
07/04/2025
বাটা ইজরায়েলি পণ্য নয়—কেন বয়কট ও ভাংচুর যুক্তিসঙ্গত নয় তা কিন্তু একটা গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়।
১. বাটার মালিকানা ও ইজরায়েলি সংযোগ
বাটা একটি চেক প্রজাতন্ত্র-ভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি, যার ইজরায়েলের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। গুজব ছড়িয়ে নির্দোষ ব্র্যান্ডকে টার্গেট করা হচ্ছে, যা ফিলিস্তিনি সংহতির নামে অপ্রাসঙ্গিক।
২. ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেল ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি
বাংলাদেশে KFC, পিৎসা হাট বা ডোমিনোজের মতো ব্র্যান্ডগুলো স্থানীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে পরিচালিত হয়। মূল কোম্পানির সাথে চুক্তি শেষ হলে স্থানীয় মালিকরা লাভবান হন, আন্তর্জাতিক কোম্পানি নয়। ভাংচুরে ক্ষতি হয় দেশি উদ্যোক্তা ও কর্মচারীদের, যারা এই ব্যবসায় জীবিকা নির্বাহ করে। আপনি চাইলে এভোইড করেন, কিন্তু কারো পারসোনাল প্রপার্টি ক্ষতি করে আল্লাহর কাছে অপরাধী হয়ে যাবেন কেন? আপনি কনজিউম না করলে এমনিতেই সেই ব্যবসায়ী ওই প্রডাক্টগুলি আর বাজারজাত করবে না।
৩. গুজবের পেছনে ব্যবসায়িক স্বার্থ?
ইজরায়েলি পণ্যের তালিকায় এমন ব্র্যান্ডও যুক্ত হচ্ছে, যাদের ইজরায়েলের সাথে কোনো সংযোগ নেই। কম্পিটিটররা গুজব ছড়িয়ে প্রতিপক্ষের বাজার নষ্ট করতে পারে—এটি একটি যৌক্তিক সন্দেহ।
৪. আসল সংগ্রাম কোথায়?
১৯৮২ সালে ৮,০০০ বাংলাদেশি (অধিকাংশই মুক্তিযোদ্ধা) ফিলিস্তিনের গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। বর্তমানে ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের সাহায্য করতে চাইলে স্থানীয় দোকান ভাঙার বদলে সরাসরি সাহায্য বা আন্তর্জাতিক চাপ তৈরির চ্যানেলে সম্পদ বিনিয়োগ করুন।
৫. ইলন মাস্ক ও স্টারলিংক: আসল শত্রুকে চিনুন।
ইজরায়েলি হত্যাযজ্ঞের মূল হোতা আমেরিকা ও তাদের মদদপুষ্ট কর্পোরেট শক্তি যেমন ট্রাম্প, নেতানিয়াহু এবং ইলন মাস্ক। মাস্কের "স্টারলিংক" ইজরায়েলি সামরিক অপারেশন সমর্থন করছে। বাংলাদেশে স্টারলিংক চালু হলে তার রাজস্ব গাজায় রক্তপাতের হাতিয়ারে পরিণত হবে। সরকারের উচিত স্টারলিংক বন্ধ করা—এটাই প্রকৃত বয়কটের লক্ষ্য হওয়া দরকার।
সুতরাং, গুজব এড়িয়ে সঠিক তথ্যে ভিত্তি করে বয়কট করুন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করে ফিলিস্তিনের কোনো উপকার হয় না। ইজরায়েল-মার্কিন জোটের মূল অর্থনৈতিক স্তম্ভ (স্টারলিংক, অস্ত্র কোম্পানি) টার্গেট করুন। সম্পত্তি ধ্বংসের বদলে ফিলিস্তিনি সাহায্য তহবিল বা কূটনৈতিক চাপে অংশ নিন।