Sadhana24

Sadhana24 SADHANA24 পেইজ Follow, Like, Comment and share করে পেইজের সাথে থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ রইল।
(1)

গুণীব্যক্তির গৌরব: এক উত্তম আদর্শগুণী ব্যক্তির গৌরব বা সম্মান প্রদর্শন একটি সভ্য সমাজের মূল ভিত্তি। এটি কেবল কোনো প্রথাগ...
18/08/2025

গুণীব্যক্তির গৌরব: এক উত্তম আদর্শ

গুণী ব্যক্তির গৌরব বা সম্মান প্রদর্শন একটি সভ্য সমাজের মূল ভিত্তি। এটি কেবল কোনো প্রথাগত আচরণ নয়, বরং জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও সদ্গুণের প্রতি সমাজের সম্মিলিত শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ। যখন আমরা জ্ঞানী ও চরিত্রবান ব্যক্তিদের মর্যাদা দিই, তখন আমরা তাঁদের জীবনব্যাপী সাধনাকে স্বীকৃতি জানাই।
তাঁদের আদর্শ ও পথনির্দেশনা আমাদের সঠিক পথে চলতে অনুপ্রাণিত করে এবং নৈতিক স্খলন থেকে রক্ষা করে। যে সমাজে গুণীর কদর হয়, সেখানে জ্ঞানচর্চা উৎসাহিত হয় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি ইতিবাচক আদর্শ খুঁজে পায়। সুতরাং, ব্যক্তিগত উন্নতি ও একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণের জন্য গুণীজনের গৌরব অপরিহার্য।

অপ্রমত্তভাবে ধর্ম জীবন-যাপন করা এক শ্রেষ্ঠ মঙ্গল। 'অপ্রমত্ততা'র অর্থ হলো সতর্কতা, সজাগ ও নিষ্ঠার সাথে সৎ পথে জীবন পরিচাল...
17/08/2025

অপ্রমত্তভাবে ধর্ম জীবন-যাপন করা এক শ্রেষ্ঠ মঙ্গল। 'অপ্রমত্ততা'র অর্থ হলো সতর্কতা, সজাগ ও নিষ্ঠার সাথে সৎ পথে জীবন পরিচালনা করা। এটি কেবল আধ্যাত্মিক সাধনার বিষয় নয়, বরং দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজে এর প্রতিফলন ঘটে।

যে ব্যক্তি অপ্রমত্ত, তিনি নিজের চিন্তা, বাক্য ও কর্ম সম্পর্কে সর্বদা সচেতন থাকেন। এই গুণটি মানুষকে লোভ, হিংসা এবং সকল প্রকার অনৈতিক কাজ থেকে বিরত রাখে ও আত্ম-নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। প্রমাদ বা অসতর্কতা যেখানে মানুষের অধঃপতনের কারণ হয়, সেখানে অপ্রমত্ততা আত্ম-উন্নতি, মানসিক শান্তি ও নৈতিক শুদ্ধি নিশ্চিত করে। তাই, একটি সফল ও সার্থক জীবনের জন্য এটি অপরিহার্য।

মদ ও মাদকাসক্তি এক মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি, যা একটি সুন্দর জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এটি শুধুমাত্র মানুষের শারীরিক স্ব...
16/08/2025

মদ ও মাদকাসক্তি এক মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি, যা একটি সুন্দর জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে। এটি শুধুমাত্র মানুষের শারীরিক স্বাস্থ্যেরই ক্ষতি করে না, বরং মানসিক ভারসাম্যও নষ্ট করে দেয়। মাদকাসক্ত ব্যক্তি ধীরে ধীরে পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং তার কর্মজীবন ও ভবিষ্যৎ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়।
এর প্রভাবে পারিবারিক শান্তি বিনষ্ট হয় এবং আর্থিক সংকট দেখা দেয়। সুস্থ ও সুন্দর জীবনযাপনের জন্য এই বিধ্বংসী নেশা থেকে দূরে থাকা অপরিহার্য। সচেতনতা ও দৃঢ় মানসিকতাই পারে যুবসমাজকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করতে এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথ দেখাতে।

জ্ঞাতিবর্গের উপকার করা একটি অন্যতম মহৎ মানবিক গুণ। এটি কেবল নিজের নিকট পরিবার নয়, বরং সকল আত্মীয়-স্বজনের প্রতি আমাদের দা...
15/08/2025

জ্ঞাতিবর্গের উপকার করা একটি অন্যতম মহৎ মানবিক গুণ। এটি কেবল নিজের নিকট পরিবার নয়, বরং সকল আত্মীয়-স্বজনের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
এই উপকার শুধু আর্থিক সাহায্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং বিপদে-আপদে পাশে থাকা, মানসিক শক্তি জোগানো এবং সেবা-যত্নের মাধ্যমেও প্রকাশ পায়। এই অনুশীলনের ফলে পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় হয় এবং সমাজে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি পায়। যে ব্যক্তি তার জ্ঞাতিদের প্রতি সহানুভূতিশীল, তিনি আত্মিক শান্তি লাভ করেন এবং একটি সুন্দর ও ঐক্যবদ্ধ সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

14/08/2025

পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ সালের শাসনবিধি

পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন, ১৯০০: প্রেক্ষাপট, বৈশিষ্ট্য ও সমকালীন প্রাসঙ্গিকতাপার্বত্য চট্টগ্রাম, বাংলাদেশের এক-দশমাংশ ...
12/08/2025

পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন, ১৯০০: প্রেক্ষাপট, বৈশিষ্ট্য ও সমকালীন প্রাসঙ্গিকতা

পার্বত্য চট্টগ্রাম, বাংলাদেশের এক-দশমাংশ ভূখণ্ড জুড়ে বিস্তৃত এক বৈচিত্র্যময় ও সংবেদনশীল অঞ্চল। এর ভূ-প্রকৃতি, সমাজব্যবস্থা এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সমতলভূমি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। এই ভিন্নতাকে স্বীকার করে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকার ১৯০০ সালে এক বিশেষ আইন প্রণয়ন করে, যা ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি, ১৯০০’ বা ‘চিটাগং হিল ট্র্যাক্টস রেগুলেশন, ১৯০০’ (Act I of 1900) নামে পরিচিত। এই আইনটি ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষার একটি আইনি বর্ম এবং একই সাথে এই অঞ্চলে ব্রিটিশ প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার এক অনন্য কৌশল। এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য হলো পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন, ১৯০০-এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, মূল বৈশিষ্ট্য, উদ্দেশ্য এবং সময়ের বিবর্তনে এর কার্যকারিতা ও বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা বিশ্লেষণ করা।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
১৮৬০ সালে ব্রিটিশরা পার্বত্য চট্টগ্রামকে ব্রিটিশ ভারতের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু এই অঞ্চলের দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থান এবং এখানকার জুম্ম জনগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র জীবনধারা ব্রিটিশদের জন্য এক নতুন প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। প্রথমদিকে, ব্রিটিশরা সমতলের মতোই সাধারণ আইনকানুন প্রয়োগের চেষ্টা করে, যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে সংঘাতের জন্ম দেয়। বিশেষ করে কুকি ও লুসাই জনগোষ্ঠীর ক্রমাগত আক্রমণ ব্রিটিশ প্রশাসনকে ভাবিয়ে তোলে। তারা উপলব্ধি করে যে, এই অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হলে একটি বিশেষায়িত প্রশাসনিক কাঠামো প্রয়োজন, যা স্থানীয় প্রথা ও ঐতিহ্যকে সম্মান করবে।
এই উপলব্ধির ফলশ্রুতিতে বেশ কিছু পরীক্ষামূলক পদক্ষেপের পর ১৯০০ সালের ১লা মে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন, ১৯০০’ কার্যকর করা হয়। এর প্রধান স্থপতি ছিলেন ক্যাপ্টেন টি. এইচ. লুইন (Captain T.H. Lewin), যিনি এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। এই রেগুলেশন প্রণয়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে একটি ‘Excluded Area’ বা ‘ব্যতিক্রমী এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যার অর্থ হলো ব্রিটিশ ভারত বা বাংলার সাধারণ আইনসমূহ এখানে সরাসরি প্রযোজ্য হবে না।

রেগুলেশনের মূল উদ্দেশ্য :
এই শাসনবিধি প্রণয়নের পেছনে ব্রিটিশদের দ্বিমুখী উদ্দেশ্য ছিল:
১. প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা: একটি স্বল্প খরচে ও কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এই অস্থির অঞ্চলকে নিয়ন্ত্রণে আনা এবং রাজস্ব (বিশেষত জুম কর) আদায় নিশ্চিত করা।
২. আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা প্রদান: সমতলের বাঙালি মহাজন ও ব্যবসায়ীদের অর্থনৈতিক শোষণ এবং ভূমি আগ্রাসন থেকে আদিবাসী জুম্ম জনগণকে রক্ষা করা। ব্রিটিশরা মনে করেছিল যে, আদিবাসীরা সরল প্রকৃতির হওয়ায় আধুনিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে тя тя тя тя тя পাল্লা দিতে পারবে না, তাই তাদের জন্য একটি সুরক্ষা বলয় তৈরি করা প্রয়োজন।

রেগুলেশনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ও বিধানসমূহ :
পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন, ১৯০০ ছিল একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আইন, যা এই অঞ্চলের প্রশাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, বিচার ব্যবস্থা এবং সামাজিক কাঠামোকে নিয়ন্ত্রণ করত। এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ:

১. বিশেষ প্রশাসনিক কাঠামো:
রেগুলেশন অনুযায়ী, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশাসনিক প্রধান ছিলেন একজন ডেপুটি কমিশনার (DC)। তাকে সহায়তা করার জন্য তিনজন সার্কেল চিফ বা রাজা (চাকমা রাজা, বোমাং রাজা ও মং রাজা), প্রতিটি মৌজার জন্য একজন হেডম্যান এবং গ্রামের জন্য কারবারি নিয়োগ করা হতো। এই ত্রি-স্তরীয় প্রথাগত প্রশাসনিক কাঠামোকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়, যা ছিল ব্রিটিশদের ‘পরোক্ষ শাসন’ (Indirect Rule) নীতির এক চমৎকার উদাহরণ। ডেপুটি কমিশনারের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা থাকলেও দৈনন্দিন শাসনকাজে রাজারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন।

২. ভূমি ব্যবস্থাপনা ও অধিকার:
এই রেগুলেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল ভূমি ব্যবস্থাপনার নিয়মকানুন।
জমির মালিকানা: পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্ত জমির মালিকানা রাষ্ট্র বা সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হয়। আদিবাসী জনগণ জমিতে স্থায়ী মালিকানা পেত না, বরং তাদের ভোগদখলের প্রথাগত অধিকার (Customary Rights) স্বীকার করে নেওয়া হয়।
অ-আদিবাসীর কাছে ভূমি হস্তান্তর নিষিদ্ধ: রেগুলেশনের ৩৬ নম্বর ধারায় স্পষ্টভাবে বলা হয় যে, ডেপুটি কমিশনারের পূর্বানুমতি ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো জমি কোনো অ-আদিবাসী বা বহিরাগতের কাছে হস্তান্তর, বিক্রয় বা ইজারা দেওয়া যাবে না। এই বিধানটি ছিল আদিবাসীদের ভূমি সুরক্ষার মূল ভিত্তি।

৩. বিচার ব্যবস্থা:
পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য একটি পৃথক বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়। দেওয়ানি এবং ছোটখাটো ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তির ক্ষমতা সার্কেল চিফ ও হেডম্যানদের দেওয়া হয়, যারা মূলত স্থানীয় প্রথাগত আইন (Customary Law) অনুযায়ী বিচার করতেন। গুরুতর অপরাধের বিচার করতেন ডেপুটি কমিশনার। এর ফলে প্রচলিত ব্রিটিশ ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা রাখা সম্ভব হয়েছিল।

৪. বহিরাগতদের প্রবেশে নিয়ন্ত্রণ:
পার্বত্য চট্টগ্রামে বহিরাগতদের প্রবেশ, বসবাস এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। ডেপুটি কমিশনারের অনুমতি ছাড়া কোনো অ-পার্বত্য বাসিন্দা এই অঞ্চলে স্থায়ীভাবে বসবাস বা ব্যবসা করতে পারতেন না। এর উদ্দেশ্য ছিল অঞ্চলের জনসংখ্যাতাত্ত্বিক ভারসাম্য রক্ষা করা এবং আদিবাসী সংস্কৃতিকে বাইরের প্রভাব থেকে মুক্ত রাখা।

৫. রাজস্ব আদায়:
রাজস্ব আদায়ের প্রধান উৎস ছিল জুম চাষের ওপর ধার্য করা কর। এই কর আদায়ের দায়িত্ব ছিল হেডম্যানদের, যারা আদায়কৃত কর সার্কেল চিফের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দিতেন।
ঔপনিবেশিক শাসনের পর রেগুলেশনের অবনমন
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর পাকিস্তান এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ আমলে এই রেগুলেশনের কার্যকারিতা ধীরে ধীরে ক্ষয় হতে শুরু করে।
পাকিস্তান আমল: পাকিস্তান সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ মর্যাদাকে উপেক্ষা করতে শুরু করে। ১৯৬২ সালের সংবিধানে এই অঞ্চলকে ‘উপজাতীয় এলাকা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও রেগুলেশনের স্বকীয়তা খর্ব করা হয়। সবচেয়ে বড় আঘাত আসে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে। ১৯৫৭ থেকে ১৯৬২ সালের মধ্যে নির্মিত এই বাঁধের ফলে প্রায় ৫৪,০০০ একর উর্বর কৃষি জমি (যা মোট কৃষি জমির ৪০%) এবং ৪০,০০০ আদিবাসী পরিবার তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হয়। এটি ছিল রেগুলেশনের ভূমি সুরক্ষা নীতির সরাসরি লঙ্ঘন।
বাংলাদেশ আমল: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর ১৯৭২ সালের সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ কোনো স্বীকৃতি রাখা হয়নি। বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারণার ওপর ভিত্তি করে প্রণীত এই সংবিধানে আদিবাসীদের স্বতন্ত্র পরিচয় উপেক্ষিত হয়। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে রেগুলেশনে এমন কিছু সংশোধনী আনা হয়, যা এর মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে। বিশেষ করে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় আশির দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপকভাবে বাঙালি বসতি স্থাপন করানো হয়, যা এই অঞ্চলের জনসংখ্যাতাত্ত্বিক কাঠামোকে পুরোপুরি বদলে দেয় এবং ভূমি নিয়ে সংঘাতকে তীব্র করে তোলে। এই সময় থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ দুই দশকের সশস্ত্র সংঘাতের সূচনা হয়।

পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও বর্তমান প্রেক্ষাপট:
দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চল’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং এর প্রশাসনিক কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। চুক্তির আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এবং তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদ (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) গঠিত হয়। এই পরিষদগুলোকে ভূমি ব্যবস্থাপনা, আইন-শৃঙ্খলা, উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে ক্ষমতা অর্পণ করার কথা বলা হয়েছে।
চুক্তি পরবর্তী সময়ে ১৯০০ সালের রেগুলেশনের আইনি বৈধতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০১০ সালে এই রেগুলেশনকে ‘মৃত আইন’ (Dead Law) বলে রায় দেয়। তবে আপিল বিভাগ এই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে, ফলে আইনগতভাবে এটি এখনও কার্যকর। বাস্তবে, পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন এবং আঞ্চলিক পরিষদ আইন প্রণীত হওয়ার পর রেগুলেশনের অনেক বিধানই কার্যকারিতা হারিয়েছে। কিন্তু ভূমি ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জেলা পরিষদগুলোকে পূর্ণ ক্ষমতা না দেওয়ায় এবং চুক্তির অনেক ধারা বাস্তবায়িত না হওয়ায় এখনও ১৯০০ সালের রেগুলেশনের প্রাসঙ্গিকতা রয়ে গেছে।

উপসংহার:
পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন, ১৯০০ ছিল একটি ঐতিহাসিক দলিল, যা একটি নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজনে ঔপনিবেশিক প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে যেমন ছিল সুরক্ষার paternalistic দৃষ্টিভঙ্গি, তেমনি ছিল নিয়ন্ত্রণের সাম্রাজ্যবাদী কৌশল। এটি একদিকে যেমন প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সমাজ ও সংস্কৃতিকে বাইরের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করেছিল, তেমনি তাদের জাতীয় মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্নও করে রেখেছিল।
স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রীয় নীতির কারণে এই রেগুলেশন তার কার্যকারিতা হারালেও এর মূল চেতনা—অর্থাৎ আদিবাসীদের ভূমি, সংস্কৃতি ও প্রথাগত অধিকারের স্বীকৃতি—এখনও পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। পার্বত্য শান্তি চুক্তির মাধ্যমে এই চেতনাকেই একটি আধুনিক ও গণতান্ত্রিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই, ১৯০০ সালের রেগুলেশন আজ আর সক্রিয় আইন হিসেবে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর না থাকলেও, এর ঐতিহাসিক তাৎপর্য এবং এর মধ্যে নিহিত ভূমি ও আত্মপরিচয়ের অধিকারের দাবি পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগোষ্ঠীর কাছে এখনও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এই ঐতিহাসিক আইনের যথাযথ মূল্যায়ন ও এর মূলনীতিগুলোর সম্মানজনক বাস্তবায়নই পারে পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে।

মাতাপিতার সেবা: এক উত্তম মঙ্গলমাতাপিতা আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ এবং প্রথম শিক্ষক। তাঁদের সেবা করা শুধুমাত্র আমাদের কর...
10/08/2025

মাতাপিতার সেবা: এক উত্তম মঙ্গল

মাতাপিতা আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ এবং প্রথম শিক্ষক। তাঁদের সেবা করা শুধুমাত্র আমাদের কর্তব্য নয়, এটি এক স্বর্গীয় পুণ্যকর্ম। তাঁদের অপরিসীম ত্যাগ, স্নেহ ও ভালোবাসার কারণেই আমরা পৃথিবীর আলো দেখি এবং জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করি।
তাই বৃদ্ধ বয়সে তাঁদের सहारा হওয়া, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। মাতাপিতার সন্তুষ্টি ও আশীর্বাদ সন্তানের জীবনকে সাফল্যমণ্ডিত ও মঙ্গলময় করে তোলে। তাঁদের অবহেলা করা চরম অকৃতজ্ঞতার সামিল। বস্তুত, মাতাপিতার সেবার মাধ্যমেই জীবনের প্রকৃত শান্তি ও সার্থকতা লাভ করা যায়।

আদিবাসী দিবসের আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের অধিকার ও সংগ্রামআন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম...
08/08/2025

আদিবাসী দিবসের আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের অধিকার ও সংগ্রাম

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিবসটি তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, ভূমি ও সংস্কৃতি রক্ষার দীর্ঘ লড়াইকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীর সংগ্রামের মূল কেন্দ্রবিন্দু তাদের ভূমি অধিকার, রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসন এবং সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষা। দশকের পর দশক ধরে চলা বঞ্চনা ও সংঘাতের অবসানে ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। এটি ছিল এই অঞ্চলের মানুষের জন্য এক নতুন আশার আলো।
কিন্তু চুক্তির দুই যুগ পরেও এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় তাদের সংগ্রাম আজও অব্যাহত। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি, অসামরিকীকরণ এবং স্থানীয় শাসনব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের মতো মৌলিক বিষয়গুলো এখনো অনেকাংশে অমীমাংসিত। উন্নয়নের নামে ভূমি অধিগ্রহণ এবং বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ তাদের ঐতিহ্যবাহী জীবনযাত্রা ও অস্তিত্বকে প্রতিনিয়ত সংকটাপন্ন করে তুলেছে।
তাই আদিবাসী দিবসে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের একটাই চাওয়া—শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। ন্যায় ও সাম্যের জন্য তাদের এই টিকে থাকার লড়াই এক জ্বলন্ত উপাখ্যান হয়ে থাকবে।

অজ্ঞানীর সঙ্গ বর্জন: এক উত্তম জীবনদর্শনঅজ্ঞানীর সেবা বা সঙ্গ ত্যাগ করা আত্ম-উন্নয়নের এক অপরিহার্য সোপান। এখানে 'অজ্ঞানী'...
07/08/2025

অজ্ঞানীর সঙ্গ বর্জন: এক উত্তম জীবনদর্শন

অজ্ঞানীর সেবা বা সঙ্গ ত্যাগ করা আত্ম-উন্নয়নের এক অপরিহার্য সোপান। এখানে 'অজ্ঞানী' বলতে কেবল বিদ্যাহীন ব্যক্তিকে বোঝায় না, বরং যারা নেতিবাচক চিন্তা, অনৈতিক কর্ম এবং পরশ্রীকাতরতায় লিপ্ত, তাদের বোঝানো হয়।

অসৎ সঙ্গ একটি সংক্রামক ব্যাধির মতো, যা ধীরে ধীরে আমাদের বিচারবুদ্ধিকে মেঘাচ্ছন্ন করে এবং মহৎ লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে। তাদের সাহচর্যে থাকলে মানসিক শান্তি বিনষ্ট হয় এবং জীবন অধঃপতনের দিকে ধাবিত হয়। সুতরাং, নিজের চরিত্র, শান্তি এবং ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখতে অজ্ঞানীর প্রভাব থেকে সচেতনভাবে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ এবং একটি উত্তম জীবনযাপনের মূল চাবিকাঠি।

"আপা আর আসবে না, কাকা আর হাসবে না" চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারের এই বক্তব্য নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এর মাধ্যমে রাজনৈ...
06/08/2025

"আপা আর আসবে না, কাকা আর হাসবে না" চট্টগ্রামের পুলিশ সুপারের এই বক্তব্য নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের আনুগত্য পাওয়ার পুরনো চেষ্টারই পুনরাবৃত্তি বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। এছাড়া একজন সরকারি চাকরিজীবী এভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য দিতে পারেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।

এই বক্তব্য নিয়ে নানা মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চললেও এ বিষয়ে এখনো 'কিছুই জানেন না' বলে দাবি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার। বুধবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তবে, "সরকারি কর্মচারীর এমন বক্তব্য আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন, ক্লিয়ার ভায়োলেশন অব কোড অব কনডাক্ট," বলেই মনে করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ।

এই ধরনের বক্তব্য বা অবস্থান নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্নটি আবারো সামনে নিয়ে আসে। সরকারি কর্মকর্তাদের এমন আচরণ অতীতে সরকারকে বিতর্কিত করেছে, এখনও করবে বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

চট্টগ্রামে নতুন চক্র সংঘবদ্ধভাবে যাত্রীবাহী বাসে উঠে জটলা সৃষ্টি করে। জটলার মধ্যে সুযোগ বুঝে টার্গে'ট ব্যক্তির মোবাইল ছি...
03/08/2025

চট্টগ্রামে নতুন চক্র সংঘবদ্ধভাবে যাত্রীবাহী বাসে উঠে জটলা সৃষ্টি করে। জটলার মধ্যে সুযোগ বুঝে টার্গে'ট ব্যক্তির মোবাইল ছি'নিয়ে নেয় অথবা কৌশলে ফোন নিয়ে নিজেদের গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে লুকিয়ে ফেলে। এছাড়াও যেকোন পথচারীকে সুযোগ বুঝে পথরো'ধ করে হত্যার ভ'য় দেখিয়ে মোবাইল ও নগদ টাকা ছি'নি'য়ে নেয়।
এমন একটি চক্রের ১২জন ছি'ন'তা'ই'কা'রী'কে চট্টগ্রাম নগরীরর হালিশহর থেকে আ'ট'ক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।

জামিন পেলেন লাল এংকল বম ও তিন শিশু — অবশেষে মুক্তি এক নির্মম অবিচার থেকে!চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি...
02/08/2025

জামিন পেলেন লাল এংকল বম ও তিন শিশু — অবশেষে মুক্তি এক নির্মম অবিচার থেকে!

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন লাল এংকল বম, যিনি দীর্ঘদিন ধরে কেএনএফ-এর ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে আটক ছিলেন। এই মামলায় তাঁর সঙ্গে আটক ছিল তিনটি নিরীহ শিশু, যাদের শৈশব কাটছে লোহার গেটের পেছনে, মুক্ত বাতাস ছুঁয়ে দেখার অধিকার ছাড়াই।

আমরা বারবার বলেছি—লাল এংকল বম কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্য নন। তিনি এক সহজ-সরল পাহাড়ি আদিবাসী, যাঁর জীবনে অস্ত্র নয়, ছিলো পরিবার, মানবতা আর স্বপ্নের সংগ্রাম। অথচ রাষ্ট্র তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে বন্দি করে রাখল মাসের পর মাস, শিশুগুলোকেও জড়িয়ে ফেলল এই নিষ্ঠুর অবিচারের চক্রে।

আজকের জামিন এই অন্যায় বিচারপ্রক্রিয়ার একটি ক্ষণিক রুদ্ধদ্বার খোলা মাত্র। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়— আদিবাসীদের প্রতিনিয়ত এই ভুল অপবাদ কেন? শিশুদের কী দোষ ছিলো? কে নেবে এই মানসিক-সামাজিক ক্ষতির দায়?

আমরা, আদিবাসী সমাজ, এই জামিনকে স্বাগত জানাই কিন্তু একইসঙ্গে বিচারের নামে এই প্রহসনের বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদ জানাই। পাহাড়ে শান্তি চাই, অপবাদ নয়। মানবাধিকারের নামে হরণ নয়, ফিরিয়ে দিন ন্যায্য অধিকার।

Address

Chittagong

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Sadhana24 posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Sadhana24:

Share