20/10/2025
#মসজিদে_কুরআন_তালীমে_হামলা:
মসজিদের ভিতরে "কুরআন দার্সের" বা কুরআন তা'লীমের প্রোগ্রামে যারা হিংসাত্মকভাবে ছাত্রশিবিরের উপর আক্রমণ চালিয়েছে, তারা মূলত আল্লাহর কুরআনের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেছে।
👉 রাসুলের যুগে আবু লাহাব ও আবু জাহেলের দলের লোকেরা রাসূলের যেকোনো দ্বীনের মজলিসে , নসীহা মূলক আলোচনার মধ্যে, কুরআন তালিম বা কুরআন দার্সের মজলিসে বিশৃঙ্খলা, বাঁধা ও আক্রমণের মাধ্যমে দমিয়ে ও নষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র করতেন এই জন্য যে, যেন ইসলাম কায়েম না হতে পারে। মানুষ যেন সত্য ধর্ম ইসলামী জীবন ব্যবস্থা থেকে দূরে থাকে।
যারা চাই ব্যাক্তিগত জীবন, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে ইসলামকে চিরতরে মুছে ফেলতে তাদের এমন ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يُرِيدُونَ لِيُطْفِئُوا نُورَ اللَّهِ بِأَفْوَاهِهِمْ وَاللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِ وَلَوْ كَرِهَ الْكَافِرُونَ﴾
[ الصف: 8]
তারা আল্লাহর জ্যোতিকে তাদের মুখ দিয়ে নিভিয়ে দিতে চায়,[১] কিন্তু আল্লাহ তাঁর জ্যোতিকে পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত করবেন; [২] যদিও অবিশ্বাসীরা তা অপছন্দ করে।
📜 আয়াতের ব্যাখ্যা:
[১] আল্লাহর 'নূর' (জ্যোতি) অর্থঃ কুরআন, ইসলাম, মুহাম্মাদ (সাঃ) কিংবা দলীল-প্রমাণাদি। 'মুখ দিয়ে নিভিয়ে দেওয়া' মানে তাদের সেই সব প্রতিবাদ, বাঁধা,কটূক্তি ও নিন্দনীয় কথাবার্তা যা তাদের মুখ থেকে বের হয়, তা দিয়ে তারা ঐ জ্যোতিকে প্রতিহত করতে চায়!
[২] অর্থাৎ, আল্লাহ সারা বিশ্বে তার দ্বীন ইসলামের বিজয় ও প্রসার ঘটাবেন এবং অন্য সমস্ত ধর্মের উপর তাকে ইসলাম ধর্মকে জয়যুক্ত করবেন। দলীল-প্রমাণের দিক দিয়ে অথবা পার্থিব জয়ের দিক দিয়ে কিংবা উভয় দিক দিয়ে।
👉দ্বীন ইসলাম চর্চার কেন্দ্রঃ
কুরআন, হাদিস ও দ্বীন ইসলাম চর্চার মূল প্রাণকেন্দ্র হলো মসজিদ ও মাদ্রাসা।
মসজিদে রাসুল (সা:) যে সমস্ত কাজগুলো করতেন।
🔸১। المسجد هو مكان السجود لله অর্থাৎ মসজিদ হলো, আল্লাহকে সিজদা করার স্থান। সেখানে নামাজ আদায় করতেন।
🔸২। المسجد هو مكان التعليم الدين অর্থাৎ মসজিদ হলো কুরআন, হাদিস ও দ্বীন ইসলাম ও ইসলামী সাংস্কৃতি চর্চার স্থান।
যেখানে বসে রাসূল (সা:) তার সাহাবিদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা, দ্বীনি নাসিহা, ওয়াজ, বক্তব্য ও খুতবা দিতেন।
🔸৩। المسجد هو مكان التحكيم অর্থাৎ মসজিদ হলো বিচারালয়।
যেখানে বসে রাসূল (সা:) পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বিষয়ের আচার -বিচার ও সমস্যা সমাধান করতেন।
🔸৪। المسجد النبوي كان مكانَ أهل الصُّفَّة অর্থাৎ
মসজিদে নববী-ই ছিলো আহলুস সুফ্ফাদের থাকার স্থান।
✅আহলুস সুফ্ফাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়:
এখানে الصُّفَّة “সুফ্ফা” শব্দের অর্থ: ছাউনিযুক্ত বারান্দা বা ছায়াযুক্ত স্থান।
এই স্থানটি ছিলো মসজিদে নববীর উত্তর-পশ্চিম পাশের অংশ বা বারান্দা, যেখানে নবী ﷺ মক্কা থেকে আগত গরিব, অসহায় মুহাজিরদের আশ্রয় দেন।
সেখানে যারা অবস্থান করতেন, তাদের বলা হতো أهل الصفة (আহলুস সুফ্ফা)।
🔹 তাদের কার্যক্রম ও বৈশিষ্ট্য:
🔸১। তারা ছিলেন দরিদ্র সাহাবি, যাদের বাড়ি, সম্পদ, বা পরিবার ছিল না।
🔸২। তারা দিন-রাত কুরআন শিক্ষা, হাদীস শিক্ষা ও দ্বীন ইসলাম চর্চা এবং আল্লাহর ইবাদতে ব্যস্ত থাকতেন।
🔸৩। নবী করিম ﷺ সবসময় তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতেন।
🔸৪। তাদের মধ্য থেকে বহু বিখ্যাত সাহাবি জ্ঞান ও দাওয়াতের মহান দায়িত্ব পালন করেন।
🔹 আহলুস সুফ্ফাদের মধ্যে যারা বাস করতেন সেই সাহাবিদের মধ্যে কয়েকজনের নাম:
১। হযরত আবূ হুরাইরাহ (رَضِيَ اللهُ عَنْهُ)
২। হযরত সালমান আল-ফারিসি (রা:)
৩।হযরত বিলাল ইবনু রাবাহ (রা:)
৪। হযরত আবদুল্লাহ ইবনু উম্মে মাকতুম প্রমুখ ইত্যাদি।
👉বিঃদ্রঃ যারা আল্লাহ ও রাসূলের কুরআন, হাদিস,দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে, বিরোধীতা করে, বিরুদ্ধে অবস্থান করে এবং দ্বীন ইসলামের কাজে বাঁধা দেয়, কুরআন ও হাদীসের আলোকে দেখা যায় তারা হলো কাফের। যেমন;
এই আচরণ করেছিলো আবু লাহাব, আবু জাহেল, উতবা, শায়বা ও অন্যান্য কাফের মুশরিকরা।
আজ তাদের উত্তরসূরী যারা আছে তাদের উচিত হলো মন থেকে তাওবা করে ইসলামে ফিরে আসা। আল্লাহ বুঝদান করুক 🤲