Sharmin Akther

Sharmin Akther Digital Marketer & Graphic Designer

09/10/2025
 #ফ্রান্সের এক ধনী পরিবারের জন্ম নিয়েছিল ছোট্ট এক মেয়ে। নাম তার "ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের"। জন্ম ১৮৪৯ সালের ১লা মার্চ। ফরাসি সমা...
15/09/2025

#ফ্রান্সের এক ধনী পরিবারের জন্ম নিয়েছিল ছোট্ট এক মেয়ে। নাম তার "ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের"। জন্ম ১৮৪৯ সালের ১লা মার্চ। ফরাসি সমাজে তখন মনিয়ের পরিবার ছিল বেশ প্রভাবশালী। মা ম্যাডাম মনিয়ের দানশীলতার জন্য এলাকায় নাম কুড়িয়েছিলেন, এমনকি কমিউনিটি অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলেন। এক ছেলে, এক মেয়ে— এভাবেই সুখের সংসার ছিল তাদের। ছেলে মার্সেল একজন উকিল, আর মেয়ে ব্ল্যাঞ্চ ছিল রূপের আধার।

শিশুকাল থেকেই ব্ল্যাঞ্চ ছিল সুন্দর, কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার সৌন্দর্য যেন আরও বেড়ে উঠলো বহুগুণে। মায়ের গর্বের শেষ ছিল না মেয়েকে নিয়ে। কিন্তু গর্বই শেষ পর্যন্ত বিষ হয়ে দাঁড়ালো মেয়ের জীবনে।

২৫ বছরের তরুণী ব্ল্যাঞ্চকে মা বিয়ে দিতে চাইলেন এক অভিজাত পরিবারের ছেলের সাথে। কিন্তু ততদিনে ব্ল্যাঞ্চ মন দিয়ে বসেছে একজন সাধারণ উকিলকে— যার পরিবার ছিল একেবারেই সাদামাটা। মেয়ের ভালোবাসার মানুষকে মায়ের সামনে আনতেই অগ্নিশর্মা হয়ে উঠলো মা। বললেন, ওকে কখনো এই ঘরের বউ করব না। তোমার বিয়ে হবে আমার পছন্দের মানুষের সাথে। অন্যথায় নয়।

কিন্তু ব্ল্যাঞ্চও ছিল একরোখা। স্পষ্ট জানিয়ে দিল— বিয়ে যদি করতেই হয়, তবে আমি আমার ভালোবাসার মানুষকেই করব। অন্য কাউকে নয়।

এই অবাধ্যতার শা'স্তি দিতে মায়ের মনে হলো এক শ'য়তানি চিন্তা। একদিন মেয়েকে ডেকে নিয়ে তালা মে'রে দিলেন বাড়ির এক ছোট্ট অন্ধকার রুমে। কঠিন গলায় বললেন— সেদিনই এই ঘর থেকে মু'ক্তি পাবে, যেদিন আমার সিদ্ধান্ত মেনে নেবে।

কিন্তু মা যেমন জে'দী, মেয়ে তেমনই একগুঁয়ে। দিন যায়, মাস যায়, বছর যায়—কেউ কাউকে হার মানায় না। ব্ল্যাঞ্চ ঠিক করলো, ভালোবাসার সঙ্গে প্র'তা'রণা করবে না সে। আর মা-ও ঠিক করলেন, মেয়ের জীবন ভে'ঙে হলেও নিজের ইচ্ছাই চাপাবেন।

সময়ের সাথে একসময় ব্ল্যাঞ্চের ভালোবাসার মানুষ মা'রা গেল। তবুও মুক্তি মিললো না তার। বরং মা-ভাই বাইরে সমাজের চোখে ভান করে চলতে লাগলো—মেয়েকে নাকি হারিয়েছে, তাই শোকে কাতর তারা। অথচ সেই একই সময়ে চিলেকোঠার অন্ধকার ঘরে, আলো-বাতাস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ধীরে ধীরে ম'রে যাচ্ছিল ব্ল্যাঞ্চ। ২৫ বছর— হ্যাঁ, টানা ২৫ বছর ধরে শেকলাব'দ্ধ অবস্থায় পড়ে রইলো সে।

এই দীর্ঘ সময়ে চাকর-বাকররা অনেক কিছু জানতো, কিন্তু মনিয়ের পরিবারের প্রভাবের ভ'য়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। চারদিকে হাসি-আনন্দ, অথচ একটি জানালাবদ্ধ ঘরে ক্ষুধা, পচা খাবার আর কীটপতঙ্গের সাথে সংগ্রাম করছিল এক নারী— শুধু ভালোবাসার অ'পরাধে।

অবশেষে, ১৯০১ সালে, ভাগ্য নরম হলো। এক অজ্ঞাতনামা চিঠি গিয়ে পৌঁছালো প্যারিসের এটর্নি জেনারেলের কাছে। সেখানে লেখা—মনিয়ের পরিবার তাদের বাড়িতে বহু বছর ধরে এক নারীকে ব'ন্দি করে রেখেছে।

প্রথমে বিশ্বাস করতে চায়নি কেউ। কারণ পরিবারটি ছিল সমাজে দানশীল আর সম্মানিত। তবে তদন্ত শুরু হলো। সৈন্যরা পুরো বাড়ি তল্লাশি চালিয়েও কিছু পেল না। ফেরার আগে হঠাৎ এক সৈন্যের নাকে এলো এক অদ্ভুত পঁচা গন্ধ। সেই গন্ধ অনুসরণ করে তারা পৌঁছালো চিলেকোঠায়। তালাবদ্ধ একটি দরজা। জানালায় মোটা পর্দা। সন্দেহ হওয়ায় কাচ ভেঙে ভেতরে তাকাতেই গা শিউরে উঠলো সবার।

ভেতরে এক নারীর ক'ঙ্কা'লসার দেহ, শে'কলে বাঁধা। চারপাশে পচা খাবার, কীটপতঙ্গ। ময়লার স্তূপে পড়ে আছে বিছানা। অচেনা, বিকৃত চেহারার দিকে তাকিয়ে হঠাৎ কেউ বলে উঠলো— এ যে ব্ল্যাঞ্চ মনিয়ের!

তৎক্ষণাৎ দরজা ভে'ঙে ভেতরে ঢুকলো সৈন্যরা। অসহায়, কঙ্কালসার ব্ল্যাঞ্চকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হলো হাসপাতালে। তখন তার ওজন ছিল মাত্র ২২ কেজি। শারীরিক কষ্টের চেয়েও ভ'য়াবহ ছিল মানসিক ক্ষ'ত। আলো-বাতাসহীন ২৫ বছরের সেই ন'রকয'ন্ত্রণা মুছে ফেলা অসম্ভব হয়ে উঠলো তার কাছে। তাকে ভর্তি করা হলো মানসিক হাসপাতালে, যেখানে ১৯১৩ সালে মৃ'ত্যুর আগ পর্যন্ত জীবনের শেষদিনগুলো কাটাতে হয় তাকে।

আর ব্ল্যাঞ্চের মা ও ভাই? তাদের গ্রে'প্তার করা হলো। মা জামিনে ছাড়া পেলেও সত্যিটা ফাঁ'স হয়ে গিয়েছিল সবার কাছে। সমাজের মানুষ ক্ষে'পে উঠলো। ব্ল্যাঞ্চ উদ্ধার হওয়ার মাত্র ১৫ দিন পর ক্ষু'ব্ধ জনতা ভিড় জমালো তাদের বাড়ির সামনে। ভয়ে, আত'ঙ্কে সেদিন হার্ট অ্যা'টাকে মা'রা গেল ম্যাডাম মনিয়ের।

অ'হংকার, জে'দ আর সমাজের ভু'য়া সম্মান রক্ষার খেলায় এক মায়ের হাতে ধ্বং'স হয়ে গেলো তার নিজের সন্তানের জীবন। ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে চাওয়াটা অ'পরাধ ছিল না—কিন্তু ব্ল্যাঞ্চ মনিয়েরকে এই অ'পরাধের শাস্তি পেতে হলো টানা ২৫ বছরের অন্ধকার বন্দিদশায়।

~ সংগৃহীত

Address

Akborsha Pahartoli
Mymensingh

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Sharmin Akther posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Sharmin Akther:

Share