শূন্য কাব্য

শূন্য কাব্য single

03/05/2024

__ “ তোমার পা দুটো একবার ছুঁতে দিবে? একটু..... ”

__ “ আর একবার যদি আমাকে স্পর্শ করার ট্রাই করেন, তো হয় আপনাকে জানে মেরে ফেলবো না হয় নিজে মরবো। এক্ষুণি আমার ঘর থেকে বেরিয়ে যান বলছি, নইলে চিৎকার দিবো আমি। ”
__ “ তাহলে তো কাল ব্রেকিং নিউজ আসবে ' রাতে হাজবেন্ড কে ঘর থেকে বের করে দিলো ওয়াইফ ' ”
__ “ কেনো! নিউজ কি আপনি বের করবেন? ”
__ “ কেনো গো! এতো চেতছো কেনো! তুমি এতো রাতে বের করে দিলে বাড়ি ওয়ালী আন্টি এই সব রটিয়ে বেড়াবে। তুমি বোঝো না নাকি! ”
__ “ কে বলেছিলো আপনাকে আমার হাজবেন্ড এর পরিচয় দিতে? ”
__ “ হাজবেন্ড এর পরিচয় না দিলে তোমাকে বাসা ভাড়া কে দিতো শুনি!”
__ “ তার ফায়দা লুটে নিচ্ছেন! ”
__ “ কি আজব তুমি! এখন তো আমরা রিয়েল হাজবেন্ড ওয়াইফ!”
__ “ আমি কখনোই মানি না এই বিয়ে! ”
__ “ আমি মানি! একদিন তোমার হৃদয় জয় করেই ছাড়বো! ”
__ “ না পারলে জোর খাটাবেন? ভন্ড!”

আর কোন কথা না বলে উল্টো দিকে মুখ দিয়ে শুয়ে পড়ে সাইমা। সজীব আস্তে করে বেডে উঠে, সাইমার কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বললো ,
__ “ ভালোবেসে না পেলে একটু তো জোর করতেই হবে। ”

সাইমা উল্টো ঘুরে সজীব কে এক ধাক্কায় ফেলে দেয় নিচে ।

__ “ আর একবার ও যদি আমার কাছে আসতে চেষ্টা করেন! তাহলে! ...... ”

__ “ তাহলে কি! একশো বার যাবো! ”

সাইমা চোখ বন্ধ করলো, “ এখন থেকে কি এই বাজে ছেলের অত্যাচার সহ্য করতে হবে! কিভাবে করবো সহ্য! আমার যে ওকে ভালোবাসা সম্ভব না! সে বুঝেও কেনো আমার সাথে এমন করলো! ”

__ “ ভালোবাসি তাই! ” সাইমা ভাবনার ছেদ করে সজীব এর একটা কথায় চমকে যায়।

__ “ আমি যে আপনাকে ভালোবাসি না! ” সাইমা আস্তে করে বলে।

__ “ ভালো তুমিও আমাকে বাসো! জেদ ধরে আছো তাই! দেখবে কিছুদিন পর তুমি নিজেই আমার কাছে এক মুঠো ভালোবাসা চাইবে। আর আমি এক সিন্ধু ভালোবাসা দিবো। ”

__ “ বাজে কথা বলবেন না! আমি ঘুমাবো, কাল অফিস আছে! দয়া করে ঘুমাতে দিন। ”

সাইমার কথার উত্তরে সজীব বলে,

__ “ আমি কোথায় ঘুমাবো! পাশে তো নিবে না জানি! ”

সাইমা একটা বালিশ আর চাদর নিয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ে। এরপর বলে,

__ “ আর বিরক্ত না করে ঠিক মতো ঘুমাতে দিন। ”

__ “ নিচে শোবে না! ঠাণ্ডা লেগে যাবে। ”

__ “ নাহহহ! আপনার কোলে গিয়ে ঘুমাবো! ডিসগাস্টিং। ”

__ “ তাই তো চাই! ”

সাইমা উল্টো দিক ঘুরে শুয়ে পড়ে, চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে। কি থেকে কি হয়ে গেলো! দুচোখ বেঁয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। এমন জীবন তো সে চায় নি। চেয়েছিলো ভালোবেসে ঘর বাঁধতে। একটা ঝড় তার জীবন টাকে এলোমেলো করে দিয়েছে। এক বিপদ থেকে বাঁচতে গিয়ে আরেক বিপদের মাঝে এসে পড়েছে। কাঁদতে কাঁদতে কখন ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যায় সাইমা বুঝতে পারেনা।

সকাল ৬ টা,
সজীবের ঘুম ভাঙে সাইমার অস্ফুট স্বরে, সাইমা বিড়বিড় করে কি যেনো বলছে। সজীব বেড থেকে নেমে সাইমার পাশে গিয়ে বসে। সাইমা ঘুমের ঘোরে বলছে,

__ “ আলিফ! আমাকে ছেড়ে যেওনা! ফিরে এসো! খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। ”

সজীব ইচ্ছে করে সাইমার কানের কাছে গিয়ে বলে,

__ “ কখনো ছেড়ে যাবোনা। ”

সজীব সাইমার হাত নিয়ে নিজের গলাতে দেয়, সাইমাও ঘুমের ঘোরে সজীব কে আঁকড়ে ধরে। হৃদস্পর্শে তোমাকে আমার করে নিবো সাইমা। সজীব চোখ বন্ধ করে, সাইমার নিঃশ্বাস এর গরম বাতাস উপভোগ করতে থাকে।

সকাল ৭ টা,
ফোনে এলার্ম এর শব্দে চোখ খুলে সাইমা। সজীব কে জড়িয়ে আছে দেখেই মেজাজ টা খারাপ হয়ে যায়। জোরে করে ধাক্কা দেয় সজীব কে। সজীব উঠে যায়, বলে,

__ “ এমন করে ধাক্কা দিচ্ছো কেনো! ”

__ “ আপনার সাহস হয় কিভাবে আমাকে স্পর্শ করার! ”

__ “ নিজের বিয়ে করা বউকে স্পর্শ করেছি, ক্ষতি কিসের। ”

সাইমা এলার্ম বন্ধ করে, ওয়াশরুমে ঢুকে যায়। ৯ টায় অফিসে যেতে হবে, অনেক কাজ আছে তার। এখন ওর সাথে তর্ক করে সময় নষ্ট করার মানেই হয়না। ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে রান্নাঘরে ঢুকে। এক কাপ চা বসাতে গিয়ে মনে হয়, সজীব তো আছে। আরেক কাপ পানি দিয়ে দেয়। তাড়াতাড়ি করে ব্রেড এ জেলি মাখিয়ে নেয় সাইমা।
একটা প্লেটে করে সজীবের সামনে দিয়ে আসে,

__ “ আমি তো ভেবেছিলাম তুমি একাই খাবে! ”

সাইমা মাথা ঘুরিয়ে মুখ বাঁকিয়ে চলে আসে রান্নাঘরে। নিজে কোনরকম খেয়ে নিয়ে চা কাপে নেয়। সজীব কে এক কাপ দিয়ে নিজেও এক কাপ নিয়ে নেয়।

__ “ আলিফ আলিফ করে চিৎকার করছিলে! তাই তোমার কাছে গিয়েছিলাম। ”

__ “ একশবার আলিফ কে ডাকবো! আর ভুলেও কাছে আসবেন না! ”

__ “ একদিন দেখবে তুমি নিজেই আমার কাছে আসবে। যাই হোক! অফিসে যাও দেখেশুনে, আমাকে আমার বাসায় যেতে হবে। কাল থেকে তোমার সাথে আছি, বাসাতে খবর ও দিইনি। সবাই নিশ্চিত টেনশন করছে। ”

__ “ যান যান! আর আসবেন না এখানে। ”

__ “ রেডি হয়ে নাও, একসাথে বেরুবো! তোমাকে অফিসে নামিয়ে দিয়ে তারপর বাসায় যাবো। ”

সাইমা কথা না বলে রান্নাঘরে ড্রেস নিয়ে ঢুকে যায়। এক রুমের ছোট্ট বাসা, চাকুরীর জন্যই নিজের শহর ছেড়ে এতদূর আসা। সজীব ই এই রুম টা ঠিক করে দিয়েছে তাও হাজবেন্ড ওয়াইফ পরিচয় এ। ফেসবুকে একটা গ্রুপ থেকে সাইমা আর সজীব এর পরিচয় হয়। গ্রুপে দুজনেই এডমিন ছিলো, কিন্তু সাইমাকে সব সময় সজীব খুব রাগাতো। সজীব কে এই জন্য পছন্দ করতো না সাইমা। সজীব ইচ্ছে করেই সব সময় সাইমার সাথে ঝগড়া করতো।

__ “ আলিফ সম্পর্কে সব কিছু জানার পরও কেনো বিয়ে করলেন আমাকে? ”
রেডি হয়ে এসেই সজীব কে জিজ্ঞেস করে সাইমা।

__ “ তোমাকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছিলাম তাই! ”

__ “ হুহ! প্রথম দেখা। ”

__ “ জানো! তোমাকে ভালোবাসতাম অনেক আগে থেকেই। কিন্তু বলার সাহস পাইনি। কারণ তুমি সব সময় আলিফের নাম জপতে। খুব কষ্ট পেতাম তখন জানো! ”

__ “ আলিফ কে আমি এখনো ভালোবাসি! ওর কাছেই ফিরে যাবো আমি। ”

__ “ পারবেনা এই বন্ধন ছেড়ে যেতে। চলো তোমার অফিসে দেরি হয়ে যাবে। ”

সাইমা বাধ্য মেয়ের মতো বেরিয়ে পড়ে, সজীব নামার আগেই সিএনজি পেয়ে যায়। সজীবের অপেক্ষা না করেই উঠে যায় সাইমা।

সারাদিন কাজের পর দুপুরের ব্রেক এ লাঞ্চ করে নেয় সাইমা, রিলাক্স হয়ে বসে ভাবতে থাকে আলিফের কথা।

ভার্সিটি লাইফের প্রেম,
__ “ সব সময় তোর হাত টাই ধরে রাখবো। ” সাইমার হাত জড়িয়ে আলিফ সব সময় এই কথা বলতো।

চোখ খুলে সাইমা, জল গড়িয়ে পড়ছে, “ আলিফ তুই কোথায় চলে গেলি! নিয়ে যা আমাকে। আমি আর পারছিনা রে সহ্য করতে। এভাবে কতো দিন সজীবের থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবো রে! আমি ওকে ভালোবাসি না! তাও সে আমাকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করেছে। কিভাবে মুক্তি পাবো আমি এই কষ্ট থেকে। ”

দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আলিফের নাম্বারে আবার ডায়াল করে সাইমা,
The number you are calling is currently switched off, please try again later.

“ উফফ এই ডায়ালগ শুনতে শুনতে পাগল হয়ে গেলাম। ”

চোখ মুখে পানি দিয়ে আসে সাইমা। অফিসের কাজে মন দেয়।

,,,
সজীব কে বাড়িতে দেখে খুব রেগে যায় ওর মা কামরুননাহার।
__ “ কি রে বেয়াদব ছেলে, কাল থেকে কতো বার ফোন দিয়েছি তুই দেখেছিস! ”

__ “ মা! আমি বিয়ে করেছি কালকে! ” কোনরকম ভনিতা ছাড়াই বললো সজীব।

__ “ কি বললি তুই! বেরিয়ে যা বাসা থেকে, আজ থেকে জানবি তোর মা মরে গেছে। ”

__ “ মেয়েটা কে জোর করে বিয়ে করেছি, মানে বাধ্য করেছি বিয়ে করতে। এখন কি করে মানিয়ে নিবো সেটা না বলে বলছো বের হয়ে যা! তাহলে জন্ম কেনো দিয়েছিলে, ছেলের বিপদে যদি মা হয়ে পাশে না থাকো তো?”
কান্নায় ভেঙে পড়েন কামরুননাহার,

__ “ তুই ছেলে হয়ে এই কথা বলতে পারলি! জানিস তুই কতো টেনশন করেছি তোর জন্য। ”

__ “ এতো কেঁদো না তো! আমি মরিনি! ”

__ “ মেয়েটা কে? ”

__ “ সাইমা ওর নাম! যাই হোক ওর আগে একবার বিয়ে হয়েছিলো দুইদিন পর ডিভোর্স হয়ে গেছে। তাই ও বিয়ে করতে চাইনা। জোর করে বিয়ে করেছি! এখন তুমি বলো ওকে কি মেনে নিবে? ”

__ “ হায় আল্লাহ রে! দেশে কি আর মেয়ে ছিলো না? কপাল পুড়াইলি তুই আমার রে! ”

__ “ তার মানে মেনে নিবেনা, তাইতো! ”

__ “ স্বামী ছাড়া মেয়েকে তুই বিয়ে করেছিস, দূর হ আমার চোখের সামনে থেকে। আর কখনো আসবি না তুই। ”

__ “ হুমম আমি চলেই যাবো! ভালো থেকো! ”

সজীব বাসা থেকে বের হতে গেলে কামরুননাহার বলে,

__ “ ওই মেয়েরে তালাক দিয়ে দে, যদি তুই আমাকে ভালোবাসিস তাহলে তালাক দিবি । নইলে আমার মরা মুখ ও তুই দেখতে পারবি না। ”

__ “ মা! ”

__ “ তোর মা নাই! বের হো বাড়ি থেকে। ” কোনরকম সজীব কে বের করে দিয়েই কাঁদতে বসলেন কামরুননাহার।

সজীব চুপচাপ সাইমার ঘরের আরেকটা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ঘরে বসে থাকে। অফিস শেষে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে সাইমা, দরজা তে তালা নাই দেখে অবাক হয়। নক দিতেই সজীব দরজা খুলে দেয়। সাইমা জোরে করে চিল্লিয়ে উঠে.......

__ “ কি করছেন কি আপনি! গোটা ঘরে পানি কিসের? ”

সাইমা ঘরে ঢুকেই দেখে সজীব কাকভিজা হয়ে ভিজে আছে, ঘরেও পানি পড়ে অনেক। রেগে গিয়ে জোরে করেই কথাটা বলে সেই জন্য।

__ “ মাথা টা গরম হয়ে ছিলো! তাই ঠান্ডা করার জন্য ঝর্না ছেড়ে রেখেছিলাম। ওখানে ই এতক্ষণ ছিলাম, ঘরে কিভাবে পানি এলো দেখিনি। ”

__ “ আপনি কি ঠিক করেই রেখেছেন! এখানে থাকবেন আর আমাকে অত্যাচার করবেন। ” কথাটা বলতে বলতে রুমে ঢুকে পা টিপে টিপে, নইলে স্লিপ খেয়ে পড়ে যাবে সাইমা। অফিসে সারাদিন গাধার খাটুনি খেটে এসে বাসায় একটু রেষ্ট নিবে কিনা, পুরো রুম এর অতিরিক্ত পানি ছেঁকে ফেলে ঘর মুছে নিজেও ফ্রেশ হতে ২ ঘন্টা লেগে গেলো সাইমা। এদিকে সজীব আগেই ফ্রেশ হয় বেডে গিয়ে ঘুম দিয়েছে। ফ্রেশ হয়ে এসে যে একটু রেষ্ট নিবে তার উপায় নেই। ভন্ড টা বেডে হাত পা ছেড়ে শুয়ে আছে।

খুবই বিরক্ত হয়ে ফ্লোরে একটা টাওয়েল আর চাদর বিছিয়ে সেখানেই শুয়ে পড়ে। ক্লান্তির দরুণ ঘুমিয়ে পড়ে সাইমা।

°°°
সজীব কে সে মোটেও সহ্য করতে পারতো না আগে থেকেই, কিন্তু সজীব সব সময় সাইমার সাথে ঝগড়া ও করতো মানসিক সাপোর্ট ও দিতো। সাইমা নতুন জব পায় ঢাকাতে, সজীব কে খুশি হয়ে বলে জবের কথা।

__ “ জব তো পেলে, এখন ঢাকায় একা কিভাবে থাকবে শুনি? ”
__ “ যদি এতো চিন্তা হয় আমার জন্য, একরুমের একটা বাসা ঠিক করে রাখলেই তো পারেন।”
__ “ সে আর বলতে! অবশ্যই করবো, জানিই তো তোমার এই দুনিয়ায় আপন বলতে কেউ নেই। ”
__ “ যদি মনে করেন করুণা করছেন, তাহলে কিছুই করতে হবেনা। ওকে ”
__ “ না না! তুমি আসো তো, আমি স্টেশন এ তোমাকে নামিয়ে নিবো। অসুবিধা হবে না তোমার। ”

যেদিন সাইমা প্রথম ঢাকা যায়, সেদিন ই সজীবের সাথে প্রথম দেখা হয় সাইমার। এতো দিন তো ফেসবুকে কথা বলেছে, ছবি দেখেছে সজীব। সাইমা কে দেখে হাঁ হয়ে তাকিয়ে থাকে অনেক্ষণ।
সাইমা কাছে গিয়ে বলে,
__ “ আমার মনে হয় আপনি সজীব, তাইনা! ”
__ “ চলুন যাওয়া যাক। ”
__ “ আগে তো তুমি করে বলতেন! এখন আপনি করে বলছেন যে! ভয় পেলেন নাকি?”
__ “ না মানে! মেয়েদের সাথে আমি তেমন কথা বলতাম না, কখনো সামনাসামনি কথা হয়নি। তাই....”
__ “ যাই হোক! চলুন ”
__ “ হুমম চলুন মানে চলো। ”

একই রিকশা তে সেদিন সজীবের সাথে উঠে সাইমা। দুজনের একটু ইতস্তত লাগলেও মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। সজীব আড় চোখে সাইমা কে বারবার দেখতে থাকে, সজীবের চোখে শ্রেষ্ঠ সুন্দরী সাইমা। সাইমা ব্যাপার টা বুঝতে পেরে বলে,
__ “ লুকিয়ে লুকিয়ে দেখে মজা নেই বোধ হয়। ”
__ “ মানে? ”
__ “ কিছুনা।” আবার দুজনেই চুপ হয়ে যায়।

বাসার রুম টা চার তলায়। সাইমা অনেক ক্লান্ত বলে সজীব ই লাগেজ নিয়ে উঠে। সাইমা রুমে ঢুকে দেখে একটা ডবল খাট, প্রয়োজনীয় বাসন পত্র, একপাশে এক্টা টেবিল কিনে রাখা আছে।

__ “ এগুলো কার? ”
__ “ তোমার জন্য কিনেছিলাম, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস। লাগেই তো সব সময়। ”
__ “ ওকে, খরচ কতো হয়েছে বলুন, নেক্সট মান্থে দিয়ে দিবো। ”
__ “ লাগবেনা, মানে ফ্রেন্ড হিসেবে আমার তরফ থেকে গিফট। ”

তখনই বাড়ি ওয়ালী আন্টি আসে, এসেই সজীব কে বলে,
__ “ ও মা! কি কিউট বউ তোমার, একেবারে যেনো পরী। ” এরপর সাইমার দিকে তাকিয়ে বলে, “ নাম কি তোমার মা? ”

সাইমা অবাক হয়ে সজীবের দিকে তাকায়, সজীব চোখ ইশারা করে আন্টির সাথে কথা বলতে বলে।
__ “ জ্বী আন্টি, আমি সাইমা। এই বাসা টা কি আপনাদের! অনেক সুন্দর তো। একদম মনের মতো এই ঘর টা। ”
__ “ তুমি নিজে সুন্দর, তাই ঘর ও সুন্দর। যেহেতু তোমরা আজ প্রথম এসেছো! রান্না তো করোনি, দুপুরে আমার বাসায় খাওয়ার দাওয়াত দিতে এলাম গো। ”
__ “ জ্বী আন্টি, এসবের কি দরকার ছিলো বলুন, আমরা তো কিনে নিতে... ”

মুখের কথা কেড়ে আন্টি বলে,
__ “ কেউ দাওয়াত দিলে কবুল করতে হয় বউ, বুঝেছো। ”

সাইমার এইখান থেকেই সজীবের উপর রাগ উঠে যায়, না পারছে কিছু বলতে না পারছে সহ্য করতে। আন্টিকে হাসিমুখে বিদায় দিয়ে সজীব এর দিকে ঘুরে তাকালো। সজীব কানে হাত দিয়ে ইশারায় সরি বলে,

__ “ আমি আপনার স্ত্রী? ”
__ “ আরে রাগ করছো কেনো? ঢাকায় সিংগেল মেয়েকে কে বাসা ভাড়া দিতো শুনি। এই রুম টা অনেক সুন্দর, তোমার উপযোগী। তাই মিথ্যে বলে বাসাটা নিয়ে নিয়েছি। এতো রাগ করো না তো, ফ্রেশ হয়ে চলো দাওয়াত খেতে যাই। ”

°°°

সাইমার ঘুম ভাঙে সজীব এর ডাকে, ফ্লোরে শুয়ে থেকে মাজা ব্যথা হয়ে গিয়েছে সাইমার।
আড়মোড়া ভেঙ্গে সাইমা বললো,

__ “ কি হলো! ডাকছেন কেনো? “

__ “ রাতের খাবার খেয়ে নাও, এরপর গিয়া বিছানায় ঘুমাও। ”
__ “ রান্না কে করেছে? ”
ভাত আর ডিমভাজি, ডাল রান্না করেছে সজীব।
__ “ এতো কথা না বলে খেয়ে নাও। ”

__ “ আপনি কি এখানেই থাকবেন, বাসায় কি যাবেন না? ”

__ “ আমি এখানে থাকলে কি প্রব্লেম তোমার? ”

__ “ আমার ভালো লাগে না আপনাকে, বুঝেন না? ”

__ “ কিছুই করার নেই, এখন ভালো লাগেনা পরে ভালো লাগবে। ”

__ “ তার মানে আপনি কিছুতেই যাবেন না, আমাকে ই চলে যেতে হবে তাহলে! ”

সজীবের খুব রাগ উঠে যায় সাইমা চলে যেতে চেয়েছে তাই। সজীব সাইমাকে জোর করে চুমু খায়। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ায় সাইমার কান্নার জন্য।

__ “ বাধ্য মেয়ের মতো থাকলে এসব জোর কখনোই করতাম না, সরি। এখন খেয়ে নিয়ে আমাকেও খেতে দাও। নাকি গো ধরে বসে থাকবে, আমাকে আরোও খারাপ বিহেভ করিয়ে নিবে তোমার সাথে। ”

সাইমা উঠে এসে অল্প একটু খেয়ে নেয়, সজীব বেশি করে খেতে বাধ্য করে, নিজেও খেয়ে নেয়।

সাইমা কান্না স্বরে বলে,
__ “ আজ যা করলেন, নেক্সট টাইম এমন হলে আমার মরা মুখ দেখবেন। ”

__ “ আত্মহত্যা মহাপাপ, করলে শাস্তি তুমি পাবে! ”

°°°

আলিফ কে ছোট থেকেই খুব পছন্দ করতো সাইমা, ম্যাচিউর হবার পর থেকে আলিফের সাথে ৪ বছর প্রেম করে সাইমা। বাসায় যখন জানাজানি হয় সাইমার বাবা বিয়েতে অস্বীকার করেন। আলিফ কে তার পছন্দ না! কিছুতেই মেনে নিবেনা উনারা আলিফ কে।

সাইমা তখন মহা বিপাকে পড়ে, বাসায় বন্দী করে রাখে ওর বাবা। একদিন এর ভিতর এক পঞ্চাশ উর্ধো বুইড়া লোকের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয় সাইমার। সাইমা বাধ্য হয়ে বিয়ে করলেও মন থেকে মেনে নিতে পারেনি।
সাইমা কে অবশ্য মোহরানা বাবদ কিছু টাকা দেওয়া হয়। নিজের কাছেই রেখে দেয় সাইমা। আলিফ কে ভালোবেসে স্বামীর অত্যাচার মেনে নিতে পারেনি। সাইমার বাবা ভাবে বিয়ের পর সাইমা সব মানিয়ে নিতে বাধ্য। বিয়ের দুইদিন পর সুযোগ বুঝে সাইমা পালিয়ে আসে প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট নিয়ে। বান্ধবীর সাহায্যে এক টা মেসে উঠে। আলিফের সাথে অনেক যোগাযোগ করার ট্রাই করে।
কিন্তু নাহ! আলিফ যেনো দুইদিন এ হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে।

৬ টা মাস সাইমা প্রচুর কষ্ট করে, তিনটা টিউশনি করে যা টাকা পেতো তার কিছুটা করে জমিয়ে রাখতো। বৃদ্ধ স্বামী মেয়ের পালিয়ে যাওয়াতে ডিভোর্স দুইদিন পরই দিয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু সাইমার বাবা সাফ জানিয়ে দেয়, মেয়ে তাদের কাছে মৃত।

সাইমা ও মনে মনে ঠিক করে নেয়, যে বাবা মা মেয়ের ক্ষতি করতে পারে, তাদের বাবা মা পরিচয় নাই বা দিলাম। ৭ মাস পর ফাইনাল এক্সাম শুরু হয়, টিউশনি করে এক্সাম খুব একটা ভালো হয়না সাইমার। তবুও নিষ্ঠুর পৃথিবীতে বেঁচে থাকার লড়াই তো করতেই হবে সাইমার।

খারাপ সময় গুলো তেই পরিচয় হয় সজীব এর সাথে ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে। সাইমা সুখের দুঃখের সব কথা এই ছেলেটাকে বলে দিতো। এই ছেলেটার সাথে রোজই সাইমার ঝগড়া হতো আবার সজীব ই সাইমা কে কাছে টেনে নিতো।

ঢাকায় প্রথম দিন হাজবেন্ড ওয়াইফ পরিচয় এ দেওয়ার পর সজীব এর উপর রাগ করে থাকতো সাইমা। প্রথম মাস অফিস চলছে, খুব কাজ থাকতো। একদিন সজীব ফোন দেয় সাইমা কে।
__ “ হুম বলেন কি বলবেন? ”
__ “ তুমি আজ দেখা করতে পারবে? ”
__ “ অফিসে তো প্রচুর কাজ।”
__ “ সন্ধ্যার পর আসিও। আমি তোমার বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসবো না হয়। ”

সজীব এই কাজ টা প্রায়ই করতো, অফিস শেষ এ সাইমা কে নিয়ে ঘুরতে যেতো। হয়তো টং এর দোকানে চা, না হয় হাটাহাটি, কিংবা রেস্টুরেন্ট এ ডিনার।

সাইমার ভিতরের রাগ প্রকাশ করতো না কখনো, ক্ষতি তো আর করছেনা সজীব।
দুই মাস এভাবেই চলে, হুটহাট সাইমার বাসায় আসা, বেড়ানো। দুইমাস পর সাইমাকে শুক্রবার দুপুরের আগে পার্কে ডাকে সজীব। সাইমা ও যায়, কারণ সজীব সব সময় তাকে সাহায্য করে আসছে। একটু ঘুরতে তো যাওয়া ই যায়।

পার্কে গিয়ে সজীব আগে থেকেই বসে থাকে, সাইমা কে দেখে থমকে যায়। শাড়ি পড়েছে মেয়েটা আজ। যেনো স্বর্গ থেকে নেমে আসা কোন অপ্সরা তার দিকে এগিয়ে আসছে। নীল শাড়ি তে যেনো নীল পরীর মতো লাগছে।

সাইমা কাছে আসতেই বুঝে সজীব ওকে দেখে চমকে গিয়েছে। হাতে তুড়ি মেরে বলে,

__ “ আসলে কলিগের বিয়ে ছিলো, খুব করে ডেকেছিলো। বাধ্য হয়েই শাড়ি পড়ে গিয়েছিলাম। আপনি এমন সময় দেখা করতে চাইলেন। চেঞ্জ করে আসার সময় ই পাইনি আসলে। ”

__ “ পরীর মতো লাগছে! তুমি এতো ই সুন্দরী। ”

__ “ বাদ দিন, বলুন কি বলতে ডাকলেন। ”

সজীব সাইমার হাত ধরে, সাইমা নিজেও অবাক হয়ে যায়। দুইমাসে একটা ছেলে কখনো ই তার হাত ধরেনি। আজ কিনা সেইই হাত ধরেছে।
সাইমা কে অবাক করে দিয়ে সজীব বলে,
__ “ ভালোবাসি তোমাকে, অনেক আগে থেকে।
হবে কি চলার পথের সঙ্গী আমার। ”
__ সাইমা হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে, “ সম্ভব না! ”

__ “ তুমি চাইলেই সম্ভব। তোমার আলিফ এক বছরেও ফিরেনি! তার জন্য কিসের এতো অপেক্ষা করবে তুমি! আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি সাইমা, পারলে তুমি সময় নাও। কিন্তু বিয়ে টা হয়ে গেলে তোমার সাথে সাক্ষাত এ পাপ হবে না। যদি তোমার আলিফ ফিরে আসে, চলে যেও তুমি। মুক্ত করে দিবো তোমায়। প্লিজ ফিরিয়ে দিও না ।”

সাইমা উঠে যেতে চাইলে সজীব হাত ধরার চেষ্টা করে, সাইমা বেকায়দায় সজীবের উপর পড়ে যায়। ওপেন প্লেসে এই অবস্থায় কেউ দেখলে পরিস্থিতি খারাপ হওয়া টাই স্বাভাবিক। এলাকার কিছু ছেলে এসে চারিদিকে মুহুর্তের মধ্যে ভিড় করে আজেবাজে কথা বলা শুরু করে ওদের।

চলবে...............

ডিভোর্সি কে বিয়ে

পর্ব:০১

লেখক : অজানা

03/05/2024

“আফিফার হবু বর মারা গিয়েছে, এই বিয়ে হবে না।” তিক্ত বাক্যটা কর্ণকুহরে আসতেই সমস্ত বিয়ে বাড়ি নিস্তব্ধ হয়ে গেল। আফিফা তার হবু বরের জন্য বধু সেজে অপেক্ষা করছিল। তার হবু স্বামী মারা গিয়েছে বাক্যটা আফিফার কর্ণে পৌঁছাতেই সে চমকে উঠল! চিন্তায় সমস্ত মস্তিষ্ক অকেজো হয়ে গেল। বুদ্ধিরা জোট বেঁধে পালিয়েছে। ভেতরটা শূন্যতায় ভরে উঠল। রিমির মুখে এমন কথা শুনে আফিফার বাবা নিজাম সিকদার ধপ করে জমিনে বসে পড়লেন। আফিফা দৌড়ে এসে বাবার পাশে বসলো। সে উদ্বিগ্ন হয়ে বলল,

“তুমি চিন্তা করো না আব্বু আমার কিছু হবে না। আমি ঠিক আছি আমি থাকতে তোমাকে কেউ কথা শোনাতে পারবে না।” নিজাম সিকদার নিস্তেজ হয়ে বসে রয়েছেন। আফিফার আঁখিযুগল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। সে বিয়ে করতে পারবে না বলে তার আঁখিযুগল ভিজেনি৷ তার আঁখিযুগল ভিজেছে বাবার বিধস্ত মুখশ্রী দেখে। চারদিকে কোলাহল সৃষ্টি হলো কিছু তিক্ত বাক্য কর্ণকুহরে এসে পৌঁছাল।

“এই মেয়ে অপয়া বিয়ে না হতে হবু স্বামী মারা গেল!”

“এই মেয়ে যার ঘরে যাবে তার ঘরটা আঁধারে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে।”

“এই মেয়েকে কে বিয়ে করবে?”

“আপনি সমাজে কিভাবে মুখ দেখাবেন নিজাম সিকদার?”

“আমাদের বল্টুর সাথে আফিফার বিয়ে দিয়ে দিন।”

বিষাক্ত বাক্য গুলো ধারালো অস্ত্রের মতো বুকে এসে বিঁধছে। কায়ার সমস্ত হাড় ভাঙা ব্যথা অনুভব করছে আফিফা৷ আরহান বাবা এবং বোনের করুন অবস্থা দেখে দিশেহারা হয়ে পড়লো। সে দ্রুত আফিফার কাছে এগিয়ে এলো। নিজাম সিকদার জ্ঞান হারিয়েছে। আফিফা এবং আরহান বাবার জ্ঞান ফেরালো। নিজাম সিকদারের জ্ঞান আসতেই মেয়েকে বুকের মধ্যে আগলে নিল। সে অস্থির হয়ে শুধালো,

“তোর কি হবে মা? আমি যে তোর সবচেয়ে বড় সর্বনাশটা করে ফেললাম। তুই আমাকে বলেছিলি তুমি অনার্স শেষ করে বিয়ে করবি। আমি এতদিন ধৈর্য ধরলাম আর কয়টা দিন ধরতে পারলাম না।”

বাবার বলা প্রতিটি বাক্য আফিফার ভেতরটা রক্তাক্ত করে দিচ্ছে। সে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। কথা বলার কোনো শক্তি সে ভেতর থেকে সঞ্চয় করতে পারছে না৷ আরহান আফরাতের দিকে দৃষ্টিপাত করল। আফরাতের সমস্ত মুখশ্রীতে গম্ভীরতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। আফরাতের মা মরিয়ম তালুকদার নিজাম সিকদারের কাছে এগিয়ে আসলেন। সে নিজাম সিকদারের পাশে বসে নিম্ন কণ্ঠে শুধালো,

“আমি আপনার সাথে কিছু কথা বলতে চাই ভাইজান। আমি জানি কথা গুলো আপনার কাছে মূল্যহীন লাগবে। তবুও আমি আপনার কাছে এই আর্জিটা করতে চাই। আপনি আমাকে ফিরিয়ে দিবেন না, আশা করছি।” মরিয়ম তালুকদারের কথায় স্থির দৃষ্টিতে মরিয়ম তালুকদারের দিকে দৃষ্টিপাত করল নিজাম সিকদার। আজ শিকদার পরিবার জুড়ে হাহাকার নেমে এসেছে। সেই হাহাকার শুষে নিতে মরিয়ম তালুকদারের আগমন! ব্যাপারটা ভিষণ সুন্দর!

“আপনি আমার ছেলের বন্ধুর মা। আপনার স্বামী আমার খুব ভালো বন্ধু ভাবি। আমি আশা রাখছি এমন কোনো কথা বলবেন না। যেন আমি এবং আমার মেয়ে ভেতর থেকে আঘাতপ্রাপ্ত হই।” নিজাম সিকদারের কথায় মরিয়ম তালুকদার দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। সে শান্ত কণ্ঠে বলল,

“আমি আফিফার সাথে আমার আফরাতের বিয়ে দিতে চাই। আপনি যদি অনুমতি দেন তাহলে এই আসরেই আফিফা বিয়ে হবে।” মরিয়ম তালুকদারের কথায় চমকে উঠল উপস্থিত সবাই! নিজের থেকে তিন বছরের বড় মেয়েকে বিয়ে করবে আফরাত? আফরাতের মুখশ্রীর কোনো পরিবর্তন হয়নি৷ সে আগের ন্যায় গম্ভীর মুখশ্রী করে দাঁড়িয়ে আছে। আফিফার মুখশ্রীর বদল এসেছে। সে বিস্ময় নয়নে মরিয়ম তালুকদারের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। নিজাম সিকদার কিছুক্ষণ ভাবলো। সে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,

“আমি রাজি ভাবি। আপনার ছেলেকে বিয়ের জন্য রাজি করান।”

“আমার ছেলে বিয়ের জন্য প্রস্তুত আপনি আফিফাকে রাজি করান।”

“আমি এই বিয়ে করব না আব্বু। নিজের থেকে তিন বছরের ছোট ছেলেকে আমি কিভাবে বিয়ে করব!” আফিফার কথায় স্নিগ্ধ হাসলেন মরিয়ম তালুকদার। তার হাসি দেখে বিরক্ত হলো আফিফা। মরিয়ম তালুকদার আফিফার মস্তকে হাত বুলাতে বুলাতে বলল,

“নিজের থেকে ছোট ছেলেকে নিয়ে করা কি পাপ মা? তোমার আংকেলের আমি দু'বছরের বড়। এই কথাটা কেউ জানে না আজকে তোমাকে বললাম। তুমি তো বিয়েই করবে মা পাপ তো আর করবে না। একটা ছেলে যদি তার থেকে চার-পাঁচ বছরের ছোট মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। তাহলে তুমি কেন তিন বছরের ছোট ছেলেকে বিয়ে করতে পারবে না। বিয়ের পরে তোমাকে শশুর বাড়ি যেতে হবে না। তুমি তোমার বাড়িতে থাকবে আর আফরাত আমার বাড়িতে থাকবে। আফরাতের যখন একটা ভালো চাকরি হয়ে যাবে। তখন তোমাকে আমাদের বাড়িতে তুলে নিয়ে যাব। এখন সবকিছু তোমার ওপরে নির্ভর করছে মা। তোমার অমতে কিছুই হবে না। তুমি রাজি ঢাকলে বিয়ে হবে, না থাকলে বিয়ে হবে না।” মরিয়ম তালুকদারের কথায় সবাই বিস্মিত হলো! আফিফাও ভিষণ আবাক হলো। নিজাম সিকদার আহত কণ্ঠে শুধালো,

“তুই আর অমত করিস নে মা। তুই এই বিয়েতে রাজি হয়ে যা।” আফিফা থমকালো কোনো বাক্য কণ্ঠনালিতে এসে পৌঁছাচ্ছে না। সে ধরে আসা কণ্ঠে বলল,

“তোমার মস্তক খারাপ হয়ে গিয়েছে আব্বু। নিজের থেকে তিন বছরের ছোট ছেলেকে কিভাবে বিয়ে করব? আমি বিয়ে করলেও সমাজ কি আমাদের মেনে নিবে?”

“তুই বিয়ে না করলে সমাজ কি তোকে মেনে নিবে মা? সমাজ তো অনেক কিছুই চায়। তুই সমাজের সকল আবদার পূরন করতে পারবি? তুই যদি এই বিয়ে না করিস। তাহলে আমাকে অনেকটা অসম্মানিত হতে হবে মা।”

“যার সাথে বিয়ে দিবে সে রাজি তো বাবা?” আফিফার কথায় নিজাম সিকদার আফরাতের কাছে গেল। আফরাতের মস্তকে হাত বুলিয়ে শুধালো,

“তুমি আমার মেয়েকে বিয়ে করবে বাবা?” আফরাত গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

“বিয়ের শব্দ পুরুষ মানুষকে ঈদের আনন্দ দেয়। বিয়ে করতে পারলেই বোধহয় পুরুষ মানুষ সবচেয়ে সুখী। সেখানে আফিফা আপুর মতো সুন্দরী মেয়ে বউ হিসেবে পেলে কোনো কথাই নেই। আপনি একটা পরীর জন্য জিনের কাছে আবেদন করতে এসেছেন। এত সুন্দর পরী পেলে জিন কি নাকচ করতে পারে! এমন লাল টুকটুকে বউ দেখে আনন্দে নাচতে ইচ্ছে করছে। আপনি কি আমার শশুর হবেন আব্বা?” আফরাতের কথায় লজ্জা পেল নিজাম সিকদার। ছেলেটা দারুন দাম্ভিক কিন্তু কথা বলে অসাধারণ! তা আজকেই উপলব্ধি করতে পারল নিজাম সিকদার। পেটে ক্ষুদা অনুভব করলে যেমন খাবারের গুরুত্ব বোঝা যায়। ঠিক তেমনই বিপদে পড়লে মানুষ চেনা যায়। যে ছেলেটাকে সে সহ্য করতে পারতো না। সেই ছেলেটাই তাকে আনন্দ দেওয়ার প্রয়াস চালাচ্ছে।

ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আফিফা এবং আফরাতের বিবাহ সম্পূর্ণ হয়েছে। আফিফা অনবরত অশ্রু বিসর্জন দিয়ে যাচ্ছে। সে কিছুতেই আফরাতকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারছে না। মেনে নিবেই বা কিভাবে? যাকে এতদিন ছোট ভাই হিসেবে জেনেছে। তাকে কি আর হুটহাট স্বামী হিসেবে মানা যায়! তাও মানুষটা তার থেকে তিন বছরের ছোট। আফিফার ভেতরটা হাহাকার করে উঠল। অনুভূতিরা শূন্য হয়ে গিয়েছে। শহরের অলিতে-গলিতে বিরহ মিছিল করছে।

বাড়িতে প্রবেশ করেই আফরাতে মস্তক জ্বলে উঠল। সে আশেপাশের সবকিছু চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলছে। আফরাতের মতো শান্ত মানুষের হঠাৎ কি হয়ে গেল! সে কি এই বিবাহে খুশি নয়? আফরাতের ক্রোধের কারন কেউ উদ্ধার করতে পারছে না। মরিয়ম তালুকদার ছেলের কাছে এসে শুধালো,

“আফরাত, কি হয়েছে? তুমি এমন উন্মাদের মতো আচরণ করছো কেন?” মায়ের প্রশ্নের আফরাত রাগান্বিত হয়ে শুধালো,

“বিয়ে করেছি বউ রেখে দূরে থাকার জন্য! তুমি আমার বউকে কেন তার বাপের বাড়ি রেখে আসলে? আমি তোমাকে এক সেকেন্ড সময় দিব না। তুমি এখনই আমার বউ এনে দিবে। আমি একটা মুহুর্ত বউ ছাড়া থাকতে পারব না৷ হয় আমাকে বউ এনে দিবে নয়তো বা আমাকে ঘর জামাই বানিয়ে দিবে।” আফরাতের কথায় মরিয়ম তালুকদার বিস্ময় নয়নে ছেলের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। তালুকদার বাড়ির প্রতিটি মানুষের মুখে লাজুক হাসি। আফরাত সবাইকে উপেক্ষা করে বউ এনে দাও বউ এনে দাও যব করতে লাগলো।

চলবে.....

#আলিঙ্গনে_ভালোবাসার_মোহ_জেগে_উঠে
#পর্ব_০১
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

02/05/2024

#এটা_গল্প_কার
#আয়রা

পর্ব ২~
~: আচ্ছা বেয়াই সাব আপনার মুখে কি ছোটবেলায় মধু দেয়নি? নাকি বড় হয়ে আপনি শুধু তে'তো করলা খাইছেন।
পাশে থাকা আরাবী সবসময়ের মতো রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললো,
~:আমার পারমিশন ছাড়া কেউ আমার ঘরে আসুক এটা আমি পছন্দ করি না সো ফা'র্স্ট টাইম এই ভুল করেছেন তাই কিছু বললাম না দ্বিতীয় বার একই ভুল করবেন না।
~: কেন আপনি কি নিজের রুমে চু'রি করা জিনিস এনে রাখেন যে কেউ আসলে দেখে ফেলবে?
ইনায়া কথাটা বলে ঘাবড়ে গেল সে কিসের মধ্যে কি বলে ফেললো। সে আসলে ভুলেই যায় তাঁর সামনে স্বয়ং আরাবী দাঁড়িয়ে আছে ।যার সাথে কথা বললেই ফ্রি তে ধমক শোনা লাগে । সেই কথাটা হোক ভালো আর মন্দ ইনায়া তো বোঝেই না লোকটা শুধু তাঁর সাথেই এমন ব্যবহার করে নাকি সবার সাথে। তাদের বাসায় দুইদিন থেকে এলো কোন সময় দেখেনি নিজ ইচ্ছায় এসে কারো সাথে কথা বলতে। ইনায়ার ধ্যা'ন ভাঙ্গলো আরাবীর ধমকে,
~:কি বললাম শুনেন নি? বের হোন ফা'লতু কথা বলে মাথা খারাপ করবেন না মেহমান মানুষ এর সাথে খারাপ ব্যবহার করতে নিজেরই খারাপ লাগবে।
~: আমি তো আপনার রুমে ইচ্ছে করে আসি নি সারা বাড়ি ঘুরে দেখছিলাম হাঁটতে হাঁটতে এসে পড়েছি আমি কি দোষ করেছি হুহ।
কথাটা বলে একটা ভেংচি কাটে ইনায়া কানে হেডফোন গুঁজে হাঁটা ধরে গুন গুন করে বলে,
~: চুমকি চলেছে একা পথে সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে ।
আরাবী এগিয়ে এসে দরজাটা লাগিয়ে ফোঁস করে নিঃশ্বাস নিয়ে বলে,
~: জীবন থেকে সুনামী যত দূরে রাখবো তত ভালো কারণ আমার জীবনে ভালোবাসা নামক সুনামী যে কবেই থেমে গেছে।

"
~: ইনু এদিকে আয় তো।
পেয়ারায় কামড় দিতে দিতে এগিয়ে আসে ইনায়া। ভ্যাঙ্গ করে বলে,
~: আনু এই আনু কি বলবা বলোতো।
পাশে থাকা আকলিমা বেগম ইনায়ার পিঠে এক ঘা লাগিয়ে বলে,
~: কতবার না বলেছি তোর ভাবীকে এসব বলে ডাকবি না দিন দিন বেয়াদব হচ্ছে আর একদিন শুনলে খবর আছে।
ইনায়া ঠোঁট ফুলিয়ে বলে,
~: তোমার ছেলের বউ যে আমাকে ইনু বলে ডাকে আমার নাম কি ইনু?
আকলিমা বেগম একবার আরশির দিকে তাকায় আরশি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে এগিয়ে এসে শরবতের গ্লাসটা ইনায়ার হাতে দিয়ে বলে,
~: আর বলবো না ইনুপাখি বসার ঘরে আরাবী আছে ওকে যেয়ে শরবত টা দিয়ে আয় আমি নাস্তা তৈরি করছি তোর পছন্দের পাস্তা।
ইনায়ার মন খুশিতে নেচে উঠে আরাবীর আগমনে শরবতের গ্লাসটা নিয়ে দ্রুতপায়ে হাঁটা শুরু করে।হঠাৎ থেমে আশেপাশে সন্দিহান নজর বুলিয়ে শরবতের গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে হাসে।
সোফায় হেলান দিয়ে ফোন টিপছে আরাবী ইনায়া টেবিলে আওয়াজ করে গ্লাসটা রেখে নিজে আরেকটা সোফায় বসে। আরাবী আওয়াজ পেয়ে কখনই তাকিয়েছে টেবিল থেকে শরবতটা নিয়ে চুমুক দিতে নিলেই গ্লাসের একপাশে গোলাপী লিপস্টিক দেখতে পায়। ভ্রু জোড়া উঁচিয়ে ইনায়ার দিকে তাকিয়েই গ্লাসটা আগের জায়গায় রেখে দেয়। ইনায়া ব্যস্ত কন্ঠে বলে,
~: শরবত টা খাচ্ছেন না কেন বেয়াই সাব।
~: আমি শরবত খেতে চেয়েছি লিপস্টিক নয়,অর্ধেক যখন খেয়েছেন বাকিটা আপনিই খান।
ধরা পরে ইনায়া চুপসে যায় ইনিয়ে বিনিয়ে বলে,
~: সরি আমি আবার নিয়ে আসছি বেয়াই সাব।
আরাবী হাত উঁচিয়ে উঠে দাঁড়ায় ইনায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,
~: তাঁর কোনো দরকার নেই আপুকে বলবেন কাজ আছে বিকেলে এসে বক্সটা নিয়ে যাবো আর।
~: আর কি?
আরাবী এগিয়ে একেবারে ইনায়ার সামনে যেয়ে দাঁড়ায় ইনায়া হালকা পিছিয়ে পরে পরপরই শুনতে পায়,
~: কথায় কথায় আমাকে বেয়াই সাব বলবেন না।
~: তো কি বলবো?
~: ভাইয়া।
~: ভাইয়াআআআ!
হালকা টেনে কথাটা বলে ইনায়া আরাবী পকেটে ফোন রাখতে রাখতে বলে,
~: বয়সে গুনে গুনে দশ বছরের বড় হবো আপনার ভাইয়া বললে সমস্যা নেই।
কথাটা বলেই আরাবী চলে যায় ইনায়া হা করে সোফায় বসে দাঁত কিড়মিড় করে বলে,
~: ভাইয়া তোর ভাইয়ার নিকুচি করবো এলিয়েন কোথাকার।
~: কার কি কুচি করবেন আফা?
তাদের বাড়িতে কাজ করা মধ্যবয়সী জবেদা জিজ্ঞেস করলো ইনায়া রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে বললো,
~: একজনের মাথা কুঁচি কুঁচি করে বিরিয়ানী রান্না করে খাবো।
বলেই ইনায়া ধুপধাপ পায়ে উপরে চলে যায়। জবেদা খাতুন নিজের মাথা ধরে বলে,
~: এই‌ মেয়ের বিশ্বাস নাই কবে জানি আমার মাথাটা কাইটা খাইয়া ফেলায়।

চলবে...?

01/05/2024

#এটা_গল্প_কার
#আয়রা

পর্ব ১~

-' পিরিত ভালা গলার মালা
বললে কি আর হয়
(আরে বললে কি আর হয় রে)
যারে ভালো লাগে আমার
দেখলে তারে
চোখে নেশা হয় রে বন্ধু
চোখে নেশা হয়।
গুন গুনিয়ে গানটা গাইতে গাইতে সিঁ'ড়ি দিয়ে নামছে ইনায়া কানে গুঁ'জে রাখা হেডফোনের তালে তালে গান গাইছে সুর টানতে চোখ বুজে ফেলছে। সহসা কারো সাথে ধাক্কা লেগে মেঝেতে পড়ে ইনায়া।কানে থাকা হেডফোন খুলে পড়ে আছে ।খোলা চুলগুলো সামনে ঝুঁকে আছে, পাগলাটে লাগছে ইনায়াকে। দাঁত কিড়মিড় করে তাকালো ইনায়া সামনে শ্যামবর্ণের সুপুরুষ কে দেখে ভ্রু জোড়া কুঁচ'কে এলো অচেনা এই লোকটি তাঁর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।ইনায়া হাত ঝেড়ে উঠে দাঁড়ালো পাশে থাকা লোকটি নিজের ঠোঁট জোড়া কিঞ্চি'ৎ ফাঁক করে ফোঁ'স করে নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো,
~:আন্তরিকভাবে দুঃখিত আসলে আমি উপরে যাচ্ছিলাম ওয়াশ রুম টা কোনদিকে?
ইনায়া লোকটার চারপাশ ঘুরে ঘুরে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছে। পাশের লোকটা ভড়কে মনে মনে আওড়াল,
~: এই পাগল কোথা থেকে এলো! আমি এ কোথায় এসে পড়লাম সব উদ্ভট।
ইনায়া এবার থামলো বগল'দাবা করে দাঁড়িয়ে আড়চোখে চেয়ে বললো,
-' তা চুরি করতে এসেছেন?
বলেই কোমড়ে দুহাত রাখলো পাশে থাকা লোকটি আশ্চর্যের সপ্তম আকাশে পৌঁছে গেল তাঁকে চোর বলা হচ্ছে? কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নিলেই ইনায়া জোড়ে জোড়ে চেঁচিয়ে সবাইকে ডাকতে লাগলো,
-' কে কোথায় আছো ভাইয়া ,বাবা চোর! চোর এসেছে।
লোকটা বেক্কেলের মতো দাঁড়িয়ে রইলো নিচের বসার ঘর থেকে সবাই ছুটে আসলো, ইনায়া দৌড়ে তাদের কাছে যেয়ে চোর চোর বলে এটা ওটা বলছে, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ইনায়ার ভাই ইনতিসার কপাল চাপড়ে পাশে থাকা লোকটার দিকে তাকিয়ে দেখলো রাগে তাঁর চোখদুটো লালচে হয়ে আসছে। ইনতিসার ইশারায় আরশি কে বললো তাঁর ভাইয়ের কাছে যেতে। ইনায়ার মা আকলিমা চৌধুরী টেনে নিয়ে চলে গেছে ইনায়াকে। আতহার চৌধুরী পাশে থাকা লোকটির কাছে এসে হেঁসে কথা বলে চলে গেল। ইনতিসার ও বাবার পিছু পিছু চলে গেল আরশি এগিয়ে এসে লোকটির হাত ধরে বললো,
~: এটা আমার ননদ ভাই রাগ করিস না ও আসলে বুঝতে পারেনি।
~: তাই বলে চোর বানিয়ে দিবে? বিদেশ থেকে পড়ালেখা করে এসে আমি এখানে চোর উপাধি পাবো!
আরশি আকুতি ভরা চোখে তাকাতেই লোকটি উপরে ওয়াশরুমের দিকে চলে যায় ।
"
সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পড়েছে পাখিরা কিচিরমিচির আওয়াজ করে আকাশে উড়ছে। ইনায়া পায়ের ওপর পা তুলে দোলনায় দোল খাচ্ছে প্রকৃতির বাতাস এসে গায়ে লাগছে কানে তাঁর পছন্দের হেডফোনে বাজছে প্রিয় একটা গান। খুব যে গান প্রেমী সে সারাদিন গান শুনতেই সে পছন্দ করে এটা নিয়ে অভস্য বাসা থেকে কম কথা শুনতে হয়না। এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিবে সে পড়ালেখার প্রতি ছোটবেলা থেকেই চরম বিতৃষ্ণা তাঁর, জোড় করে নানা কায়দায় তাকে পড়তে বসানো লাগে। শত কষ্টের পরেও পরিক্ষায় প্রতি বিষয়ে পাশ মার্ক নিয়ে ফিরে সে। তার বাবা আতহার চৌধুরী অনেক হোম টিউটর রেখেছে কিন্তু ইনায়ার এরকম উদ্ভট কর্মকান্ড ও পড়ালেখায় অমনোযোগী হওয়ায় একটাও টিকে নি। ইনায়া ও জানিয়ে দিয়েছে তাঁর কোনো হোম টিউটর লাগবে না সে একা একাই পড়বে। ইনতিসার বোনের কথা কানে না দিয়ে ভালো হোম টিউটর খুঁজছে ।
'
আড়মোড়া ভে'ঙ্গে ছাদে উঠে লোকটি যেয়ে দেখে ইনায়া আগে থেকেই সেখানে হাজির দোলনায় দোলছে তাকে দেখে এগিয়ে আসছে এখানে, কপালে বিরক্তির ছাপ ফেলে লোকটা তাকিয়ে আছে, ইনায়া সামনে দাঁড়িয়ে উৎফুল্ল গলায় বলে উঠলো,
~: কেমন আছেন বেয়াই সাব?..........

পাশে থাকা লোকটা নিরুত্তর ইনায়ার বিরক্তে মুখ তেতো হয়ে আসে সে সিনেমায় দেখেছে বেয়াই মানুষ কেমন রসিক হয় আর তাঁর বেয়াই করল্লার জুস মুখে লেগে থাকে তো কথা আসেই না মুখটা বানিয়ে রাখে পাতিলের কালির মতো ইনায়া খুকখুক করে কেশে বলে,
-' আমি জিজ্ঞেস করেছি কেমন আছেন বেয়াই সাব আপনি বলবেন বুকে বড় জ্বা'লা তা না বলে চুপ করে আছেন কেন? ও দাঁ'ত ব্রাশ করেন নি মুখের গ'ন্ধ বের হবার ভয়ে? টেনশন করবেন না কথা বলতে পারেন আমি দূরে দাড়িয়ে থাকি তাহলেই আপনার মুখের দু'র্গন্ধ আসবে না।
একসাথে কথাগুলো বলে থামলো ইনায়া সামনে তাকাতেই দেখলো লোকটার রাগা'ন্বিত মুখস্রী ইনায়া ঢোক গিলে এ আবার কোন আই'টেম কথায় কথায় রেগে লাল হয়ে যায়! লোকটি গম্ভীর মুখে প্রশ্ন করে,
~: মাথায় সম'স্যা?
ইনায়া চোখ বড়বড় করে দুদিকে মাথা নাড়ে লোকটা গায়ে জড়ানো হুডির পকেটে হাত দিয়ে বলে,
~: মাথায় সমস্যা না থাকলে কোন অপরিচিত কারো সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় এবং কোন সময় কি বলতে হয় জানা উচিত,বোঝা উচিত।
ইনায়া চুপটি মেরে থাকে সে বেশ বুঝতে পেরেছে লোকটা তাঁর কথায় বিরক্ত তার কথা বা উপস্থিতি কোনটাই লোকটার ভালো লাগছে না তাই প্র'সঙ্গ পাল্টাতে প্রশ্ন করে,
~:' আমি ইনায়া চৌধুরী আর আপনি?
লোকটা কিছু বলার আগেই নিচ থেকে আরশি লোকটাকে ডেকে উঠে লোকটা পিছু ঘুরে যেতে যেতে বলে,
~:' আরাবী আহমেদ।
ইনায়া অ'স্ফুট স্বরে একবার নিজ অজান্তেই বলে,
~: আরাবী!
পরপর মাথাটা নেড়ে দোলনায় বসতে বসতে বলে,
~: সে যাই হোক না কেন বেয়াই সাব কে আমার হে'ব্বি লাগছে রাগ করলে একবারে লাল টমেটো লাগে।
বলেই ইনায়া দোলনা থেকে উঠে হাত ছড়িয়ে ছাদে ঘুরতে ঘুরতে বলে,
-' ভাল্লাগছে ভাই ভাল্লাগছে ব্যাপারটা যে ভাল লাগছে!

চলবে....?

30/04/2024

গল্পঃ সিনিয়র আপুর রোমান্টিক অত্যাচার
পর্ব - ৮ ও শেষ পর্ব

লেখক:মোঃরাকিবুল ইসলাম

এভাবেই ভালোবাসা রাগ অভিমানের মাজেই কেটে গেলো দুটো মাস।

ত একদিন সকালে ঘুমিয়ে আছি মারিয়া

ডাক দিলো।

মারিয়াঃ এই আফিফ উঠ কলেজে যাবো।

আমিঃ উম একটু পড়ে।

মারিয়াঃ উঠবি না।

আমিঃ যাও এখন গুমাবো।

তারপর মারিয়া আর কিছু বললো না মনে হয়

চলে গেছে আমি আবার ও গুমিয়ে পড়লাম।

একটু পড়ে মনে হয় আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। চোখ খুলে দেখি মারিয়া আপু আমার

নাক চেপে দরে আমার ঠোঁট তার মুখ দিয়ে চেপে ধরে রেখেছে

আমিঃ কি হয়েছে।

মারিয়াঃ উঠ কলেজে যাবো।

তারপর আমি উঠে ফ্রেশ হয়ে মারিয়া আপুকে

নিয়ে কলেজে চলে গেলাম।

মারিয়া আপুর একটা গুরত্বপূর্ন ক্লাস আছে

তাই মারিয়া আপু ক্লাসে চলে গেলো।

আমি আর কি করব তাই হল রুমের দিকে

যেতে লাগলাম।

ঠিক তখনি হাত দরে টান দিয়ে কে যানি আমাকে

ক্লাসে নিয়ে গেলো।

ক্লাসে গিয়ে দেখি একটা মেয়ে। মেয়েটা মনে

হয় নতুন এর আগে কখনো দেখিনী।

আমিঃ এভাবে হাত দরে ক্লাস নিয়ে আসলেন কেন।

মেয়েটিঃ প্রতিশোধ নিতে।

আমিঃ মানে।

মেয়েটিঃ ওইদিন যেভাবে আমার ভাইকে মেরেছিলি তার প্রতিশোধ নিতেই।

তারপর মেয়েটি দরজা লাগিয়ে দিলো।

তারপর তার হাতে থেকে কাপড়ের

কিছু অংশ ছিরে ফেললো।

আমি শুদু অবাক হয়ে দেখতাছি।

তারপর মেয়েটি চিল্লানি শুরু করলো হেল্প

বাচাও আমাকে, মেয়েটির চিল্লানি শুনে

অনেকেই ক্লাসের দরজা দাক্কাচ্ছে।

তারপর মেয়েটি দৌড়ে গিয়ে রুমের দরজা

খুলে ওইদিন যাকে মেরেছিলাম ওই ছেলে

টাকে জরিয়ে দরলো।

মেয়েটিঃ দেখ ভাইয়া এই ছেলেটা আমাকে

এখানে ডেকে এনে ইজ্জত নষ্ট করার চেষ্টা করছিলো

(কেঁদে কেঁদে বললো মেয়েটি)

এখানে অনেক শিক্ষক ও এসেছে।

আমিঃ বিশ্বাস করেন আমি কিছু করি নি।

তারপর মেয়েটির ভাই এসে আমাকে একটা

থাপ্পর মারলো।।

তারপর দাক্কা দিয়ে ক্লাস রুমের বাহিরে পাঠিয়ে দিলো।

সবাই শুধু বলছে এরকম ছেলের কোনো খমা নেই।

একে উচিৎ শাস্তি দেওয়া দরকার।

অনেক শিক্ষক রাও বলছে।

আমিঃ পিন্সিপাল স্যার আপনিও বিশ্বাস করেন,

আমি এরকম একটা কাজ করতে পারি।

পিন্সিপালঃ নিজের চোখে যা দেখলাম তাতে

বিশ্বাস না করে পারছি না তোমাকে দিয়ে এটা

আশা করি নি।

তারপর আমি রেহান আর রাজুর কাছে গেলাম।

আমিঃ দোস্ত তরাও কি এইটা বিশ্বাস করস।

রাজুঃ না এটা আমরা নিজের চোখে দেখলেও

বিশ্বাস করিনা যে তুই এরক।

তারপর মারিয়া আপু আসলো মারিয়া আপু এসে

সব কাহিনী শুনলো।

আমিঃ তুমিও কি বিশ্বাস করো আমি এমন একটা কাজ করতে পারি।

তারপর মারিয়া আপু আমাকে একটা থাপ্পর মারলো

তখনি আমি সাইটে দেওয়ালে তাকিয়ে দেখি

একটা সি সি টি ভি ক্যমেরা লাগানো।

তারপর মারিয়া আপু বলতে লাগলো।

মারিয়াঃ তকে অন্ধের মতো ভালোবাসতাম

আর তুই কিনা আমার ভালোবাসা

নিয়ে খেলা করলি। কি দেয়নি তকে তর এসব লাগবে তুই একবার আমাকে বলতি আমার সব দিয়ে দিতাম তকে।

আমিঃ আমাকে ফাসানো হয়েছে।

মারিয়াঃ চুপ তুই আর একটা কথাও বলবি না।

লম্পট চরির্ত হীন ছেলে কে কিনা আমি

ভালোবাসি ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে।

আমিঃ আমার কথা টা ত শুনো।

মারিয়াঃ আসলে তর বাবা- মা ই তকে সু-শিক্ষায়

শিক্ষিত করতে পারে নাই।

(বাবা - মার কথা বলাতে কেনো জানি আর চুপ

থাকতে পারলাম না?)

আমিঃ সেট-আপ মিস মারিয়া। অনেক বলেছেন।

আমাকে নিয়ে বলতেন কিছুই বলতাম না বাট

বাবা মা কে নিয়ে বলে কাজ টা ঠিক করলেন না।

তারপর আমি পিন্সিপাল স্যার কে বললাম।

আমিঃ স্যার আপনাদের কাছে কোনো প্রমাণ আছে

যে আমি এই কাজ টা করেছি।

স্যারঃ নিজের চোখে দেখার পর আমি কোনো প্রমাণের প্রয়োজন মনে করি না।

আমিঃ আর আমি প্রমাণ দিতে পারবো আমি

এই কাজ টি করি নি।

স্যারঃ কিভাবে।

আমিঃ সাইটে দেখেন।

তারপর সবাই দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে।

দেখলো ক্যমেরা লাগানো আছে।

তখনি ওই মেয়েটার মুখ টা একদম কালো হয়ে গেলো।

আমিঃ সি সি টিভি ক্যমেরার ফুটেজ কোথায়।

স্যারঃ হল রুমে।

আমিঃ তাহলে হল রুমেই চলেন।

তারপর হলরুমে শুদু ওই মেয়েটি ওর ভাইয়া।

আমি সকল স্যার আর মারিয়া গেলাম।

তারপর ফুটেজ চালু করলাম। যাতে

স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

মেয়েটি আমার হাত দরে টান দিয়ে ক্লাসে

নিয়ে গেলো। তারপর নিজেই নিজের কাপর

ছিরলো তার পর চিল্লাতে শুরু করলো।

আমিঃ বিশ্বাস হয়েছে ত স্যার।

পিন্সিপালঃ হুম স্যারি।

আমিঃ মাজে মাজে চোখের দেখাও ভুল হয়।

আর আপনাকে বলেছিলাম এই ছেলেটাকে

সাসপেন্ট করতে বাট করেন নাই। আপনিও

তৈরি থাকেন স্যার।

তারপর আমি ওই মেয়েটির কাছে গেলাম।

আমিঃ মেয়েদের কাছে তার সবচেয়ে

দামি জিনিস জানো কি তার ইজ্জত তাই

নেক্সট টাইম এরকম করার আগে ভেবে

দেখবা। আমি ছেরে দিলাম সবাই কিন্তুু

আর ছেরে দিবে না।

এই বলেই আমি রুম থেকে বাহির হয়ে গেলাম।

আমার পিছনে পিছনে মারিয়া ও আসতে লাগলো।

মারিয়াঃ প্লীজ আফিফ দারা আমার কথা টা শুন।

আমি কোনো কথা না বলেই হাটতে লাগলাম।

মারিয়া দৌড়ে এসে আমার সামনে দাড়ালো।

মারিয়াঃ প্লিজ ভুল হয়ে গেছে।

আমি কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে বাইক

নিয়ে চলে গেলাম।

সত্যিই আজকে মারিয়ার কথা গুলো তিরের মতো

লেগেছে। এগুলা ভাবছি আর বাইকের স্পিড

বারাচ্ছি।

হঠাত করেই সামনে দেখি একটা কার

এসে পড়েছে। আমি গাড়ি সাইট করতে গিয়ে

রাস্তার লেম্পপোস্টের সাথে বারি খেলাম।

আস্তে আস্তে আমার চোখ জাপসা হয়ে আসসে। আর

কিছু মানুষ দৌরিয়ে আমার দিকে আসছে।

তারপর আমার আর কিছু মনে নাই যখন আমার

ঙ্গ্যন ফিরলো তখন আমি হাসপাতালে।

আমার সামনে একটা চেয়ারে আম্মু বসে আছে।

মনে হয় গুমিয়ে পড়ছে।

আর মারিয়া আপু আমার হাতের উপড় মাথা দিয়ে শুয়ে আছে।

আমি আম্মুকে ডাক দিলাম। আম্মু আমার ডাক শুনে তাকালো, আম্মু এসেই আমাকে জরিয়ে দরলো।

আম্মুঃ তর ঙ্গ্যন ফিরেছে বাবা?

আমিঃ হুম।

আম্মুঃ জানিস কতো টেনশনে ছিলাম।

আমিঃ কিছু হয়নি ত আমার।

আম্মুঃ জানিস তুই ৩ দিন অঙ্গান ছিলি।

আমিঃ হুম।

তারপর মারিয়া আম্মুকে বললো বড় আম্মু তুমি একটু বাহিরে যাও। তারপর আম্মু চলে গেলো। মারিয়া আপু

আমার মাথার কাছে এসে বসলো। মারিয়া আপুর

চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে মনে হয়

ঠিক মতো গুমাই নি।

হটাট মারিয়া আপু বললো

মারিয়াঃ প্লিজ আমাকে মাফ করে দে?

আমিঃ কে আপনি?

মারিয়াঃ আর কখনো অবিশ্বাস করবো না।

আমিঃ আম্মু (জুরে চিল্লিয়ে বললাম)

আমার ডাক শুনে আম্মু আসলো।

আমিঃ আব্বু কোথায়।

আম্মুঃ একটু আগে অফিসে গেলো।

আমিঃ এখানে আর কতোদিন থাকতে হবে।

আম্মুঃ ডাক্তারের সাথে তর আব্বু কথা বলছে

আজকেই রিলিজ করে দিবে।

আমিঃ ওহ।

তারপর আমি বাসায় চলে আসলাম পায়ে অনেক ব্যথা পেয়েছি। হাটতে সমস্যা হচ্ছে।

তারপর মারিয়া আপু আমাকে দরতে আসলো।

আমিঃ প্লিজ এই চরিত্রহিন ছেলেকে টাচ করার

কোনো দরকার নাই।

মারিয়াঃ ওই কথা নিয়ে এখনো পড়ে আছত।

আমিঃ প্লিজ আপনি যান এখান থেকে।

তারপর মারিয়া আপু কান্না করতে করতে বাসার

ভিতরে চলে গেলো৷।।

তারপর আম্মু আমাকে দরে রুমে নিয়ে গিয়ে

শুয়িয়ে দিলো

আম্মুঃ দেখ তদের কি হয়েছে আমি জানি না।

বাট মেয়েটা তকে অনেক ভালোবাসে ওরে আর

কষ্ট দিস না।

আমিঃ এসব কথা এখন না বলি।

তারপর আম্মু রুমে চলে গেলো।

এভাবে চলে গেলো পনেরোটা দিন।

এই কদিনে মারিয়া আপুকে অনেক ইগনুর করেছি

এবং অনেক কষ্ট ও দিয়েছি। কখনো আমার কাছে

আসতে দেয় নি।

এখন আমি অনেকটাই সুস্থ তাই ভাবলাম আজকে

কলেজে যাবো।

তারপর আমি রেডি হয়ে কলেজের জন্য বের হচ্ছি।

তখনি মারিয়া আপু আসলো।

মারিয়াঃ কই যাচ্ছিস

আমিঃ কলেজে।(একটু বিরক্তি নিয়ে বললাম কথাটা)

মারিয়াঃ একটু ওয়েট কর আমিও যাবো।

আমিঃ স্যরি একটু কাজ আছে তারাতারি যেতে হবে।

তারপর আমি কলেজে চলে আসলাম রেহান আর

রাজু,, এখন ও আসে নাই।

আমি কলেজে এসে মাঠে বসে ফোন টিপতে

লাগলাম।

তখনি একটা মেয়ে এসে আমার পাশে বসলো।

মেয়েটা হয়তো নতুন আগে কখনো দেখিনী।

মেয়েটাঃ এই যে মি.

আমিঃ আমাকে বলছেন।

মেয়েটাঃ আপনাকে ছারা ত কাউকে দেখি না।

আমিঃ হুম বলেন।

মেয়েটাঃ আপনার নাম কী?

আমিঃ আফিফ,,, আপনার?

মেয়েঃ মাহিয়া।

আমিঃ ওহ।

মাহিয়াঃ আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি।

আমিঃ হুম।

মাহিয়াঃ ওকে ফ্রেন্ডস ( এটা বলেই মাহিয়ার হাটতা বারিয়ে দিলো তারপর আমি মাহিয়ার সাথে হ্যন্ড সেক করলাম) তখনি মারিয়া আপু আসলো

মারিয়াঃ বাহ্ এটাই তর দরকারি কাজ?

আমিঃ না।

মারিয়াঃ আমি না হয় একটা ভুল করেই ফেলেছি।

তাই বলে এভাবে কষ্ট দিবি আমায়।

আর মেয়েটা কে?

আমিঃ গার্লফ্রেন্ড।

মারিয়াঃ সত্যি

আমিঃ হুম

তারপর মারিয়া আপু আর কিছু না বলে চলে গেলো

বুজলাম না এ কথা শুনার পরেও মারিয়া আপু এভাবে চুপ থাকলো কি করে।

মাহিয়াঃ এটা কে? আর ওনাকে গার্লফ্রেড বললেন কেন?

তারপর মাহিয়াকে সব কথা খুলে বললাম।

সব শুনে মাহিয়া বললো আপুটা আপনাকে অনেক

ভালোবাসে আর কষ্ট দিয়েন না। আর ভালোবাসার

মানুষকে ওই অবস্থায় দেখলে যে কারো মাথা নষ্ট

হয়ে যাবে।

আমিঃ হুম।

তারপর আমি ক্লাসে চলে গেলাম ক্লাসে গিয় দুইটা ক্লাস করে চলে আসলাম কেম্পাসে।

তখন ফোনে একটা কল আসলো দেখি আম্মু ফোন দিয়েছে।

আমিঃ হ্য আম্মু বলো।

আম্মুঃ মারিয়া সুসাইড করার চেষ্টা করছিলো ও এখন হাসপাতালে।

আমিঃ কি বলছো এসব।

আম্মুঃ হুম।

তারপর আমি আম্মুর কাছ থেকে ঠিকানা নিয়ে

হাসপাতালে চলে আসলাম। হাসপাতালে গিয়ে

দেখি মারিয়া আপু শুয়ে আছে। মারিয়া আপুর হাতে ব্যন্ডেজ। মারিয়া আপুর আব্বু আম্মুও এসেছে।

আমিঃ কেমন আছো বড় আম্মু।

বড় আম্মুঃ এইতো ভালো,, তুই কেমন আছিস।

তারপর আম্মু আব্বু বড় আম্মু আর বড় আব্বু রুমের বাহিরে চলে গেলো।

আমি গিয়ে মারিয়া আপুর পাশে বসলাম।

আমিঃ এমন করার মানে কি?হাট কাটছো কেন?

মারিয়াঃ তর জানার কোনো দরকার নাই।

আমিঃ তাই বলে হাত কাটবা যদি তোমার কিছু হতো।

মারিয়াঃ ওই মেয়েটা কে?

আমিঃ ফ্রেন্ড জাস্ট আজকেই পরিচয়।

মারিয়াঃ তাহলে ওই সময় বললি কেন গার্লফ্রেন্ড

আমিঃ এমনি।

মারিয়াঃ এখানে আসছিস কেন যা এখান থেকে তর

সাথে আমার কোনো কথা নেই।

আমিঃ স্যরি ত।

মারিয়াঃ এতোদিন খুব কষ্ট দিছিস।

এখন অনেকখন আদর করবি।

আমিঃ ওকে।

তারপর মারিয়া আপুকে অনেকখন কিস করলাম।

মারিয়াঃ যা ত আব্বু আর বড় আব্বু কে ডাক দে।

তারপর সবাই রুমে আসলো।

মারিয়াঃ আব্বু আমি আজকেই বিয়ে করবো।

বড় আব্বুঃ আগে তুই সুস্থ হ মা।

মারিয়াঃনা আজকেই এখানেই।

আব্বুঃ ওকে মা তাই হবে।

আমিঃ তাই বলে কাজি অফিসে বিয়ে।

মারিয়াঃ হুম।

তারপর আর কি কাজি ডেকে এনে আমাদের হাসপাতালেই বিয়ে হয়ে গেলো এইটা হয়তো

ইতিহাসে লিখা থাকবে যে হাসপাতালে বিয়ে

হয়ছে।

তারপ আমরা সবাই ডক্টরের কাছে গেলাম

আর বললাম কবে ওকে নিয় জাবো

ডক্টর:বললেন আজই নিয়ে জেতে পারেন

তার পর মারিয়া আপুকে আমরা বাসায়

নিয়ে আসলাম ও স্যরি এখন তো আর আপুনা

সেতো আমার বউ😁😁

তার পর ২.৩ দিন পর আমার বউ পুরো পুরি সুস্থ
তার পর আমাদের বাসর রাত আজ সেই মুহর্ত

আমি আমার ঘরে গেলাম গিয়ে খাটের উপরে
দেখি মারিয়া বসা আমাকে দেখে

সে উঠে এসে আমাকে সালাম করলো

তার পর আমি তাকে নিয়ে খাটে চলে গেলাম

তারপর আমি তার ঘোমটাটা তুললাম

আমি দেখলাম আমার সামনে আকাশ থেকে
নামা পরি বসে আছে তার পর মারিয়া বললো

মারিয়াঃ এই কি দেখছো?

আমিঃ দেখছি আমার ছিনিয়ার বউটাকে

মারিয়াঃ কি বললি তুই কুওা বিলাই ছাগল,,

আমিঃ আর কিছু বলতে দিলামনা ৪ ঠোঁট এক করে
দিলাম আর কতো খন এভাবে ছিলাম তার পর ছেরে

দিলাম।

তার পর আমি উঠে গিয়ে লাইটটা অফ করলাম

তারপর আমি আর মারিয়া সুখের সগরে হারিয়ে গেলাম।।।।।

°সমাপ্ত°

Address

Sylhet
Chhatak

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when শূন্য কাব্য posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share