AMENA INSAN ALO

AMENA INSAN ALO সঙ্গীত,নিত‍্যকলা,কবিতা আবৃত্তি ,গল্প কাহিনী, প্রতাবাদী ও জ্ঞান তথ‍্য।

17/08/2025

আজ একটি ছোট্ট শিশুর জীবনের করুন কহিনী নিয়ে লিখব।লেখক হিসেবে তার এই ঘটনাটি সত্যিই আমাকে ব্যথিত করেছে।জানিনা তা নিজ গুনে আপনাদের স্বার্থতকতার সাথে বোঝাতে পারব কিনা।বা বোঝার মত সেই দিব্যজ্ঞান ও কোমল হৃদয় সবার আছে কিনা?
ভাষাবিদরা সত্যি বলেছেন মনের ভার এত সূক্ষ যা ভাষার মাধ্যমেও প্রকাশ করা যায় না।

নাটকটি শুরু হয়েছে সেই শিশু মেয়েটির মা এবং মেঝ খালার মধ্যে কথোপকথন দিয়ে।
এটি একটি গ্রাম্য পরিবেশের ঘটনা।
(( নাটকের প্রথম দৃশ্য ))

গ্রামিন পরিবেশের প্রাকৃতিক আর সূর্য উদয় দিয়ে শুরু।খুকু নামের ছোট্ট মেয়েটির বয়স সাত চলছিল।তার সময় বয়সিদের সাথে সে উঠানে কুত কুত খেলা খেলছিল।উঠানের এক পাশে তার মা আর মেঝ খালা দুজন কথা বলছিল।দুবোনের মধ্যে মেয়েটির খালা বড় ছিল।

(১) খালাঃ ছোট্ট মেয়েটির কুতকুত খেলার দিকে তাকিয়ে বলল তোর মেয়ে খুকুত ভালোই বড় হয়েছে ,দুদিন পরেই বিয়ে দেয়া যাবে।
(২) মাঃ এইত সাত বছর চলছে আপা।মেয়ে মানুষত তাই হাতে পায়ে তাড়াতাড়ি বড় হয়ে গেছে।
(৩) খালাঃ ছোট বোনকে হেসে বলল তোর মেয়ে খুকুকেই আমার ছেলে মমিনের বউ করে আনব।ছেলের বউ আমর খুব পছন্দ হয়েছে।আমার সাথে ভালো জগড়া করবে পারবে।
( খালার ছেলে মমিনের দুই বন্ধু বাড়িতে ঢুকা অবস্থায় খালার কথার সাথে সায় দিয়ে বলল)

(৪)বন্ধুরাঃহে খালা ঠিকি বলেছ খুকুকেই আমাদের মমিনের বউ করে আনব।ছোট্ট বউকে কোলে নিয়ে ঘুরবে ঠিক বিপরীত রহিম রুব্বানের মত। (খুকুকে ডাক দিয়ে বলল) কিগো মনির ছোট্ট লক্ষি বউ ,মমিনের বউ হবা?
(৫)খুকুঃ লাজুক ভাবে মাথা ঘুরিয়ে নিল।
(৬)বন্ধুরাঃ ও মা ছোট্ট বউয়ের কত শরম দেখ।থাক আর সরমাই না।আমরাত সবাই মজা করলাম।তুমি আগে বড় হয় তারপরে তোমাকে একটা সাহেবের সাথে বিয়ে দিব ঠিক দেখতে রাজকুমারে মত হবে।
খালা মমিন কোথায়?
(৭)মমিনঃ মমিন ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বলল এইত আমি এখানে।
( মমিনের বয়স ২১-২২ হবে )
(৮)বন্ধুরাঃ ঘরে বসে কি করসি? চল নদীর পারে যাই।
(৯)মমিনঃ বন্ধুদের বলল চল যাই।একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে পিছন ফিরে খুকুকে বলল খুকু আমার সাথে নদীর পারে যাবে ?মজা কিনে দিব।
(৯)খুকুঃ ছোট্ট খুকু খুশিতে খেলা রেখেই বলল মজা কিনে দিবে ? তাহলে
চল।
(১০)বন্ধুরাঃহেসে হেসে মমিনকে বলল কিরে বউকে কি সাথে করেই নিতে হবে।দেখিস বড় বউয়ের সাথে ছোট বউয়ের আবার জগড়া বাদিয়ে ‍দিস না।
(১১)মমিনঃমমিন বন্ধুদের সাথে জবাব না দিয়ে শুধু মুচকি হাসল।
(১২)খুকুঃ নদীর পারে যেতে যেতে খুকু মমিনকে আধ আধ ভাষায় বলল ভাইয়া আমি কিন্তু চিপ্স খাব,আইসক্রিম খাব,চকলেট খাব।
(১৩)মমিনঃমুচকি হেসে খুকুকে বলল আচ্ছা তোমাকে পুরো দোকানটাই কিনে দিব।
(( নাটকের দ্বিতীয় দৃশ্য ))

নদীর পারে যাওয়ার পরে মাইকিং এর শব্দ শুনা যাচ্ছে।কারা যেন মাইকিং করে বলছে।আজ রাত আটটায় চেয়েরমেনের মাঠে বিশ্বাল এক যাত্রাপালার আয়জন করা হয়েছে।তাই সবাইকে আমন্ত্রিত।

(১৪)মমিনঃ মাইকিং এর কথা শুনে মমিন খুকুকে বলল।খুকু যাত্রা দেখতে যাবে?
(১৫) খুকুঃ হে যাব।
(১৬)মমিনঃ আচ্ছা তাহলে রাতে তোমাকে নিয়ে যাব।
(১৭)খুকুঃ যাত্রা কি ভাইয়া?
(১৮)মমিনঃ এটা একটা নাটক।অনেক মানুষ মিলে নাটকের একটা কাহিনীতে অভীনয় করে।

(( নাটকের তৃতীয় দৃশ্য ))

রাতে খালাত ভাই মমিনের সাথে খুকু পায়ে হেটে যাত্রাপালার উদ্দেশ্যে রওনা হল।অচেনা পথ ভাই হাত ধরে চিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।ছোট হাতের সাথে বড় হাতের সংমিশ্রনে ভাইয়ের সাথে হাত ধরে সেইত পথ চলা।তখন শীতের রাত ছিল।শীতের পোশাখ পড়ার পরেও খুকুর খুব শীত করছিল......................

(১৯)মমিনঃ খুকুকে শীতে কাপতে দেখে মমিন নিজের গায়ের চাদর খুকুর গায়ে পরিয়ে দিল।
(২০)খুকুঃ তোমার চাদর আমাকে দিচ্ছ কেন ভাইয়া তাহলেত তোমার শীত করবে।
(২১)মমিনঃআমার গায়ের শীত আমি সহ্য করে নিতে পারব।কিন্তু তোমার গায়ের শীত আমি আমি সহ্য করতে পারবনা।
( কিন্তু এমন একদিন এসেছিল যেদিন তার এই কথাটা সমপূর্ণ
বিপরীপ ঘটেছিল।)

(( নাটকের চতুর্থ দৃশ্য ))

যাত্রাপালায় ‍গিয়ে তারা পৌছাল।সেখানে অনেক ভীর আর জমজমাট আয়োজন হচ্ছিল।যাত্রা আর মেলা দুটই বসেছিল.....................

(২২)মমিনঃখুকুকে বলল আমার হাত ছেরনা কিন্তু এখানে অনেক ভীর হারিয়ে যাবে।
( খুকু চারপাশের জমজমাট আয়োজন আর দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে তার ভাইয়ের হাত ছেরে দিল বুজতেও পারেনি। )
(২৩)মমিনঃ মমিন অনেকটা সামনে এগিয়ে ‍গিয়ে হাঠাৎ করে তার খেয়াল হল খুকু পাশে নাই।খুকুকে না দেখে পাগলের মত খুজতে লাগল।
খুকু,খুকু,খুকু খুকু।
(২৪)খুকুঃ এদিকে খুকুরো খেয়াল হল ভাইয়া পাশে নেই।সেও কাদতে কাদতে ভাইকে খুজতে লাগল।ভাইয়া,ভাইয়া তুমি কোথায়?
(২৫)মমিনঃখুকুকে পাওয়া মাত্রই অভীমানে সেই যে কি রাগ।তোমাকে বলেছিনা আমার হাত ছেরনা।এখন হারিয়ে গেল তোমায় কোথায় খুজে পেতাম বলত?আর এরকম করবেনা।
(এই বলে সে নিজেই খুকুর হাত শক্ত করে ধরল যাতে আর হারাবার ভয় না থাকে।অথচ একদিন কত সহজেই সেই হাত ছেরে দিল গোপন অনেক রহস্যের বেরাজালে।তাই সে আর কারো হাত ধরতে চায়না।হাজার বছর পাশে থেকেও আপন মানুষদেরকেই চেনা যায়না আর একটা অচেনা অজানা মানুষকে সে কি করে চিনবে ?এই ভয়ই তাকে তারা করে বেড়ায়।আজ সেই ছোট্ট খুকু অনেক বড় হয়ে গেছে কিন্তু আজো সেই ভয় থেকে সে বের হতে পারেনি।)

(( নাটকের পঞ্চম দৃশ্য ))

খুকু ছোটবেলা থেকেই নাচ গান পছন্দ করত। আর যখন তখনি নেচে গেয়ে বেরাত।প্রানবন্ত খুব চনচল মেয়ে।
(২৫)মমিনঃ খুকু তুমি না খুব সুন্দর নাচতে পারো? আমাদের এতটু নেচে দেখাও তো।
খুকু নাচতে শুরু করল।মমিন আর তার বন্ধুরা সেই নাচের সাথে হাতে তালি দিয়ে গাইতে শুরু করল।

ভালো কইরা বাজান গো দোতারা
সুন্দরী কমলা নাচে
সুন্দরী কমলার পায়ে নুপুর
রিমজিম রিমজিম বাজে।

(২৬)বন্ধরাঃ বাহ্ তোর ছোট্ট বউত ছিনেমার নাইকা হতে পারবে।যা সুন্দর নাচ গান অভীনয় করে এতেত ছিনেমার নাইকারাও ফেল হবে।

(এই ভাবে সাত বছর বয়স থেকে হাসি ঠাট্টা ও রসিকতা করতে করতে খুকুর বয়স যখন এগারোতে এসে দাড়ালো তখন বিষয়টা এক বিরাট রূপ ধারন করল।এবার আর রসিকতা না।সিরিয়াসলি ভাবেই খুকুকে তাদের বাড়ির বউ করে নিবে বলে খুকুর মেঝ খালা খুকুর মায়ের কাছে প্রস্তাব দিল।কিন্তু তাদের এই শখটা যে একটি ছোট্ট মেয়ের জীবনে কতটা ধ্বংশের কারন হয়ে দাড়াবে তারা সেটা ‍চিন্তাও করে দেখেনি।আর দেখবেই বা কি,তাদের মধ্যে তো কোনো সচেতনতাই নেই।মেয়ে একটু বড় হলেই তাদের কাছে বোঝা হয়ে যায়।)

(( নাটকের ষষ্ঠ দৃশ্য ))

এ প্রস্তাব শোনার পরে খুকুর বাবা প্রচন্ড রেগে গেল।রেগে খুকুর মাকে বলল।
(২৭)বাবাঃতোমার বোন বিবেক ছারা একটা কথা বলল আর তাতেই তুমি রাজি হয়ে গেলে?তাদের এত বড় ছেলেটার সাথে আমার এই ছোট্ট মেয়েটাকে কি মানায় ?প্রায় পনেরো বছরের পার্থক্য।দশ কেজির সাথে এক কেজিকে মিলাতে যেওনা।পাল্লা সমান হবেনা। কারন দশ কেজির ভার এক কেজি কখনোই রাখতে পারে না।হিসেব করে কথা বলবে।মমিন এখন সমপূর্ণ বিয়ের উপযুক্ত আর আমার মেয়ের ছেলে মানুষিকতাই এখনো কাটেনি।আর এ বয়েবে ও স্বামী সংসার সম্পর্কে কি বা বুঝবে ?ওর বয়সটাই কত ?
(২৮)মাঃতুমি কি যে বল মেয়ে মানুষ বড় হতে আর কতদিন ?এই দেখতে দেখতে মেয়ে দুবছরের মধ্যেই বড় হয়ে যাবে।
(২৯)বাবাঃএই জন্যই কাজীনজরুল ইসলাম বলেছে আমাকে একজনি শিক্ষিত মা দেও ,আমি একটি শিক্ষিত জাতী দিব।তোমাকে আমি শেষবারের মত বলে দিচ্ছি আমার মেয়ের বিয়ের উপযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত কেউ যেন বিয়ের কোনো কথা নিয়ে না আসে।

(এ কথা শোনার পরে খুকুর খালা অন্য জায়গায় মেয়ে দেখতে লাগল।অনেক মেয়ে দেখার পরে মমিনের মায়ের খালাত বোনের মেয়েকে দেখতে গেল।কিন্তু খালা তাদেরকে বেশি পছন্দ করেনি।কিন্ত তারা নিজের মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্য উঠে পরে লাগল।খালাম্মাদের বাড়িতে পুনরায় বিয়ের কথা নিয়ে আসল।খুকুর মাও সেখানে ছিল।ঐ মেয়ের মা খুকুর মাকে বলে জানেন আপা আমার মেয়ে মমিনের জন্য পাগল।ওকে না পেলে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করবে।আর আমার মেয়ের যদি কিছু হয় সেই লাস আমি এই বাড়ির দুয়ারে এনে দিয়ে যাবে।)

(৩০)খুকুর মাঃদুুুদিন হলনা বিয়ের কথা বলেছে আর তাতেই তোর মেয়ে পাগল হয়ে গেছে।আর আমার মেয়েকে নিয়ে সেই ছোটবেলা থেকেই কথা বলছে ,আমার মেয়েত কোনোদিন খালাত ভাই হিসেবেও দুচখের ‍দিকে তাকিয়ে কথা বলেনি।
(৩১)মহিলাঃও আচ্ছা নিজের মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্য আমার মেয়ের বদনাম করেছিস।তোর এই আশা আমি কোন দিন পূর্ণ হতে দিবনা।দেখি তোর মেয়ে বিয়ে দিতে পারিস নাকি আমার মেয়ে বিয়ে দিতে পারি ।তোর সাথে আমার বাজি রইল।
(৩২)খুকুর মাঃখুকুর বাবা নিষেধ করার পর থেকে আমার আর এরকম কোনো ইচ্ছেই ছিলনা।কিন্তু তুই যেহেতু আমাকে চেলেন্স করেছিস আমিও তোর সাথে খেলার মাঠে নামলাম দেখি এ খেলায় কে হারে কে জিতে।
( খুকুর মা খুকুকে নিয়ে বাজি খেলায় নেমে গেল।এ খেলায় খুকুর মাই জিতেছিল।কিন্তু সবচেয়ে বড় জরাজয় নেমে এসেছিল খুকুর জীবনে।খুকু হারিয়ে তার সুখ আনন্দ আর মুক্ত ভাবে উড়েবেরাবার ছেলে বেলার সেই ছেলেমানুষিকতা।যার নিজের কোনো স্বাধীনতা নেই ইচ্ছে নেই।)

(৩৩)খালাঃখুকুর মাকে আরালে নিয়ে গিয়ে বলল সত্যি তোর মেয়েকে দিবি?
(৩৪)খুকুর মাঃখুকুর মা খুব চিন্তায় পড়ে গেল।মনে মনে ভাবছে রাগের মাথায় চেলেন্স ধরে বসলাম এখন উপায় ।খুকুর বাবাত কিছুতেই রাজী হবেনা।না, যেভাবেই হক খুকুর বাবাকে রাজি করাতেই হবে।ওর কাছে আমি হারতে পারবনা।এসব ভেবে চিন্তে বলল হে আমি বিয়ে দিব।

(( নাটকের সপ্তম দৃশ্য ))

খুকুর মামা এসব কথা শুনে খুকুর খালাকে বলল।

(৩৫)মামাঃ খুকুকে মমিনের বউ করার জন্য আমার কোনো আপত্তি নেই।কিন্তু খুকুর বাবা তার মেয়ে ছোট বলে এর আগেও তো বিয়ে দিতে রাজি হয়নি।
(৩৬)খালাঃঐবার তো আমরা এত গেরে চেপে কিছু বলিনি।সবাই মিলে একসাথে গিয়ে বললে খুকুর বাবা আমাদের সবার কথা ফেলতে পারবেনা।আর বিশেষ করে মা বুড়ো মানুষ আজ আছে কি কাল নেই।সে যদি তার শেষ ইচ্ছের কথা গিয়ে বলে খুকুর বাব তার শাশুরির কথা কখনোই ফেলতে পারবে না।
(৩৭)মামাঃআচ্ছা তাহলে একবার গিয়েই দেখি কি হয়?

হঠাৎ করে সবাইকে এক সাথে দেখে খুকুর খুব আনন্দ হল।দৌড়ে গিয়ে নানুকে বলল।
(৩৮)খুকুঃ নানু তোমরা সবাই একসাথে আমাদের বাড়িতে এসেছ খুব ভালো লাগছে।
(৩৯)নানুঃ আমরা সবাই একসাথে তোমাদের বাড়িতে কেন এসেছি জানো?তোমার মমিন ভাইয়ার সাথে তোমাকে বিয়ে দেয়ার জন্য।
( এ কথা শুনে খুকুর মুখ কালো হয়ে গেল।সবাইকে এক সাথে দেখে আর বিয়ের এত জিনিস পত্র দেখে কথাটা রসিকতা মনে করে আর অবিশ্বাস হল না।খুকু মুখ কালো করে দৌড়ে চলে গেল পুকুর পারে। সেখানে গিয়ে কাদতে শুরু করল।পিছনে পিছনে নানু গেল)
(৪০)নানুঃসে কি তুমি কাদছ কেন?
(৪১)খুকুঃ বারে আমি ভাইয়াকে কেন বিয়ে করতে যাব ? উনি আমার থেকে কত বড়।আমার এরকম মোটা মানুষ ভালো লাগে না।
(খুকুর বাবা ফোনে এ খবর পেয়ে পচন্ড রেগে গিয়ে খুকুর মাকে ফোনে বলতে লাগল।)
(৪২)খকুর বাবাঃ তোমার মায়ের শেষ ইচ্ছে পুরন কারার জন্য আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ জীবন নষ্ট করতে পারবনা।সবে মাত্র ও সিক্সে পড়ে।এখন ওর লেখা পড়া করার সময়।
(৪২)খুকুর মাঃ তাতে সমস্যা কি ?লেখা পড়াত বিয়ের পরেও করতে পারবে।
(৪৩)খুকুর বাবাঃ আশ্চর্য তুমি আসল কথাই বুজতে পারছনা।সংসারকে নিজের আপন সত্তার সাতে মিশিয়ে সংসারী হওয়ার জ্ঞান ও মন মনিুষিকতা এখনো ওর মধ্যে উদয় হয় নি ।আর এ বয়েসে এটা না হওয়াটাই স্বাভাবিক।তোমার মায়ের এ অন্যায় আবদার আমি রাখতে পারবনা।অনাদেরকে চলে যেতে বলো।আর সাথে করে তুমিও চলে যাও তোমার বাপের বাড়ি।
(৪৪)খুকুর মাঃ বাপের বাড়ি না।এবার জমের বাড়ি যাব।তুমি যদি মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্য ঢাকা থেকে বাড়িতে না আস তাহলে আমি গলায় দড়ি দিয়ে মরব।
(৪৫)খুকুর বাবাঃতুমি কি করতে চাও সেটা আমি বাড়িতে এসেই দেখছি দাড়াও।আমি বিকেলের মধ্যেই বাড়ি আসছি।
(৪৬)খুকুর মাঃতাড়াতাড়ি আস তাহলে।

(( নাটকের অষ্ঠম দৃশ্য ))

খুকু ওর মায়ের মুখে এভাবে শান্ত সূরে ওর বাবার বাড়ি আসার কথা শুনে মনে মনে বলতে লাগল।
(৪৭)খুকুঃ বাবাও কি এ বিয়েতে রাজি হয়ে গেছে ?সবাই যদি রাজি হয়ে যায় তাহলে আমি একা কি করব? না আমাকে বাড়ি থেকে পালাতেই হবে।স্কুলে চেলে যাই ওখান থেকে ‍গিয়ে কোনো একটা বান্ধুবির বাড়িতে থাকব।ওনারা না যাওয়া পর্যন্ত আর আসব না।
(খুকু বই খাতা নিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেল।খুকুর মা খুকুর পিছন পিছন বাড়ির দুঃসম্পর্কের এক দাদিতে পাঠাল )
(৪৮)দাদিঃ খুকু কোথায় যাস ?
(৪৯)খুকুঃ দাদি আমিত স্কুলে যাই।
(৫০)দাদিঃ তোর মা বলেছে আজকে তোকে স্কুলে যেতে হবে না।
(৫১)খুকুঃ আমার সামনে পরিক্ষা ,আমাকে স্কুলে যেতেই হবে।
(৫২)দাদিঃ আজকে কোনো ভাবেই তোর স্কুলে যাওয়া চলবে না।
( এ বলে খুকু হাত ধরে টেনে বাসায় নিয়ে গেল )
(৫৩)খুকুঃ আমি যাব না ।তুমি আমার হাত ছাড় দাদি ।
( খুকু কাদতে কাদতে বলল।সেদিন খুকুর চোখের জল কোনো কাজেই আসিনি )

(( নাটকের নবম দৃশ্য ))

খুকু বাসায় আসতে চাচ্ছিল না বলে খুকুর মা চুলের মুঠুয় ধরে খুকুকে বলতে লাগল )
(৫৪)খুকুর মাঃ বাড়ি থেকে পালাতে চেয়েছিস ?তোর মামা কত আদর করে তোকে বউ করে নিতে এসেছে আর তু্ই দুয়ারের লক্ষি পায়ে ঠেলে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিস ? বড়দের কথার কোন দাম নেই তোর কাছে ?
(খুকুর বড় খালার মেয়ে স্বপ্না খুকুর মাকে বলল)
(৫৫)স্বপ্নাঃ ছোট খালা আপনি এসব কি করছেন,মারলেই কি সব কিছু সমাধান হয়ে যাবে?কারো ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু করাটাও অন্যায়।

( খুকুর মামা এসব কথা শুনে খুকুকে ডেকে নিয়ে বলল )
(৫৬)মামাঃখুকু কি শুনছি এসব,তুমি নাকি পালাতে চেয়েছ ? তুমি কি এ বিয়ে করতে চাও না?
(৫৭)খুকুঃ না
(৫৮)মামাঃখুকুর মা,কি বলে তোর মেয়ে এসব ?
(৫৯)খুকুর মাঃ ও কি বলবে ?গরুর কাছে জিজ্ঞেস করে কি কেউ হাল চাষ করে?
(৬০)মামাঃ ওর কথা আমরাও ধরছিনা কিন্তু যে মেন গার্জিয়ান সেইত এখনো বাড়ি আসছে না।আমাদের এখনো পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছে।আমাদের অপমান করছে।তাহলে আমরা চলেই যাই।দেখব কোন লাখ সাহেবের কাছে তোর মেয়েকে বিয়ে দেয়।

(( নাটকের দশম দৃশ্য ))

তারা চলে যাওয়ার পরে খুকুর মা প্রচন্ড রাগে খুকুর বাবাকে ফোন দিয়ে কেদে বলতে লাগল।
(৬০)খুকুর মাঃ তুমি এখনো পর্যন্ত বাড়িতে এলেনা।তোমার আর আশাও লাগবেনা।আমার কবরে মাটি দিতেও আর এসো না।
(৬১)খুকুর বাবাঃজানত যে পরের চাকরি করি মালিকে কাছ থেকে ছুটি নিয়ে সব কাজ বুজিয়ে দিয়াসতে তো একটু সময় লাগবেইে। আমি বাড়ির কাছাকাছিই চলে এসেছি।
(খুকুর মা পুনরায় খুকুর মামা ফোন দিয়ে বলল)
(৬২)খুকুর মাঃ খুকুর বাবা বাড়িতে চলে এসেছে তোরা যাস না।সবাই ফিরে আয়।
( তারা পুনরায় ফিরে আসল।এর মধ্যে খুকুর বাবও বাড়ি চলে আসল ।এসে খুকুর মাকে বোঝাতে লাগল )
(৬৩)খুকুর বাবাঃ তুমি যা করতে চাচ্ছ সেটা ঠিক নয়।আর অনাদেরোত এটা বোঝা উচিৎ।
( এর মধ্যে বাড়ির লোকরা এসে খুকুর বাবাকে বোঝাতে লাগল )
(৬৪)বাড়ির লোকঃ তুই বিয়েতে রাজি হচ্ছিস না কেন ?মেয়ে মানুষ যত তাড়াতাড়ি বিয়ে দেয়া যাও ততই ভালো।সবার আগে তোর মেয়েকে বিয়ে দিতে পারছিস এটাত তোর জন্য অনেক গৌরবের কথা।
(৬৫)খুকুর বাবাঃযেই বয়সে একটা মেয়ে নিজের ভালো মন্দই বোঝে না ,সেই বয়সে তার উপরে রাজ্য চালানোর মত সংসারে বোঝা চাপিয়ে দিয়ে আপনাদের মত বাবারা গর্বিত হতে পারেন কিন্তু আমি হব না।এরকম নির্থক অকল্যানীয় গর্ববোধ যে সমাজের কোনো কাজেই আসে না সেটা আপনারা বোজেন না।
(৬৫)বাড়ির লোকঃ বাড়ির লোক হিসেবে আমরা তোকে কথাগুলো বলেছিলাম কিন্তু সেই সম্মানটা তোর কাছে পেলাম না।
(৬৬)খুকুর মাঃ দেখ আমি এত কথা শুনতে চাইনা ।যদি তুমি মেয়ে বিয়ে না দিতে চাও তাহলে এই মূহূর্তে আমি এখানেই বিষ খেয়ে মরব।
( খুকুর মায়ের সাথে খুকুর বাবার আরো অনেক কথা কাটাকাটির পর শেষ মূহূর্তে খুকুর বাবা নিরুপায় হয়ে খুকুর মাকে বলল )
(৬৭)খুকুর বাবাঃ দেখ তুমি শান্ত হও।এসব করে আর লোক হাসিও না।আমি তোমার ভাইয়ের সাথে কথা বলছি।

(( নাটকের এগারো তম দৃশ্য ))

(৬৮)খুকুর বাবাঃ জাকির (খুকুর মামা ) দেখ তোমরা যেহেতু আশা করে এসেছ আমি তোমাদের ফিরিয়ে ‍দিব না।আমি এক শর্তে বিয়ে দিতে পারি।আমার মেয়ে বিয়ে উপযুক্ত না হওয়া পর্যন্ত ওকে তুলে দিব না।পাচ বছর পর আমার মেয়ের S.S.C পরিক্ষা শেষ হলে তারপর ওকে তুলে দিব।এই পাচ বছরের মধ্যে ছেলে থাকবে ছেলের বাড়ি আর মেয়ে থাকবে মেয়ের বাড়ি।
(৬৯)মামাঃঠিক আছে আপনার শর্তে আমরা রাজি ।আপনার মেয়েকে আপনি বিয়ে পাশ করান তাতে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই।
(৭০)খুকুর বাবাঃকথাটা মনে রেখ।কথার যেন কোনো বরখেলাপ না হয়।

( খুকুর বাবা বার বার একি কথা বলে তাদেরকে পাকাপক্ত ভাবে জালাই করে নিচ্ছিল যাতে ভবিষতে তার মেয়ের লেখাপড়া আর বেরে ‍ওঠায় কোনো সমস্যা না হয়। এ কথা শোনার পর খুকু বোবা পাখির মত হয়ে গেল।শেষ মূর্হতেও বাবার উপর ভর্সা করে ছিল।কিন্তু এই আশাও এখন আর নেই।যুদ্ধের ময়দানে একা সৈনিক কখনো জয়ী হতে পারে না খুকুও ‍ঠিক জীবন যুদ্ধের ময়দানে একা দাড়িযে আছে তাকে সাহায্য করার মত আর কেউ নেই।আমিও ওর জন্য কিছুই করতে পারছিলাম না।)

(( নাটকের বারোতম দৃশ্য ))

খুকুকে ইতিমধ্যে বিয়ের সাজে সাজানো হল।খুকুর বাবা প্রচন্ড কষ্টে ঘরের পিছনে ভারাকান্ত মনে দাড়িয়ে রইল।খুকু পিছন থেকে বাবাকে ডাক দিয়ে বলল
(৭১)খুকুঃবাবা তোমার কাছে সবসময় যা চাইতাম তুমি তাই দিতে কিন্তু আজ যা না চাইলাম তুমি সেটাও দিল বাবা ?আমার চাওয়ার থেকেও অনেক বেশি হয়ে গেছে বাবা।চুপ করে আছ কেন বাবা কথা বলবেনা ?ঠিক আছে আমিও আর কোনো দিন তোমার সাথে কথা বলব না।এ বলে খুকু চলে গেল।
( খুকুর বাবা পিছন ফেরে মেয়ের চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখল অপলক দৃষ্টিতে ।খুকু ইতেমধ্যে বিয়ের পিরিতে বসে গেল।)

বিয়ের পিরিতে বসে কাদছে ছোট্ট শিশুটি
অনেক দূরে চলে গেছে তার ভালাবাসার সিরিটি
নির্মম পরিস্থিত আজ তার জীবনের সঙ্গি
অনিচ্ছাকৃত ভালবাসায় মন করলে যে বন্ধি
এভাবে কভু যায় না হওয়া স্বামী-স্ত্রী
ভালোবাসার স্রোতে যদি হৃদয় না পেলি।
তাই তো দুচোখে নামছে আজ দারুন অনাবৃষ্টি।

(৭২)খুকুঃ খুকু মনে মনে ভাবছে,রিয়াজের একটা ছিনেমা দিখেছিলাম , নাইকাটাকে জোর করে বিয়ে দিচ্ছিল কিন্তু সে কবুল না বলে তার ভালাবাসার মানুষ বকুলের নাম বলেছিল। এই জন্যইত তার বিয়ে হয়নি। কিন্তু আমি কার নাম বলল! আমারত কোনো ভালবাসার মানুষ নেই। হে তাহলে আমিও কবুল না বলে বকুল বলব। তাহলে আমারো বিয়ে হবে না।

(সেই অবুজ বয়সে সংসার না বুঝলেও খুকু ভালবাসা এই শব্দটাকে বুঝত।)

(৭৩)হজুরঃবল মা আলহামদুলিল্লাহ।
(৭৪)খুকুঃ খুকু হতাশ হয়ে ভাবছে আলহামদুলিল্লাহ বলতে বলতাছে কেন তাহলে আমি বকুল বলব কিভাবে?কি করব এখন আমি অজ্ঞান হয়ে পরে যাওয়ার অভিনয় করব।
(৭৫)হজুরঃ একটু জোরে দমক দিয়ে বলল কি হল আলহামদুলিল্লাহ বল।
(৭৬)খুকুঃভয়ের চোটে কেদে বলল হালহামদুলিল্লাহ।
( হজুর যখন বিয়ে পরিয়ে চলে গেল তখন খুকু মাথার ঘোমটা ফেলে হাতের সব চুরি খুলে ছুরে ফেলে দিল।তা দেখে খুকুর মা খুকুর চুলোর মুঠি ধরে বলল)
(৭৭)খুকুর মাঃ কি হয়েছে কি তোমার?বাড়ি থেকে এখনো মেহেমান যাইনি আর মানসম্মান মারার জন্য এ ঢং শুরু করে দিয়েছ ?
(৭৮)প্রতিবেশিঃখুকুর মা আপনি কি শুরু করছেন এসব ?আপনি যানত।

( অনেকখন পর ঘর থেকে যখন সবাই চলে গেল সেই সুযোগে খুকু ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।খুকুকে না পেয়ে সবাই মিলে খুজতে লাগল।কেউ লাইট নিয়ে কেউ বা হারিকেন নিয়ে।)
(৭৮)খুকুর মাঃখুকু, খুকু কোথায় গেলিরে মা? বিয়ের রাতে বাইরে একা থাকতে নেই। ভূত পিচাসে ধরে। তাড়াতাড়ি ঘরে আয়। কোথায় তুই ?

(হঠাৎ খুকুর মায়ের চোখে পরল খুকুর শাড়ির আচল লম্বা ভাবে মাটিতে জুলিয়ে চুলগুলো ছাড়া অবস্থায় খরের পাড়ার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে।খুকুর মা তার মেয়ে খুকুর হাত ধরে টান দিয়ে বলল।)
(৭৯)খুকুর মাঃ এটা বিয়ের রাত। এ রাতে অনেক বেছে গুছে চলতে হয়।এমন ঘুটঘুটে অন্ধকারে এসে দাঁড়িয়ে আছিস মনে কি ডর ভর নাই। বিয়ের রাতে যদি একটা দোষ পেয়ে বসে, সেই দোষ সারা জীবনেও আর ভালো হয়না।
(৮০)খুকুঃ একটু পাগল পাগল ভাবে হেসে বলল, আমার তো বিয়েই হয়নি তাহলে দোষ পাবে কোথা থেকে?
(খুকুর মা খুকুকে দমক দিয়ে হাত ধরে ঘরে টেনে নিয়ে গেল।)

(( নাটকের তেরো তম দৃশ্য ))

তার পরে খুকুর মামি এসে খুকুর মাকে বলতে লাগল।
(৮১)মামিঃ মমিন আর খুকুর জন্য বাশর ঘর তৈরি করলে ভালো হতনা?
(৮২)খুকুর মাঃ খুকুর বাবার শর্ত ভাঙলে আর যদি সে এটা জানতে পায় তাহলে বিরাট জামেলা হবে।কারন সেত বিয়ে দেয়ার আগেই কথা রেখেছিল।
(৮৩)মামিঃবিয়ের সময় এমন কত কথাই থাকে সব কথা ধরে বসে থাকলে হয় না। আর খুকুর বাবা না জানলেই তো হয়? খুকুর বাবাকে বলেন, মেহেমানদের জন্য ঘরে জায়গা নেই তুমি একটু অন‍্য বাড়িতে গিয়ে ঘুমাও। তাহলেই তো সব জামেলা শেষ।
(৮৪)খুকুর মাঃঠিক আছে।

(কিছুখন পরে এক প্রতিবেশি দাদি এসে খুকুকে বলতে লাগল)
(৮৫)প্রতিবেশিঃখুকু আমার সাথে একটু আয়।

( খুকু গিয়ে দেখতে পেল অনাদের ঘরে খাটের উপর মমিন শুয়ে আছে।)
(৮৬)খুকুঃ আমাকে এখানে কেন এনেছ?
(৮৭)প্রতিবেশিঃ ঘুমাবে বলে।
(৮৮)খুকুঃআমাদের ঘরেত শোয়ার জায়গা আছে তাহলে তোমাদের এখানে কেন ঘুমাব? ?
(৮৯)প্রতিবেশিঃ তোমাকে আজ এখানেই ঘুমাতে হবে।বেশি কথা বলো না।

(এই বলে তারা খুকুকে জোর করে খাটের উপর উঠিয়ে ‍দিয়ে বাহির থেকে দরজা দিয়ে চলে গেল।খুকু খাট থেকে নেমে আসতে চাচ্ছিল কিন্তু মমিন খুকুকে জোর করে ধরে রেখেছিল।মমিন অনেকটা ক্ষুধার্ত প্রানীর মত আচারন করতে লাগল।খুকুর কাছে ওর আচারন কেন যেন ছিনেমার ভীলেনদের মত মনে হচ্ছিল।খুকুকে কোনো ভাবেই বিছানা থেকে নামতে দিচ্ছিল না।অনেকটা জোরজবরদস্তির মত।খুকু মমিনের হাতের মধ্যে কামড় ‍দিয়ে জোর করে বিছানা থেকে উঠে আসল।কিন্তু দরজাত বাহির থেকে বন্ধ তাই সে ঘর থেকে বের হতে পারছিল না।)
(৯০)খুকুঃদরজা খোল।দরজা খোল বলছি।
( প্রতিবেশি দাদিরা দরজা খুলে ভিতরে এসে খুকুকে বলতে লাগল )
(৯০)প্রতিবেশি দাদিরাঃ কি হয়েছে ঘুমাওনা কেন?খাট থেকে নেমেছ কেন?যাও খাটে যাও।
(৯১)খুকুঃআমিত ব্রাস করিনি।ব্রাস না করে আমার ঘুম আসেনা।আমি ব্রাস করে আসছি।
(এই বলে খুকু ঘর থেকে বের হয়ে দাদিরে জোরে চিৎকার করে বলল )
(৯২)খুকুঃ ও দাদি তোমরা দরজা দিয়ে ফেল আমি আর আসব না।
(এ বলে খুকু নিজেদের ঘরের দিকে দিল এক দৌড়।দাদিরাও ওর পিছন পিছন দৌড় দিল।ঘরে ঢুকা মাত্রই খুকুর মা খুকুকে বলল )
(৯৩)খুকুর মাঃকিরে তুই এখানে কেন ?
(৯৪)খুকুঃ দাঁত ব্রাস করতে এসেছি।
( এটা বলে সাথে সাথেই খুকু ওদের বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল।এর মধ্যে দাদিরা এসে খুকুর মাকে বলতে লাগল )
(৯৫)দাদিরাঃ এই দাঁত ব্রাসের নাম দিয়েই আমাদের ফাকি দিয়ে চলে এসেছে।
(৯৬)খুকুর মাঃখুব জেদ ভরা কন্ঠে খুকুকে বলল। বিছানা থেকে ওঠ বলছি। যা ঐ ঘরে যা।
(৯৭)খুকুঃআমি যাব না।
(৯৭) দাদিরাঃএই ভাবে মুখের কথায় কাজ হবে না। ওকে ধরে নিয়ে যেতে হবে।
(৯৮)খুকুর মাঃ হে সেটাই করতে ত হবে।
( এই বলে সবাই মিলে খুকুকে টানতে শুরু করল।খুকু খাটের চিপায় ঢুকে পড়। খুকুকে খাটের ফাঁক থেকে তোলার জন্য খুকুর মা চুল ধরে ওপরে টানতে লাগল। আর দাদিরা খুকুর দুই হাত ধরে উপরে টানতে লাগল।এরকম টানাটানিতে খুকু প্রচন্ড হাপিয়ে গেল।সমস্ত শরীর থেকে দর দর করে ঘাম বেবি পরছিল। তবুও শরীরের শেষ শক্তিটুক দিয়েও খাটের বেরি চেপে ধরল। খুব ক্লান্ত লাগছিল। নিঃশ্বাষ যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। চারদিকে শুধু অন্ধকার মনে হচ্ছিল। চোখ টেনে খুলতে পারছিল না।খুকুর অবস্থা খুব খারাপ দেখে খুকুর মা সবাইকে বলতে লাগল )
(৯৯)খুকুর মাঃ থাক আর টানার দরকার নেই।ও এখানেই শুয়ে থাক।আপনারা সবাই চলে যান।
( সকাল বেলা বাড়ির সব মুরব্বিরা খুকু নিয়ে কানা- কানি শুরু করল। একজন আরেক জনকে বলতে লাগল )
(১০০)প্রতিবেশিরাঃ এটা কেমন মেয়ে ? বাশর ঘর থেকে জামাইকে ছেরে চলে আসে। এমন মেয়ের কপালে কি জামাইয়ের ভাত জোটে? এগুলো এক দুয়ার দিয়ে যাবে, আরেক দুয়ার দিয়ে বের করে দিবে।
(১০১)আরেক প্রতিবেশিঃ আমি হলে তো এই মূহর্তেই তালাক দিয়ে চলে যেতাম। এরকম অলক্ষি মেয়ে আমি আর একটাও দেখিনি।

( সবাই খুকুকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করছিল।অলক্ষি বলে তিরস্কার করছিল। তারা খুকুর সাথে অমানুষের মত আচারন করে, উলট তাকেই দোষারপ করছিল। সেদিন খুকুর পক্ষ নিয়ে কথা বলার কোনো মানুষ ছিল না। সত্যিকারের ভুলটা যে কাদের সেটা দাঁত ভাঙা জবাব দিয়ে বুঝিয়ে দেয়ারো কেউ ছিল না ।তার পরদিন বর পকক্ষরা সবাই চলে গেল।তার পরের দিন খুকু স্কুলে গেল।স্কুলের সবাই খুকুকে গিরে ধরে জিজ্ঞেস করতে লাগল ।)
(১০২)স্কুলের বন্ধুরাঃকি খুকু তোমার নাকি বিয়ে হয়েছে ?
(১০৩)খুকুঃ একটু রেগে বলল।কে বলেছে ? সব মিথ্যে কথা ।আমার বিয়ে হয়নি।ফালতু কথা নিয়ে ঘুরা ছাড়া তোমাদের আর কোনো কাজ নেই না?
(এ কথা নিয়ে রেগে সেদিন খুকু স্কুল থেকে চলেই আসল।মন খারাপ করে খুকু বাসায় ‍গিয়ে বসে রইল।বিকেলে বান্ধবীরা খুকুকে খেলতে ডাকল )
(১০৩)বান্ধুবিরাঃখুকু চল গোললাছুট খেলতে যাই।
(১০৪)খুকুঃনা যাবনা।ভালো লাগছে না আমার।তোরা যা।
(১০৫)বান্ধুবিরাঃ আরে খেললেই মন ভালো লাগবে ,চল।
( বান্ধুবিরা জোর করে খুকুকে খেলতে নিয়ে গেল।বাচ্চারা খেলা করলে একটু চিল্লাচিল্লি হয়ই।কিন্তু কিছু মুরুবিরা এটা পছন্দ করেনা।একজন মুরুব্বি ওদের সবাইকে রেগে গিয়ে বলল। )
(১০৫)মুরুব্বিঃকিরে পলাপাইনরা বাড়িটা কি মাছের বাজার বানাই ফেললি নাকি ?চিললইয়া মাথা ধরাইয়া ফেলতাছস।তোগো চিল্লাচিল্লির জ্বালায় বাড়িতে থাকা মুসকিল।আর এই যে খুকু তোর না বিয়ে দিয়ে ফেলছে ?এখন আবার কিসের খেলা?লজ্জা করে না।বিয়ে দেউন্না মাইরা আবার চার পায়ে লাফায় কিভাবে ?
(১০৬)খুকুঃপ্রচন্ড রাগে কেদেকুদে ওনাকে বলল কিসের বিয়ে ?আমার কোনো বিয়ে টিয়ে হয় নাই।আপনার জন্য কি আমরা খেলতেও পারবনা নাকি ?আপনি যখন পাশের বাড়ির আন্টিদের সাথে জগড়া হলে চিল্লাইয়া সাত গ্রাম মাথায় নেন তখন কারো সমস্যা হয়না বুঝি আর আমরা একটু খেললেই দোষ ?
এ বলে খুকু চলে আসল। বাসায় এসে কাদতে লাগল।খুকুর মা খুকুকে জিজ্ঞাসা কারল)
(১০৭)খুকুর মাঃ কিরে কি হয়েছে কাদছিস কেন?
(১০৮)খুকুঃখুকু কেদে বলল। মানুষ কিছু হলেই আমাকে বিয়ে দেউন্না মাইয়া বলে কেন ?আমার এসব শুনতে ভালো লাগেনা।
( এ কথা বলে খুকু মায়ের সামনে থেকে চলে আসল )

(( নাটকের চৌদ্দ তম দৃশ্য ))

দুমাস পরে মমিনের বাবা খুকুর বাবাকে ফোন দিয়ে বলল।
(১০৯) মমিনের বাবাঃ আপনার সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে চাই।দেখুন কিছু মনে করবেন না আপনার ভালোর জন্যই বলছি।মেয়েদের এত লেখা পড়া করিয়ে শুধু শুধু এত টাকা পয়সা খরচ করে কোনো লাভ নাই।এর থেকে ভালো আমাদের বউ আমাদেরকেই দিয়ে দেন।নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করার কি দরকার বলেন?
(১১০)খুকুর বাবাঃপ্রচন্ড রেগে বলল এই কথা যদি আবারো কোনো ‍দিন আপনার মুখ থেকে শুনি তাহলে পাঁচ বছর পরে মেয়ে তুলে দিবত দূরের কথা পাঁচ জন্মেও দিবনা।
(১১১)মমিনের বাবাঃকি ভেবেছেন আপনি নিজেকে ?মেয়ের বাপের ক্ষমতা যদি এক আনা হয় তাহলে ছেলের বাপের ক্ষমতা পুরো ষোলো আনাই।আমাদের বউ ইচ্ছে হলে আমরা বাপের বাড়ি রাখব ইচ্ছে না হলে নেই।ইচ্ছে হলে পড়াব ইচ্ছে না হলে না পড়াব।সেটা সমপূর্ণ নির্ভর করবে আমাদের ইচ্ছের উপর।
(১১২)খুকুর বাবাঃআপনার মধ্যে নূন্যতম জ্ঞান থাকলে আপনি এ কথা বলতে পারতেন না।আপনার মত মূর্খের সাথে আমি আর কোনো কথা বলতে চাইনা।এ বলে খুকুর বাবা মোবাইল রেখে দিল।

(( নাটকের পনেরো তম দৃশ্য ))
সম্ভবত বিয়ের চারে থেকে পাঁচ মাস পরে মমিন খুকুদের বাড়িতে হঠাৎ বেরাতে আসল।ততখনাত খুকুর বাবার কানে ঐ কথা কিভাবে যেন পৌছে গেল।খুকুর বাবা সংঙ্গে সংঙ্গে খুকুর মাকে ফোন দিয়ে বলল।
(১১৩)খুকুর বাবাঃশুনলাম মমিন নাকি আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে?
(১১৪)খুকুর মাঃ হে।
(১১৫)খুকুর বাবাঃকেন এসেছে এ বাড়িতে ?বলেছিলাম না পাঁচ বছরের মধ্যে ছেলের বাড়িতে ছেলে থাকবে আর মেয়ের বাড়িতে মেয়ে থাকবে।
(১১৬)খুকুর মাঃ এখন এসে যেহেতু পড়েছে আর কি বলব বল ? এখানে বিয়ে না করলে খালার বাড়ি হিসেবে কি বেড়াতে আসতে না ?
(১১৭)খুকুর বাবাঃখালার বাড়ি হিসেবে যেহেতু বেড়াতে এসেছে।খালার বাড়ির মত করেই খাইয়ে দাইয়ে বিদায় করে দিও।
(১১৭)খুকুর বাবাঃঠিক আছে ও নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না।

খুকুর খালা খুকুর মাকে বলতে লাগল।
(১১৮) খালাঃখুকুর তো এখন স্কুল বন্ধ তাই ভাবলাম এক সপ্তাহের জন্য ওকে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যাই ।তাই খুকুকে নিতে আসছিলাম।
(১১৯)খুকুর মাঃএটা সম্ভব না আপা।খুকুর বাবা শুনলে কেয়ামত হয়ে যাবে।তোমরা বেড়াতে এসেছ বেড়াও তাতে সমস্যা নাই।কিন্তু ওকে দেয়া যাবে না।
(১২০)খালাঃদেখ ওদেরকে যদি পাশাপাশি না দেওয়া হয় তাহলে ওরা দুজনের মন দুজন বুজবে কি করে ?

( এরকম আরো অনেক কথা বলে খুকুর মাকে বুঝিয়ে নিল।রাতে খাওয়া শেষে খুকুকে ওর মা কি যেন একটা টেবলেট খেতে দিল।সম্ভবত এটা জন্মনিয়ন্ত্রনের কোনো ঔষধ হবে।একজন দাদি সম্পর্কের এসে খুকুকে অনেক কিছু বোঝাতে লাগল ।ঋতুস্রাব হলে স্বামির থেকে দূরে থাকতে হয় ।গোসল করতে হয় ।আরো কি কি যেন বোঝালো।সব কিছু খুকুর মাথার উপর দিয়ে গেল।খুকুকে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে আদর করে মমিনের পাশে বসিয়ে দিয়াসল ঘুমানোর জন্য।জগন্যতম আর অমানবিক এক রাত ছিল এটা।খুকুর কাছ থেকে যা শুনেছি তার বর্ণনা করতেও খুব কষ্ট হচ্ছে আর লজ্জা লাগছে।ঐভাবে বলতে গেলে ভাষা খুব অশ্লীন হয়ে যাবে।তাই ঐ ভাবে আমি বলতে পারছি না।তবে ঐ রাতে খুকুর মস্তিষ্কে প্রচন্ড চাপ পরেছিল।খুকুর মুখের আওয়াজ বন্ধ কারার জন্য ওর নাক সহ মুখ চেপে ধরেছিল।কারো নাক সহ মুখ চেপে ধরলে সে নিশ্বাস নেয় কিভাবে ? এতটুক হিতাহিতবোধ যার মধ্যে নেই এতটকু দৈর্য্য আর মানবিকতা যার মধ্যে নেই ।সে মানুষ হয় কি করে ? ঐদিনত খুকু দম বন্ধ হয়েই মরে যেত।যদি খুকু জোর করে ওর নাকের উপর থেকে সেই হাতটা সরাতে না পারত।খুকুর মাথার তুলুতে এমন ভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল তাতে ওর ঘাড় ভেঙে যাচ্ছিল।খুকু ওর পোশাক চেয়ে কান্না করে বলছিল। )
(১২১)খুকুঃ আমার জামা দাও।
( খুকু মমিনের হাত থেকে ওর জামাগুলো নেয়ার চেষ্টা করছিল।মমিন জামাগুলো ডান হাত থেকে বাম হাতে,বাম হাত থেকে ডান হাতে++++++++++++++++++++++++++++++++++++

[[ গল্পটা এখানে আর শেষ করতে পারলাম না ।কারন এখানে ৬৩২০৬ শব্দের বেশি লেখা যায়না।তবে আশা করি এটার পরিপূর্ণ গল্পের বই একদিন বের করব। ]]

04/07/2025

❤❤❤❤❤

28/06/2025
27/06/2025

🙂🙂🙂😥❤

25/06/2025

আমার স্টুডেন্টের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় দেয়া অমূল‍্য এক গিফ্ট।🙂🙂🙂❤❤❤

24/06/2025

নিচের এই কেন প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো।

20/06/2025

👸👸👸👸👰👰👰

14/06/2025

মিউজিকের মাধ্যমে একটু গান করার চেষ্টা করলাম।

Address

Ludhua, Matlab, Chandpur
Chandpur
3640

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when AMENA INSAN ALO posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share