13/05/2025
তাহাজ্জুদ নামাজ (তাহাজ্জুদ সালাত) ইসলামে একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ নফল (ঐচ্ছিক) নামাজ, যা রাতে ঘুম থেকে উঠে আদায় করা হয়। এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হিসেবে গণ্য করা হয় এবং কুরআন ও হাদীসে এর বহু ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
🌙 তাহাজ্জুদ নামাজ কী?
তাহাজ্জুদ শব্দটি এসেছে আরবি “هجّد” ধাতু থেকে, যার অর্থ ঘুম ভেঙে ওঠা। সুতরাং তাহাজ্জুদ নামাজ হলো এমন একটি নফল নামাজ যা রাতে ঘুমানোর পর উঠে আদায় করা হয়। এই নামাজ আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের একটি চিহ্ন হিসেবে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে।
🕰️ তাহাজ্জুদ নামাজের সময়
রাতের যে কোনো সময় tahajjud নামাজ আদায় করা যায়, তবে:
সর্বোত্তম সময়: রাতের শেষ তৃতীয়াংশ (শেষ ভাগ), অর্থাৎ সাহরির একটু আগে।
এই সময়টিকে ‘লাইলুল মুযযাম্মিল’ বলা হয়—যেখানে দোয়া কবুলের সম্ভাবনা সর্বাধিক।
⏳ রাতের তিন ভাগে বিভাজন:
প্রথম ভাগ: ইশার পর থেকে রাতের ১/৩ সময় পর্যন্ত।
দ্বিতীয় ভাগ: মধ্যরাত থেকে পরবর্তী ১/৩।
তৃতীয় ও সর্বশেষ ভাগ: শেষ ১/৩ রাত – এ সময়টিই দোয়া ও ইবাদতের জন্য সবচেয়ে উত্তম।
📖 কুরআনে তাহাজ্জুদের উল্লেখ
“রাতের এক অংশে উঠ এবং তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করো, এটি তোমার জন্য অতিরিক্ত (নফল)। আশা করা যায়, তোমার প্রতিপালক তোমাকে ‘মাকাম মাহমুদ’ (উচ্চ মর্যাদা) দান করবেন।”
— সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ৭৯
“তারা রাতে অল্পই ঘুমায়। শেষ রাতে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে।”
— সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত ১৭-১৮
🕋 হাদীসে তাহাজ্জুদের ফজিলত
রাসূল (সা.) বলেছেন:
“রাতের নামাজ হলো তোমার রবের প্রতি নিকটবর্তী হওয়ার উপায়, তোমার গোনাহ মোচনের মাধ্যম, পাপ থেকে বিরত থাকার মাধ্যম এবং দেহের জন্য রোগ প্রতিরোধক।”
— তিরমিযী, হাদীস: ৩৫৪৯
তিনি আরও বলেন:
“তোমরা রাতে নামাজ পড়ো, কেননা তা নেককারদের অভ্যাস, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উপায়।”
— মুসলিম, হাদীস: ৭৫৭
এক হাদীসে আছে:
“রাতের শেষ অংশে আল্লাহ তাআলা পৃথিবীর আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেন:
‘কে আছো আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব?
কে আছো আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দেব?
কে আছো আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব?’”