24/08/2024
তারপরেও আমাদের কত অহমিকা! কত বাহাদুরি!
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ☑
স্বৈরাচার হাসিনার যত অত্যাচার, নির্যাতন আর জুলুম হতো তার অনেককিছু এক্সিকিউট করা হতো দেশের বিচার বিভাগের মাধ্যমে।
বলতে গেলে দেশের বিচার ব্যবস্থাটাকে খুনি হাসিনা একদম নিজের ব্যক্তিগত প্রতিশোধ আর প্রতিহিংসার হাতিয়ার বানিয়ে ফেলেছিলো।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার এই বিচার বিভাগের একজন অন্যতম সহযোগী ছিল এই কালা মানিক। 🖤
আসুন তার ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনের কিছু খুটিনাটি ব্যাপার স্মরণ করার চেষ্টা করি আমরা....😁⬇️
🔸 ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে মানিক মিয়া তার কর্মজীবন শুরু করেন।
🔸 ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলাদেশের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন।
🔸 এরপর ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে অতিরিক্ত বিচারক হিসাবে বাংলাদেশ হাইকোর্টে নিয়োগ দেয়।
🔸 পরবর্তীতে ওই বছর বিএনপি ক্ষমতায় আসার পরে অবশ্য তার পূর্বের নিয়োগটি নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হয়।
🔸 ২০০৩ সালে এই কালা মানিক তার গাড়িকে স্যালুট না দেওয়ার কারণে ট্রাফিক সার্জেন্টদের আদালতে কান ধরে উঠবস করিয়েছিলেন। এই ঘটনার মাধ্যমেই শুরু হয় তাকে নিয়ে বিতর্কের খেলা......।
এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা নিয়ে পরবর্তীতে আদালত পাড়ায় অনেক ঝামেলা তৈরী হয়।
কতটা অহংকারী আর ক্ষমতার দাপট মনে লালন করলে মানুষ এমন করতে পারেন জাস্ট ভাবুন একবার!
🔸 এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তাদের প্রিয় কালা মানিককে আবার হাইকোর্টে একজন পূর্ণ বিচারক হিসাবে নিযুক্ত করেন।
🔸 ২০১২ সালে মানিক মিয়ার বিপক্ষে ২৯টি অভিযোগ উঠে। যার মধ্যে একটি হচ্ছে - লন্ডনে মোট ৩২,০০০ ব্রিটিশ পাউন্ড দিয়ে তিনটি বাড়ি কেনা, যেখানে তিনি সেগুলির আয়ের উৎস গোপন করেছিলেন।
🔸 ২০১৩ সালে মানিক মিয়ার চেয়ে সিনিয়র ২১ জন বিচারক থাকা সত্বেও তাদেরকে বাদ দিয়ে হাসিনা তাকেই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পদোন্নতি করান।
এই ইস্যুতে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সাহেব তাকে অপসারনের আওয়াজ তোলেন।
🔸 পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এই মানিক যখন অবসর যান, তখন সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন তাকে বিদায় সংবর্ধনা পর্যন্ত দিতে নারাজ ছিল। কারণ হিসেবে বলা যায় মানিকের একচ্ছত্র ক্ষমতা আর গোড়ামী।
🔸 এছাড়াও এই ভদ্রলোক নাকি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিমানে ইকোনমি টিকিট কিনে জোরপূর্বক ব্যবসায়িক শ্রেণির আসনে বসে থাকতো😆
🔸 সর্বশেষ অবসরে যাওয়ার পরেও নাকি তিনি দীর্ঘদিন সরকারি বাড়ি দখল করে ভোগ করে যাচ্ছিলেন সবকিছু।
✅ এই হলো কালা মানিক খ্যাত বিচারপতির আমলনামা। যদিও আমরা এই ভদ্রলোকটাকে চিনতে পারি সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়কার বিতর্কিত টকশোর মাধ্যমে।
ক্ষমতা থাকাকালীন যাচ্ছেতাই ভাবে উনি সবকিছুর অপব্যবহার করেছিলেন। এমনকি শেষ বয়সে এসেও নিজের গোড়ামী আর অহমিকাপূর্ন ভাবটাকে বিন্দু পরিমাণ দমাতে পারেননি।
এখন আজকে গ্রেফতার হওয়ার পর তার এই বৃদ্ধ বয়সের অসহায়ত্বের ছাপ দেখে হয়তো আমার মতো অনেকের সরল মনে ওনার জন্য সহানুভূতি জাগতে পারে। বাট এই সহানুভূতির ১% ও উনি ডিজার্ব করে না।
✅ মানিক মিয়ার ব্রিটিশ ও বাংলাদেশী উভয়ে দেশের নাগরিকত্ব, অঢেল সম্পত্তি, টাকা থাকার পরেও তার আজকে এই করুণ দশা।
এতসব ইতিহাস থেকেও যদি আমরা শিক্ষা গ্রহণ না করি তাহলে সে আমাদের ব্যর্থতা, জাতি হিসেবে আমাদের দুর্ভাগ্য।
লেখা : Mahmudul H Sajib
তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া
২৪ আগস্ট, ২০২৪
#বিচারপতি_মানিক