20/02/2025
ট্রাম্প–মোদির ‘ঘনিষ্ঠতা’ টেকাতে ভারতকে বড় মূল্য চুকাতে হবে
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮: ০০
ফলো করুন
সম্প্রতি মার্কিন সফরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি
সম্প্রতি মার্কিন সফরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদিছবি: রয়টার্স
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক সফরে যে চুক্তি হয়েছে, তার বিস্তারিত তথ্য এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে দুই নেতার যৌথ সংবাদ সম্মেলন দেখে মনে হচ্ছে, মোদি এমন একটি চুক্তি করেছেন, যা ভারতের জন্য ততটা উপকারী না-ও হতে পারে।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে তাদের বাণিজ্য ১৯০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবরটি শুনে প্রথমে এটিকে ভারতের জন্য ভালো মনে হলেও এটি আসলে ভারতের জন্য লাভজনক না-ও হতে পারে।
৯০-এর দশকে চীনের সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্যের সময় যেভাবে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, সেভাবে এই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করবে।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং ৪০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে ভারত।
ভারত সেবা খাতে ৩৬ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করেছে এবং ২৯ বিলিয়ন ডলার আমদানি করেছে। এর ফলে প্রায় ৫০ শতাংশ বাণিজ্য উদ্বৃত্ত তৈরি হয়েছে ভারতের পক্ষে। এখন পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করার মানে হলো, যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যে যেভাবে শুল্ক আরোপ করে, ভারতও তেমনই শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর।
এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) অধীনে ভারতকে যে উন্নয়নশীল দেশের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল, সেটি কার্যত শেষ করে দেবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় পণ্যের দাম বাড়বে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য ভারতীয় বাজারে সস্তা হবে। এই পরিবর্তনের কারণে ভারতের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমে যেতে পারে এবং ভারতের অর্থনীতিতে ক্ষতি হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ভারত শুল্ক কমিয়ে মার্কিন পণ্য, বিশেষত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম এবং তেল ও গ্যাসের আমদানি বাড়াবে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসে। চুক্তি মোতাবেক ভারতকে আরও বেশি তেল ও গ্যাস আমদানি করতে হবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
ভারত তার তেল আমদানির জন্য বরাবরই ইরাক, রাশিয়া, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর দেশটি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অনেক গুণ বাড়িয়েছে। ২০২২ সালে ভারতের মোট তেল আমদানির ৪০ শতাংশই ছিল রাশিয়ার; এখনো তা প্রায় ৩৫ শতাংশে রয়েছে।