11/12/2024
আসিফ নজরুল নামে আসলে কেউ নেই। আমরা যাকে আজ আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল হিসেবে চিনি, তার নাম মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
এই ভদ্রলোক এক সময়ে নিজের নামের মোহাম্মদ আর ইসলাম শব্দ দু’টো ছেঁটে ফেলেছিলেন। এ নাম পরিবর্তনের পেছনেও আছে এক গল্প।
একদিন তার সাধ হলো কবিতা লিখবেন। তখন সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্লাটফর্ম হিসেবে জাতীয় কবিতা পরিষদ নামে কবিদের এক সংগঠন হয়েছে কবি শামসুর রাহমানের নেতৃত্বে। এরই ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে জাতীয় কবিতা উৎসব প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে । কবিরা কবিতা পড়েন এ কবিতা উৎসবে। উৎসবের আগে কবিতা জমা দিতে হয়।
তখন জাতীয় কবিতা পরিষদের এই কবিতা বাছাইয়ের দায়িত্বে ছিলেন কবি সমুদ্র গুপ্ত। দারুণ মজার মানুষ শুভ্র লম্বা চুল আর ইয়া গোঁফওয়ালা সমুদ্র দা।
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জাতীয় কবিতা
উৎসবে কবিতা পাঠের জন্য কবিতা জমা দিয়েছেন। সমুদ্র দা মজা করেই বলেছিলেন, ”কবিতাটা ভালো কিন্ত এই সব নরজুল ফরজুল পাল্টাও। কাব্যিক নাম দাও। ”
উল্লেখ্য কবি সমুদ্র গুপ্তেরও এ নামটি ছদ্মনাম;প্রকৃত পারিবারিক নাম আব্দুল মান্নান বাদশা।
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম কিছুতেই নাম বদলাবে না । এই নিয়ে সমুদ্র দার সাথে তুমুল কান্ড। সমুদ্র গুপ্তও বড় ফাজিল; তিনি কিছুতেই নরজুল ফরজুল নামে কবিতা পড়তে দেবেন না! শেষমেষ রফা হলো নাম হবে আসিফ নজরুল। সে বছর থেকেই মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হলেন আসিফ নজরুল।
আজ আইন উপদেষ্টা হিসেবে তিনি যে আসিফ নজরুল লিখছেন, ফাইল সই করছেন, তার এই নাম পরিবর্তনের আইনি কোনো দালিলিক প্রমান বা এফিডেফিট আছে কি? নাকি এ সবও মেটিকুলাস ডিজাইন?
ভবিষ্যতে একদিন হয়ত দেখা যাবে আসিফ নজরুল নামেই কেউ ছিল না; কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আসিফ নজরুল বলছেন , ”মহামান্য বিচারক, আমার নাম মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। আমি আসিফ নজরুল নামে কাউকে চিনি-ই না। ”
পরপারে থেকে তখন কবি সমুদ্র গুপ্ত ওরফে আব্দুল মান্নান বাদশা হাসবেন আর বলবেন,” ওই ব্যাটা নরজুল, দেখলি তো ওদিন তোকে কীভাবে বাঁচিয়ে দিয়েছি !”
(গল্পটা কবি সমুদ্র গুপ্তের কাছেই শোনা)
সংগৃহীত