TINKI's Gallery

TINKI's Gallery আসসালামু আলাইকুম।
" TINKI's Gallery " পেইজ এ আপনাকে স্বাগতম।

Welcome to my page❤️TINKI ❤️
Like & Follow to my page for entertainment, general knowledge, inspiring stories and islamic content that help you achieve your goals.Let's grow together 🫶

আমি খুব চেষ্টা করছি নরম, কোমল একজন মা হতে।ধৈর্যশীল হতে।সেই মা হতে, যিনি পারিবারিক কঠোরতার চক্র ভেঙে ফেলেন।যিনি চিৎকার কর...
02/08/2025

আমি খুব চেষ্টা করছি নরম, কোমল একজন মা হতে।
ধৈর্যশীল হতে।
সেই মা হতে, যিনি পারিবারিক কঠোরতার চক্র ভেঙে ফেলেন।
যিনি চিৎকার করেন না, কিংবা রাগে নিয়ন্ত্রণ হারান না।

কিন্তু কিছু কিছু দিন...
আমি অনুভব করি, যেন চাপে ডুবে যাচ্ছি—সবসময় সঠিকভাবে মা হওয়ার চাপে।

আমি কোমলতার মাঝে বড় হইনি।
আমাকে কেউ শেখায়নি কীভাবে নিজের বা অন্যের বড় বড় আবেগ ধরে রাখতে হয়।
তাই সব কিছু নতুন করে শিখছি।
নিজের প্রতিক্রিয়াগুলো নতুনভাবে গড়ে তুলছি।
বিস্ফোরণ না ঘটিয়ে, ধৈর্য ধরে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি।
বিরত থাকছি, যখন শরীরের প্রতিটি অস্থি চিৎকার করতে চায়।

এটা খুবই ক্লান্তিকর।

কারণ কেউ বলে না, শিখে নেওয়া আচরণগুলোকে ভুলে যাওয়া কতটা কঠিন।
কেউ বলে না, আপনার শিশু যখন অস্থির হয়ে পড়ে, তখন শান্ত থাকা কতটা আত্মনিয়ন্ত্রণের ব্যাপার।
কেউ বলে না, আপনি তা করতে না পারলে ভিতরে ভিতরে কতটা অপরাধবোধ আসে।

আমি নিখুঁত নই।
কিন্তু আমি প্রতিদিন চেষ্টা করছি।
ভুল হলে দুঃখ প্রকাশ করছি।
আবার চেষ্টা করছি।
বারবার।

'জেন্টল প্যারেন্টিং' সবসময় অভিভাবকের জন্য সহজ নয়।
তবুও আমি সেটা বেছে নিচ্ছি—
কারণ আমার সন্তান এমন কিছু পাওয়ার যোগ্য, যা আমি কোনোদিন পাইনি।

২১/০৭/২০২৫গতকাল সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বার্ণ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের আইসিইউতে ডিউটি তে যাই।আইসিইউ এর নার্সরা আমাকে আইসিইউতে অব...
23/07/2025

২১/০৭/২০২৫
গতকাল সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বার্ণ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের আইসিইউতে ডিউটি তে যাই।আইসিইউ এর নার্সরা আমাকে আইসিইউতে অবস্থানের জন্য বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা গাউন,সু কভার এবং ক্যাপ দেন। সেগুলো পরার পরেও দরজা খুলে ভিতরে ঢোকার সাহস পাচ্ছিলাম না তখন। কিছুক্ষণ পর মনের জোরে ভিতরে ঢুকি।ঢোকার সাথে সাথেই আহত বাচ্চাদের গোঙানির শব্দে নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিলাম না। একজন নার্স আমাকে একটা চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বললেন বসতে।আমি সেই চেয়ার বসতে যাবো ঠিক তখনই একজন ডাক্তার এসে বলেন ১৭ নাম্বার বেডের পেশেন্ট এক্সপায়ারড। আপনি ওনার পরিবারের কাউকে ডাকেন এবং ওনাদের ব‌ইলেন একটা বড় বিছানার চাদরের ব্যবস্থা করতে।আমি উঠে চলে যাই বাইরে এবং মৃত ব্যক্তির পরিবারের একজন দুইজন সদস্য কে ডাক দেই এবং একটা বড় বিছানার চাদর আনতে বলি।ওনারা আমার কথা শুনেই আঁচ করতে পেরেছিলেন যে কি হয়েছে।এরপর ওনারা যখন বিছানার চাদর আমার হাতে দেন আমি সেটা নিয়ে চলে যাই ১৭ নাম্বার বেডের কাছে। আপাদমস্তক ব্যান্ডেজ থাকার কারণে বোঝার উপায় নেই নারী নাকি পুরুষ। কিন্তু বেডের সাইডে নেইমপ্লেট দেখে জানতে পারলাম ইনিই মাইলস্টোন স্কুলের মেহেরীন ম্যাডাম যিনি নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে অনেক শিক্ষার্থীদের সেইফ এক্সিট দিয়েছেন।এরপর নার্সদের সাথে ওনার মৃতদেহ স্ট্রেচার করে টেনে পরিবারের সদস্যদের কাছে বুঝিয়ে দিলাম।ভিতরে গিয়ে দাঁড়ানোর পর দেখলাম একটা বাচ্চা প্রচুর পরিমাণে ছটফট করছে আর অস্পষ্ট ভাষায় কি জানি বলতে চাচ্ছে।ডাক্তাররা ওনাদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়নি। একজন এসে আমাকে বললেন রোগী এক্সপায়ারড,গার্জিয়ান কে ডাক দেন।আমি উঠে গিয়ে অভিভাবককে ডেকে ডাক্তারের কাছে পাঠাই।এর‌ই মধ্যে অনান্য আহত বাচ্চাদের বাবা মায়েরা বারবার আকুতি করছিলেন একটু হলেও নিজের বাচ্চাটাকে দেখতে। নিয়ম এবং নিরাপত্তার কারণে নিজেকে পাথর বানিয়ে তাদের চোখের জলকে উপেক্ষা করে তাদের কে ভিতরে যেতে দেই নাই। একজন মা বারবার বলছিলেন ভিতরে না যেতে পারলেও গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থেকে দোয়া পড়তে চান।আমি আর না করি নাই।ওনার বাচ্চা ১১ নাম্বার বেডে ভর্তি ছিলো।কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বললেন ১১ নাম্বার বেডের পেশেন্ট এক্সপায়ারড কিন্তু ওনার আম্মু কে ডাইকেন না,আপন বড় ভাই আছে একজন তারে ডাকেন।আমি আর আমার আমাদের ঢাবি নৌ শাখার আরেকজন সিইউও হৃদি ছুটে যাই সেই বড় ভাইকে ডাকতে। কিছুক্ষণ পর ভাই আসেন। ওনাকে আমরা ধরে নিয়ে যাই ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার যখন বললেন আমাদের মাফ করেন তখন সেই ভাইয়ের কান্না সহ্য করার মতো ছিলো না। ডাক্তার নিজেও কান্না করে দিসেন।এরপর আমাদের কাছে শেষবারের মতো নিজের ছোটো ভাইটাকে দেখার ইচ্ছা জানালেন।আমরা ওনাকে ধরে নিয়ে যাই। আগুনে ঝলসানো ছোটো ভাইকে একবার কোলে নিতে চাইসিলেন তিনি। শরীরের একমাত্র পায়ের আঙ্গুল গুলো অক্ষত ছিলো,সেই আঙুলেই বারবার পরম মমতায় চুমু খাচ্ছিলেন।এরপর আরকি,সেই বিছানার চাদর আনানো এবং চাদর পেঁচিয়ে মৃতদেহ বুঝিয়ে দেয়া।একটু বসে পানি খাচ্ছিলাম তখনই একজন নার্স এসে দুইটা বেডের পেশেন্টর বাসার লোক ডাকতে বললেন।কারন জিজ্ঞাসা করলে বললেন দুই জন‌ই মাত্র মা*রা গেছেন।এর‌ই মধ্যে এক বাবা এসে বললেন উপরের তলার আইসিইউতে ওনার ছোটো ছেলেটা কিছুক্ষণ আগে মারা গেছে,বড় ছেলেটা এখানে ভর্তি। একটু একটা বার শেষ সম্বল সন্তানকে দেখতে চান।কথা বলার সময় উনি বারবার পরে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নিয়মের বেড়ার কারণে আবারো নিজেকে পাথর বানাতে হয়েছিলো। হাঁফিয়ে উঠেছিলাম চোখের সামনে এক এক করে বাচ্চাগুলোকে ছটফট করে ম*রতে দেখে। ডাক্তাররা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।মধ্যরাতে ডিউটি শেষ করে যখন নিচে নামছিলাম তখন ১১ নাম্বার বেডের সেই মৃত বাচ্চাটির মা আমার হাত ধরে বলেছিলেন, "আম্মু তুমি তো ছিলা ভিতরে,আমার বাবাটা মারা যাওয়ার সময় কি খুব কষ্ট পাইসিলো?ও কি আমারে ডাকসিলো?"আমার বাবাটারে ডান দিকে কাত করে শোয়াইয়া দিয়ো"
আমি একটা শব্দও মুখ থেকে বের করতে পারি নাই।

যে আমি একটু রক্ত দেখলেই ভয় পাই সেই আমি গতকাল ছোটো ছোটো বাচ্চা গুলোর লাশ ধরেছি।কত বাবা মায়ের আর্তনাদের সামনে নিজেকে পাথর বানিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
এই স্মৃতিরা আমাকে আর ঘুমাতে দিবে না,, সবসময় আমাকে তাড়া করে বেড়াবে।
বাচ্চারা,,তোমরা যেখানেই থাকো,,ভালো থেকো। ঈশ্বর তোমাদের শান্তি প্রদান করুক।
তোমাদের ছুটি হয়ে গেছে,,এবার বাড়ি যাওয়ার পালা............

©Chandrima Halder moon

প্রথম বার চেষ্টা 🧑‍🍳     ゚
18/07/2025

প্রথম বার চেষ্টা 🧑‍🍳

সন্তান যখন আপনার কোলে থাকে, যতটা পারেন আদর করেন। কিছু ভেঙে গেলেও বকা দিয়েন না,পড়তে না চাইলেও বকা দিয়েন না ।আদর করবেন শু...
16/07/2025

সন্তান যখন আপনার কোলে থাকে, যতটা পারেন আদর করেন। কিছু ভেঙে গেলেও বকা দিয়েন না,পড়তে না চাইলেও বকা দিয়েন না ।আদর করবেন শুধু।গায়ে হাত তুলবেন না কখনো। এই যে ফুটফুটে মুখটা, ছোট্ট হাতটা , একটা দিন আসবে, এই হাত আপনার হাতের নাগালের বাইরে চলে যাবে।সন্তান চিরোকাল মায়ের কাছে থাকে না। ওদেরও তো জীবন আছে, স্বপ্ন আছে। ক্যারিয়ার গড়বে।কেউ চলে যাবে অন্য দেশে, কেউ উড়ে যাবে দূরের শহরে।তখন আপনি পড়েই থাকবেন এই বাড়িতে। এক কোণে।কখনো কখনো ফোন আসবে।কথা হবে, ‘মা ভালো আছো?’ আপনি বলবেন, ‘ভালো আছি বাবা।’মনের ভেতর হাজারটা কথা জমা থাকবে, বলতে পারবেন না। কারণ ওদের যে ব্যস্ত জীবন।তখন মনে পড়বে, যখন ও ছিল আপনার কোলে,তখন কেনো যে একটু বেশী আদর করেন নাই! কেনো যে বকা দিয়েছিলেন! তখন যে মেরেছিলেন,বকা দিয়েছিলেন, তার জন্য আপনাকে কাঁদতে হবে।

কাঁদতে কাঁদতে চোখ শুকিয়ে যাবে। তবুও সন্তানকে আদর করতে পারবেননা,কারণ সে তো থাকে আপনার থেকে কোটি কোটি মাইল দূরে।সন্তানকে কখনো মারবেন না। কখনো রাগের মাথায় কটু কথা বলবেন না।শুধু দোয়া করবেন।কারণ, ৫০ বছর আগেই তো লেখা হয়ে গেছে কে কি হবে। কার জীবনে কী আছে, ভাগ্য কোথায় নিয়ে যাবে।আপনি শুধু আল্লাহর কাছে বলো —
‘হে আল্লাহ, আমার সন্তান যেন ভালো মানুষ হয়।
সুন্দর জীবন পায়। ঈমানের সাথে জীবন কাটায়❤️🖤🖤🖤

ছবিতে যিনি একা বসে আছেন, তিনি একজন স্বামী, তাঁর প্রিয়তম স্ত্রী ঠিক সামনের গাড়িতে শায়িত, শেষ যাত্রার প্রস্তুতিতে। জানাজা ...
05/07/2025

ছবিতে যিনি একা বসে আছেন, তিনি একজন স্বামী, তাঁর প্রিয়তম স্ত্রী ঠিক সামনের গাড়িতে শায়িত, শেষ যাত্রার প্রস্তুতিতে। জানাজা হওয়ার কথা ছিল রাত ৯টায়। কিন্তু ভদ্রলোক চাচ্ছিলেন না অন্ধকার রাতে বিদায় দিতে। কারো কাছে স্পষ্ট করে বলতেও পারছিলেন না, “ওকে আর একটু থাকতে দাও… সামনে থাকুক, আমি দেখছি!”

তাঁর ছোট ছেলে বুঝে নিয়েছিল বাবার মন। শেষ পর্যন্ত জানাজা হয় সকালে। কিন্তু রাতের পুরোটা সময়, যখন চারপাশের সবাই চলে গেছে, ভদ্রলোক ছিলেন গাড়ির সামনে একা বসে। স্ত্রীর পাশে, নিঃশব্দ প্রহর গুণে। যেন বলছিলেন, “তুমি একা না, আমি আছি। এখনো আছি।”

এ এক নিঃশব্দ ভালোবাসা, যার সাক্ষী হয়ে রইলো রাত, নীরবতা আর সেই একফালি আলো। মৃত্যু সবকিছুর শেষ নয়, যদি ভালোবাসা এমন হয়।

ভাগ্যবতী ছিলেন সেই স্ত্রী, যিনি এমন একজন জীবনসঙ্গী পেয়েছিলেন, যিনি তাঁকে মৃত্যুর পরেও একা ফেলে যাননি।

আমরা সবাই চাই, এমন একজনকে, যিনি শুধু জীবনে নয়, মৃত্যুর পরেও আমাদের ভালোবাসায় আগলে রাখবেন।

📷 ছবিঃ Mithun Click's

মেয়েদের মা লাগে। পদে পদে লাগে। এক্কেবারে জন্মের পরের সময়ের মত, কোলে লেপ্টে থাকা সময়ের মত, হাঁটার আগের সময়ের মত। আবার মাক...
01/07/2025

মেয়েদের মা লাগে। পদে পদে লাগে। এক্কেবারে জন্মের পরের সময়ের মত, কোলে লেপ্টে থাকা সময়ের মত, হাঁটার আগের সময়ের মত। আবার মাকে লাগে।
খুব খুব করে লাগে। প্রতিবার মা হওয়ার সময় মনটা কেবল 'মা মা' করে।
প্রেগনেন্সিতে মা লাগে। পছন্দের খাবার রান্নার জন্য মা লাগে। শরীর খারাপ লাগলে মা লাগে।
সিজারের পর চেঞ্জ করানোর জন্য মা লাগে। তুলে তুলে খাওয়ানোর জন্য মা লাগে। নতুন বাচ্চা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমানোর জন্য মা লাগে। কথা বলার জন্য মা লাগে। ভরসার জন্য মা লাগে।
মা ছাড়া মানুষ মা হয় কীভাবে আমি জানি না। কোনদিন যেন আমাকে জানতে না হয়, কোনদিন না। 🥀

~নুফরাত জেরীন

চারপাশের জগৎ থেকে আমি একটা জিনিস শিখছি। কোনো পুরুষকে কোনোদিন শিখাইতে হবেনা আপনাকে গুরুত্ব দিতে, টাইম দিতে কিংবা আপনার পে...
27/06/2025

চারপাশের জগৎ থেকে আমি একটা জিনিস শিখছি। কোনো পুরুষকে কোনোদিন শিখাইতে হবেনা আপনাকে গুরুত্ব দিতে, টাইম দিতে কিংবা আপনার পেছনে এফোর্ট দিতে। পুরুষ এমন একটা জাত, যে তারা যেই নারীকে পছন্দ করে তার পায়ের নিচে দুনিয়া এনে দিতেও দ্বিধাবোধ করেনা। কোনো পুরুষ যদি আপনাকে ভালোবাসে, আর কখনো জানতে পারে আপনার প্রিয় ফুল গোলাপ ; আর পৃথিবীতে যদি একটাই গোলাপ অবশিষ্ট থাকে সে চেষ্টা করবে সেই একটাই গোলাপ আপনাকে এনে দিতে। আর যে ভালোবাসেনা সে যদি জানে গোলাপ আপনার প্রিয় আর সারা দুনিয়ার আনাচে কানাচে পানির মতোন গোলাপ ছিটিয়েও থাকে সে এনে আপনার হাতে তুলে দেবেনা। আমি এমন পুরুষ দেখছি যারা বছরের পর বছর সম্পর্ক করেও একজনের পেছনে এফোর্ট দেয়না, আবার ৬ মাসের পছন্দে একটা মেয়েকে বিয়ে করে ফেলে এবং সেই সব তার জন্য করে যা তার এক্স তাকে করার জন্য বেগ করতো। আপনি শত চাইলেও সেইসব আপনার জন্য করবেনা কারন আপনি সেই নারী না যার সাথে সে থাকতে চায়। পিপোল চেইঞ্জ ফর হুম দে ওয়ান্ট। Men Are Born To Pursue. They Make Time And Effort For Something They Want.❤©️

05/06/2023

প্রেম-ভালোবাসা, বিয়ে এর ক্ষেত্রে বংশ/ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ধর তুমি বদরুল। পড়ছ প্রাইমারী স্কুলে, পাব্লিক ভার্সিটিতে। ছোটবেলায় শখ আহলাদ বলে কিছুই তোমার ছিল না। সারাজীবন বাবা-মা র কাছে ফিজিকালি আর মেন্টালি এবিউসড হইছ।

আগের জন্মে কোন এক পূণ্যের কারণে ধনীর দুলালী আফসানার সাথে তোমার বিয়ে হল।

আফসানার বাবা-মা আফসানার জন্য কোন কিছু করা বাকি রাখে নাই। সে যা চাইছে পাইছে।

এখন আফসানা তার বন্ধুদের সাথে হ্যাংআউটে গেলে তোমার খারাপ লাগে। কারণ তোমার ফ্যামিলিতে মেয়েদের এত খুশী দেখে তুমি অভ্যস্ত না।

সারাজীবন নিজের মা কে রান্নাঘরে পচতে দেখে তুমি অভ্যস্ত। তুমি বা তোমার মা কেউ ই চাবে না আফসানা রান্না না করে ঘুরে বেড়াক।

আফসানা যে নিজের মত থাকতে চায় এটাও তোমার ভাল লাগে না। কারণ, একে অন্যের পিছে আঙুল দেওয়াই তোমাদের পারিবারিক রীতি।

আফসানার ভাল থাকাটাকে তোমার মনে হবে স্বার্থপরতা। কেননা, নিজের ভালো চাওয়াটাকে তোমার ফ্যামিলিতে এভাবেই দেখা হয়।

আসলে তোমার ও দোষ নাই। যে পাখি উড়তে পারে না সে উড়াটাকে পাপ না ভাবলে মানসিক শান্তি বিঘ্নিত হবে।

এইকারণে বিসিএস ক্যাডার, ইউএস সিটিজেন, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার এসব দেখে বিয়ে দেওয়ার আগে, পরিবারটাও দেখবেন। পরিবার যদি ফকিন্নী মার্কা হয়, পাত্র/পাত্রী নিজ গুণে বিলগেটস হলেও কোথাও না কোথাও রিস্ক থেকে যায়।

হুট করে দুইটা পয়সা বেশি কামানো যতটা কঠিন
জাতে ওঠা তার চাইতে শত গুণে কঠিন।

©

10/05/2023

স্ত্রী যখন আট মাসের গর্ভবতী তখন আমার শাশুড়ি এসে স্ত্রীকে নিয়ে গেলো বাপের বাড়ি।
ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার দুদিন পর শাশুড়ি স্ট্রোক করলো। এতে তার শরীরের বাঁ দিক অবশ হয়ে গেলো। যে মেয়েকে নিয়ে গিয়েছিলো দেখাশোনা করার জন্য, সেই মেয়ে এখন উল্টো মাকে দেখাশোনা করতে লাগলো।
অসুস্থ শাশুড়িকে দেখতে গিয়ে স্ত্রীকে বললাম,"সন্তান জন্মের পরই বাড়িতে চলে এসো।"
স্ত্রী বললো,"বাবা সারাদিন চাকরিতে ব্যস্ত থাকেন। ছোটো ভাইও ভার্সিটি, টিউশনি নিয়ে দিনভর বাইরে থাকে। গোটা দিন মাকে দেখার কেউ নেই। এই অবস্থায় অসুস্থ মাকে রেখে কী করে যাই?"
"কী বলতে চাও তুমি?"
"মা নিজে নিজে উঠতে বসতে পারলে, এবং কিছুটা হাঁটতে পারলে আমি চলে যাবো। সেই পর্যন্ত আমাকে থাকতে দাও।"
বিরক্ত হয়ে বললাম,"তোমার মায়ের ঐ অবস্থায় আসতে ছয় মাস লাগবে। ততোদিন থাকবে এখানে?"
"ছয় মাস লাগবে না। ডাক্তার বলেছেন দু মাসের মধ্যে হয়ে যাবে।"
অসন্তুষ্ট হয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে এলাম। যথা সময়ে আমার একটা ছেলে সন্তান হলো। স্ত্রী ঐ সদ্যজাত ছেলেকে নিয়ে মায়ের সেবা করে যেতে লাগলো।
এই সময় আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়লো। এবার তো স্ত্রীকে আনতেই হবে।
স্ত্রীকে যেদিন আনতে গেলাম সেদিন অসুস্থ শাশুড়ি বাচ্চাদের মতো কাঁদলো।
শাশুড়ি মেয়ের হাত ধরে বারবার বলছিলো,"তুই চলে গেলে আমি মরে যাবো। একদম মরে যাবো।"
উত্তরে মেয়ে বললো,"মাগো, মেয়েদের জীবন এতো কঠিন কেনো? নিজের অসুস্থ মাকে ফেলে কেনো চলে যেতে হয়?"
মেয়ে চলে যাক এটা ওদের বাড়ির কেউ চাইছিলো না। কিন্তু আমি নিরুপায়। স্ত্রী যেমন তার মায়ের কথা ভাবছিলো, আমিও তেমনি আমার মায়ের কথা ভাবছিলাম।
স্ত্রীকে নিয়ে আসার পর শাশুড়ির শরীরের অবস্থার অবনতি হলো।
আমার মা কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে স্ত্রী একদিন আমাকে বললো,"আমাকে এবার মায়ের কাছে যেতে দাও। তুমি তো জানোই মায়ের শরীর খুব খারাপ হয়ে গেছে।"
স্ত্রী চলে গেলে মায়ের সেবা যত্নের ঘাটতি হবে। এতে মা'র অসুস্থতা বেড়ে যেতে পারে।
তাই বললাম,"অবশ্যই না। আমার মা পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তুমি যেতে পারবে না।"
সে স্তব্ধ হয়ে আমার দিকে চেয়ে রইলো।
এর কিছু দিন পর আমার শাশুড়ি মারা গেলো। সেদিন স্ত্রী আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো, যার অর্থ হলো, "তোমার জন্য আমার মা মারা গেলো।"
জানি, মায়ের মৃত্যুর জন্য সে আজীবন আমাকে দায়ী করবে। কিন্তু সে কখনোই আমার অবস্থার কথা ভাববে না।
তবে সাতাশ বছর পর এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো, যখন আমি প্রমাণ করতে পারলাম, শাশুড়ির মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী নই।
ঘটনা কী হয়েছিলো বলি। আমার স্ত্রী তখন অসুস্থ। ছেলের বউ তার সেবা করছিলো। এই সময় আচমকা ছেলের শাশুড়িও অসুস্থ হয়ে পড়লো। তাকে দেখাশোনা করার কেউ নেই।
ছেলের বউ তখন বাপের বাড়ি যেতে চাইলে ছেলে ঠিক আমার কথাটাই বললো,"অবশ্যই না। আমার মা পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তুমি যেতে পারবে না।"
ছেলের বউ স্তব্ধ হয়ে তার স্বামীর দিকে তাকালো, ঠিক যেভাবে আমার স্ত্রী একদিন আমার দিকে তাকিয়েছিলো।
আমি সেদিন আমার স্ত্রীকে বললাম,"তোমার মায়ের মৃত্যুর জন্য তুমি আমাকে দায়ী ভাবো। কিন্তু এখন নিজের ছেলেকে দেখে বুঝলে তো, আমি পরিস্থিতির স্বীকার ছিলাম। আমার মা যদি সে সময় অসুস্থ না থাকতো, তাহলে তোমাকে যেতে দিতাম। আমার কিছু করার ছিলো না।"
স্ত্রী শোয়া অবস্থায় বললো,"কিছু করার ছিলো না?"
"না।"
সে তখন ছেলেকে আর ছেলের বউকে ডাকলো।
ওরা এলে প্রথমে ছেলেকে বললো,"তুই নিজের মায়ের কথা ভাবছিস, এটা মা হিসেবে আমার জন্য আনন্দের। কিন্তু এটা ভুলে গেলে চলবে না, তোর শাশুড়ি হলো তোর স্ত্রীর মা। তোর যেমন মন কাঁদছে মায়ের জন্য, তোর বউয়েরও তেমন মন কাঁদছে তার মায়ের জন্য।"
ছেলে তখন বললো,"কিন্তু আমি কী করতে পারি? তোমাকে এই অবস্থায় রেখে বউকে তো আর বাপের বাড়িতে পাঠাতে পারি না।"
আমার স্ত্রী তখন যে কথা বললো তার জন্য আমরা কেউ প্রস্তুত ছিলাম না।
সে বললো,"তোর শাশুড়িকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আয়। নতুবা আমাকে নিয়ে চল তোর শ্বশুরবাড়িতে।"
তারপর ছেলের বউকে বললো,"এক সাথে দুই অসুস্থ মায়ের সেবা করতে আপত্তি নেই তো তোমার?"
ছেলের বউ অপ্রত্যাশিত এই কথা শুনে আমার স্ত্রীর হাত ধরে কেঁদে দিলো।
এবং বললো,"কোনো আপত্তি নেই মা।"
ছেলে কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,"শাশুড়িকে এখানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছি।"
খরচ নিয়ে ভাবতে হয় নি। ছেলের শ্বশুরবাড়ি থেকে সব খরচ বহন করা হয়েছিলো। এমনকি আমার স্ত্রীর চিকিৎসার খরচও তারা অনেকখানি দিয়েছিলো।
মেয়ের সান্নিধ্যে থেকে ছেলের শাশুড়ি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলো। এবং যেদিন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলো, সেদিন থেকে অপরাধ বোধের কারণে স্ত্রীর চোখের দিকে আর তাকাতে পারি নি। কেননা, অবশেষে শাশুড়ির মৃত্যুর জন্য দায়ী হয়ে গেলাম।
আমার স্ত্রী ছেলের শাশুড়িকে এনে যে সমাধান দিয়েছিলো সেটা আমার শাশুড়ির ক্ষেত্রেও করতে পারতাম। কিন্তু করতে পারি নি, কারণ সেদিন শুধু আমার মায়ের কথা ভেবেছিলাম। স্ত্রীর মায়ের কথা নয়। আর তাছাড়া আমার স্ত্রী যদি সেদিন এই সমাধানের কথা বলতো, তবে ঝামেলা হবে ভেবে রাজি হতাম না।
আসলে অন্যের জন্য ভাবতে গেলে বড়ো মন লাগে। যা আমার স্ত্রীর আছে। আমার নেই।
এই শেষ বেলায় চাওয়া এখন একটাই, ছেলে তার মায়ের মতো হোক। বাবার মতো নয়।

বয়স থাকতেই হাসবেন্ড ওয়াইফ,  কোয়ালিটি টাইম এনজয় করা উচিৎ, ভালো কোথাও বছরে একবার ঘুরতে যাওয়া,মাসে অথবা সপ্তাহে রেস্টুরেন্ট...
10/05/2023

বয়স থাকতেই হাসবেন্ড ওয়াইফ, কোয়ালিটি টাইম এনজয় করা উচিৎ, ভালো কোথাও বছরে একবার ঘুরতে যাওয়া,মাসে অথবা সপ্তাহে রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া
অনেক সময় টাকা পয়সা অপচয় মনে হতে পারে,জীবনে বেঁচে থাকলে রিজিকের ব্যাবস্থা হবেই..

কিন্তু একটা সময় আসে বৃদ্ধ বয়সে আপনার টাকাই থাকবে হয়তো কিন্তু আপনি চাইলেই কিছু খেতে পারবেন না,শারিরীক অসুস্থতায়, ঘুরতে মন চাইলেও তখন পারবেন না,দামী জামা কাপড় চাইলেও পড়তে মন চাইবে না৷ ।

সন্তানের লেখা পড়া অথবা বিভিন্ন রেসপন্সিবিলিটি আসবে, তার মধ্যেও সময় বের করা যায়... সব, সম্পদ, টাকা সন্তানের জন্য সঞ্চয় করবেন কিন্তু অল্প কিছু নিজেদের জন্য বরাদ্দ রাখা উচিৎ...

দিন শেষে আপনার বাচ্চার ও আলাদা লাইফ হবে,সে তার লাইফ এনজয় করবে,তখন খারাপ লাগবে.....
তখন মেয়ে মেয়ের জামাই, ছেলে ছেলের বউ ঘুরতে গেলে, রেস্টুরেন্টে গেলে, আফসোস হবে না, তাদের এনজয়মেন্ট তখন ভালো লাগবে... তারাও সম্মান করবে..

টেনশন , টাকা পয়সার টানাটানি , ব্যবসায় প্রবলেম , হাজার হাজার মানসিক কস্ট।কিন্তু এইগুলো যেনো সম্পর্কে প্রভাব না ফেলে।

জীবনের এই ছোট ছোট এনজয়মেন্ট এর জন্য আপনার মন মানসিকতা উদার হবে, সবাই কে নিয়ে ভালো থাকতে পারবেন,
একটা সময় লাইফ পার্টনার থাকবে না পাশে কিন্তু আপনাদের অসংখ্য স্মৃতি বাঁচতে শিখাবে বাকি জীবন.…

সংগৃহীত

সদ্য স্নাতক পাশ করা ছেলেকে ভাল একটা উপহার দেয়ার জন্য বাবা তাকে নিয়ে গ্যারেজে গেলেন।বললেন, এখানের এই গাড়িটা অনেক বছর আগে ...
15/12/2022

সদ্য স্নাতক পাশ করা ছেলেকে ভাল একটা উপহার
দেয়ার জন্য বাবা তাকে নিয়ে গ্যারেজে গেলেন।

বললেন, এখানের এই গাড়িটা অনেক বছর আগে আমি নিয়েছিলাম। এখন এর অনেক বয়স হয়ে গেছে। তোমার খুশীর এই মুহূর্তে এটা আমি তোমাকে উপহার হিসেবে দিতে চাই।

তবে তার আগে তুমি এটা বিক্রির জন্য ব্যবহার করা গাড়ির শোরুমে যাও এবং দেখ তারা এটার কত দাম বলে।”

ছেলে ব্যবহৃত গাড়ির শোরুম থেকে বাবার কাছে ফিরে এসে বলল, ′′ তারা এই গাড়ির মূল্য এক হাজার ডলার বলেছে, কারণ এটি দেখতে খুব জরাজীর্ণ।”

বাবা বললেন, “এবার এটা ভাঙ্গারি দোকানে নিয়ে যাও, দেখ ওরা কি বলে!”

ছেলে ভাঙ্গারি দোকান থেকে ফিরে এসে বলল, “এটা অনেক পুরনো গাড়ি বলে ওরা মাত্র ১০০ ডলার দাম দিতে চায়।′′

বাবা তখন একটা গাড়ির ক্লাবে গিয়ে গাড়িটা দেখাতে বললেন।

ছেলে গাড়িটি ক্লাবে নিয়ে গেল এবং ফিরে এসে খুশিতে তার বাবাকে বলল, "ক্লাবে কিছু লোক খুবই কৌতূহলি হয়ে গাড়িটি পর্যবেক্ষণ করলো এবং এর জন্য এক লক্ষ ডলার অফার করেছে। যেহেতু এটি একটি Nissan Skyline R34, একটি আইকনিক গাড়ি।"

তখন বাবা তাঁর ছেলেকে বললেন, "সঠিক জায়গার সঠিক লোক তোমাকে সঠিক ভাবেই মূল্যায়ন করবে। আর যদি কোথাও তোমাকে মূল্য না দেওয়া হয়, তবে রাগ করবেনা।

বুঝে নিবে এর মানে তুমি ভুল জায়গায় আছো। তারাই তোমার মূল্য দিবে, যাদের নিজেদের মূল্যবোধ আছে, গুণের মর্ম উপলব্ধি করার মত যোগ্যতা আছে।

এমন জায়গায় কখনো থেকো না যেখানে তোমার প্রকৃত মূল্যায়ন কেউ করে না।”

আমি বিয়ে করেছি ২০০১ সালের ৭ই জুন।সেই হিসেবে এই বছর  ৭ই জুন ছিল আমাদের ২১তম বিয়ে বার্ষিকী। বিয়ের দুই তিন বছর,বাচ্চা হওয়ার...
28/09/2022

আমি বিয়ে করেছি ২০০১ সালের ৭ই জুন।

সেই হিসেবে এই বছর ৭ই জুন ছিল আমাদের ২১তম বিয়ে বার্ষিকী।

বিয়ের দুই তিন বছর,বাচ্চা হওয়ার আগ পর্যন্ত বিয়ে বার্ষিকী পালন করতাম।

বউকে বাইরে নিয়ে যেতাম,পছন্দের ড্রেস কিনে দিতাম। ফুল কিনে দিতাম।পছন্দের মুভি দেখতাম। ফেরার পথে ভালো কোন রেস্টুরেন্টে খাওয়াদাওয়া করতাম।

বাচ্চা হওয়ার পর এসব বন্ধ হয়ে গেলো।

স্বাভাবিক কারনেই বাচ্চা হওয়ার পর বউয়ের কাছে স্বামীর গুরুত্ব কমে যায়। হয়তো ভালবাসাও। এই সময়ে এসে ভালবাসা বাচ্চার সাথে ভাগাভাগি হয়ে যায়।

আমার দুই বাচ্চা। ওদেরকে নিয়েই বউয়ের জগৎ। আমার চেয়ে বাচ্চাদের দিকেই তার মনোযোগ বেশি। হয়তো সব মায়েরাই তা করেন।

আজকাল বিয়ে বার্ষিকীর কথা মনেই থাকে না। কেউ হয়তো মনে রাখার চেষ্টাও করি না। নিজেদের জম্মদিনও তেমন একটা পালন করা হয় না।

এই বছর ৭ই জুনের ঘটনা।

আমি ডায়াবেটিস রোগী। সকাল বেলা রুটি সবজি আর একটা সিদ্ধ ডিম খেয়ে বেরিয়ে গেলাম। বউকে বলে গেলাম, দুপুরবেলা বাসায় এসে খাবো।

নারায়ণগঞ্জ গিয়ে কাজে আটকা পড়ে গেলাম। দুপুর গড়িয়ে রাত হয়ে গেল।

এই সময়ের মধ্যে বাসা থেকে কয়েকবার ফোন চলে এলো।

সন্ধ্যার পর একটা কফিশপে গিয়ে একজনের সাথে কফি খাচ্ছি। পাশে এক লোক দাঁড়িয়ে আছে। সে তাদের বিয়ে বার্ষিকীর কেক নিতে এসেছে। তখন আমার মনে হলো, আরে! আজকে তো আমাদেরও বিয়ে বার্ষিকী!

হিসাব করে দেখলাম,সেদিন আমাদের ২১তম বিয়ে বার্ষিকী! মনে মনে বললাম, বউকে একটা সারপ্রাইজ দিলে কেমন হয়?

বাসায় ফোন দিলাম। ধরলো মেয়ে। আমি বললাম, মামুনি, আজকে বাসায় খেও না,তোমার জন্য নানরুটি আর গ্রিল আনবো। মাকেও খেতে নিষেধ কর।

গ্রিল আর নানরুটি আমার মেয়ের ভীষন পছন্দ।

কিছুক্ষণ পরই বউ ফোন দিয়ে বলল, কিছু আনার দরকার নাই, দুপুর এবং রাতের খাবার রান্না করা আছে। তুমি এমনিতেই দুপুরে খাও নাই। খাবার নষ্ট হবে।

আমি বললাম, নষ্ট হয় হউক। একদিনের ব্যাপার। ছেলেকেও খেতে নিষেধ কর। তোমার জন্য কী আনবো?

বউ বলল, কিছুই আনতে হবে না। শুধু শুধু টাকা নষ্ট করার দরকার নাই। ফ্রিজে খাবার আছে, গরম করে নিলেই হবে।

আমি জানি, বউ কাচ্চি বিরিয়ানি আর টিক্কা বেশ পছন্দ করে। সাথে বাদামের জুস।

আমি একটা দুই পাউন্ড জম্মদিনের কেক অর্ডার করে smartex এর দোকানে গেলাম। দোকানদার আমার বেশ ঘনিষ্ঠ। ঈদ উপলক্ষে তো এমনিতেই বউকে কিছু দিতে হবে। এই উপলক্ষে বউয়ের পছন্দের কালারের একটা ড্রেস কিনে ফেললাম।

এখন কিনলে ঈদে আর লাগবে না।

'সুগন্ধা' রেস্টুরেন্টে গিয়ে চারটা গ্রিল, নানরুটি আর বোরহানি নিলাম।

চাষাড়ায় 'কাচ্চিভাই' বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ওখানে গিয়ে কাচ্চি বিরানি আর বাদামের জুস নিলাম। সাথে টিক্কা।

তারপর কেক নিয়ে বাসায় ফিরলাম।

বাসায় ফিরতে ফিরতে দশটা বেজে গেল।

আমার এক ছেলে এক মেয়ে।
ওরা বসে বসে টিভি দেখছে। ওদের মা পাশের রুমে কাপড় গোছাচ্ছে।

মেয়েকে সব খুলে বললাম।

মেয়ে দ্রুতই টেবিলে সব কিছু সাজিয়ে ফেলল। কেকের চারপাশে একুশটা মোমবাতি জ্বালিয়ে দিলো। সব কিছু গুছিয়ে মাকে ডাকতে গেলো।

বউ এসেই হৈ চৈ শুরু করলো, রাগী রাগী গলায় আমার দিকে তাকিয়ে বলল, বুড়ো বয়সে এইসব কী ঢং ! আহ্লাদ করার আর জায়গা পাও না, নাকি!!

আমি বললাম, আজকের দিনটার কথা তোমার মনে ছিল?

বউ অভিমানের গলায় বলল, মনে থাকবে না কেন?

আমাকে বল নাই কেন?

সে যেন নিজেই নিজেকে বলছে এমন করে বলল, সব কথা সব সময় বলতে নাই। কিছু কিছু প্রিয় কথা থাকে, বলতে ইচ্ছা করে না। কাউকে না!

বুঝলাম, তার বুকে অভিমান জমেছে।

আমি কথা বলতে পারলাম না। ভাষা হারিয়ে ফেললাম। বুঝতে পারলাম, এক বুক অভিমান নিয়েও মেয়েরা হাসি মুখে সংসার করে যায়। কোন অভিযোগ না করেও!

তারা সুখের অভিনয় ভালো পারে।

আমরা মেয়ের জম্মদিন পালন করি, কন্যা দিবস পালন করি, বউয়ের কথা মনে করি না।

মেয়ে বলল,মা, বাবা তোমার জন্য সুন্দর একটা ড্রেস এনেছে,এক্ষুনি পরে এসো তো!

বউ কিছুতেই নতুন ড্রেস পরবে না। সে বলল,খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে। তোরা খেতে শুরু কর।

মেয়ে বলল,খাবার ঠান্ডা হয় হউক। তুমি নতুন ড্রেস না পরলে আমরা কেউ কিছু খাবো না।

অগত্যা বউ নতুন ড্রেস নিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো। মেয়ের অনুরোধে আমি কাপড় চেইন্জ করে নতুন একটা পান্জাবি পরলাম।

দশ মিনিটের মাথায় বউ নতুন ড্রেস পরে সাজগোছ করে বেড়িয়ে এলো। মেয়ে দৌড়ে মোবাইল নিয়ে এলো ছবি তোলার জন্য।

মেয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে বলল,মা তোমাকে তো অসাধারন লাগছে, একেবারে তামিল নায়িকাদের মতো!

মা মেয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে হাসতে লাগলো।

বউয়ের মুখে এখন আর রাগী ভাবটা নাই,তার মুখে সুখী সুখী একটা ভাব চলে এসেছে।

আমরা সবাই মিলে কেক কাটলাম।

কেক কাটার সময় বউ প্রান খুলে হাসছে। আমার দিকে বারবার লজ্জা নিয়ে তাকাচ্ছে। সবার মুখে কেক তুলে দিচ্ছে।

আমি মনে করতে পারলাম না, লাস্ট কবে বউয়ের এমন আনন্দময় মুখ দেখেছি। নিজেকে কেন যেন অপরাধী মনে হতে লাগল।

কেক কাটতে কাটতে মেয়ে বলল,হ্যাপি বিবাহ বার্ষিকী, মা। বাবা, তোমাকেও ধন্যবাদ।

আনন্দে আমার চোখে পানি চলে এলো।

মনে হল, হায়! এই ছোট ছোট আনন্দ গুলোই তো মানুষের বেঁচে থাকার প্রেরনা। মানুষ তো আনন্দের জন্যই বাঁচে।

আমার মনে হলো, অনেকদিন হয়,বউয়ের মুখে এমন প্রানখোলা হাসি দেখি নাই। অথচ, এই হাসি দেখার জন্য খুব বেশি অর্থ খরচ করতে হয় না।

বউকে তো ঈদের ড্রেস কিনে দিতেই হতো।

কেক আর খাবার বাবদ খরচ হয়েছে চার হাজার টাকার মতো। অথচ, এরচেয়ে অনেক বেশি টাকা অকারণে খরচ করে ফেলি।

মাত্র চার হাজার টাকা খরচ করে আমি একটা বিশাল আনন্দের মূহুর্ত কিনে ফেললাম!

©

Address

Chandpur
Demra

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when TINKI's Gallery posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share