29/06/2024
আমাদের আশেপাশে দেখা সকল সাপই কি বিষধর?উত্তর হল -না।আমাদের দেশে খুব অল্প প্রজাতির সাপ বিষধর।
বর্তমানে আমাদের অনেকের মধ্যে সাপ নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।বাংলাদেশে ৮০ প্রজাতির সাপের সন্ধান পাওয়া গেলেও সচরাচর দেখা যায় এমন ৬ প্রজাতির সাপ বিষধর।বাকীগুলো মৃদু বিষধর বা নির্বিষ যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর না।
বাংলাদেশে দেখা সচরাচর দেখা যায় ৬ প্রজাতির বিষধর সাপের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিব-
১/খৈয়া গোখরা(Specled cobra)
বিষের ধরণ: নিউরোটক্সিন
প্রাপ্তিস্থান: বাংলাদেশের সকল অঞ্চলেই কম বেশি দেখা যায়।
চেনার উপর: মাথার পিছনে "V" আকৃতির চিহ্ন থাকবে।
২/পদ্ম গোখরা(monocled cobra)
বিষের ধরন: নিউরোটক্সিন
প্রাপ্তিস্থান: বাংলাদেশের সকল অঞ্চলেই কমবেশি দেখা যায়।
চেনার উপায়: মাথার পিছনে গোলাকৃতির চিহ্ন থাকবে।
৩/কালাচ(Common krait)
এই সাপটিকে আমাদের দেশে নিরবঘাতক বলা হয়।বিশেষ করে এরা রাতের বেলায় চলাচল করে এবং মানুষের বাসায়,বিছানায় উঠে,ঘুমের মধ্যে কামড়ায়।এদের দাত ছোট হওয়ায় কামরের শুরুতে হালকা ব্যথা অনুভব হওয়াই ঘুমের মধ্যে অনেকে এটা গুরুত্বসহকারে দেখেন না,ফলে ঘুমের মধ্যেই অনেকে মারা যায়।
বিষের ধরন: নিউরোটক্সিন
প্রাপ্তিস্থান: বাংলাদেশের সকল অঞ্চলেই কমবেশি দেখা যায়।
চেনার উপায়:কালো শরীরের উপর সাদা রাউন্ড।কৃষ্ণকালাচ পুরো শরীরই কালো থাকে।
৪/চন্দ্রবোড়া(Russel Viper)
এটি বিষধর সাপগুলোর মধ্যে অন্যতম,অতি অল্প সময়েই কামড়ায়।বাংলাদেশে এই সাপটিকে এক সময় বিলুপ্ত ঘোষনা করলেও,বর্তমানে আমাদের দেশে এর আধিক্য বেড়েই চলেছে।
বিষের ধরন: হেমোটক্সিন
প্রাপ্তিস্থান: রাজশাহীর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চল,খুলনা বিভাগের কিছু কিছু অঞ্চল ও পদ্মানদীর তীরঘেষা অঞ্চল।
চেনার উপায়: দেহ মোটা,শরীরের মধ্যে গোলাকৃতি ছাই কালার ছোপ,লেজ খাটো।
৫/শঙ্খীনী( Banded krait)
এটি অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির এবং লাজুক স্বভাবের।তীব্র বিষধর হলেও এরা মানুষকে কামড়ানোর রেকর্ড খুব কম।এরা জনসমাগম এরিয়ে চলে এবং বিষধর সাপ খেয়ে থাকে।
বিষের ধরন: নিউরোটক্সিন
প্রাপ্তিস্থান: এটি সারাদেশেই কমবেশি দেখা যায়,পার্বত্য চট্রগ্রাম ও সিলেটের পাহারি অঞ্চলে এদের আধিক্য বেশি।
চেয়ার উপায়: কালো শরীরের মধ্যে হলুদ ডোরাকাটা।
৬/লাল গলা ডোরা(Red necked keelback)
এটি বাংলাদেশের একমাত্র বিষাক্ত ও বিষধর সাপ।
এটির কামড় বা স্পর্ষ লাগলেই মানুষ আক্রান্ত হয়,দেশে এটির এন্টিভেনম এখনো পাওয়া যাইনি।জাপান ছাড়া পৃথিবীর কোথাও এর প্রতিষেধক পাওয়া যায় না।
প্রাপ্তিস্থান:পাহারি অঞ্চলে বেশি দেখা যায়।
বিষধর ও বিষাক্ত এর মধ্যে পার্থক্য কি?
কামড় বা আচরে আক্রান্ত হলে বিষধর।স্পর্শে আক্রান্ত হলে বিষাক্ত।
সাপের কামড়ালে করণীয়-
১/ আতংকিত না হয়ে,যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে,যেখানে এন্টিভেনম পাওয়া যায়।
২/কামড়ের জায়গা শক্ত কিছু দিয়ে হালকা করে বাধতে হবে।
৩/ রোগীকে কোনো ধরনের ঝার ফুক বা,কবিরাজ ওঝার কাছে না দেওয়া।কারন কবিরাজ,ওঝা কখনো সাপে কামড়ানো রোগী ভালো করতে পারে না।
৪/ রোগীর আক্রান্ত স্থান নড়াচড়া না করা(নড়াচরা করলে রক্ত দ্রুত সারা শরীর প্রবাহিত হয়) এবং রোগীকে কোনো ধরনের খাবার না খাওয়ানো।
সাপের কামড় থেকে বেচে থাকার উপায়-
১/ বাড়ীঘর ও আশে পাশে বন জঙ্গল পরিষ্কার রাখা।
২/ রাতে চলা ফেরার সময় লাইট জালিয়ে চলাফেরা করা।
৩/ ঘুমানোর সময় মশারী টাঙিয়ে ঘুমানো।
৪/ বাড়ীর আশপাশ ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দেয়া।