13/08/2025
হযরত ইউসুফ (আ.)-এর গল্প: ধৈর্য, বিশ্বাস এবং ক্ষমার জয়
শুরুর কথা: স্বপ্ন ও ভাইদের ঈর্ষা
হযরত ইউসুফ (আ.) ছিলেন হযরত ইয়াকুব (আ.)-এর পুত্র। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সুন্দর, বুদ্ধিমান এবং নেককার। অল্প বয়সে তিনি একটি অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেন, যেখানে তিনি দেখেন যে, এগারোটি তারা, সূর্য এবং চাঁদ তাঁকে সিজদা করছে। তিনি এই স্বপ্ন তাঁর পিতা হযরত ইয়াকুব (আ.)-এর কাছে বর্ণনা করেন। ইয়াকুব (আ.) বুঝতে পারেন যে, এটি একটি ঐশী সংকেত এবং ইউসুফ (আ.)-এর ভবিষ্যৎ মহান হবে। তিনি ইউসুফ (আ.)-কে পরামর্শ দেন এই স্বপ্ন তাঁর ভাইদের কাছে না বলতে, কারণ তাঁর ভাইরা ইউসুফ (আ.)-এর প্রতি ঈর্ষান্বিত ছিল। ইউসুফ (আ.) ছিলেন তাঁর পিতার প্রিয় পুত্র, এবং এই ভালোবাসা তাঁর ভাইদের মনে ঈর্ষার সৃষ্টি করেছিল।
ভাইদের ষড়যন্ত্র ও কূপে নিক্ষেপ
ইউসুফ (আ.)-এর ভাইরা তাঁর প্রতি ঈর্ষার কারণে একটি ভয়ানক পরিকল্পনা করে। তারা ইউসুফ (আ.)-কে দূরে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা তাঁকে একটি গভীর কূপে ফেলে দেয় এবং তাঁর পিতার কাছে মিথ্যা বলে যে, ইউসুফ (আ.)-কে নেকড়ে খেয়ে ফেলেছে। তারা ইউসুফ (আ.)-এর জামায় রক্ত লাগিয়ে তাঁর পিতার কাছে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে। হযরত ইয়াকুব (আ.) এই খবরে গভীরভাবে শোকাহত হন, কিন্তু তিনি ধৈর্য ধরে আল্লাহর উপর ভরসা রাখেন।
ইউসুফ (আ.) কূপের অন্ধকারে একা থাকেন। তিনি ভয় পান, কিন্তু তাঁর হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি অটুট বিশ্বাস ছিল। তিনি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন এবং ধৈর্য ধরেন। আল্লাহ তাঁর প্রার্থনা কবুল করেন। একটি কাফেলা কূপের কাছে পানি নিতে এসে ইউসুফ (আ.)-কে উদ্ধার করে। কিন্তু তারা তাঁকে দাস হিসেবে মিশরে বিক্রি করে দেয়।
মিশরে দাসত্ব ও পরীক্ষা
মিশরে ইউসুফ (আ.)-কে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি, আযীযে মিসর, কিনে নেন। তিনি ইউসুফ (আ.)-এর বুদ্ধিমত্তা ও সততা দেখে তাঁকে নিজের ঘরের দায়িত্ব দেন। ইউসুফ (আ.) তাঁর কাজে এতটাই দক্ষতা দেখান যে, আযীয তাঁকে পরিবারের একজন সদস্যের মতো বিবেচনা করতে শুরু করেন।
কিন্তু এখানেও ইউসুফ (আ.)-এর জন্য পরীক্ষা আসে। আযীযের স্ত্রী, যিনি যুলাইখা নামে পরিচিত, ইউসুফ (আ.)-এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁকে পাপের পথে ডাকেন। ইউসুফ (আ.) তাঁর ঈমান ও তাকওয়ার কারণে এই প্রলোভন প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, “আমি আমার প্রভুর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি।” (সূরা ইউসুফ, আয়াত ২৩)। এই প্রত্যাখ্যানের ফলে যুলাইখা ক্রুদ্ধ হন