Mahmuda Mitu

Mahmuda Mitu কলেজ লাইফের কবি আফা এখন আন্ডা বাচ্চা সামলাইতে ব্যস্ত

 #মেহেরুনপর্ব-৪সময় তার আপন গতিতে চলতে থাকে!....দেখতে দেখতে ৬মাস পেরিয়ে যায়!... ছোট্ট মেহেরুন এখন একটু একটু বসতে শিখেছে। ...
09/07/2025

#মেহেরুন
পর্ব-৪

সময় তার আপন গতিতে চলতে থাকে!....দেখতে দেখতে ৬মাস পেরিয়ে যায়!... ছোট্ট মেহেরুন এখন একটু একটু বসতে শিখেছে। তার ফোকলা দাঁতের হাসিতে পুরো ঘর আলোকিত হয়ে উঠে।কাশেম মিয়া তো চোখে হারান তার ছোট্ট মেহেরুন কে।এরই মধ্যে একদিন রহিমা বিবি প্রাকৃতিক কাজ সারতে রাত ১০টায় বাহিরে যান, সোহাগী আর শিউলি তখন ঘুমিয়ে পড়েছে, সিরাজ আর মিরাজ তাদের নিজেদের রুমে, কাশেম মিয়া ও বাড়ি ফিরেনি। রহিমা বিবি বাহির থেকে এসে দেখে ছোট্ট মেহেরুন জানালার দিকে ফিরে বসে আছে আর কি যেন দেখে খিলখিলিয়ে হাসছে, দেখে মনে হচ্ছে কেউ তার সাথে কথা বলছে কিংবা খেলা করছে।রহিমা বিবি কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে মেহেরুন কে নাম ধরে ডাকে কিন্তু মেহেরুন আগের মতন ই হাসছে আর হাত-পা নাড়াচ্ছে বসে বসে! রহিমা বিবি দৌড়ে গিয়ে কোলে নিতেই তার সেকি কান্না! রহিমা অনেকটা আতংকিত হয়ে যায়,এদিকে কাশেম মিয়া ও বাড়ি ফিরে আসেন,তিনি ঘরের কাছে আসতেই দেখেন জানালার পাশের বেল গাছটা দুলছে আর জানালার কপাট ও খোলা কিন্তু বাহিরে কোন হাওয়া বইছেনা।কাশেম মিয়ার কিছুটা খটকা লাগে।ঘরে গিয়ে রহিমা বিবির কোলে মেহেরুন কে কাদতে দেখে তিনি বুঝতে পারেন কি হয়েছে! তিনি তৎক্ষনাৎ তিন কুল পড়ে মেহেরুনের শরিরে ফু দেওয়ার সাথে সাথে বাচ্চার কান্না বন্ধ হয়। এভাবেই মাঝে মধ্যে মেহেরুন একা একা খেলতো আর হাসতো,দেখে মনে হতো কেউ তার পাশে আছে! দিন যত যায় মেহেরুনের সুন্দর্য তত ফুটে উঠে।তাকে দেখলে আলাদা একটা প্রশান্তি কাজ করে মনের মধ্যে।বিশেষ করে মেহেরুনের চোখ! তার চোখের দিকে তাকালে যে কেউ তার মায়ায় পড়ে যাবে। মেহেরুনের জন্মের পর থেকে রহিমা বিবির উপর আর দুষ্ট জিন ভর করে না! এ নিয়ে রহিমা বিবি ও অনেক খুশি অনুভব করেন।আগে ঘুম থেকে উঠলেই তার গা,হাত-পা এত ব্যথা হয়ে থাকতো মনে হতো যেন তাকে কেউ বেধড়ক পিটিয়েছে আর মাঝে মাঝে তিনি বিভিন্ন রকমের ঘ্রান পেতেন।কখনো ফুলের ঘ্রান আবার কখনো ময়লা পঁচা গন্ধ! তিনি আশেপাশে সবাইকে জিজ্ঞেস করতেন কোন গন্ধ পাচ্ছে কি না! কিন্তু সবাই না জবাব দিতো।অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার সুবাদে অত কোরান-হাদিস যানতেন না তিনি তাই দোয়া পড়ে নিজেকে দুষ্ট জিন থেকে হেফাজত করতে পারতেননা কিন্তু এখন তিনি আগের মতন তেমন কিছু টের পান না! তিনি তো আর যানেন না তার উপর ভর করা জিন তার ছোট্ট মেয়ের দিকে নজর দিয়েছে। এদিকে চারদিক থেকে সোহাগীর জন্য বিয়ের ঘর আসতে থাকে।রহিমা বিবি কোলের বাচ্চাটার জন্য সোহাগীকে এখন বিয়ে দিতে নারাজ কিন্তু সময় কি আর বাধ মানে! ভালো সমন্ধ পেয়ে কাশেম মিয়া তা হাত ছাড়া করতে নারাজ। ভালো দিনক্ষন দেখে একদিন সোহাগীর বিয়ে হয়ে যায়।পালকি করে ছোট ছোট ভাই-বোনদের কাদিয়ে সোহাগী পরের ঘরে চলে যায়।সোহাগীর শশুর বাড়ি যাওয়াতে বেশি কষ্ট পায় শিউলি। রহিমা বিবি শিউলির কষ্ট লাঘব করতে তাকে মেহেরুন কে দেখা-শুনার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।এতদিন সোহাগী বুবুর জন্য মেহেরুন কে দেখা-শুনা করার সুযোগ পেতোনা শিউলি কিন্তু এখন মেহেরুনের সব দায়িত্ব তার, বড় মেয়ে কে বিদায় দেওয়ার পর রহিমা বিবি ঘরের কাজে এত বেশি মশগুল থাকে যে মেহেরুনকে তেমন সময় দিতে পারে না। রাতে যখন মেহেরুন কে ঘুম পাড়ায় তখন অজস্র চুমুতে ভরিয়ে দেন মেয়েকে তিনি। আস্তে আস্তে শিউলি ও চোখের পলকে বড় হতে থাকে। সদ্য কৈশরে পদার্পন করা শিউলি এখন বেশি একটা ঘরে থাকতে চায় না! এই ছুতো অই ছুতো দিয়ে বনে বাদাড়ে ঘুরে-ফিরে আর মায়ের বকা যেন না শুনতে হয় তাই মেহেরুন কে সাথে করে নিয়ে যায়।একদিন শিউলি মেহেরুন কে বাগানে নিয়ে গিয়ে গাছ থেকে পেয়ারা পাড়তে থাকে। সাথে তার অন্যান্য বান্ধুবিরাও ছিল।সবাই যখন পেয়ারা খেতে ব্যস্ত!মেহেরুন তখন এক পা দু পা করে পুকুরের একেবারে কাছে চলে আসে, আর এক পা এগুলেই সে পানিতে পড়ে যাবে এমন, আচমকাই মেহেরুনের হাতে টান পড়ে! ছোট্ট মেহেরুন পেছন ফিরে দেখে এক অতি সুদর্শন যুবক তার হাত ধরে ফেলেছে, সে কিছু বুঝে উঠার আগেই তাকে টানতে টানতে শিউলিদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। বোনকে অপরিচিত কেউ ধরে রেখেছে দেখে শিউলি হকচকিয়ে যায়, দ্রুতই বোনের কাছে দৌড়ে যেতেই সেই সুদর্শন যুবক মেহেরুনের হাত ছেড়ে দেয় আর গম্ভির কন্ঠে বলে-আমি না ধরলে এক্ষুনি পানিতে পইড়া যাইতো বাচ্চাডা! শিউলি অনেক ঘাবড়ে যায় আর দ্রুত মেহেরুন কে নিজের কাছে নিয়ে আসে, মেহেরুনের হাত ছেড়ে দিয়ে সেই যুবক বাগানের ভেতরের রাস্তা ধরে হাটতে হাটতে হাওয়ায় মিলিয়ে যায়, শিউলি তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ দেখে তাকে আর দেখা যাচ্ছে না! শিউলি তেমন একটা মাথা ঘামায় না আর দ্রুতই বাড়িতে চলে আসে। রাতে মেহেরুনের অনেক জ্বর আসে! শিউলি মায়ের বকার ভয়ে দুপুরের ঘটে যাওয়া ঘটনার কিছুই প্রকাশ করে না।……………. এভাবেই দেখতে দেখতে পাচ বছর কেটে যায়। মেহেরুনের এখন ৬বছর।সে সারাদিন ই মায়ের আগে পিছে ঘুর ঘুর করে আর শিউলি হচ্ছে তার সমস্ত আবদারের জায়গা।এখন শিউলি ও বিবাহ উপযুক্ত, তার জন্যে ও চারদিক থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসে।সিরাজ এখন শহরে কাজ করে,ছুটি পেলে দুই চার দিনেদ জন্য বাড়ি আসে আর মিরাজ তার বাবার দোকানে বসে। রহিমা বিবি দুই মেয়েকে নিয়ে সারাদিন একা একাই থাকে। শিউলি ও সোহাগীর মরন পুরো সংসারের দেখা-শুনা করে। একদিন দোকান থেকে ফিরে এসে কাশেম মিয়া রহিমা বিবি কে বলে-শিউলির লাইগা ভালো একখান বিয়ার প্রস্তাব আইসে! পোলা বিদেশ থাকে,ছয় মাসের ছুটিতে বাড়িত আইসে, শিউলিরে ইশকুলে যাইতে দেইখা পোলার পছন্দ হইসে আর আমি ও পোলারে চিনি, অখন ছেলে পক্ষ এই সপ্তাহে বাড়ি আইবার চায় এখন তোমার কি মত? রহিমা বিবি উত্তর দেয়- সোহাগী আর সিরাজের লগে কথা কইলে ভালা হয় না! রহিম মিয়া বলে-ঠিক আসে সোহাগীরে খবর পাঠাও আর আমি সিরাজ রে ফোন দিয়া বিস্তারিত কমু। দরজার পেছন থেকে শিউলি আর মেহেরুন সব শুনছিল, মেহেরুন দরজার পেছন থেকে বেরিয়ে এসে রহিম মিয়াকে জাপটে ধরে বলে-আব্বা শিউলি বু রে বিয়া দিলে শিউলি বু ও কি বড় বুবুর মতন আমগো বাড়িতে আইতে পারবো না! কাশেম মিয়া মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলে-কে কইসে আইতে পারবো না! আব্বা নিজে যাইয়া লইয়া আসমু তোর শিউলি বু রে, অবুজ মেহেরুন তার বাবাকে প্রশ্ন করে -আব্বা আমার বিয়া হইবো কবে? কাশেম মিয়া এক গাল হেসে উত্তর দেয়- তোমারে তো আমি বিয়াই দিমু নাহ! তোমার বিয়া হইয়া গেলে তুমি আমার কাছ থেইকা শশুর বাড়ি যাইবা গা এইডা আমি সহ্যই করতে পারুম নাহ……….চলবে?

 #মেহেরুনপর্ব-৩জানালার পাশের বেল গাছটার অস্বাভাবিক ভাবে হেল-দোল দেখে কাশেম মিয়া হকচকিয়ে উঠে বসেন, অতি সাবধানতার সহিত খাট...
07/07/2025

#মেহেরুন
পর্ব-৩
জানালার পাশের বেল গাছটার অস্বাভাবিক ভাবে হেল-দোল দেখে কাশেম মিয়া হকচকিয়ে উঠে বসেন, অতি সাবধানতার সহিত খাটের নিচে থাকা টিনের বাক্স টি টেনে বের করে নিজের কাছে রাখেন, হারিকেনের আগুন প্রায় নিভু নিভু করছে পাশাপাশি কাশেম মিয়ার শরির কেমন ভার ভার লাগছে। পুরো ঘরে অদ্ভুত রহস্যময়ি সুগন্ধি তে ছেয়ে গেছে, বিছানায় শুয়ে থাকা রহিমা বিবির শরিরের ঝাকুনিতে কাশেম মিয়া পেছনে ফিরে তাকায়, দ্রুত রহিমা বিবির ডান হাত চেপে ধরে দোয়া পড়তে থাকেন তিনি! আস্তে আস্তে রহিমা বিবির শরিরের কাপুনি কমে যায়, শুরু হয় তার সদ্যজাত মেহেরুনের গগন বিদারি চিতকার! কাশেম মিয়া ছোট্ট মেহেরুন কে কোলে নিয়ে জোরে জোরে দোয়া পড়ে ফু দিতে থাকেন,মুহুর্তেই মেহেরুনের চোখে ঘুম নেমে আসে,কাশেম মিয়া এবার লক্ষ্য করেন ঘরের চালে ধুপধাপ পায়ের শব্দ হচ্ছে!তিনি মেহেরুন কে এক হাতে কোলে নিয়ে অন্য হাতে টিনের বাক্স খুলে একটা পুটুলি হাতে নেয়, রহিমা বিবি তখনো গভীর ঘুমে মগ্ন তাই তিনি মেহেরুন কে কোলে নিয়ে বাহিরে বের হন আর দেখতে পান ঘরের চালে বিশাল লম্বা ছায়া! মুহুর্তেই তিনি পুটুলি থেকে ছাই নিয়ে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে ঘরের চালে ছুড়ে মারেন! সাথে সাথেই গায়েব হয়ে যায় সেই ছায়া। কাশেম মিয়া ঘরে ঢুকে দেখতে পান রহিমা বিবি জেগে আছেন, শোয়া থেকে উঠে বসে রহিমা বিবি কাশেম মিয়াকে বলতে থাকেন - মাইয়ারে নিয়া কই গেসিলেন? দেন আমার কাছে দেন! কাশেম মিয়া কিঞ্চিৎ ভ্রু কুচকে বলেন-তোমার শরির ভালা না তুমি সুইয়া পড়ো,মাইয়া আমার কাছে থাক! মুহুর্তেই রহিমা বিবির চোখ মুখ অন্য রকম হয়ে যায়,চোখ গুলো অস্বাভাবিক লাল হয়ে যায় আর তিনি রাগে ফুসতে ফুসতে বলেন-তোরে দিতে কইসি দে! কাশেম মিয়া মেহেরুনের হাতের মুঠোয় লোহার পেরেক ধরিয়ে দেন আর রহিমা বিবির দিকে তাকিয়ে বলেন- তুই ঘরে ঢুকলি কেমনে ইয়াকুব! রহিমা বিবির শরিরে ভর করা দুষ্ট জিন উত্তর দেয়- আমি ইয়াকুব না আমি আইয়ুব!! ইয়াকুবরে তুই দমন করতে পারলে ও আমারে পারবিনা, কাশেম মিয়া মৃদু হেসে বলে তোর আগে আরো কতডিরে খেদাইসি আর তুই কোনহান কার কি!! রহিমা বিবি বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় আর বিকট শব্দ করে কাশেম মিয়ার দিকে চেয়ে হাসতে থাকেন। কাশেম মিয়া বলেন- তুই যদি জাতের মান রাখতে চাস তাইলে আমার বউয়ের শরির থেইক্কা একবার বাইর হ,দেখ তোরে মাটিতে পুইত্তা রাখতে পারি নাকি! দুষ্ট জিন রহিমা বিবির শরির কে শুন্যে উঠিয়ে খাটের উপর ছুড়ে মারে আর কাশেম মিয়াকে বলে-এতদিন তো শুধু তোর বউয়ের উপর খায়েশ ছিল এখন তোর কোলের বাচ্চাটার দিকে নজর আমার!! কাশেম মিয়া হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে রহিমার গালে কষিয়ে চড় বসান! রহিমা বিবির শরিরে ভর করা দুষ্ট জিন আয়ুব বলে উঠে-আজকের পর থেইক্কা আমার জাতের কেউ তোর বউয়ের কাছে আইবো না আইবো তোর কোলের বাচ্চার কাসে,দেখি তুই কেমনে আটকাস আমগোরে,এই কথা বলেই আইয়ুব রহিমা বিবির শরির ছেড়ে চলে যায়! চারিদিকে ফজরের নামাজের আজানের ধ্বনি শোনা মাত্র কাসেম মিয়া শান্ত হন,খাটের দিকে তাকিয়ে দেখেন রহিমা বিবি ঘুমিয়ে আছেন! কাল রাতের এত ধস্তাধস্তির কিছুই টের পান নি তিনি! কাশেম মিয়া ঘরের সবাইকে ডেকে তুলেন নামাজ পড়ার জন্য। সোহাগীকে ঘুম থেকে উঠিয়ে মেহেরুন কে সোহাগীর কোলে দিয়ে তার মায়ের কাছে পাঠান,কাশেম মিয়া অজু করে সিরাজ ও মিরাজ কে নিয়ে মসজিদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। সোহাগি তার মায়ের পাশে মেহেরুন কে সুইয়ে দিয়ে তার মা কে আস্তে আস্তে ডেকে তুলে তারপর সে ও নামাজ আদায় করে নেয়।ভোরের আলো এখনো ভালো করে ফোটেনি! সোহাগী গুনগুন করে কোরান তিলাওয়াত করে আর আরেক হাত দিয়ে শিউলির শরিরে হাত বুলিয়ে ডাকতে থাকে মোক্তবে যাওয়ার জন্য।শিউলি ঘুম ঘুম চোখে সোহাগীর দিকে তাকিয়ে বলে উঠে-আমার খুব ঘুম পাইতাসে বুবু! আমি যামু না। সোহাগী কোরআন শরিফ বন্ধ করে তাতে চুমু দিয়ে সাইডে রেখে বলে-না গেলে না যাবি! তাতে কি আর অইবো তোর বান্ধুবি মিনা তোর থেইকা বেশি আগাইয়া যাইবো আর তুই পিছাইয়া যাবি! শিউলি তড়িঘড়ি করে ঘুম থেকে উঠে মুখ-হাত ধুয়ে অজু করে মোক্তবের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যায় এইদিকে সোহাগী কোমর বেধে ঘরের কাজে লেগে পড়ে। একে একে কাশেম মিয়া সমেত সব ভাই-বোন এসে পড়ে সকালের নাস্তা খেতে! সোহাগী সকল কে গুড় আর শুকনো মুড়ি খেতে দেয় আর তার মায়ের জন্য সিদ্ধ ডিম আর ভাতের চালের জাউ নিয়ে যায়।রহিমা বিবি সিদ্ধ ডিম কাশেম মিয়ারে দিতে বলে, কাশেম মিয়া উত্তর দেয়-বাচ্চা আমার হয় নাই তোমার হইসে তাই শরিলে শক্তি যোগান তোমার দরকার! রহিমা বিবি চুপচাপ খেয়ে নেয়। সব ভাই-বোন সকালের নাস্তা সেরে যে যার মতন স্কুলে চলে যায় আর সোহাগো ঘর সামলানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।এইদিকে ছোট্ট মেহেরুনের হাত পা ছড়নো আর পিটপিট করে তাকানো উপভোগ ক্রতে থাকে কাশেম মিয়া। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে একরাশ মায়া নিয়ে কাশেম মিয়া বলেন-মাসাল্লাহ মাইয়া আমার কলিজার আধখান! শুধু চাইয়া থাকতে মন চায়! তারপর কালরাতের কথা মন করতেই কাশেম ময়ার চোয়াল শক্ত হয়ে আসে, ছোট্ট মেহেরুনের মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া পড়ে ফু দিয়ে দেন তিনি আর রহিমা বিবিরে বলেন- মাইয়ারে একলা থুইয়া কোনখানে যাইবা না আর যদি যাইতে হয় সোহাগীর কাছে রাইখা যাইবা ঠিক আসে! রহিমা বিবি মাথা দুলিয়ে সম্মতি প্রকাশ করেন, কাশেম মিয়া ও মাঠে কাজ করতে বেরিয়ে যান।

চলবে?
[বি:দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টি তে দেখবেন]

01/04/2025

জিবনের হিসাব
কলমে- সুকুমার রায়❤️

কথাতেই যত্নকথাতেই বিচ্ছেদ🙂আমাদের জীবন টা আরো বেশি সুন্দর আর সহজ হতে পারতো কিন্তু কিছু টক্সিক মানুষের জন্য আমাদের জীবন টা...
05/03/2025

কথাতেই যত্ন
কথাতেই বিচ্ছেদ🙂

আমাদের জীবন টা আরো বেশি সুন্দর আর সহজ হতে পারতো কিন্তু কিছু টক্সিক মানুষের জন্য আমাদের জীবন টা এক রাশ হতাশায় ডুবে যায়। এদের কথা আপনাকে।এমন ভাবে আঘাত করবে যেন মনে হবে আপনার ভেতরটা পুড়ে গেছে! বিচ্ছেদ টা কেবল স্বামি-স্ত্রীর হয় না এমন অনেক আপন জনের সাথে কথার জন্য বিচ্ছেদ হয় যারা চাইলেই আপনার জীবনটা সহজ করতে পারতো🙂

 #মেহেরুনMahmuda Mitu পর্ব-১&২আকাশে ঘন কালো মেঘ জমেছে যে কোন সময় আকাশ ভেংগে বৃষ্টি নামবে এমন অবস্থা, এদিকে ধানের বোঝা মা...
24/02/2025

#মেহেরুন
Mahmuda Mitu
পর্ব-১&২

আকাশে ঘন কালো মেঘ জমেছে যে কোন সময় আকাশ ভেংগে বৃষ্টি নামবে এমন অবস্থা, এদিকে ধানের বোঝা মাথায় করে নয় মাসের পোয়াতি রহিমা বিবি জোর কদমে রসুই ঘরে যাচ্ছেন ধানের বস্তা রাখার জন্য। সেই দুপুর থেকে কাসেম মিয়া তার ছেলে-মেয়ে সমেত মাঠে ধান কাটার কাজ করছেন আর একের পর এক ধানের বস্তা ছেলে-মেয়েদের মাথায় উঠিয়ে দিচ্ছেন, ছেলেরা ধানের বস্তা বাড়ির চৌকাঠ পর্যন্ত এনে দিচ্ছে আর রহিমা বিবি সেখান থেকে মেয়েদের নিয়ে তা রসুই ঘরে একের পর এক নিয়ে রাখছেন, শেষের বস্তা টা আনতে রহিমা বিবির বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে, তার মাজার মধ্যে কেমন জানি চিন চিন ব্যথা অনুভুত হচ্ছিল কিন্তু কাজের মধ্যে থাকায় বিষয়টা তেমন গুরুত্ব দেন নি তিনি। একটু বাদে মুশলধারে বৃষ্টি নামে সাথে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে! কাশেম মিয়া মাজায় বাধা গামছা খুলে মাথায় দিয়ে বাড়ির পথে ছুট লাগায় আর তার পেছন পেছন তার দুই ছেলে সিরাজ আর মিরাজ দৌড়ে বাড়ি চলে আসে। সিরাজ তার বড় বোন সোহাগী কে ডাক দিয়ে বলে - আপা সেই দুপুরে কয়ডা ভাত খাইসি কিছু খাইতে দিবি!
সিরাজের কথা শুনে সোহাগী উত্তর দেয়-আব্বা গত কাইল মুড়ির মোয়া আনসিল, খাবি!!
পেছন থেকে মিরাজ বলে উঠে- আপা আমি খামু!
সোহাগী জোর কদমে টিনের ড্রামের মুখ খুলে সিরাজ কে দুইটা আর মিরাজ কে দুইটা মুড়ির মোয়া ধরিয়ে দেয়, এইদিকে সবার ছোট শিউলি সোহাগীকে বলে-আপা আমারে দিবি না!
সোহাগী উত্তর দেয় -না! আমরা অক্ষন খামু না, আব্বা আর ওরা খাইয়া বাইরে যাক তার পর আমি তুই আর মা খামু ঠিক আসে! সিরাজ আর মিরাজ একটু পরে আব্বার লগে মাছ মারতে যাইবো তাই ওগোরে আগে খাওয়াইয়া দিলাম।
সোহাগীর কথায় শিউলির চোখ মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠে সে তার বড় ভাই সিরাজ কে বলে- ভাইজান বড় মাছ মাইরা আইনো সোহাগী আপা টমেটো দিয়ে ঝোল কইরা রাইন্দা দিবো।
মিরাজ বলে-এহ এক্কেরে শখ কত! ঝোল কইরা রাইন্দা দিবো! নারে আপা আমি সকালে যে আন্তা পাইতা আইসি ক্ষেতের আইলে, অক্ষন যাইয়া সেইটা উঠামু আর যদি ছোট ইচা মাস আন্তায় বাজে তাইলে কিন্তু তুই বেশি কইরা পেয়াইজ দিয়া ভাজি কইরা দিবি ঠিক আসে!!
সিরাজ স্বশব্দে হেসে বলে -আগে যাইয়া লই,দেখি কি পাই তার পর তোরা কইস কেমনে কি রান্দতে হইবো।
এদিকে কাশেম মিয়াকে পান বানিয়ে দিচ্ছেরহিমা বিবি! পান সাজিয়ে মুখে দিতে দিতে রহিমা বিবির দিকে তাকিয়ে কাশেম মিয়া বললেন- তোমার চোখ মুখের অবস্থা দেখি ভালা ঠেকতেসে না, কি ব্যপার!!
রহিমা বিবি গলার ঘাম মুছতে মুছতে বললেন-আমার শরির টা তেমন ভালা না, আপনে তাড়াতাড়ি ঘরে আইসা পইড়েন, মাইয়া গুলা ও তেমন শক্ত পোক্ত না, আমার কখন কি হইয়া যায় বলা তো যায় না!
লকাশেম মিয়া মাথা হেলিয়ে সম্মতি জানিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে।আকাশ এখনো থম থমে!মেঘের গর্জনে গোয়াল ঘরের গরু-ছাগল গুলো গলা ছেড়ে ডাকা ডাকি শুরু করেছে।কাশেম মিয়া গরুর বাছুর গুলোক আলাদা ঘরে বেধে দিয়ে সোহাগীকে হাস-মুরগি ধরতে বলে চলে গেছেন চায়ের দোকানে,
সিরাজ আর মিরাজ ও বেরিয়ে গেছে পেছনের দরজা দিয়ে,শিউলি তার মায়ের মাথার পাশে বসে হারিকেনের আলো নিয়ে খেলছে আর একটু পর পর ঝারি খাচ্ছে রহিমা বিবির।সোহাগী বাহিরের সমস্ত কাজ-কর্ম সামাল দিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে এসেছে, রহিমা বিবি সোহাগী কে ডেকে গরম পানি করে দিতে বলে তার কোমরের ব্যথাটা ক্রমশ বাড়ছে,আগে চার সন্তানের মা হওয়ার দরুন এই ব্যথার সাথে বেশ পরিচিত সে! তার আর বুঝতে বাকি নেই তার প্রসব ব্যথা শুরু হয়েছে, সোহাগী রহিমা বিবীর গা,হাত-পা বার বার করে মুছে দিচ্ছে, বাহিরে তুমুল ঝড় উঠেছে আরভেতরে রহিমা বিবি প্রসব বেদনায় ছটফট করছে,শিউলি কে মায়ের কাছে রেখে সোহাগী এই ঝড়-বৃষ্টি মাথায় করে ছুট লাগিয়েছে শেফালি খালা কে আনা র জন্য। মিনিট দশেকের মাথায় শেফালি খালা সমেত সোহাগী ঘরে এসে পৌছলো, শেফালি খালা শিউলি কে ঘর থেকে বাহির করে দিয়ে সোহাগীকে পরিষ্কার কাপড়, গরম পানি আর নতুন ব্লেড আনতে পাঠিয়ে দিল,এদিকে কাশেম মিয়া ও ঘরে এসে পড়েছে, রহিমা বিবির প্রসব ব্যথায় ছটফটানি দেখে তিনি অজু করে নামাজের পাটিতে নফল নামাজে দাঁড়িয়ে গেছেন, শিউলির বয়স কেবল ৬ বছর,সে জানে না তার মা কেন এত কষ্ট পাচ্ছে আর কাতরাচ্ছে তাই সে তার আব্বার পাশে জায়নামাজে যেটুকু জায়গা ছিল সেখানে তার বাবার দেখাদেখি সেজদা দিচ্ছে। খানিক বাদে শোবার ঘর থেকে কান্নার আওয়াজ পেয়ে কাশেম মিয়া নামাজের সালাম ফিরায় এবং চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে মোনাজাতে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে।শেফালি খালা একটা কাপড় পেচিয়ে ছোট্ট প্রান টাকে কাশেম মিয়ার দিকে বাড়িয়ে বলে- ভাইসাব আপনের একটা পরির লাহান কইন্যা সন্তান হইসে মাশাল্লাহ!
কাশেম মিয়া আলহামদুলিল্লাহ পড়ে বাচ্চাটাকে বুকে জড়িয়ে নেন!ইসলামি শরিয়া মোতাবেক বাচ্চার কানে আজান দিয়ে নাম রাখেন “মেহেরুন”
পাশ থেকে সোহাগী বলে-আব্বা আমগো বইনের কি নাম রাখসেন?
কাশেম মিয়া একগাল হেসে বলেন “মেহেরুন”
সোহাগী একে একে সব ভাই-বোনদের নাম বলতে থাকে-সোহাগী, সিরাজ,মিরাজ,শিউলি আর সবার ছোট মেহেরুন।
সিরাজ আর মিরাজ বাহির থেকে ঘরে ঢুকতেই হই চই বাধিয়ে দেয় বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনে। সিরাজ শেফালি খালা কে দেখে যা বোঝার বুঝে গেছে তাই সে মিরাজ কে মাছ নিয়ে ঘরে ঢুকতে নিষেধ করে, এদিকে শিউলি মিরাজের কাছে গিয়ে বলে-ছোট ভাইজান জানো আমি এখন বড় বইন হইয়া গেসি, মিরাজ খুশিতে শিউলির হাতে মাছের ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে বলে-আইজকা আমগো খুশির দিন জানোস শিউলি সিরাজ ভাই বড় একটা শোইল মাছ পাইসে আর আমি আন্তা ভরা ইচা মাছ পাইসি!
কাশেম মিয়া সিরাজ আর মিরাজ কে মাছ সহ রসুই ঘরে আগুনের সামনে ঘুরে আসতে বলে, কথামত দুই ভাই রসুই ঘরে চলে যায় আর তাদের পেছন পেছন শিউলি আর সোহাগী চলে আসে।চার ভাই-বোন মিলে মাছ কেটে বেছে রান্না চাপিয়ে দেয়। বড় শোল মাছ টমেটো দিয়ে ঝোল করে রান্না করে আর কুচো চিংড়ি গুলো বেশি করে পেয়াজ দিয়ে ভাজি করে।রাতে সবাই মিলে তৃপ্তি করে ভাত খায়, কাশেম মিয়া রহিমা বিবিকে নিজ হাতে ভাত খাইয়ে দেয়, ভাতের লোকমা মুখে নিয়ে রহিমা বিবি কাশেম মিয়াকে প্রশ্ন করে-মানুষ পোলা হইলে খুশি হয় আপনে দেখি মাইয়া হইলে বেশি খুশি হন!
কাশেম মিয়া ভাত মাখাতে মাখাতে উত্তর দেন - মাইয়া হইলো আল্লাহর রহমত আর আমার প্রতিটা মাইয়াই আমার রিজিকে বরকত আইনা দিসে তুমি দেইখা নিও আমার এই মাইয়া ও আমার সংসারে বরকত আইনা দিবো।
রহিমা বিবি চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলেন-আল্লাহ কবুল করুক আপনার কথা!
রাতে যে যার মতন ঘুমিয়ে পড়ে কেবল সজাগ থাকেন কাশেম মিয়া। কাশেম মিয়ার বাড়ি তার দাদার আমলের!একদম নির্জন আর গাছ-গাছালিতে ভরা। অন্যদের বসত বাড়ি থেকে একটু ভেতরে হওয়ায় দিনের বেলায় ও গা ছম ছম করে। রহিমা বিবির বিয়ের পর থেকেই তার একা একা থাকতে খুব ভয় করতো, তার সর্বোক্ষন মনে হতো তার পেছনে কিছু আছে কিন্তু পেছনে তাকালে দেখতো কিছুই নাই।রহিমা বিবি তার শাশুড়ির কাছে এ বাড়ির অনেক কথাই শুনেছেন কিন্তু কখনো তেমন কিছু দেখেন নি শুধু একদিন মাগরিবের সময় বাড়ির পেছনে বাঁশ ঝাড়ের সামনে রক্ত হিম হওয়ার মতন দৃশ্য দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান,তার শাশুড়ি যখন অনেক ডাকা ডাকি করে ওনার সাড়া না পেয়ে বাড়ির পেছনে গিয়ে রহিমা বিবিকে অচেতন অবস্থায় পান,জ্ঞান ফেরার পর রহিমা বিবিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তার সাথে কি হয়েছিল তখন তিনি বলেছিলেন বাঁশ গাছের মতন লম্বা কিছু একটা উনি দেখেছিলেন যা শোনার পর কারো আর বোঝার বাকি ছিলো না যে উনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন।কাশেম মিয়া যদিও এসব দেখে অভ্যস্ত তিনি তার বাপ-দাদার কাছ থেকে এ সমস্ত কিছু বশে আনার কলা কৌশল শিখেছেন তাই তার তেমন ভয় কাজ করে না। এমন অনেক কিছুই তিনি দেখে ও না দেখার মতন চলেন এমনকি রহিমা বিবির সাথে ও আলোচনা করেন না পাছে ভয় না পেয়ে বসে তাই!...….চলবে?
[বি: দ্র: এটা আমার লেখা প্রথম গল্প তাই ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন]

16/02/2025

Address

Lakshmipur
Chittagong

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Mahmuda Mitu posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share