কানিজ ফাতেমা - Kaniz Fatema

কানিজ ফাতেমা - Kaniz Fatema আল্লাহ,নবী,নামাজ,কুরআন,পরিবারকে ভালোবাসি।যারা গল্প পড়তে পছন্দ করেন তারা আমার পেজ টা ফলো দিয়ে রাখুন।
(1)

 #ভালোবাসার_বাহুডোরে #কানিজ_ফাতেমা #সিজন_২ #পর্ব_৫৬নিশ্ছিদ্র নিস্তব্ধতা যেন ঘরের প্রতিটি কোণকে জড়িয়ে ধরেছে। সবার নিশ্ব...
19/07/2025

#ভালোবাসার_বাহুডোরে
#কানিজ_ফাতেমা
#সিজন_২
#পর্ব_৫৬

নিশ্ছিদ্র নিস্তব্ধতা যেন ঘরের প্রতিটি কোণকে জড়িয়ে ধরেছে। সবার নিশ্বাসের শব্দটাও পর্যন্ত স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে। বাতাস ভারী হয়ে এসেছে অদৃশ্য চাপ আর অজানা আশঙ্কায়।বসার ঘরে উপস্থিত প্রত্যেকটি মানুষ তীব্র কৌতূহল আর উত্তেজনায় লিমনের দিকে তাকিয়ে আছে, অজানা সেই রহস্যময় কথা শ্রবণ করতে।রাফসান একপাশে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে, তার চোখে প্রত্যাশার ছায়া স্পষ্ট। রাইসা আর দিলরুবা বেগম নিঃশব্দে এক কোণে বসে আছে।

মেহেনাজ নিজেকে আর ধরে রাখতে পারছে না। চোখ দুটো আটকে আছে লিমনের মুখে।কলিজা টা যেন ছিঁড়ে এফোঁড়ওফোঁড় হয়ে যাচ্ছে। ওর প্রতিটি নিঃশ্বাসে কষ্ট আর যন্ত্রণার ছাপ।ওর চোখে জোড়া ভিজে উঠেছে অজান্তেই।কখন যে চোখ থেকে একফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়েছে, সে টেরও পায় নি।যে মামা জীবনের একমাত্র ছায়া ছিলো, নিরাপত্তার দেয়াল ছিলো,সে আর এই পৃথিবীতে নেই,এটা বিশ্বাস করা ওর পক্ষে অসম্ভব।মনে হচ্ছে, কেউ ওর হৃদস্পন্দন দু’হাত দিয়ে চেপে ধরেছে।নিঃশ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে ওর। সমস্ত শরীরের রক্ত হিম হয়ে গেছে। এই কষ্ট ব্যাখ্যার বাইরে, এ যন্ত্রণার নাম নেই।

রাফসান দূর থেকে মেহেনাজের মুখটা দেখছে। সেই মুখ, যেখানে সবসময় একরাশ আত্মবিশ্বাস ঝলসে উঠত, আজ সেখানে কেবল কান্নার রেখা, অসহায়তা আর এক অব্যক্ত যন্ত্রণা।ওর ভিতরটা দুমড়ে-মুচড়ে উঠলো। রাফসান ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল সে মেহেনাজের পাশে।কোনো শব্দ করলো না।শুধু নিঃশব্দে, সস্নেহে একপাশ থেকে ওকে নিজের বুকে টেনে নিলো।মেহেনাজ প্রথমে নড়লো না।তারপর আচমকা যেন কোনো বাঁধ ভেঙে গেল।ও দুহাতে রাফসানের শার্ট আঁকড়ে ধরলো। মাথাটা গুঁজে দিলো ওর বুকে।সেখানে কান্নার শব্দ নেই, কেবল নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে এক অপ্রকাশিত হাহাকার।রাফসান ওর পিঠে হাত রাখলো। কোমল ছোঁয়ায় মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। গলা দিয়ে এক ফোঁটা শব্দও বের হলো না, কিন্তু চোখ দুটো টলমল করে উঠলো।

নিঃশব্দে ফিসফিস করে বলল,
“ আমি তোমার পাশে আছি মাহা, তুমি একা না।

রাফসান নিজেকে সামলে রেখেছে শুধু মেহেনাজের জন্য।কারণ ও জানে, আজ সে ভেঙে পড়লে, মেহেনাজ আর দাঁড়াতে পারবে না। এখন এই মেয়েটার কষ্টের ভাগিদার একমাত্র সে।ভালোবাসার গভীরতা বোঝাতে সবসময় শব্দ লাগে না,কখনও কখনও একটা শক্ত জড়িয়ে ধরা শক্ত হাত, একটা নিশ্চিন্ত আশ্রয়ই অনেক কিছু বলে দেয়।

লিমন বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে, ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করে গভীর একটা শ্বাস নেয়।এবার ওকে মুখ খুলতেই হবে অতীতের সেই জমে থাকা কথাগুলো উন্মোচনের জন্য।কারন ওদের লুকানো সত্তা উন্মোচিত হয়ে গেছে। সত্যি টা না বলা ছাড়া আর কোনো পথ নেই।

লিমন নিঃশব্দে সামনের দিকে তাকায়,তারপর ধীর কণ্ঠে বলা শুরু করে…

আমি আর সোহান দুজনেই একে অপরের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলাম। হাই স্কুল থেকে শুরু করে কলেজ পর্যন্ত আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধন ছিল অটুট।আমরা শুধু বন্ধু ছিলাম না, একে অপরের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলাম।একসাথে ক্লাস করা, টিফিন খাওয়া। সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা সবকিছুই আমরা একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করতাম।

একদিন কলেজ শেষে ক্যাম্পাসের ছায়া ঘেরা নিরিবিলি কোণে বসেছিলাম আমরা দুজন। হঠাৎ সোহান মোবাইলটা বের করে আমার সামনে ধরে,
“ দোস্ত, দেখ তো মেয়ে টা কেমন?

আমি অবহেলা ভরে তাকালেও, পর মুহূর্তেই চোখ বড়ো বড়ো করে স্থির হয়ে গেলাম। হৃদপিণ্ডটা যেন হঠাৎ থেমে গেল কিছুক্ষণের জন্য। কারন ঐ ছবির মেয়েটা আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ,আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।কিন্তু শুধু বন্ধু নয়, সে আমার হৃদয়ের সবচেয়ে গোপন কোণে থাকা ভালোবাসা।যাকে আমি নিঃশব্দে ভালোবেসে গেছি দিনের পর দিন,কিন্তু কখনো বলতে পারি‌ নি।

আমি একদৃষ্টিতে ছবিটার দিকে হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম, এমন সময় সোহান উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলে ওঠে,
“ এই মেয়েটাকে আমি অনেকদিন ধরে ফলো করছি। অসম্ভব পছন্দ করি ওকে। ও আমার স্বপ্নের রানী রে ভাই।

সোহানের কথাগুলো শুনেই বুকের ভেতর কেমন যেন ছ্যাঁকা লাগল আমার।মনে হলো কেউ যেন হঠাৎ ছুরি বসিয়ে দিল আমার নির্জন ভালোবাসার ঠিক মাঝখানে।হঠাৎই হৃদয়ের ভেতর থেকে এক অসম্ভব রকমের ধাক্কা এসে আছড়ে পড়ল বুকে।

তারপর আমি নিজেকে অনেক কষ্টে সামলিয়ে নিলাম।সোহানকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম। যতটা সম্ভব ঠান্ডা মাথায় বললাম,
“ দোস্ত, অনেক মেয়ে আছে দুনিয়াতে। এই একটা মেয়ের জন্য এত পাগলামো করিস না। ছেড়ে দে, ভুলে যা ওকে। তোকে মানাবে না ওর সঙ্গে। তোর জন্য আরও ভালো কেউ আছে

সোহান আমার কথা হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল,
“ তুই বুঝবি না লিমন। আমি ওকে চোখের আড়াল করলেই বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠে। আমি ওকে ছেড়ে দিতে পারি না রে, দোস্ত। ও আমার দিলের রানী।

সোহান ছবিটার ঠোঁটের ওপর এক আলতো চুমু আঁকল। সেই চুমু আমার রক্তে আগুন ঢেলে দিল।
মুহূর্তে আমার দৃষ্টিটা ঝাপসা হয়ে এল রাগে, অভিমানে, আর সেই দহনশীল হিংসায়।আমার মনে হলো, আমার সামনে কেউ দাঁড়িয়ে আমার স্বপ্নটাকে তিলে তিলে মাটি চাপা দিয়ে দিচ্ছে। আমার মনে হচ্ছিল,ও একটা ছুরি হাতে নিয়ে আমার নিঃশব্দ ভালোবাসার দেহটাকে টুকরো টুকরো করে কেটে নিচ্ছে, হাসিমুখে।

আমি কিছুক্ষণ হতবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম। মুখে কোনো শব্দ ছিল না, কিন্তু বুকের ভেতরে ঝড় হচ্ছিল একটা নীরব, নির্মম ঝড়। হঠাৎ আগুনের শিখা দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে।চোখে একটা অন্ধকার নেমে আসে। হিংসা, হতাশা একত্রে আমার মনকে কুরে কুরে খেতে শুরু করে। যে মেয়েটা আমার প্রথম ভালোবাসা, বেস্ট ফ্রেন্ড আজ সেই মেয়েটাকে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু নিজের করে পেতে চায়।ভেতরটা ধীরে ধীরে পুড়ে উঠল এক হিংসাত্মক দম্ভে। বন্ধুত্বের সম্পর্ক যেন এক নিমেষে সরে গিয়ে জায়গা করে নিলো প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

আমি ঠাণ্ডা চোখে তাকায় সোহানের দিকে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে তখন ঠিক করে ফেলি,
" ওকে আর বেশি দূরে এগাতে দেয়া যাবে না।ওকে এখানেই থামাতে হবে‌।তবে খুব ঠান্ডা মাথায়।ও আমার ছিলো, আমার আছে আর আমারই থাকবে।এই লড়াই এখন ভালোবাসার নয়, এটা নিজের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার লড়াই। যা আমার, তা আমি কাউকে ছুঁতে দেবো না।হোক সে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।

এই হিংসাটাই আমার মনে‌ প্রতি হিংসার জন্ম দিতে শুরু করে। আমার ভেতরের মানুষটা ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে।আমি বুঝি, এখন আর কিছুতেই পিছু হটার জায়গা নেই। সোহানকে হারাতে হবে কোনো দয়া, কোনো বন্ধুত্ব,কোনো কিছুই আমার ভালোবাসার পথে বাঁধা হতে পারবে না।

তারপর বহুদিন ধরে ভেবেচিন্তে আমি একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাই। এমন কিছু করতে হবে যাতে সাপও মরে আবার লাঠিও না ভাঙে।যাতে কেউ টের না পায়, কিন্তু খেলাটা আমার নিয়ন্ত্রণেই থাকে।আমি রাতজেগে গুগল ঘাঁটি, ফোরাম খুঁজি, অন্ধকার ওয়েবসাইটে ঢুঁ মারি। এবং এক পর্যায়ে খুঁজে পাই Scopolamine নামের এক ভয়ংকর ড্রাগের তথ্য। এটার আরেক নাম The Devil’s Breath,”শয়তানের নিঃশ্বাস’। একটা মানুষের শরীরে এই ড্রাগ প্রবেশ করলেই সে নিজের ইচ্ছাশক্তি হারিয়ে ফেলে। তার স্মৃতি, যুক্তি, চিন্তা সব কুয়াশার ভেতর ডুবে যায়। সে তখন অন্য কারও নিয়ন্ত্রণে, অন্য কারও নির্দেশেই সবকিছু করে ফেলে। জ্ঞান থাকে, কিন্তু ইচ্ছা থাকে না। মস্তিষ্ক বন্দী হয়ে যায় অন্যের নিয়ন্ত্রনাধীন, আর শরীরটা হয়ে যায় একটা পুতুল।

আমি আর দেরি করি না। কিছু খোঁজখবর নিয়ে এক ড্রাগ ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। উচ্চমূল্যে সেই ভয়ংকর ড্রাগ সংগ্রহ করি।আর সেদিন থেকেই শুরু হয় আমার আসল খেলা।নীরব, নিখুঁত, আর প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলে ওঠা এক খেলা।যেখানে নিয়ন্ত্রণ থাকে শুধু আমার হাতে।

#চলবে…

19/07/2025

#ভালোবাসার_বাহুডোরে
নামক পঁচা গল্প টা সন্ধ্যার পর আসবে, ইনশাআল্লাহ

19/07/2025

#ভালোবাসার_বাহুডোরে গল্পটা মনে হয় আপনাদের কাছে খুব বোরিং হয়ে উঠেছে তাই না। এই গল্পটা লিখতে কেন যেন আমার কাছেও তেমন একটা ভালো লাগছে না। খুব তাড়াতাড়ি এই গল্পের সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে।

 #ভালোবাসার_বাহুডোরে #কানিজ_ফাতেমা #সিজন_২ #পর্ব_৫৫ঘরজুড়ে গুমোট নীরবতা। কেউ কোনো কথা বলছে না। মনে হচ্ছে বাতাসটা পর্যন্ত ...
18/07/2025

#ভালোবাসার_বাহুডোরে
#কানিজ_ফাতেমা
#সিজন_২
#পর্ব_৫৫

ঘরজুড়ে গুমোট নীরবতা। কেউ কোনো কথা বলছে না। মনে হচ্ছে বাতাসটা পর্যন্ত স্তব্ধ হয়ে গেছে রাফসানের ওই কথার পরে।মেহেনাজ যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিল না। ওর ঠোঁট কাঁপছে, গলা শুকিয়ে গেছে। সে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে রাফসানের দিকে।

চোখের কোণ ভিজে উঠেছে,গলা কাঁপছে,
“ আপনি কি বললেন? আমার মামা মারা গেছেন। একটা জলজ্যান্ত মানুষ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আর‌ তাঁকেই মুহূর্তে মৃত বানিয়ে দিলেন। আপনি নির্ঘাত পাগল হয়ে গেছেন।

এই মুহূর্তে রাফসানের মুখে একটুও রাগের অভিব্যক্তি নেই। বরং তার চোখে ছড়িয়ে আছে অতল গভীরতা,
“ আমি যা বলছি সেটাই ঠিক। আর তুমি যা দেখছো সেটা সম্পূর্ণ ভুল।যাকে তুমি এতদিন ধরে মামা বলে জেনে এসেছো, সে আসলে একজন প্রতারক। সে তোমার সরলতা, তোমার দুর্বলতা আর ভালোবাসাকে ব্যবহার করেছে নিজের স্বার্থে

রাফসানের কথাগুলো যেন মুহূর্তেই হাওয়ায় ছুরির মতো ছুটে এসে বিদ্ধ করলো মেহনাজকে। ওর চোখ বিস্ফারিত, ঠোঁট কাঁপছে হালকাভাবে। এক পা পিছিয়ে আসে যেন শব্দগুলো আর বাস্তবের মধ্যে কোনো সেতু খুঁজে পাচ্ছে না।

কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে আসে, চোখের কোণে জমে ওঠা জল এবার গড়িয়ে পড়ে,
“ আমি আপনার একটা কথাও বিশ্বাস করি না। আপনি মিথ্যে বলছেন, আমার মামা এমন হতে পারে না।

রাফসান গভীরভাবে মেহনাজের চোখে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। তার চোখে কোনো দয়া নেই, নেই সহানুভূতির ছায়া।আছে কেবল নির্মম বাস্তবতা, নির্মোহ সত্যের অহংকার,
“ তাই নাকি,ঠিক আছে, তাহলে প্রমাণ হয়েই যাক কোনটা সত্যি, আর কোনটা মিথ্যে।

ওর ঠোঁটে ক্ষীণ, তীক্ষ্ণ এক হাসি খেলে যায়।
তারপর রাফসান ঘুরে দাঁড়ায়। ধীর পায়ে এগিয়ে যায় সেই লোকটার দিকে। চোখে চাপা তীব্র রাগ।

রাফসান পরক্ষণে নজর ঘুরিয়ে তাকায় পাশেই দাঁড়ানো ছেলেটার দিকে,
“ কিরে,গল্পটা শুরু থেকে আমি বলবো নাকি তুই শুরু করবি

ছেলেটা একবার দৃষ্টি ঘুরিয়ে লোকটার দিকে তাকায়। লোকটা হালকা মাথা নাড়িয়ে ওকে না বলতে ইশারা করে। সেই মুহূর্তটা রাফসানের চোখ এড়ায় না। তার চোখমুখ ঘন কালো মেঘে ছেয়ে যায়। সে এক ঝড়ের মতো সামনে এসে ছেলেটার কলার ধরে একের পর এক কিল-ঘুষি মারতে থাকে।ছেলেটা কাতরাতে কাতরাতে ফ্লোরে পড়ে যায়। রাফসান এবার ভারি জুতা দিয়ে একের পর এক লাথি মারতে থাকে। ছেলেটার ঠোঁট কেটে রক্ত পড়ে যায়, নাক দিয়ে গড়িয়ে নামে রক্তধারা। ঘরজুড়ে উপস্থিত সবাই ভয়ে স্তব্ধ।

মেহেনাজ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে, কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে। দৌড়ে যায় তার দিকে,
“ থামুন বলছি, লিমন কে এইভাবে মারবেন না বলে দিচ্ছি

কিন্তু রাফসান থামে না,মেহনাজ এক হাতে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।ও ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাচ্ছিল, তৎক্ষণাৎ ওকে রাইসা ধরে ফেলে।

লিমন অবশেষে আর সহ্য করতে না পেরে কাঁপা গলায় বলে ওঠে,
“ ব-বলছি,বলছি,সব বলছি

রাফসান থেমে যায়। ঠোঁটের কোণে কুৎসিত এক হাসি। লিমনের কলার ধরে টেনে তোলে,
“ গুড,ভেরি গুড। তবে তুই গল্প শুরু করার আগে বর্তমান গল্পটা আগে শেষ করি।

এই বলে সে ঘুরে দাঁড়ায়,সেই লোকটার দিকে এগিয়ে আসে। তার মুখের দুই পাশে হাত দিয়ে এক টানে হাইপার রিয়েলিস্টিক মাস্কটা খুলে ফেলে। সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসে আসে তার আসল মুখ।ঘরজুড়ে বিস্ময়ের এক প্রবল বিস্ফোরণ ঘটে যায়। সবাই হতবাক, চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে সেই মুখের দিকে। এক মুহূর্ত যেন সময় থেমে যায়।ঘটনার আকস্মিকতায় ওর মাথায় যেন বজ্রপাত হলো।মেহনাজ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে মুখটার দিকে।ওর কন্ঠস্বর রোধ হয়ে গেছে। ঠোঁট হালকা আধখোলা, ভ্রু দুটো কুঁচকে গেছে অবিশ্বাস আর বিভ্রান্তিতে।শরীর যেন মুহূর্তে জমে গেছে।

মেহনাজ ফিসফিস করে বলে ওঠে,
“ ফিরোজ মামা

ঘরের পরিবেশে যেন এক অদৃশ্য চাপে ভারী হয়ে ওঠে চারদিক। ফিরোজ রহমানের মুখ দেখে কারো কোনো কথা বের হয় না। রাইসার শরীর যেনো থরথর করে কাঁপছে।দিলরুবা বেগম মুখ চেপে ধরে পেছনে এক পা পিছিয়ে গেলেন। চোখেমুখে তার অবিশ্বাস, হতবাক বিস্ময়। ঘর জুড়ে একটা চাপা গুঞ্জন ওঠে।

মেহেনাজ এখনো স্থির দাঁড়িয়ে, ঠায় তাকিয়ে আছে লোকটার দিকে। মুখের সব রং উধাও, ঠোঁট নিস্তেজ।

রাফসান মৃদু গলায় বলে,
“ তোমরা দেখছো, মিথ্যা কীভাবে ছায়ার মতো ঘিরে রেখেছিল আমাদের চারপাশ। এখন সময় এসেছে এই ছায়াকে একে একে সরিয়ে ফেলার।

#চলবে….

18/07/2025

আসসালামু আলাইকুম
সবাইকে জুম্মা মুবারক

কাল বাসায় ফিরতে একটু দেরী হয়েছিলো। আম্মু সঙ্গে সঙ্গে আব্বু কে মেইন রাস্তা অব্দি পাঠিয়ে দিয়েছেআমকে আনতে।সে মুহূর্তে ব...
17/07/2025

কাল বাসায় ফিরতে একটু দেরী হয়েছিলো। আম্মু সঙ্গে সঙ্গে আব্বু কে মেইন রাস্তা অব্দি পাঠিয়ে দিয়েছে
আমকে আনতে।সে মুহূর্তে বুঝে গিয়েছিলাম, যত বড়ই হই না কেন, মায়ের চোখে আমি এখনও সেই ছোট্ট মেয়ে,যার ফিরতে দেরি হলে এখনো আমার মায়ের হৃদয়টা কেঁপে ওঠে। আল্লাহ আমার মা আর বাবা কে দীর্ঘায়ু দান করুক, আমিন

☺️☺️☺️
16/07/2025

☺️☺️☺️

 #ভালোবাসার_বাহুডোরে #কানিজ_ফাতেমা #সিজন_২ #পর্ব_৫৫ঘরের বাতাস ভারী, নিঃশব্দতা এক অদৃশ্য বিস্ফোরণের মতো চারদিকে ছড়িয়ে আ...
15/07/2025

#ভালোবাসার_বাহুডোরে
#কানিজ_ফাতেমা
#সিজন_২
#পর্ব_৫৫

ঘরের বাতাস ভারী, নিঃশব্দতা এক অদৃশ্য বিস্ফোরণের মতো চারদিকে ছড়িয়ে আছে।
রাফসান ইশারা করতেই, দরজার পাশে দাঁড়ানো গার্ড ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে অন্য জনের কালো মুখোশ টা খুলে দিলে।তার দিকে তাকাতেই মেহেনাজের চোখ বিস্ফারিত হয়ে গেল।এক মুহূর্তেই যেন সময় থেমে যায়। শিরায় শিরায় এক বিশাল বজ্রাঘাত যেন নেমে এলো।ওর চোখের পাতা বিন্দুমাত্র কাঁপছে না।প্রতিটি নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। শরীর থরথর করে কাঁপছে, হৃদস্পন্দন যেন থেমে যাবার উপক্রম হয়েছে।

ওর কণ্ঠ যেন নিজেই নিজের দম চেপে ধরেছে। কষ্ট করে, চোয়াল শক্ত করে, খুব অস্পষ্ট স্বরে মেহেনাজ ফিসফিস করে বলে উঠল,
“ মামা

তার পিতৃতুল্য মামা আজ এখানে, বন্দী অবস্থায়। মুখে ক্লান্তি, চোখে দুর্বলতা আর দীর্ঘ যন্ত্রণার ছাপ।এই দৃশ্য মেহেনাজের হৃদয় বজ্রের মত আঘাত করল।ওর চোখ জোড়া রাগে দপদপ করে জ্বলছে।ও এক ঝটকায় রাফসানের দিকে এগিয়ে এলো।

গলার স্বর ক্রোধে জর্জরিত,
“ এটা কেমন ধরনের ভদ্রতা? আপনি আমার মামাকে এই ভাবে আটকে রেখেছেন কেনো? ওহ,বুঝতে পেরেছি।আপনি প্রতিশোধ নিচ্ছেন, তাই না?তাহলে এতো দিন সবটাই একটা প্রতিশোধের নাটক ছিল,ছিঃ।আমি ভাবছিলাম আপনি বদলে গেছেন,ভেবেছিলাম, হয়তো আপনি সেই অন্ধকার রাফসান নন। কিন্তু না,কিছু মানুষ কখনোই বদলায় না। আপনি ঠিক তাদেরই একজন।আপনার মতো মানুষকে ভালোবাসা যায় না, ঘৃণা করতে হয় সবসময়, প্রতিনিয়ত।আমি আর এক মুহূর্তও এখানে থাকবো না। মামাকে নিয়ে এখনই এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আপনার মতো মানুষের সঙ্গে সংসার করা যায় না।

কথা গুলো এক নাগাড়ে বলে,তীব্র অভিমানে মুখ ফিরিয়ে ওর মামার দিকে এগিয়ে যেতে উদ্যত হলো।হঠাৎই রাফসানের হাত ওর কব্জিতে এসে পড়ল। ওর শক্ত মুঠিতে আবদ্ধ হলো মেহনাজের হাত।ও থমকে দাঁড়িয়ে গেলো।ওর চোখে ঠিকরে পড়ছে বিদ্বেষের স্ফুলিঙ্গ।এক মুহূর্ত দেরি না করে এক ঝটকায় হাত সরিয়ে নিলো।ঠাস করে একটা থাপ্পড় মেরে বসলো রাফসানের গালে।সেই থাপ্পড়ে ঘরের বাতাস একদম থমকে গেল। উপস্থিত সবাই হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মেহনাজের দিকে।সবার চোখ জোড়া গোল গোল হয়ে আঁছড়ে পড়ার ভাব।

ঘটনার আকস্মিকতায় রাইসা বসা থেকে শটান করে দাঁড়িয়ে গেল।দিলরুবা বেগম দৌড়ে এসে মেহেনাজ কে সরিয়ে নিলেন,
“ এটা তুই কি করলি, এইভাবে আমার ছেলে টাকে মারলি কেনো।

মেহনাজ ক্ষুরধার কণ্ঠে বললো,
“ যা করেছি বেশ করেছি। একটা নয় আরো অয়েক টা থাপ্পর মারা দরকার ছিল।

দিলরুবা বেগম স্তব্ধ হয়ে গেলেন।চোখ জোড়ায় ফুটে উঠলো রাগের ছায়া, সঙ্গে চাপা অপমান। তারপরও উনি নিজেকে সংযত রাখলেন,
“ তুই কাজটা একদম ঠিক করলি না।কেন শুধু শুধু নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করছিস বল তো।

মেহেনাজ দিলরুবা বেগমের কোন কথার আর কোনো উত্তর দিল না। উনার থেকে খানিকটা সরে গেল
মেহনাজ রাগে গজগজ করছে।

রাফসানের সামনে এসে ওর দিকে আঙুল তুলে চিৎকার করে উঠল,
“ ওর মত অমানুষের এটাই প্রাপ্য। আজকের পর থেকে, আর কোনো দিনও তুই আমাকে স্পর্শ করবি না।তোর মতো একটা নরপশুর ছায়া দেখাও পাপ।তুই যে মানুষ না, সেটা আজ আবার প্রমাণ করলি। আজ যা করলি,এই অপরাধের কোনো ক্ষমা নেই, রাফসান মির্জা।

এই শব্দগুলো যেন বিষাক্ত শলাকা হয়ে ঢুকে গেল রাফসানের ভেতর।ওর চোখে জমে থাকা হতাশা আর রাগের বিষ এক মুহূর্তে ফুটে ওঠে।যার জন্য সে সব হারালো, সব কিছু করলো, সেই মানুষটাই আজ তাকে এমন ঘৃণার চোখে দেখছে? রাফসান আর সহ্য করতে পারলো না।হঠাৎই, যেন সমস্ত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঠাস করে দুটো জোরালো থাপ্পড় বসিয়ে দিলো মেহেনাজের গালে।

রাফসানের চোয়াল শক্ত, ঠোঁট থরথর করছে,
“ আবারও তুই আমাকে ভুল বুঝলি, মেহু?তোর জন্য আমি কী কী করি নি।আর সেই তুই একটা প্রতারকের জন্য আমাকে থাপ্পড় মারলি।

ওর কণ্ঠে ভাঙা হৃদয়ের গর্জন। চোখে এক ধরণের অন্ধকার, যা তীব্র ভালোবাসা থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর।রাফসানের কথা শুনে মেহেনাজ নিঃশব্দে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো।

আক্রোশ নিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো,
“ আমার মামার নামে আর কোনো বাজে কথা বলবেন না বলে দিচ্ছি।

হঠাৎ রাফসান হো হো শব্দে হেসে উঠলো।ওর হাসির ধ্বনি ঘরে একটা অদ্ভুত কম্পন ছড়িয়ে দিল।সবাই উজবুকের ন্যায় ওর দিকে তাকিয়ে আছে।মেহেনাজ এক ধাক্কায় পেছনে সরে এলো, মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেল।

চোখে বিস্ময় আর অপার বিরক্তি,
“ ব্যাস, অনেক হয়েছে। আপনার অনেক নাটক সহ্য করেছি আর নয়।

কথাগুলো বলেই ও দ্রুত এগিয়ে এসে ওর মামার হাত ধরলো,
“ মামা চলো,এই বাড়িতে আর এক মুহূর্ত থাকব না।

মেহেনাজের মামার মুখে এক রহস্যময় হাসি ফুটল।সে সরু দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রাফসানের দিকে।যেন কোনো গুপ্ত বার্তা লুকিয়ে রেখেছে।

ওরা যখন বেরিয়ে যাওয়ার জন্য এগিয়ে গেল,
হঠাৎ মেহেনাজের কানে ভেসে এলো এক কণ্ঠস্বর,
“ ওরা মরে গিয়ে আমার পথ পরিষ্কার হয়ে গেল।
এখন শুধু ওর নামের সম্পত্তির দলিল আর টাকা গুলো নিজের নামে করার অপেক্ষা।

একটি বিকট হাসির আওয়াজ ঘর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল। একা মূলত ডাইনিং রুমের বড় এলইডি মনিটরে চলমান একটি ভিডিওর আওয়াজ ছিল।মেহেনাজের চোখ মুহূর্তের মধ্যে বিস্ময় পেঁচিয়ে বড় হয়ে গেল।ও একবার মামার দিকে আর একবার মনিটরের দিকে তাকালো।ও নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না, যা দেখছে তা কি সত্যিই বাস্তব,নাকি ওর কোনো ভ্রম। কারণ মনিটরের মানুষটা আর ওর সামনে থাকা মানুষ টা একই লোক।ওর মামা মাফুজুর রহমান।

এক অদ্ভুত অবিশ্বাস আর শিহরনের ঝটকা যেন তার শরীর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ল,
“ এ—এই সবের মানে কি

রাফসান কিছু বলার আগেই মাহফুজুর রহমান তীব্র গলায় বলে উঠলেন,
“ রাফসান সবকিছু ষড়যন্ত্র করছে, নাজু।ও বিশ বছর আগের সেই প্রতিশোধ নিচ্ছে

এই কথা শুনে রাফসানের চোখ জ্বলে উঠল ক্রোধে।সে ইশারা করতেই দুজন গার্ড দ্রুত এগিয়ে এসে মাহফুজুর রহমানের মুখে সেলোটেপ লাগিয়ে দিল।আর দুই দিক থেকে শক্ত করে ধরে ফেলল তাঁকে।উনি “উঁম… উঁম… শব্দ করে যাচ্ছে।

মেহেনাজ ওদের কাছে ছুটে গিয়ে চিৎকার করে উঠল,
“ কি করছেন আপনারা? আমার মামাকে ছেড়ে দিন বলছি

রাফসান এগিয়ে এসে ওর হাত ধরে টেনে দূরে নিয়ে গেল।মেহেনাজ ছটফটিয়ে উঠলো।।ওর হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু রাফসানের শক্ত মুঠো থেকে ওর হাত ছাড়াতে পারলো না।

মেহনাজ তেঁতে উঠল,
“ আপনি কি শুরু করেছেন? কেন এই রকম করছেন আমার মামার সঙ্গে?

দিলরুবা বেগম অনেকক্ষণ যাবৎ চুপচাপ সব দেখছিলেন।কিন্তু এবার আর না তিনি রাফসানের দিকে রীতিমতো তেড়ে এলেন।

“ রাসু,তুই এবার সত্যিই সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছিস।
উনি তো আমাদের সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
তারপরও কীসের এত রাগ তোর? আমি বলছি ওনাকে ছেড়ে দে।

রাইসা তৎক্ষণাৎ মায়ের পাশে এসে দাঁড়াল।
ও গম্ভীর গলায় বলল,
“ ভাইয়া, ভাবি কিন্তু একবার তোকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো, ভুলে গেছিস সেটা।তুই যদি আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না চাস,তবে এই সবকিছু এখানেই থামা।

রাফসান এতক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে সবার কথা শুনছিল।হঠাৎ সে বজ্রকণ্ঠে গর্জে উঠল,
“ এনাফ ইজ এনাফ। অনেক হয়েছে আর একটাও কথা কেউ বলবে না কেউ। তোমাদের চোখের সামনে যে আছে, সে একজন প্রতারক।
মেহুর মামা নয়। কারন উনি অনেক আগেই মারা গেছেন।

কথাটা যেনো যেন ঘরে বোমার মতো বিস্ফোরণ ঘটালো। মেহনাজ মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে গেল।চোখ দুটো বিস্ময়ে বিধ্বস্ত, নিঃশ্বাস আটকে গেছে যেন।সবাই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে রাফসানের দিকে।ঘরজুড়ে নেমে এলো এক নিস্তব্ধতা।

#চলবে…

15/07/2025

আজকে গল্প আসবে সন্ধ্যায় ইনশাআল্লাহ

14/07/2025

পরিক্ষার ডেট পরে গেছে।এখন শুধু পড়া আর পড়া। গল্প লেখা আপাতত কমিয়ে আনবো। গল্প আমার শখ আর এই পরিক্ষা টা আমার স্বপ্ন, আমার ক্যারিয়ার।

14/07/2025

হাসতে হাসতে খাট থেকে পড়ে গেলে আমার দোষ নেই

ম্যাডামঃ – বাচ্চারা, বলো তো পদ্মা সেতু কোন নদীর উপর তৈরি করা হয়েছে?

ছাত্রছাত্রীরা সকলে মিলে একসঙ্গে – পদ্মা নদীর উপরে ম্যাম।

ম্যাডামঃ - ভূল, বুড়িগঙ্গা নদীর উপর!

সমস্ত ছাত্রছাত্রী বিভ্রান্ত হয়ে পড়ল এবং তারা তাদের বাড়িতে গিয়ে এটা জানালো। পরের দিন, সমস্ত শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের এসে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করলো যে স্কুলে ভুল শেখানো হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষক – সবার আগে আপনাদেরকে নিজেদের বাচ্চার বকেয়া ফি জমা দিতে হবে, যা গত ছয় মাস ধরে কেউ দেননি এবং ফোন করার পরেও স্কুলে আসেননি। ফি জমা না দেওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতু বুড়িগঙ্গার উপরই থাকবে... 😀 😁😁

 #ভালোবাসার_বাহুডোরে #কানিজ_ফাতেমা #সিজন_২ #পর্ব_৫৪মেহেনাজ মুহূর্তখানেক নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকে। হিমশীতল হয়ে ওঠা বুকের চাপক...
13/07/2025

#ভালোবাসার_বাহুডোরে
#কানিজ_ফাতেমা
#সিজন_২
#পর্ব_৫৪

মেহেনাজ মুহূর্তখানেক নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকে। হিমশীতল হয়ে ওঠা বুকের চাপকে উপেক্ষা করে, সে ধীরে ধীরে নিজের ভিতরটা সামলে নিতে শুরু করে। একরাশ অবিশ্বাস আর অস্বস্তি ওকে গ্রাস করলেও, ওর যুক্তিবোধ হাল ছাড়ে না।

নিজের মনে বিড়বিড় করে ওঠে,
“ না না, আমি যা ভাবছি সেটা ভুল। একদমই ভুল। এমন কিছু হতেই পারে না, অসম্ভব

মেহনাজ চোখ তুলে রাফসানের দিকে তাকালো। ওর দৃষ্টিতে ফুটে ওঠে ক্ষোভ। কণ্ঠে ক্ষুব্ধ প্রতিধ্বনি,
“ দেখুন, আপনার এসব ভণিতা আমার আর মোটেও ভালো লাগছে না। দয়া করে এবার সোজাসুজি বলেন, এটা কার?

রাফসান ওর দিকে এক নিঃশব্দ হাসি ছুঁড়ে দেয়। সেই হাসিতে ছিল একরাশ গোপন সত্যের ছায়া,
“‌ আমি জানি, মেহু বেবি... তোমার সিক্স সেন্স যা বলেছে, সেটাই ঠিক। হান্ড্রেড পারসেন্ট কারেক্ট।

রাফসানের এমন কথায় মেহেনাজের চোখমুখ লাল হয়ে ওঠে রাগে। ঠোঁট থরথর করে কেঁপে ওঠে, কণ্ঠ জ্বলে ওঠে ক্ষিপ্ততায়,
“ উল্টাপাল্টা কথা বলা একদম বন্ধ করুন।কী জানেন আপনি,কী ভাবছি আমি। জেনে এমন ফালতু কথা বলার কোন অধিকার আপনার নেই

রাফসান দাঁতে দাঁত চেপে হেসে ওঠে, সেই হাসিতে যেন অদ্ভুত এক তীক্ষ্ণতা। ওর ভেতরের জমে থাকা ক্রোধ যেন মুহূর্তে মিশে যায় বাতাসে। চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের দৃষ্টিতে কৌতূহল আর বিরক্তি পাশাপাশি বিরাজ করছে।

তাদের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে কানা ঘুষার আওয়াজ।
“‌ ওর কথার মানে কী?

“ কী এমন বলবে এখন?

“এই রাফসান ছেলেটা কে আজ একেবারে অন্য রকম লাগছে

এতক্ষণ চুপ করে থাকা রাইসা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। কণ্ঠ ভার হয়ে আসে ওর,
“ ভাইয়া,তুই কি শুরু করেছিস এসব? দয়া করে থাম, প্লিজ থাম।

রাফসান দৃষ্টি ঘুরিয়ে রাইসার দিকে তাকালো,
“ হ্যাঁ রাইসা, অবশ্যই থামবো। একটু অপেক্ষা কর।যেটা বহু বছর আগে ওরা শুরু করেছিল, আজ সেটার শেষ করার সময় হয়েছে

ওর কথা শেষ হতেই মেহেনাজ তীব্র ক্রোধে ফেটে পড়ে,
“ কিসের শুরু, আর কিসের শেষ।বিশ্বাস করুন, আপনার এই নাটকগুলো আর এক মুহূর্তও সহ্য করতে পারছি না আমি

“ নাটক

এই একটা শব্দ উচ্চারণ করেই, সে হঠাৎ হেসে ওঠে। না, ওটা কোনো স্বাভাবিক হাসি নয়।একটা অট্টহাসি, যেন ওর বুকের ভিতর থেকে লেলিহান আগুন ছুটে বেরিয়ে এসেছে।
হাসির শব্দটা যেন পুরো ঘর জুড়ে প্রতিধ্বনি তুলল।সবাই স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে রাফসানের দিকে। কারো মুখে কোনো শব্দ নেই, চোখগুলো বিস্ময়ে বড় বড়।

কেউ একজন ফিসফিস করে বললো,
“ এ কি সিনেমার সংলাপ, না সত্যিই কিছু ঘটতে যাচ্ছে?

মেহেনাজ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাফসানের দিকে। ওর চোখে একরাশ অবিশ্বাস, একরাশ রাগ, আর একরাশ জিজ্ঞাসু আতঙ্ক।রাফসানকে আজ ওর কাছে একদম অচেনা লাগছে।চেনা মুখ, কিন্তু অজানা চরিত্রের আবরণে মোড়ানো।

ওর মনে যেন একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে,
" এই রাফসান কি আদৌ সেই রাফসান, যাকে আমি চিনতাম

মুখে কঠোরতা থাকলেও কণ্ঠে একটা অচেনা দুর্বলতা।ওর গলায় কাঁপুনি,
“ আপনি আসলে কী বোঝাতে চাইছেন বলুন তো

রাফসান এবার একটু এগিয়ে এসে ধীরে ধীরে বলে ওঠে,
“ আমি আজ কোন কিছু বোঝাতে নয়,দেখাতে চাই।সেই মুখগুলো, যারা মুখোশ পরে তোমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করেছে। দেখাতে চাই, কারা আমার আর তোমার সম্পর্কের মধ্যে বিষ ছড়িয়ে দিয়েছিলো। কারা এতদিন ভুল বুঝিয়ে আমার বাবা আর মায়ের কাছ থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে রেখেছিল।

কথা গুলো বলেই রাফসান ইশারা করতেই, দরজার বাহিরে থেকে একজন গার্ড এসে সামনে ধীরে ধীরে একজনের মুখের কাপড় সরিয়ে ফেলে।ঘরে এক মুহূর্তে যেন নিঃশব্দ বিস্ফোরণ ঘটে।মেহেনাজের চোখ স্থির হয়ে যায়। ঠোঁট ফাঁকা হয়ে আসে। ওর সমস্ত শরীর যেন জমে গেল।মেহেনাজ পেছনে এক ধাপ টেনে নেয় নিজেকে।ঘরে উপস্থিত তাকিয়ে আছে সেই মুখটার দিকে।

রাফসানের ঠোঁটের কোণে আবারও সেই ঠান্ডা, নির্দয় হাসি,
“ চেনা লাগছে তো, মেহু?

মেহেনাজ এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।কিন্তু তবুও চোখ সরায় না সেই মুখ থেকে।ওর কণ্ঠ ফেটে যাচ্ছে, কিন্তু শব্দ কাঁপছে অবিশ্বাসে,
“ ত---তুই এখানে। কিন্তু তু---তুই তো

শব্দ যেন আর বের হয় না। বিশ্বাস আর ভয়ের এক অদ্ভুত দ্বন্দ্বে আটকে যায় বাক্যগুলো।

ঠিক তখনই, রাফসান তড়াক করে উত্তর দিলো,
“ মারা গিয়েছিল, তাই তো। কিন্তু দেখো মৃত মানুষ কি সুন্দর করে জীবিত হয়ে তোমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। পৃথিবীর ইতিহাসে এটা বিরল তাই না বলো

মেহেনাজ যেন স্তব্ধ। চোখ দুটো বিস্ফারিত।ঠোঁট কাঁপছে, কিন্তু কোনো শব্দ নেই। ওর মুখে বিস্ময়ের ছায়া, চোখে অপার অবিশ্বাস। চোখে জড়তা কন্ঠে একরাশ প্রশ্ন,
“ এটা কি স্বপ্ন, নাকি বাস্তব?ও সত্যিই বেঁচে আছে

ঘরের বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। কানাঘুষা নেই, কোনো প্রশ্ন নেই। কেবল নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে।হৃদয়ের ধুকধুক আর এক চাপা বিস্ময়ের শ্বাসরুদ্ধ পরিবেশ।

রাফসান চোখ বন্ধ করে তপ্ত এক শ্বাস নিল।ধীরুজ কন্ঠ তীব্র হলো সহসা,
“ এখনও আরেকটা মুখ,আরও একটা মুখোশ পড়া চরিত্রের পরিচয় বাকি আছে মেহু। যা তোমার সমগ্র অস্তিত্বকে বিলীন করে দেবে। উলটপালট করে দেবে তোমার সমস্ত ভাবনা-চিন্তাকে।

#চলবে…

(কেমন ঝটকা লাগলো আজকের পর্ব টা পড়ে)

Address

Bhola
Barishal

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when কানিজ ফাতেমা - Kaniz Fatema posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to কানিজ ফাতেমা - Kaniz Fatema:

Share