01/09/2025
ডিভাইসটা দেখতে সুন্দর। দেখেই মনে হচ্ছে শিশুদের কোনো খেলনা মোবাইল অথবা রেডিওর মতো কিছু একটা?
আদতে এটা এমন একটা ডিভাইস যেটাতে অডিও আকারে বাইবেল শোনা যায়৷ আর, মানুষের হাতে হাতে এটা বিলি করছে খ্রিস্টান মিশনারীর দল। তাদেরই একটা দল টিএসসির মতো জায়গায় এসে এটা বিলি করে গিয়েছে সেখানকার ছাত্র, কর্মজীবী সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের কাছে। একেবারে বিনামূল্যে। ঘটনাটা আরও ৬-৮ মাস আগের।
ওয়েল। এটাকেই বলে ডেডিকেশান। পশ্চিমের আয়েশি জীবনযাপন ছেড়ে এইসকল মিশনারীরা বছরের পর বছর ধরে পড়ে থাকে বাংলাদেশে। তা-ও আবার গুলশান, বনানী, বারিধারায় থাকে না তারা৷ তাদের অধিকাংশ কাজ হলো পার্বত্য অঞ্চলে, উত্তরবঙ্গের দুর্গম অঞ্চলগুলোতে যেখানে দারিদ্র্যের মাত্রা অত্যধিক।
যেসকল মানুষেরা দারিদ্র-পীড়িত, এইসব মিশনারীরা টার্গেট করে তাদেরকেই বেশি। তারা খাবার দেয়, অনেককে ভ্যান, রিকশা, অটো কিনে দেয়, কাউকে দোকান করে দেয়। তাদের ছেলেমেয়েদের জন্য সেখানে তারা আলাদা স্কুল খুলে। ওরাই চালায়—মিশনারী স্কুল।
এইসবকিছুর আল্টিমেট উদ্দেশ্য হলো—মানুষকে খ্রিস্টান বানানো।
আপনি ভাবতে পারেন, ‘আরেহ, এত সহজ নাকি? কাউকে বলল আর খ্রিস্টান হয়ে গেল? মানুষ এত বোকা?’
জি, মানুষ এত বোকা নয়, তবে তারা যেসব অঞ্চলে কাজ করে সেসব অঞ্চলের মানুষের যুক্তিবোধ, ঈমান-বোধ এত তীব্র আর প্রখরও নয়। তারা অতি অল্পতেই বিশ্বাস করে ফেলে সবকিছু। মিশনারীদের কৌশলও অভিনব। তারা খ্রিস্টান ধর্মকে এমনভাবে উপস্থাপন করে, যেন তা ইসলামের বিরোধি কিছু বলে মনে না হয়৷ যেন দুটো ধর্ম একেবারে কাছাকাছি। একই মায়ের পেটের দুই সহোদর ভাইয়ের মতো। ইসলাম ছেড়ে খ্রিস্টান হলে যেন খুব বেশি কিছু হেরফের হয় না।
গরিব মানুষগুলো যখন দেখে তারা খাবার পাচ্ছে, চিকিৎসা পাচ্ছে, বাঁচার অবলম্বন পাচ্ছে, সন্তানদের পড়াশোনা হচ্ছে, তখন তারা খুব সহজেই বিশ্বাস বদলে ফেলে।
আমরা রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে মেতে আছি৷ আমাদের আলোচনার টেবিলে, সোশ্যাল মিডিয়া ফিডে কতো বাহারি টপিকের আলোচনা, কিন্তু একই সময়ে ( ভুল বলেছি। তাদের এই তৎপরতা বহু বহু বছর ধরে বিদ্যমান) খ্রিস্টান মিশনারীরা সারাদেশজুড়ে তাদের মিশন চালিয়ে যাচ্ছে নীরবে, নিভৃতে। তারা এখন পৌঁছে যাচ্ছে টিএসসির মতো শিক্ষিত আর এলিটদের জায়গাতেও৷
আমাদের সুসংগঠিত কোনো কর্মপরিকল্পনা নেই। সুসংগঠিত কোনো দল নেই, মিশন নেই, ভিশন নেই৷ নিজেদের দল, মত, পন্থাকে জয়ী করতেই আমাদের সমস্ত শ্রম বিনিয়োগ করছি।
অন্যদিকে, কওমের আস্ত একটা অংশকে ঈমান থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেদিকে আমাদের কোনো পদক্ষেপ তো দূর, ভ্রুক্ষেপই নেই।
আরিফ আজাদ