এখন আমি নিরাপত্তার অভাবে পলাতক।"
থানা-পুলিশের নির্লিপ্ততা
আলফাডাঙ্গা পৌর যুবদলের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান জানান,
“আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। পরিবারগুলো আ/তঙ্কে আছে। এত বড় ঘটনার পরও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অভিযুক্তরা দিব্যি প্রকাশ্যে ঘুরছে।”
অথচ আলফাডাঙ্গা থানার ওসি শাহজালাল আলম বলেন,
“আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।”
কে এই ইনামুল হাসান?
ইনামুল হাসান এক সময় ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। পরে গোপালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হন। তবে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হন এবং পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়েও পরাজিত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,
তার বিরুদ্ধে বি/স্ফো/রক, না/শক/তা, জমি দখল, নারী কে/লেঙ্কা/রি, সরকারি বরাদ্দ লুটপাট, জু/য়ার আসর চালানোর অভিযোগ আছে।
সরকারের গৃহহীন প্রকল্প, শিশু কার্ড, ভাতাভোগী তালিকা নিয়েও দুর্নীতি করেছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
তার রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমান ও ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।
২০২৪ সালের ১৩ আগস্ট আলফাডাঙ্গায় শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন দাবিতে আয়োজিত আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে ককটেল বি/স্ফো/রণ ও ভা/ঙচু/রে জড়িত থাকার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ইনামুল ছিলেন ৬৫ নম্বর আসামি। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা তরিকুল ইসলাম ছিলেন ৬৬ নম্বর। কিছুদিন পলাতক থাকার পর বর্তমানে তারা আবার এলাকায় সক্রিয়।
সম্প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনলাইন বৈঠকে ফরিদপুরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইনামুল ও তরিকুল। স্থানীয়রা বলছেন, এ থেকেই তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা ও দম্ভের উৎস বোঝা যায়।