13/03/2023
বান্দরবানে জঙ্গি সংঘঠনের আরো ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব
বান্দরবান প্রতিনিধিঃ
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি -থানচি ও নাইক্ষ্যংছড়ির পর এবার বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতি এলাকা থেকে
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংঙ্গঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র পার্বত্য অঞ্চলের সামরিক প্রশিক্ষণ কমান্ডার দিদার হোসেন ওরফে চম্পাইসহ আরো ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গত কাল ১২ মার্চ গভির রাতে বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।
সোমবার (১৩ মার্চ ) বেলা ১২ টায় বান্দরবান জেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
আটককৃতরা হলেন,
পার্বত্য অঞ্চলের প্রশিক্ষণ কমান্ডার কুমিল্লা সদর এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে মোঃ দিদার হোসেন ওরফে চাম্পাই (২৫), নারায়ণগঞ্জ সদর এলাকার মোঃ ইউনুস সর্দারের ছেলে আলআমিন সর্দার ওরফে বাহাই (২৯),ঢাকা কামরাঙ্গীর চর এলাকার মো. আবুল কালমের ছেলে সাইনু ওরফে হুজাইফা(২১), সিলেট বিয়ানীবাজার এলাকার কামাল আহম্মেদ চৌধুরীর ছেলে তাহিয়াত চৌধুরী ওরফে পাভেল(১৯), সিলেট শাহপরান এলাকার আব্দুল কাদিরের ছেলে মোঃ লোকমান মিয়া (২৩),
কুমিল্লার লাক্সাম এলাকার মৃত আব্দুল
আজিজের ছেলে মোঃ ইমরান হোসেন ওরফে শান্ত(৩৫), ঝিনাইদহ কোর্টচাদপুর এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ আমির হোসেন (২১),বরিশাল সদর এলাকার ফারুক হাওলাদারের ছেলে মোঃ আরিফুর রহমান লাইলেং (২৮), ময়মনসিংহের মোঃ গেয়াস উদ্দিনের ছেলে শামিম মিয়া ওরফে বাকলাই (২৪)।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে, ৬টি দেশীয় বন্দুক,একটি বিদেশী পিস্তল, ৫ রাউন্ড পিস্তলের কার্তুজ, ২টি ম্যাগজিন, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও একটি ছুরি রয়েছে।
র্যাব জানায়, র্যাবের জঙ্গি বিরোধী অভিযান চলমান কালে এযাবৎ দেশের বিভিন্ন জেলা হতে ৬৮ জনকে গ্রেপ্তার ও ৭২ জঙ্গি সদস্যকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং বান্দরবানে প্রশিক্ষণরত জঙ্গি সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও সার্বিক সহায়তাকারী পাহাড়ের বিছিন্নতাবাদি সঙ্গঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ১৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।এর মধ্যে ৪৪ জন জঙ্গি ও কেএনএফের ১৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয় বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলা হতে।
গ্রেপ্তারকৃতদের দেয়া তথ্যের বরাতে র্যাব আরও জানায়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সংগঠনের আমীর মাহমুদের সাথে বান্দরবানের থানচী ও বাকলাইপাড়া হয়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের
জন্য পাহাড়ে গমন করে মোঃ দিদার হোসেন ওরফে চাম্পাই । পাহাড়ে আসার পর সে সব ধরণের অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। প্রশিক্ষণকালীন দক্ষতা ও আনুগত্যের জন্য তাকে
আমীর মাহমুদের নির্দেশনায় পাহাড়ে সশস্ত্র প্রশিক্ষণের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে পাহাড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান শুরু হলে তার নেতৃত্বে ৩২ জনের একটি দলে বিভক্ত হয়ে পার্বত্য অঞ্চলের সাইজামপাড়া, মুন্নুয়াম পাড়া, রোয়াংছড়ি, পাইক্ষং পাড়া, তেলাং পাড়াসহ
পার্বত্য অঞ্চলে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতি এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র
পার্বত্য অঞ্চলের প্রশিক্ষণ কমান্ডার কুমিল্লা সদর এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে মোঃ দিদার হোসেন ওরফে চাম্পাইসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কমান্ডার আল মঈন আরও বলেন, এ নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযানে এই জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাসহ মোট ৬৮ জন এবং পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের ১৭ নেতাকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
জঙ্গি ও সশস্ত্র সংঘটনগুলো সম্পূর্ণ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি