
14/08/2025
উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদ বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। একাধিক দাঙ্গায় হাজার হাজার মুসলিম নিহত হয়৷
এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯০৫ সালে খাজা সলিমুল্লাহের নেতৃত্বে ঢাকায় জন্ম হয় নিখিল ভারতীয় মুসলিম লীগের। উগ্রবাদী হিন্দুদের নৃশংসতা দেখে আল্লামা ইকবাল বলেন,
❝ উপমহাদেশের মুসলিমদের টিকে থাকতে হলে প্রয়োজন আলাদা দেশের, দেশের সম্ভব্য নাম হবে পবিত্রদের ভূমি:পাকিস্তান।
কিন্তু এরপরেও পাকিস্তান আন্দোলন হালে পানি পাচ্ছিলো না কারন মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ক্যারিশমাটিক নেতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ কংগ্রেসের সদস্য, হিন্দু-মুসলমান মৈত্রীর পোস্টার।
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ভারতের অখন্ডতা রক্ষার সবচেয়ে কার্যকর প্রস্তাব দেন। তিনি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মত ভারতকে একটা ফেডারেল স্টেট করার প্রস্তাব দেন। মোট প্রদেশ হবে ৫ টি এরমধ্যে ৩ টি থাকবে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ আর ২ টিতে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ। শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ মন্ত্রণালয় থাকবে কেন্দ্রের অধীনে বাকী সব কিছু থাকবে প্রাদেশিক সরকারের অধীনে। দেশের নাম হবে ইউনাইটেড স্টেটস অব ইন্ডিয়া বা ভারত যুক্তরাষ্ট্র।
কংগ্রেস এই প্রস্তাব না মেনে উল্টো জিন্নাহকে প্রলোভন দেখায় তাকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে, তিনি হবেন পৃথিবীর বৃহত্তম গনতান্ত্রিক দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। তিনি সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। দেরিতে হলেও বুঝতে পারেন হিন্দুত্ববাদীরা চায় 'অখন্ড ভারত' তত্ত্বের আলোকে ইংরেজদের রেখে যাওয়া সাম্রাজ্যের নতুন সম্রাট হতে।
জিন্নাহ এবার রুখে দাঁড়ালেন। যোগ দেন মুসলিম লীগে। মুসলিম লীগ যেন যৌবন পায়। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম লেখেন,
❝ মুসলিম লীগের আন্দোলন যেরূপ গদাই-লস্করী চালে চলছিল, তাতে আমি আমার অন্তরে কোন বিপুল সম্ভাবনার আশার আলোক দেখতে পাইনি। হঠাৎ লীগ নেতা কায়েদে আজম যেদিন পাকিস্তানের কথা তুলে হুংকার দিয়ে উঠলেন -“আমরা ব্রিটিশ ও হিন্দু ফ্রন্টে ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করব” সেদিন আমি উল্লাসে চীৎকার করে বলেছিলাম –হাঁ, এতোদিনে একজন ‘সিপাহসালার’ সেনাপতি এলেন। আমার তেজের তলোয়ার তখন ঝলমল করে উঠলো। ❞
বিস্তারিত কমেন্ট