23/06/2025
সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিলো জনতা
গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতিত শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের অন্যতম আলোচিত ব্যক্তি, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাকে রাজধানীর উত্তরা থেকে বিক্ষুব্ধ জনতা জুতার মালা পরিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে।
রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যার দিকে উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে নিজ বাসার সামনের রাস্তায় স্থানীয় লোকজন তাকে ঘিরে ধরে। পরে একদল যুবক তাকে জুতার মালা পরিয়ে দেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কেউ কেউ সাবেক এই সিইসিকে জুতাপেটাও করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মইদুল ইসলাম। তিনি জানান, উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরে কিছু বিক্ষুব্ধ লোকজন নুরুল হুদার ভাড়া বাসা ঘেরাও করে রেখেছিল। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি দল গিয়ে তাকে নিরাপত্তার স্বার্থে হেফাজতে নেয়।
তাকে রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে, কারণ তার বিরুদ্ধে ওই থানায় একটি মামলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিসি মইদুল।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন কে এম নুরুল হুদা। তার নেতৃত্বাধীন কমিশনের অধীনেই অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, যা 'নিশি রাতের ভোট' নামে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়।
জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর নির্যাতনের অভিযোগে সম্প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে দায়ের করা এক মামলায় ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাড়াও মামলায় আসামি হয়েছেন সাবেক সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, বর্তমান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং কে এম নুরুল হুদা।
মামলার তালিকায় আরও রয়েছেন পুলিশের সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ, এ কে এম শহীদুল হক এবং গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম।
শেরে বাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইমাউল হক জানিয়েছেন, অভিযোগকারীরা মনে করছেন, এসব সাংবিধানিক ও নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তারা ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভোট ছিনিয়ে নিয়েছেন, জনগণের ভোট ছাড়া সংসদ সদস্যদের বিজয়ী ঘোষণা করেছেন—যা গুরুতর অপরাধ। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
নতুন বাস্তবতায় বিচার দাবি তীব্র হচ্ছে
দেশজুড়ে রাজনৈতিক পালাবদলের পর জনগণের মধ্য থেকে বিচার দাবি জোরালো হচ্ছে। বিতর্কিত নির্বাচন এবং গণতন্ত্র হরণে যুক্ত থাকার অভিযোগে যেসব ব্যক্তি ও সংস্থা অতীতে দায়িত্বরত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে।
কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে জনতার এই ক্ষোভ সেই ধারাবাহিকতাতেই দেখছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে, তার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড