26/06/2025
আজ থেকে শুরু হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা।
কিন্তু শুরুটা ছিল না সবার জন্য সমান।
ছবিতে যে মেয়েটিকে দেখছেন, তার বাবা নেই। আজ সকালেই তার মা স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মেয়েটি একা, ভেঙে পড়া পরিবারে কাঁধে তুলে নিয়েছে সাহসের ভার। মাকে হাসপাতালে রেখে ছুটে এসেছে পরীক্ষার হলে। কিন্তু কিছুটা দেরি হয়ে যাওয়ায় পরীক্ষাকেন্দ্র—বাংলা কলেজ—থেকে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
সে কাঁদছিলো। ভেঙে পড়ছিলো।
আমরা কি একবারও ভাবছি—এই মুহূর্তে আমরা কী হারাচ্ছি?
একটি বোর্ড পরীক্ষায় কেউ ইচ্ছে করে দেরি করে না। বাবাহীন মেয়েটির আজ মা-ও মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। তবুও সে পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলো, একটা ভবিষ্যতের স্বপ্ন ধরে রাখতে চেয়েছিলো। তাকে সেই সুযোগটুকু দেওয়া হলো না।
মানবিকতা আগে, না নিয়ম আগে?
এই প্রশ্ন এখন ঘুরে ফিরে আসে।
যখন দেশজুড়ে লুটপাট, অন্যায়, অবিচার—সবকিছুই যেন নিয়মের ঊর্ধ্বে—তখন এই একটা মেয়ে পরীক্ষা দিলে কি পুরো দেশটাই ধসে পড়তো?
আসলে আমরা মানুষ থেকে কি আরও ভয়ংকর কোনো কিছুতে রূপ নিচ্ছি?
কীভাবে একজন মা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে, আর মেয়ে পরীক্ষার হলে দাঁড়িয়ে কাঁদছে—এই দৃশ্য আমাদের নাড়া দেয় না?
একটা বছর নষ্ট হলো তার। কে নেবে এর দায়িত্ব?
পরিবারে নেই কোনো অভিভাবক।
কে দেবে তার প্রশ্নের উত্তর?
আমরা কবে মানুষ হবো?
কেন বিপদে কেউ কারও পাশে দাঁড়াতে পারি না?
আমাদের ভেতরের মানুষটা কেন এত পচে যাচ্ছে?
আমি বিনীতভাবে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাই—
বিশেষ ব্যবস্থায় মেয়েটিকে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হোক।
মানবিকতা মরে যায়নি—এটা প্রমাণ করুন।
এতে দেশ রসাতলে যাবে না, বরং একটি সাহসী উদাহরণ সৃষ্টি হবে।
ভবিষ্যতের একজন সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট হয়ে যাক—আমরা সেটা চাই না।
সবাইকে বলছি—আওয়াজ তুলুন।
এই মেয়েটির পাশে দাঁড়ান।
এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন।