12/10/2025
💔 একটা সিজারের পেছনের অজানা কষ্ট
একটা সিজারিয়ান ডেলিভারি—শুনতে যত সহজ, বাস্তবে ততটা ভয়ংকর।
এই প্রক্রিয়ায় ডাক্তাররা একটা মায়ের পেটে ৬ থেকে ৭টা স্তর কাটেন—
ত্বক (Skin)
চর্বির স্তর (Fat layer)
ফ্যাসিয়া (Connective tissue)
মাংসপেশি (Muscle layer)
পেরিটোনিয়াম (Peritoneum - অভ্যন্তরীণ আবরণ)
ইউটেরাসের দেয়াল (Uterine wall)
অবশেষে শিশুর থলি (Amniotic sac)
এই সাতটা স্তর কেটে একটা মা পৃথিবীতে আলো এনে দেয়, কারো “বাবা” হয়ে ওঠার সুযোগ দেয়।
তার শরীর তখন আর তার নিজের থাকে না —
সে নিজেকে উৎসর্গ করে এক নতুন জীবনের জন্য।
সিজারের পর একজন মায়ের শরীরে যা ঘটে:
কাটার জায়গায় তীব্র ব্যথা, যা মাসের পর মাস থেকে যায়।
পেটের সেলাইয়ের ব্যথা রাতে ঘুমোতে দেয় না।
শরীরে ভারী ভাব, চলাফেরায় কষ্ট, হঠাৎ বাঁকানো বা হাসলে ব্যথা লাগে।
ইউটেরাস সংকুচিত হতে সময় নেয়, ফলে পেট ফুলে থাকে অনেকদিন।
হারমোনাল পরিবর্তনের কারণে মানসিক অস্থিরতা, কান্না পায়, মন খারাপ লাগে।
স্তন ফুলে যায়, দুধ জমে ব্যথা হয়।
অনেক সময় সেলাইয়ের ভেতর ইনফেকশন হয়, জ্বর আসে, পুঁজ জমে।
লোয়ার ব্যাক পেইন, কোমর ব্যথা — যা অনেকের সারাজীবন থেকে যায়।
ঘুমের অভাব, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, রক্তাল্পতা দেখা দেয়।
এই সব কিছুর পরেও সেই মেয়ে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে নিজের সন্তানকে বুকে জড়িয়ে নেয়, হাসে, সংসার চালায়, রান্না করে, সবাইকে খাওয়ায় —
কারণ সে জানে, সে মা। ❤️
যদি এই সময়টায় মেয়েটা ঠিক মতো যত্ন না পায় —
তাহলে তার শরীরের ভিতরে জমে থাকা ব্যথা ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠে অসুখে।
শরীরে ক্রমশ দুর্বলতা, ঘাড় ব্যথা, পিঠ ব্যথা, হাঁটতে কষ্ট।
মানসিক দিক থেকে ডিপ্রেশন, একাকীত্ব, কান্না আসা।
বুক ভার হয়ে থাকা, নিঃশ্বাসে কষ্ট।
কখনো কখনো সন্তান জন্মের পর “Postpartum Depression” নামে ভয়ানক মানসিক যন্ত্রণা দেখা দেয়।
আর এই সময় যদি স্বামী, শ্বশুরবাড়ি কেউ পাশে না থাকে —
তখন সেই মেয়ে একা, একদম একা হয়ে যায়।
💔 একটা পুরুষ কখনোই বুঝবে না…
যাদের শরীরে কখনো একটা কাটার দাগও পড়েনি, তারা কখনো বুঝবে না সেই দাগের যন্ত্রণা কত গভীর।
তারা বাবা হয়, কিন্তু সেই বাবা হওয়ার পেছনে যে একজন মা নিজের শরীরকে কেটে ফেলে দিয়েছে —
সেই মায়ের কষ্ট তারা কখনোই বোঝে না।
একটা মেয়ে তার শরীর, রক্ত, ব্যথা, জীবন সব দিয়ে কাউকে বাবা বানায় —
আর সেই পুরুষই যদি একদিন তার কষ্ট বুঝতে না পারে,
তাহলে পৃথিবীর সবচেয়ে বেইমান মানুষ সে-ই।
সে রাত জেগে কাঁদে, বুক ফেটে যায় কষ্টে, কিন্তু মুখ চেপে রাখে।
কারণ, “ওর কান্না শুনে কেউ আসবে না।
বাচ্চাকে কোলে নিয়ে ঘুমায়, নিজের ব্যথা ভুলে যায়।
শরীরে সেলাইয়ের জায়গা ব্যথা করলেও, হাসিমুখে সবাইকে বলে “আমি ভালো আছি।
💔 সব পুরুষ এক নয়…
তবুও বলা উচিত — সব পুরুষ এক নয়।
যে পুরুষ সত্যিই তার স্ত্রীকে ভালোবাসে,
সে জানে — “এই মেয়েটা আমার জন্য, আমার সন্তানকে পৃথিবীতে এনেছে নিজের শরীর কেটে।”
সে মেয়েকে মায়ের মতো আগলে রাখে, যত্ন করে, স্নেহ করে।
এমন পুরুষরাই সত্যিকারের পুরুষ,
আর এমন মেয়েরা সত্যিই ভাগ্যবতী।
ভালোবাসা মানে শুধু একসাথে থাকা নয় —
ভালোবাসা মানে একে অপরের কষ্ট বুঝে পাশে থাকা। ❤️
একটা মেয়ের সিজার শুধু একটা অপারেশন নয় —
এটা এক জীবনের যুদ্ধ, যেটা একা সে লড়ে।
তার বুকের ব্যথা, শরীরের দাগ, আর আত্মার শক্তি —
এই তিনটাতেই লুকিয়ে আছে একজন মায়ের প্রকৃত সৌন্দর্য।