20/03/2025
লাইলাতুলকদর কবে ও কি আমল করবেন।
----------------------------------------------------------
লাইলাতুলকদর এমন এক রাত যে রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম(খইরুম মিন আলফি শাহর)
আপনার করা প্রতিটা আমল হবে ১০০০মাস(৮৪বছর ৪মাস) এর থেকে উত্তম-খাইর। হোক সেটা দুই রাকাত নামাজ বা ১ টাকা দান বা ১ আয়াত তিলাওয়াত।সুবহানাল্লাহ।
এ রাত যখন আসতেন তখন আমাদের নাবী সা. কোমর বেধে নেমে পরতেন ইবাদত বন্দীগী করতে।
হাদিস থেকে দেখা যায় নাবী সা. অন্য সময় রাত জেগে ইবাদাত করতেন না, তিনি প্রথম দিকে ঘুমাতেন এবং রাতের শেষাংশে উঠে ইবাদত করতেন, তবে এই রমাদানের শেষ দশকে তিনি(নাবী সা.) রাত জেগে ইবাদাত করতেন এবং পরিবারবর্গদেরকেও জাগিয়ে দিতেন যেনো তারা ইবাদাত করতে পারেন।
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামবলেছেন: “রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতেলাইলাতুল ক্দর অনুসন্ধান কর।”[সহীহ বুখারী (২০১৭) ও সহীহমুসলিম (১১৬৯), তবে শব্দচয়ন ইমাম বুখারী]
এই শেষ দশকে বিশেষ করে ইতিকাফ করা, যে ব্যক্তি এই শেষ দশকে ইতেকাফ করলো তার লাইলাতুলকদর মিস যাবার কোনো সম্ভাবণা নেই এমনি সে যদি ইতিকাফে থাকা অবস্থায় ঘুমিয়েও থাকে তবুও সে লাইলাতুলকদর পেয়েই যাবে।
তাই এই শেষ দশকের বিশেষ আমল বলা যেতে পারে "ইতিকাফ করা" যে আমল কিনা রোজা ফরজ হবার পর থেকে আমাদের নাবী সা. কখনোই ছাড়েন নাই।
এছাড়া যারা ইতিকাফ করবেন না বা সম্ভব নয়, তারা এই শেষ দশকের বেজোর রাতে লাইলাতুলকদর কদর খুজতে রাত্রি জাগরন করে ইবাদত করতে পারেন।
এই রাতে বিশেষ কোনো ইবাদত নেই, আপনি সাধারণত যে সমস্ত নফল ইবাদত করেন সে সমস্তই নফল ইবাদাত করতে পারেন যেমন, ১.কুরআন তিলাওয়াত, (আল্লাহ এই লাইলাতুলকদরেই কুরআন নাজিল করেছেন তাই এ রাতে কুরআন তিলাওয়াত করুন)। ২.নফল নামাজ ৩.যিকির-আযগার। ৪.ছলাতুল তাসবিহ ৫.দান-সাদাকাহ, ইত্যাদি (সারারাত্র এভাবেই আমলের ভেতর দিয়ে কাটানোর চেষ্টা করুন)। এতেই আপনি সফল হবে ইনশাআল্লাহ। {বিদ'আদ আমল থেকে দূরে থাকবেন নতুবা আপনার আমল ধূলিশায়ী হয়ে যাবে}
কোনো ভাবেই যেনো লাইলাতুলকদর ছুটে না যায় এই ব্যবস্থা করতে হবে, কারন লাইলাতুলকদর কদর ছুটে যাওয়ার ব্যপারে কঠিন এক হাদিস এসেছে।
নাবী সা. লাইলাতুলকদর নিয়ে একটা হাদিস বলেন যার শেষে বলেন- ❝এতে (রমজানে) এমন এক রাত রয়েছে যা হাজার মাস থেকেও উত্তম। যে ব্যক্তি এ রাত্রির কল্যান থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সে তো যাবতীয় (সকল) কল্যান থেকে বঞ্চিত হলো।” [নাসায়ী: ৪/১২৯, মুসনাদে আহমাদ: ২/২৩০, ৪২৫]❞
আরেকটা বিষয় এ রাত নিয়ে বিশেষ ইবাদত অর্থাৎ ধরাবান্দা ইবাদত না থাকলেও একটি সুন্দর দুয়া আছে যা আমাদের নাবী সা. এই রাতে করবার ব্যপারে শিক্ষা দিয়েছে, দুয়াটি হচ্ছে-
#আরবি:
اللَّهمَّ إنَّك عفُوٌّ كريمٌ تُحِبُّ العفْوَ، فاعْفُ عنِّي
#উচ্চারণ:
‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি।’
#অর্থ:
‘হে আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল এবং ক্ষমা করতে ভালোবাসেন, অতএব আমাকে ক্ষমা করুন।
উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা (রা.) রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে জানতে চেয়েছেন, ‘কোন রাতটি লাইলাতুল কদর, তা যদি আমি জানতে পারি, তখন কোন দোয়া পড়বো?’ তখন রাসুলুল্লাহ (স.) তাঁকে উপরোক্ত দোয়াটি পড়তে বলেন। (তিরমিজি: ৩৫১৩)
এছাড়াও যেকোনো দুয়া করতে পারেন, এবং এই রাত্রিগুলিতে আল্লাহর কাছে খাসদিলে তাওবাহ করুন এবং নিজের সকল চাহিদা-প্রয়োজন আল্লাহর কাছে চান। ইনশাআল্লাহ কবুল হবে।