MD Jisan

MD Jisan আপনারা গল্প পছন্দ করেন তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় আছেন পেজে লাইক এবং ফলো ছুঁড়ে দেন

08/10/2024

🤣..অশিক্ষিত বন্ধু যখন ইংরেজিতে মেজেজ করে..🤣

বন্ধু:-amar baba ka polas darasa..😢

আমি:-কেন কী করছে যে পুলি’শ ধরছে?😳

বন্ধু:- amar babar gua kala...

আমি:-ওমা তোর বাবার গো’য়া কালা পুলি’শ দেখলো কী করে..?আর গোয়া কালা তো পুলিশ ধরবে কেন..?গোয়া কালা থাকতেই পারে..😐😑

বন্ধু:- are gua kala na...gua kala🤬🤬

আমি:- আরে তুই বাংলাতে লেখ তো gua kala.....😒😒

বন্ধু:-আমার বাবা জোয়া খেলে..😕

আমি:- অহ...🙂😑

10/11/2023

জামাই আমার সারাদিন খাই খাই করে। তার জ্বালায় আমি অতিষ্ঠ। সারাদিন রান্নাঘরে থেকে তার জন্য একের পর এক রান্না করেই যাই। কিন্তু তার পেট ভরে না। খরুচটা এতো পেটুক যে তার জন্য আমার মান সম্মান সব শেষ। কোথাও গেলে যদি কেউ কিছু খেতে দেয় সে চেটেপুটে খেয়ে ফেলবে। এমনকি বিস্কুট দিলেও সব গুলো খেয়ে ফেলবে। ভদ্রতার কাতিরেও একটা প্লেইটে রাখবে না। একদিন আমার এক চাচার বাসায় গেলাম চাচাকে দেখতে। কিছুদিন আগেই চাচার অপারেশন হয়েছে। সাথে করে আমার পেটুক, খরুচটাকে নিয়ে গেছি। কারণ, আমার পাঁচ মাসের একটা বেবি আছে। বেবিটাকে ওও কোলে রাখবে তাই। আমার চাচী আমাদের অনেক রকম খাবারের আইটেম দেয়। সাথে বিস্কুটও ছিল। আমি একটা বিস্কুটও খাইনি। আমার পেটুক জামাই সব খাবার একাই সাফ করে ফেলে। লাস্টে আমি ফিসফিস করে বললাম,,,,,,
- এই যে শোন, দু একটা বিস্কুট প্লেইটে রেখে দিও। নাহলে অভদ্র দেখায়। আমার কথা শোনে পেটুক দাঁত খেলিয়ে হেসে জোরে বলে,,,,,,
- আরে কে কি মনে করবে? আমরা আমরাই তো। পেটে যদি আটে তাহলে প্লেইটে রেখে মনটা আকুমপাকুম করা কিসের ভদ্রতা? সিজানের কথা শোনে চাচী হা করে তাকিয়ে তাকে। সিজান চাচীর দিকে তাকিয়ে আবার বলে,,,,,,
- আন্টি আমি যদি সব গুলো বিস্কুট খেয়ে ফেলি তাহলে আপনি কি কিছু মনে করবেন??? চাচী বিস্মিত হয়ে একবার আমার মুখের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলেন,,,,
- না না। তুমি সব গুলো খাও। রাখতে হবে না। আমি কিছু মনে করবো না। লাগলে বলো আরো কয়েকটা এনে দেই। সিজান হেসে বলে,,,,
- দেন সমস্যা নাই। আমি খেতে পারি। খাওয়ার মধ্যে আমার কোনো সরম নাই। কথাটা বলে কি বেরসিক ভাবে হাসছে। আমি তার এমন আচরণে কাঁদবো না অজ্ঞান হয়ে যাবো বুঝতে পারছি না। চাচাকে দেখে বললাম,,,,,
- চাচী আমরা চলে যাই। অন্যদিন আবার আসবো। চাচী বললেন,,,,,
- মাত্রই তো আসলি। বস। দুপুরবেলা খেয়া যাবি। আমি বললাম,,,,,
- না। আজকে সময় হবে না। অন্যদিন এলে খেয়ে যাবো। আমার কথা শেষ হওয়ার আগে আমার পেটুক জামাই বলে,,,,,,
- বাসায় কি কাজ? না আন্টি আমরা প্রি আছি। আপনি রান্না করুণ আমরা খেয়েই যাবো। আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলে,,,,
- আন্টি এতো করে বলছে যখন খেয়েই যাই কি বলো? না খেয়ে গেলে তো কেমন দেখায়। আল্লাহ আমি কোন দুনিয়ায় বসবাস করি? এই পেটুকের তো কোন মান সম্মান রাখলো না আমার। সেদিন চাচীর বাসা থেকে খেয়ে একেবারে সন্ধ্যায় বাসায় আসি। পেটুক সারা রাস্তায় বটবট করেছে। রাগে আমি ঝিম ধরে ছিলাম। আমার মাথার চুল কাড়াকাড়া হয়েছিল। যদি কোনো লাঠি পেতাম তার হাফ টাক মাথায় টাস করে বসিয়ে দিতাম। কিন্তু আশেপাশে কিছু পেলাম না। তাই কোনো রকম নিজের রাগ কন্ট্রোল করলাম।

তার দুদিন পর বাসায় মেহমান আসবে। ননদীকে দেখতে। তাই বাসায় দোমধারাকা রান্নার আয়োজন চলছে। এতো এতো রান্নার আয়োজন দেখে সেদিন আমার পেটুক জামাই আর অফিস গেলো না। অফিস টাইমে দেখি সে দিব্বি ড্রয়িংরুমে বসে আছে। আমি গিয়ে বললাম,,,,,,
- এখানে এমন হাবলার মতো বসে আছো কেন? অফিস যাবে না?? সে বেক্কলের মতো হাসি দিয়ে বলে,,,,
- আজ বাসায় এতো আয়োজন। অফিস গেলে মনটা কেমন কেমন করবে। তাই আর গেলাম না। ভালো করিনি বলো? আমি কিছুক্ষণ থম ধরে থেকে বললাম,,,,,
- হো ভালোই করসো। তুমি বাসায় না থাকলে আমার মাথাটা চিবিয়ে খাবে কে? কথা বলে আমি আবার রান্নাঘরে চলে গেলাম। বিকালের দিকে মেহমান আসলো। আমি সবাইকে কয়েকরকম মিষ্টি, ফল, পিঠা, শরবত দিলাম। আমার পেটুকটাও তাদের সাথে বসে আছে। কিছুক্ষণ পর আমি গিয়ে দেখলাম তারা সবাই নিজের মতো করেই বসে আছে। কেউ কিছু খাচ্ছে না। আমি বললাম,,,,
- কি হলো। আপনারা তো কিছুই খাচ্ছেন না। নিন মিষ্টি নিন। আমার সাথে তাল মিলিয়ে আমার পেটুক বলে,,,,
- আমিও কখন থেকে তাই বলছি। আগে খাওয়া পরে কথা। নিন নিন। খান। মেহমানরা নেওয়ার আগেই আমার পেটুক গপাগপ খাওয়া শুরু করে দেয়। সবাই লোভাতুর ভাবে তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে কয়েক সেকেন্ডে নিজের সব গুলো মিষ্টি খেয়ে পেলে। তারপর আমার দিকে প্লেইটটা এগিয়ে দিয়ে বলে,,,
- তানজিনা, নাও আমাকে আরো কয়েকটা মিষ্টি দাওতো দেখি। মিষ্টি গুলো খুব মজার। হায় আল্লাহ! তাকে দেখে মনে হচ্ছে এই জন্মে আর খায়নি। আমি জোরপূর্বক ঠোঁটে হাসি এনে প্লেইটটা নিয়ে তাকে আরো চারটা মিষ্টি দিলাম। সেগুলোও খেলো। একটা বড় বোলএ তরমুজ কেটে দিলাম সবাইকে। কিন্তু সেগুলো আমার পেটুক জামাই একাই খেয়ে ফেলে। তার এমন রাক্ষসের মতো খাওয়া দেখে আমি নিজের কপাল চাপড়ালাম। আল্লাহ, এই কোন রাক্ষস আমার কপালে দিলে। একে নিয়ে কি করবো আমি? খাওয়া ছাড়া কিছুই বুঝলো না জীবনে।

আজ শুক্রবার। তার অফিস বন্ধ সকাল থেকে কয়েক আইটেমের খাবার খাওয়াইছি। এখনও খাই খাই করছে। তার জন্য এখন আমি আবার রান্না করছি। হঠাৎ রান্নাঘর থেকে বাবুর কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কিন্তু আমি চুলায় মাছ ভাজি বসিয়েছি। এখন এগুলো রেখে গেলে পুরে ছারকার হয়ে যাবে। তাই আমি সিজানকে ডাক দিয়ে বললাম,,,,,
- কিগো, তুমি কি বাসায় আছো?
- আছি।
- বাবু কাঁদছে শোনছো না?
- বাবুতো খাওয়ার জন্য কাঁদছে। বাপকা বেটা। আমার মতই হয়েছে পুরা।
- দেখো ফিটারে দুধ আছে। বাবুকে একটু খাওয়াও। আমার দুটো হাতেই বন্ধ। আমার কথার উত্তরে সে বলে,,,,
- আচ্ছা খাওয়াচ্ছি। কিন্তু এতক্ষণ হলো এখনও বাবুর কান্না থামছে না। বাধ্য হয়ে আমি চুলা বন্ধ করে রুমে গিয়ে যা দেখলাম। আল্লাহ এটাই মনে হয় এজীবনে দেখার বাকি ছিল। পেটুকের বাচ্চা পেটুক বাবুকে কোলে নিয়ে ফিটারটা নিজের মুখে দিয়ে বসে আছে। এই দৃশ্যটা আমার শরীরে সহ্য হলো না। আমি রাগে লাল হয়ে গিয়ে দাঁড়ালাম তার সামনে। আমার চোখ দিয়ে যেন আগুন বের হচ্ছে। আমার এমন রুপ দেখে সিজান ফিটারটা মুখ থেকে বের করে বলে,,,,,
- আসলে বাবু খাচ্ছিল না।
- বাবু খাচ্ছিল না মানে কি? তুমি কি বাবুকে দিসো খাওয়ার জন্য? নিজেই তো খাওয়া শুরু করেছো। আমি জিসানের কোল থেকে বাবুকে নিয়ে নেই। সাথে ওর হাত থেকে ফিটারটাও। জিসান উঠে দাঁড়িয়ে মুখটা অসহায় করে বলে,,,,,
- বাবু খাচ্ছে না বলে ভাবলাম দেখি কি কম হয়েছে। তাই,,,,,আমি পেটুকটাকে থামিয়ে দিয়ে দমকে বললাম,,,,
- চুপ করো। তোমার মতো টাকলা পেটুক, বুড়িওয়ালা পেটুক, আর কি যেন? এখন মনে পড়ছে না। মনে পড়লে বলবো আমার জীবনেও একটা দেখি নি। টাকলা পেটুক অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি আবার বললাম,,,,,
- তোমাকে সারাদিন কম খাওয়াই? এট লাস্ট তুমি,,,,??? আমি আর নিতে পারছি না। তুমি এক্ষণি বাসা থেকে বের হও। নাহলে আমি তোমার মাথা ফাটিয়ে দিবো। আমার কথা শোনে সে সুন্দর করে বলে,,,,,
- আচ্ছা তাহলে আমি বাইরে থেকে একটু ঘুরেই আসি। একটা দুধের প্যাকেট নিয়ে আসি। বাবুর দুধটা মজার ছিল। এখন থেকে নাহয় আমিও বায়োমিল্ক খাবো। তোমার জন্যও কি একটা নিয়ে আসবো? তার কথা শুনে আমার অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা। মাথাটা ভনভন করছে। ছাদটা মনে হয় উল্টে যাচ্ছে। আমি মনে মনে বল্লাম,, আল্লাহ কেউ আমারে এট্টু ধরো।

#পেটুক_বর #রম্যগল্প

সংগৃহীত

10/11/2023

এপার_ওপার_
পর্ব--২৬
লেখনীতে: মি. হাসিব - Mr Hasib

---অভ্র মালাটা এখানে পেয়েছি! রিয়াই চুরি করেছিলো?

--চু'রির কথা শুনে তো রিয়া রেগে আগুন হয়ে যায়।

অভ্র : কোথায় পেলে মালাটা প্রিয়া তুমি ।

প্রিয়া : এই তো রিয়ার বালিশের ভিতর একটি খোল আছে সেই খানে।

অভ্র : এই সব কি রিয়া!

রিয়া : অভ্র বিশ্বাস করো আমি কিচ্ছুটি করিনাই।

অভ্র : এক দম কথা বন্ধ করো। মিথ্যা কখনো লুকানো যায়না বুজছো।

রিয়া : কি মনে হয় আমি চোর। এই সব আমি চুরি করেছি।

অভ্র : সেটাই তো দেখলাম?

রিয়া : কি দেখলে হ‍্যা।

অভ্র : তুমি যদি চুরি না করো তবে এই সব তোমার রুমে থেকে বের হলো কেমন করে শুনি।

রিয়া : আমি জানি না।

--এমন সময় প্রিয়া বলে উঠে?

প্রিয়া : চোরের মুখে আবার রাম রাম! চুরি ও করে আবার বড় বড় কথাও বলে।

রিয়া : এই এক দম চুপ কর। আমি এতোটা ছোট লোক না যা তোর মালা চুরি করবো।

প্রিয়া : দেখছো অভ্র! কেমন ওর ব‍্যবহার।

রিয়া : অভ্র কি দেখবে শুনি! আমার বুজার শেষ তুই এই সব ফন্দি করে রেখেছিস।

প্রিয়া : চুরি করে আবার মিথ্যা বলো লজ্জা করেনা তোমার ।

অভ্র : এই চুপ করো। আর রিয়া বলো কেনো এমন কাজটি করলে।

রিয়া : বিশ্বাস করো অভ্র!

--সাহেব একটি কথা বলি? কথাটি। হলো এই রিয়া ম‍্যডাম যতো দিন থেকে বাসায় এসেছে। ততো দিন থেকে কিছু না কিছু সমস্যা লেগেই আছে আমাদের। আপনার কি এটা লক্ষ করেছেন ( কাজের বুয়া )

প্রিয়া : অভ্র কাজের বুয়া কিন্তু ঠিক কথাটি বলেছে।

--এমন সময় আবার অভ্রের মা চলে সেখানে।

মা : কতো করে বলেছি এই মেয়েকে মেনে নিস না। এখন তো বুজলি সতিনের জ্বালা কেমন।

প্রিয়া : মা সব দোশ আমার।

মা : হ‍্যা তোরেই তো দোশ। তুই না বললে অভ্র মেনেই নিতো না।

প্রিয়া : আমি ভেবেছিলাম সে অনেক ভালো । বোনের মতো থাকবো। কিন্তু কে জানে ওর মনে এতো কাহিনি।

মা : হয়েছে আর বলা লাগবে না। অভ্র যতো তারা তারি পারিশ এই মেয়েটাকে বিদায় কর বাড়ি থেকে।

অভ্র : ছি.... রিয়া তুমি এতো দিন থেকে বাসায় আছো। কিন্তু বাসার একটি মানুষ মনে ও জায়গা করে নিতো পারলে না। আমার ঘৃনা হচ্ছে তোমার প্রতি।

রিয়া : আমার বুজা শেষ!

অভ্র : কি বুজা শেষ হুম?

রিয়া : তোমারা সবাই চাইতেছো আমি এই বাসা থেকে চলে যাই তাই না।

অভ্র : তোমার মতো সবার চিন্তা ভাবনা নাকি। তুমি খারাপ তাই তোমার চিন্তা ও খারাপ।

রিয়া : ওহ। ঠিকেই বলছো এখন তো আমি খারাপ।

অভ্র : হুম সেটাই।

রিয়া : তুমি তো ভালো ! কোই এতো দিন হলো একটি দিন ও তো আমার খোজ নিলে না নিজে থেকে। একটি মেয়ে স্বামী কাছে কি চায়। একটু ভালোবাসা চায়। সেটা কি দিয়েছো। তোমার বড় বউ প্রিয়ার সাথেই তো থাকো ওর সাথেই কতো কি করো। কোই আমার কাছে ত আসোনা। কেমন আছি কি খাচ্ছি সেটাও তো জিঙ্গাসা করো না। তো কেমন স্বামী তুমি একটু ভেবে দেখছো।

--এই কথা শুনে অভ্রের মা বলে উঠে।

মা : এই খারাপ মহিলা লজ্জা করেনা! নিজের স্বামী কে এমন মিথ্যা অপোবাদ দিতে।

রিয়া : হাহহা লজ্জা করবে কেনো শুনি। ও নিজেই ভালো জানে আমার প্রতি ও অবিছার করতেছে।

অভ্র : এই এক দম চুপ থাক। মায়ের মুখে মুখে উত্তর দিস।

রিয়া : উচিৎ কথা বললেই দোশ?

--এই কথাটি রিয়ার মুখ থেকে পুরো পুরি বের হতে না হতেই অভ্র ঠাসস ঠাসস করে ২ টা থাপ্পড় বসে দেয়।

অভ্র : ঠাসসস! ঠাসসস! তোকে বলছি না মায়ের মুখের উপরে বড় কথা বলবি না।

রিয়া : তোমার কাছে এখন এটাই আশা করি আর অন্য কিছু না।

অভ্র : প্রিয়া চলো রুমে। এই চোর এখানেই এমন থাক। কেউ এই চোরের খোজ খবর নিবে না। খাবার ও দিবে না।

--এই বলে সবাই চলে যায় রিয়ার রুমে থেকে। ঠিক তখন রিয়ার সাকিবের কথা মনে পরে। কতোই না শুখের ছিলো তাদের জীবনটা। একজন না খাইলে আরেকজন খাইতো না। একটু রাত করে আসলেই সাকিব রাগ ভাঙ্গাতো। যেটাই চাইতো সেটাই দিতো। ভূল করলে ও কখনো মারেনি। সুন্দর ভাবে বুজিয়েছে। এই কথা গুলো ভেবে ভেবে রিয়া কান্না করতে থাকে।

--অন‍্য দিকে প্রিয়া অভ্র কাজের বুয়া এবং অভ্রের মা বাহিরে এসে প্লান করতে থাকে।

অভ্র : এই এখন কি হবে?

প্রিয়া : এখনি তো শুরু হলো। এখনো অনেক কাজ বাকি আছে।

অভ্র : যে কোন প্রকারেই হোক ওর পেটের সন্তান টি মা"রতেই হবে।

প্রিয়া : সেটা অবশ্যই ? কারন ও বেছে থাকলেই সমস্যা। সাথে এই রিয়া কে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে হবে।

--আপা মনি এখন আমার কি কাজ একটু বলেন। আপনারা যা বলবেন আমি তাই করবো ( কাজের বুয়া

প্রিয়া : শোন তুই ওরে ভালো খাবার দিবি না। এই লবন ভাত। আবার কখনো সেই লবন ও নেই। এমন সব খাইতে দিবি। যাতে এখানে খাবার না পেয়ে মা"রা যায়।

--ঠিক আছে আপা?

প্রিয়া : কাজ কর এখন মন দিয়ে। আর যদি এই সব কথা কখনো বাহিরে যায়। আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।

--কি যে বলেন। যেই পাতে খাই সেই পাতটি আমার আমি ময়লা করবো নাকি। বিশ্বাস রাখেন আমার উপরে। ( কাজের বুয়া )

প্রিয়া : গুড?

অভ্র : ওরে এখন অনেক অবহেলা করতে হবে।

প্রিয়া : শোন তুমি একটু ভূল পাইলেই ওরে মারবে। খারন আমি চাই ও এই সব সজ‍্য করতে না পেরে যেনো আ''ত্মহ'ত্যা করে।

অভ্র : হুম চেষ্টা করবো আমি।

--এই ভেবে দুপুর গরিয়ে রাত হলো। আজ কেউ রিয়ার জন্যে খাবার নিয়ে আসলো না। এই দিকে প্রচুর খিদে লেগেছে রিয়ার। তো খিদের জ্বালা সজ‍্য করতে না পেরে রিয়া নিজেই রান্না ঘরে যায় খাওয়ার জন্যে।

--রান্না ঘরে গিয়ে দেখে কাজের বুয়া কাজ করতেছে।

রিয়া : কিরে তুই আমার জন্যে খাবার নিয়ে গেলিনা যে?

--আপনার খাবার নিয়ে গেলেই হবে না। আমার অনেক কাজ আছে বুজছেন।

রিয়া : আশ্চর্য কতো সময় লাগতো শুনি।

--যেই টুকুই লাগুক আমার সময় নেই। এখন থেকে নিজে নিয়ে খাবেন।

রিয়া : হয়েছে এখন কথা বন্ধ করে আমার জন্যে ভাত বেরে দে?

--কেনো আপনার হাত নেই।

রিয়া : এই তুই কাজের মেয়ে এতো কথা বলিশ কেনো হুম।

--সেটা আপনাকে বলতে যাবো কেনো।

রিয়া : তুই কি জানিস আমি চাইলে তোর কাজ এই বাড়িতে আর থাকবে না।

--হাহহাহা হাহহাহ আপনি কে যে আমার কাজ রাখবেন না।

রিয়া : কে মানে। এই বাড়ির বউ আমি।

--এই স্বপ্ন দেখা বাদ দিন? কতো দিন বা বাছবেন। যে এই বাড়ির বউ হবেন।

--বুয়ার মুখে এমন কথা শুনে! রিয়া এখটু অবাক হয়। কিন্তু বুয়াকে সেটা বুজতে দেয়না। তো রিয়া ও আর কোন কথা না বাড়িয়ে ভাত নেয়। কিন্তু যখনি তরকারি নিতে যাবে ঠিক সেই সময় দেখে কোন তরকারি নেই।

রিয়া : এই তরকারি কোথায় ।

--নাই শেষ হয়েছে!

রিয়া : শেষ হয়েছে মানে আমার জন্যে রাখবি না তুই।

--মনে নাই!

রিয়া : এখন আমি খাবো কি দিয়ে।

--এই দিকে আসুন! আমি লবন দিচ্ছি ওই গুলা দিয়ে খান।

রিয়া : এ তুই চুপ করবি। তোর দেখি অনেক শাহস বেরে গিয়েছে। মুখের উপরে কথা বলিশ।

--কথা বলতে পাই বলেই বলি।

--রিয়ার অতিরিক্ত খিদে লাগার কারনে। কোন কথা না বাড়িয়ে একটু লবন আর ভাত সেখানেই নিয়ে খাইতে বসে। আর এটা দেখে কাজের বুয়া হাসতে থাকে।

[ অন্য দিকে সাকিব একটি জব পেয়েছে। কিন্তু মিমতাকে এখনো বলেনাই। সাইর প্রাইজ দিবে বলে। ]

সাকিব : মিমতা এই মিমতা কোথায় তুমি ।

মিমতা : এ স্বামী আমি রান্না ঘরে রান্না করতেছি।

--সাকিব আর কিছু না বলে সোজা রান্না ঘরে গিয়ে পিছন থেকে মিমতাকে জরিয়ে ধরে?

মিমতা : এই কি হলো!

সাকিব : কি আর হবে আমার বউকে জরিয়ে ধরেছি।

মিমতা : ছারো রান্না করতেছি।

সাকিব : আচ্ছা বউ মিতা কোথায় ?

মিমতা : ও স্কুলে গিয়েছে। আর এক ঘন্টা পরেই চলে আসবে।

সাকিব : তোমাকে একটি সারপ্রাই দিতে চাই।

মিমতা : কি সারপ্রাইজ স্বামী।

সাকিব : তার আগে তোমার ওই ঠোটে আগে আমাকে কিস করতে দাও।

মিমতা : না আগে বলো?

সাকিব : ঠিক আছে আমি ও বলবো না। থাকুক সারপ্রাইজ এমনি।

মিমতা : আচ্ছা ঠিক আছে বাবা কিস করো। খুশি এখন।

সাকিব : হুম অনেক।

--তো এর পরে সাকিব মিমতাকে নিজের দিকে করে একটু কাছে টেনে নিয়ে ঠোঁট দুটি এক করে দিয়ে। কিস করতে থাকে।

--প্রায় পাচ মিনিট কিস করার পরে মিমতা কিস করা বন্ধ করে সাকিব কে আবার জিঙ্গাসা করে।

মিমতা : প্লিজ এখন বলো।

সাকিব : জান আমার চাকরি হয়েছে। একটি কোম্পানিতে বেতন ২ লক্ষ টাকা।

মিমতা : কি বলো এ সব। এতো টাকা বেতন কেমনে কি হলো।

সাকিব : ওরা একজন ম‍্যানজার নিবে তাই। সবাকে পরিক্ষা করতেছিলো ভাইবার সময় । তখন সবাই ফেল করে ওদের পরিক্ষায়। কিন্তু আমি পাস করে যাই। তাই ওরা আমার সততোটা ও বুদ্ধিদেখে এই চাকরিটা দিয়েছে।

মিমতা : আলহামদুলিল্লাহ্ ! আল্লাহ্ তোমার মনের আশা পুরন করেছে।

সাকিব : হুম বউ আমার। আমাদের কষ্ট এখন কমে যাবে ইনশাআল্লাহ ।

মিমতা : এই স্বামী তুমি এখন ফ্রেশ হয়ে নাও আমি খাবার রেডি করতেছি।

সাকিব : না তুমি রান্না করো আমি তোমাকে পিছনে থেকে জরিয়ে ধরেই থাকবো।

মিমতা : পাগল টা আমার।

সাকিব : হুম জান তোমার পাগল হয়ে সারা জীবন কাটাতে চাই আমি।

মিমতা : ঠিক আছে তোমার যা মন চায় তাই করো। আমি বাধা দিবো না।

--ঠিক সেই সময় সাকিব লক্ষ করে মিমতা অনেক ঘেমে গিয়েছে রান্না করতে করতে। আর এই অবস্থায় মিমতাকে ভিষন হ"ট লাগতেছিলো।

সাকিব : এই তুমি তো ঘেমে গিয়েছো।

মিমতা : হুম একটু গিয়েছি।

সাকিব : তোমাকে এই অবস্থায় দেখে নিজেকে আর কন্টল করতে পারতেছি না। কি করবো।

মিমতা : এই এই না এক দম কিছু করবা না এখন।

--কে শোনে কার কথা। সাকিব মিমতাকে জরিয়ে ধরে সেই ঘাম আবরন জায়গা গুলাতে নিজের কোমল ঠোট দিয়ে চু"মু একে দিচ্ছে। আর সেটা যেনো মিমতা আপন মনে উঠভোক করতেছে। এর থেকে যেনো আর শুখ / ভালোবাসা কোথাও নেই।

সাকিব : জানো তোমার ওই শ‍্যাম বরন দেহ! মাথার কালো সেই বেনি করা চুল, আবার হরিন বরন চোখে হালকা কাজন দিয়ে যখন আমার সামনে আসো। তখন নিজেকে মন হয় আমি যেনো একটি ভালোবাসার মাধ‍্যম পেয়েছি। যাকে সারা জীবন ভালোবাসলে ও ভালোবাসা ফুরাবে না?

মিমতা : ওলে ওলে আমার কবিটা?

সাকিব : সত্যি গো আমার প্রিতমা? তুমি আমার নেশা? তুমি আমার স্বপ্ন? তুমি আমার ভালোবাসা?

মিমতা : ওই হয়েছে এখন। চুপ চাপ আমাকে ছেরে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।

--তো এর পরে সাকিব ফ্রেশ হয়ে বসে আছে। কখন মিমতা খাবার নিয়ে আসবে।

--ঠিক তার ৫ মিনিট পরে রান্না ঘরে থেকে মিমতার চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পায় সাকিব। তো এমন জোরে চিৎকারের আওয়াজ শুনে সাকিব দৌরে রান্না ঘরে চলে যায়।

--রান্না ঘরে গিয়ে দেখে যে____

পরবর্তী পর্বের জন্যে অপেক্ষায় করুন। ধন্যবাদ সবাই কে

09/11/2023

গল্প- #এম্বুলেন্স_রহস্য ( পর্ব-০৮)

লেখক- #রিয়াজ_রাজ
--------------------------------
কিছুক্ষণ হাসার পর রিয়াজ মাতাল স্বরে বলে," এম্বুলেন্সে তোর বান্ধুবী ছাড়া কেও নাই গাধা। দাঁড়া, তোর বান্ধুবী মরার পর নড়েছে কিনা দেখে আসি"। কথাটা বলে হাসতে হাসতে রিয়াজ এম্বুলেন্স এর পিছনে যায়। আর ঢাকনা খুলে তাকাতেই দেখে, মরা লাশটা সিটে বসে আছে। তাও রিয়াজের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে।

রিয়াজও মেয়েটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। রিয়াজের কোনো নাড়াচাড়া না দেখে,হেল্পার আর লোকটা রিয়াজের কাছে আসে। ওরা এসে এমন দৃশ্য দেখে জোরে এক চিৎকার মেরে উঠলো। রিয়াজ ওদের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে,ততক্ষনে ওরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। অন্ধকারে কে কোন দিকে পালিয়েছে। সেটির কোনো ইয়ত্তা নেই। রিয়াজ ওদের দৌড় দেখে ধীর স্বরে বলে," মদ খেয়ে আমি নাহয় ভুলভাল দেখি। ওরাও দেখলো নাকি"। কিছুক্ষণ মাথা চুলকানোর পর আর কিছু না ভেবে,এম্বুলেন্স এর দরজা বন্ধ করে দেয় রিয়াজ। এরপর সামনে এসে এম্বুলেন্স এ উঠে বসে। পকেট থেকে ফোন বের করে লোকেশন দেখে। আর এম্বুলেন্স স্টার্ট করে সেই স্থান ত্যাগ করলো।

হাতে সিগারেট , চারপাশে ঘনকালো অন্ধকার। এম্বুলেন্স এর লাইটের আলোয় রিয়াজ এগিয়ে যাচ্ছে। গাড়ি চলন্ত অবস্থায় হটাৎ রিয়াজের ফোনে কল আসলো। রিয়াজ ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে,অচেনা নাম্বার। ফোন রিসিভ করে রিয়াজ বলে," হ্যালো কে?"। রিয়াজের জবাবে ওপাশ থেকে হেল্পার বলে," আরে ভাই আপনি পাগল নাকি। ভুত নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন"। হেল্পারের কণ্ঠস্বর অনেক ভয়ার্ত শুনাচ্ছে। রিয়াজ স্বাভাবিক ভাবে হেল্পারকে বলে, "। মদ খেয়ে ভুলভাল দেখেছিলা। ওখানে কিছুই নেই। মৃত লাশ বসতে পারে নাকি "। রিয়াজের কথা শুনে হেল্পার আরো ভয়ার্ত স্বরে বলে," ভাই, আপনি কিভাবে বুঝলেন আমরা লাশটাকে বসা অবস্থায় দেখেছি? তারমানে আপনিও দেখেছেন। ভুল একজন দেখবে,আমরা ৩ জনই দেখেছি লাশ বসে আছে। আপনি বিপদে আছেন ভাই"। ওর কথা শুনে রিয়াজ কলটা কেটে দেয়। এরপর আবার মনোযোগ বসায় এম্বুলেন্স চালানোতে। হেল্পারের সাথে কথা বলতে বলতে হাতের সিগারেটটা প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। তাই রিয়াজ সিগারেট ফেলে, আবার একটা নতুন সিগারেট ধরায়। কিছু দূর যেতে না যেতেই, আবার হেল্পারের কল। রিয়াজ ফোনটা রিসিভ করে বলল," আবার কি হয়েছে "। রিয়াজের এমন সাহসিকতা দেখে হেল্পার তখন বলল, " ভাই আমাদের যেখানে নামিয়ে দিয়েছেন, তার ঠিক পিছনে একটা চায়ের দোকান আছে। আমি আর এই ভাইটা সেই দোকানে আছি। বড় ভাই সকালে গাড়িতে উঠে চলে যাবে। আপনি লাশ নামিয়ে দিয়ে আমাকে রিসিভ করে নিয়েন "। হেল্পার এর পুরো কথা শুনে রিয়াজ আবার কোন জবাব না দিয়ে কলটা কেটে দিল। এরপর মনোযোগ বসায় এম্বুলেন্স চালানোতে।

ঘটনার ঠিক তিন ঘন্টা বাদে রিয়াজ ফেনীতে প্রবেশ করলো। এরপর লোকেশন চেক করতে করতে রিয়াজ ফেনী চরচান্দিয়া এলাকায় প্রবেশ করে। এখানে হাসেম মাস্টারের বাড়ি কোনটা, তা ম্যাপ থেকে চেক করে রওনা করতে থাকে রিয়াজ। কিছুক্ষণ পর রিয়াজ ম্যাপ অনুযায়ী হাসেম মাস্টারের বাড়িতে উপস্থিত হয়। এম্বুলেন্স এর আওয়াজ শুনে বাড়ির সবাই অলরেডি গেটের সামনে চলে আসে। রিয়াজ মানুষজন দেখে আরেকটু নিশ্চিত হয় যে, সে সঠিক স্থানে চলে এসেছে। সবার সামনে গিয়ে রিয়াজ এম্বুলেন্স দাঁড় করায়। এরপর এম্বুলেন্স থেকে নেমে, লাশের আত্মীয়স্বজনদের উদ্দেশ্যে বলে, " কয়েকজন আমার সাথে আসুন। লাশ নামাতে হবে "। রিয়াজের কথা শুনে লাশের আত্মীয়-স্বজনের মুখে একটা উত্তেজিত ভাব দেখা যায়। সাথে হেল্পার নেই, আর নেই লাশের চাচাতো ভাই। লাশ নিয়ে এম্বুলেন্স ড্রাইভার একা কেন এলো। এই প্রশ্নটা সবার মাথায় তখন ঘুরপাক খাচ্ছিল। তাদের বিস্মিত মার্কা চেহারা দেখে রিয়াজ নিজেই তাদেরকে বলে উঠলো, " সাথে যে দুইজন এসেছে, তারা কোন এক কাজে রাস্তায় নেমে গেছে। তাই লাশ আমার একা আনতে হয়েছে। আপনাদের যে লোক এসেছে, তিনিও সকালে নাকি আসবেন"। রিয়াজের কথাটা কারো কাছে ক্লিয়ার হলেও, অনেকের কাছে ভিন্ন কিছু মনে হতে থাকে।যেনো তারা সব জানে। রিয়াজের মিথ্যেটাও তারা যেনো বুঝে গেছে। কিন্তু রিয়াজ কাউকে কোন প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়ে, নিজেই এম্বুলেন্সের ঢাকনা খুলতে থাকে। রিয়াজের এমন আচরণ দেখে কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন এসে রিয়াজের সাথে হাত লাগায়। রিয়াজ এম্বুলেন্সের ঢাকনা খোলার পর দেখে, লাশ ঠিকই শুয়ে আছে। আর লাশের বক্সটাও খোলা নেই। রিয়াজ গিয়ে লাশের বক্সটা ধরে এবং সাথে লাশের আত্মীয়স্বজনরা এসে, রিয়াজের সাথে লাশের বক্স এম্বুলেন্স থেকে বের করে। এরপর রিয়াজ বাক্সের ঢাকনা খুলতেই, সবাই লাশটাকে বের করে তাদের উঠোনে নেয়। লাশ নামিয়ে দিয়ে রিয়াজ আবার এম্বুলেন্স এর কাছে আসে।গাড়ির ঢাকনাটা আটকে দিয়ে, নিজে ড্রাইভিং সিটে বসে। এরপর সবাইকে বিদায় দিয়ে, বাড়িটা থেকে বের হয়ে চলে আসলো।

কোনোদিকে কোনো নজর নেই,আর নেই কারো অবস্থান। রাতটা এখন গভীর। ফেনীতে এসে রিয়াজ আবার কুমিল্লার পথটায় রওনা করে।প্রতিবারের মতো সিগারেট জ্বালিয়ে ড্রাইভ করছে। কিন্তু রিয়াজ অনুভব করতে পারছে,এম্বুলেন্স এর পিছনে কেও রয়েছে। রিয়াজ কোনো দিকে নজর না দিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর চারপাশে ফজরের আযান শুরু হয়। আযানের ধ্বনি রিয়াজের কান অব্দি আসতেই, রিয়াজ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। কপাল থেকে ঝড়ে পড়া ঘাম এইবার শুকাতে শুরু করলো। চারপাশে ধীরে ধীরে আলো ছড়াচ্ছে। সূর্য উঁকি দিবে কিছুক্ষণ পর। ভোরের এই মিষ্টি বাতাস রিয়াজের চুল স্পর্শ করছে। কিন্তু রিয়াজের মগজে ভাবনা চলে অন্য কিছু।

সকাল- ০৬:১২ মিনিট...
রিয়াজ সেই দোকানের কাছে আসে। হেল্পার দোকানের সীটে ঘুমাচ্ছে। রাস্তার পাশে এম্বুলেন্স দাড় করিয়ে রিয়াজ নেমে পড়ে। এরপর দোকানে গিয়ে দেখে, দোকানি বসে বসে কোরআন তেলোয়াত করছে। রিয়াজকে উপস্থিত হতে দেখে দোকানি একটু স্থীর হয়। রিয়াজ দোকানির উদ্দেশ্যে বলে," চা হবে?"। দোকানি মুচকি হেসে উত্তর দিলো," জ্বী ভাই। বসুন"। রিয়াজ সীটে না বসে হেল্পারকে ডাকতে শুরু করলো। হেল্পারের পরিচিত দেখে দোকানি রিয়াজকে বলে," ভোরে এসে দেখি উনি সীটে ঘুমাচ্ছে। কয়েকবার ডেকেছি আমি। উঠেনা"। রিয়াজ দোকানির কথা শুনে কোনো জবাব দেয়নি। হেল্পারকে ধাক্কা কয়টা মারতেই,সে লাফিয়ে উঠে। রিয়াজ এইবার গিয়ে সিটে বসলো। এদিকে হেল্পার রিয়াজকে দেখতে পেয়ে বলতে লাগলো," আপনি আসছেন তাহলে"। রিয়াজ মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক ইঙ্গিত দিলো। হেল্পার আবার বলা শুরু করে," লাশের সাথে আসা ভাইটা আমাকে একা রেখে চলে গেছে"। হেল্পারের কথা শুনে রিয়াজ বলে," এতো রাতে গাড়ি কোথায় পেয়েছে সে"। হেল্পার রিয়াজের প্রশ্নে আবার বলে," গ্যাস নেওয়ার সিএনজিতে গেছে। এক ড্রাইভার ফেনী যাচ্ছিলো গ্যাস আনতে। উনাকে ৫০০ টাকা দিয়ে রিজার্ভ করেছে"। হেল্পার তার কথা শেষ করতেই দোকানি চা নিয়ে এসেছে। রিয়াজ আর হেল্পার চায়ের কাপ হাতে নিলো।

চা খেয়ে বিল পরিশোধ করে নেয় রিয়াজ। এরপর হেল্পারকে নিয়ে রওনা করে ঢাকাতে। যদিও মাঝপথে হেল্পার অনেক কথা জিজ্ঞেস করেছিলো। রিয়াজ তার সব কথাকে এড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ কথা ঘুরিয়ে দেয়। প্রায় ২ ঘন্টা ৪৮ মিনিট বাদে রিয়াজ এম্বুলেন্স নিয়ে হাজির হয় হসপিটাল। বাহিরে গাড়ি দাড় করিয়ে রিয়াজ হেল্পারকে বলল," বসকে জানিয়ে আসো। আমি চায়ের দোকানে আছি"। কথাটা বলে রিয়াজ গাড়ি থেকে নামে। আর সোজা চলে যায় চায়ের দোকানে। হেল্পার গাড়ি থেকে নেমে ঢুকে যায় গেটে। রিয়াজ চায়ের দোকানে যেয়ে আগে একটা সিগারেট ধরায়। এরপর চায়ের অর্ডার করে।

কিছুক্ষণ বাদে হসপিটাল থেকে বের হয় কালাম সাহেব। গেট থেকে বেরিয়ে সোজা উপস্থিত হয় রিয়াজের কাছে। রিয়াজ কালাম সাহেবকে দেখে একটু মুচকি হাসি দেয়,আর দাঁড়িয়ে পড়ে। কালাম সাহেব কাছে আসতেই রিয়াজ বলল," কি অবস্থা ভাই। লাশ তো নামিয়ে এসেছি"। রিয়াজ কথাটা বলার পর,হাসিটা আর রাখতে পারেনি। কালাম সাহেবকে দেখে বুঝা যাচ্ছে উনি রাগম্বিত। রিয়াজ আবার কিছু বলবে,তার আগে কালাম সাহেব বলে," এসেছো সেই গতকাল রাত। তোমার ভাবির সাথে কথা হয়েছে আমার। সেদিন রাতেও কিছু খাওনি। আমাকে গোসল করার সময়টা দিতা। একসাথে কিছু খেয়ে এরপর কাজে যাইতা। কিন্তু তুমি? বেশি কাজ দেখাচ্ছো? বস কল দিতেই পাগলের মত ছুটে আসলা"। অনেকটা ধমকের স্বরে কথাগুলা বললেন কালাম সাহেব। রিয়াজ মাথা নিচু করে বলে," পরেরবার থেকে আর হবেনা"। কালাম সাহেব এতে সন্তুষ্ট হয়নি। উনি আবার ধমকের স্বরে বললেন," আর আমি যে এতোগুলা কল দিলাম। রিসিভ করোনি কেন। হেল্পারকে যখন কল দিলাম,সে বলল তুমি তাকে মাঝরাস্তায় রেখে লাশ নিয়ে চলে গেছো। খুব দায়িত্ববান হয়ে গেছো তাইনা?"। রিয়াজ কালাম সাহেবকে আবার শান্তস্বরে বলে," ভাই, ফোন খেয়াল করিনি"। কালাম সাহেব এতেও সন্তুষ্ট হলেন না।তবে এইবার একটু নরমাল ভাবে বললেন," বসকে আমি কাল থেকে ইচ্ছেমত বকাঝকা করেছি। তুমি এখন এই লাইনে নতুন।তার উপর আজ দুইদিন ভাত খাওনি। কি দরকার ছিলো রাতে লাশ টানার। আর হেল্পারের মুখে মাত্র শুনে এলাম সব। কি হয়েছিলো রাতে"। রিয়াজ এইবার কালাম ভাইয়ের কথাটা এড়িয়ে দেওয়ার জন্য বলে,"
- আজ কি আমার আর কোনো ডিউটি আছে?
- রাখো তোমার ডিউটি। আগে বলো রাতে কি হয়েছে।

রিয়াজ কালাম সাহেবের কথায় এইবার আর জবাব দেয়নি। পকেট থেকে টাকা বের করে,দোকানিকে চায়ের বিল দিলো। এরপর সিটে বসে সিগারেট টানছে। কালাম সাহেব রিয়াজকে এইবার ধমকের স্বরে বলে, " সমস্যা কি। আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি"। রিয়াজ এইবার না পেরে বসা থেকে উঠে যায়। আর হসপিটালের দিকে যেতে লাগলো। কালাম সাহেব নিজেও রিয়াজের পিছন পিছন এসে সামনে দাঁড়ায়। রিয়াজের পথ আটকাতেই, রিয়াজ গেটে না গিয়ে এম্বুলেন্সে চলে যায়। ড্রাইভিং সিটে বসে কিছু ভাবছে।এদিকে কালাম সাহেব নাছোড় বান্দা। উনি এম্বুলেন্স এর কাছে এসে রিয়াজকে আবার বলে," আমি জানি তুমি স্বাভাবিক ভাবে লাশ নামিয়ে আসোনি। অনেক কিছু ফেস করেছো। এই লাশ কেও নিতে চায় নি। তাই বস আমার জন্য অপেক্ষা করছিলো। আমি সন্ধার দিকে লাশটা নিয়ে যেতাম। তুমি সেখানে পাকনামি করে নিজেই এলে। তুমি জানো? এই লাশের মূল কাহিনী? "। কালাম সাহেবের কথা শুনে রিয়াজ একটু নড়েচড়ে বসে। এরপর বলে,
- লাশের আবার কি কাহিনী। আর থাকলেও আমার কি। আমার কাজ ছিলো লাশ নামিয়ে দেওয়া।আমি দিয়ে এসেছি।
- রক্ষাকবজ নিয়েছিলে?
- রক্ষাকবজ? কিসের?
- প্রত্যেক এম্বুলেন্স ড্রাইভারদের সাথে রক্ষাকবজ থাকে। যেটি গতকাল টেবিল থেকে আমাকে দিয়েছিলে। আর যে লাশ তুমি নিয়েছো। সেটিকে খুন করা হয়েছিলো। প্রায় ১ মাস থেকে সে মর্গে। আর এই লাশ মর্গে নানান ঘটনা ঘটিয়েছে।
- বুঝিনি আমি।
- মর্গের পাহারাদার জসিম মিয়া icu তে আছে। এই লাশটা আক্রমণ করেছিলো তাকে। জসিম মিয়ার হাতে কয়েকটা চুল পাওয়া যায়। যেটা এই মেয়ের চুল। এখন এসব হচ্ছে সবার কাছে কু-সংস্কার। কে বিশ্বাস করবে একটা লাশ তাকে আক্রমণ করেছে।
- পরে...?
- পরে আর কি। এই লাশকে সরানোর অনেক চেষ্টা করে। কিন্তু কেও নিতে পারেনি।এক ড্রাইভার লাশ এনে এম্বুলেন্স এ রেখেছিলো। এরপর অফিসে যায় ঠিকানা আনতে। কিন্তু এসে দেখে লাশ এম্বুলেন্স এ নেই। খোঁজাখুঁজি করে দেখে,লাশ অলৌকিক ভাবে মর্গে চলে গেলো। ভয়ে সেই ড্রাইভার চাকরিই ছেড়ে দিছে। জানাজানি হবার পর কেও রাজি না এই লাশ নিতে। আমি টানা ডিউটিতে থাকায়, আমাকে এই লাশের ব্যাপারে বলা হয়নি। কারণ এই হসপিটালের সিনিয়র ড্রাইভার আমি ছাড়া কেও নেই। সন্ধায় এসে আমি লাশটাকে নেবার কথা।
- তাহলে বস কেন আমাকে পাঠালেন?
- ওরা তো বলবেই। ড্রাইভারদের জীবনের চিন্তা ওদের আছে? লাশের পরিবারের কেও রাজি না। ওরাও ওদের লাশকে ভয় পাচ্ছে। তাই ঢাকায় ওর চাচাতো ভাইকে পাঠায়। এই কারণেই,চাচাতো ভাই কিছু জানতো না। তাই রাজি হয়। কিন্তু গতকাল দুপুরে, মর্গের একজনের হাত কামড়ে খেয়ে ফেলে এই লাশ। দারোয়ান আরেকটি লাশ রেখে আসার সময়,এই মেয়েটি দারোয়ানের হাত টেনে ধরে। দারোয়ান বাঁচার জন্য হাত টান দেয়। আর দেখে উনার ৫ আঙ্গুল সহ, হাতের তালু নেই। ভয়ে তিনি মর্গের বাহিরে আসে। আর এসব জেনে বস আমাকে কল দেয়। কিন্তু তুমি ফোন রিসিভ করলা। উনি জানে আমি রিসিভ করেই সালাম দিই। চুপ থাকায় বুঝে গেছে ফোন আমি ধরিনি।
- মর্গের সব লাশই এমন?
- না। সব না। কিছু কিছু। আর যে মেয়ের লাশ তুমি নিয়েছো। তাকে তো নৃশংস হত্যা দেওয়া হয়েছিলো।
- হত্যা দেওয়া হয়েছিলো মানে?
- কি আর বলবো। এইজে পাশের এলাকাতে এমপি সোহেল সাহেবের বাড়ি। তার ছেলেদল এই কাজ করেছে। ১২ দিন বন্দি রেখে ধর্ষণ করলো। তারপর মেয়ের পেট কেটে হত্যা করলো। মেয়ের ফ্যামিলি কিছু করতে পারেনি। ঐজে? এমপির চেলা,তাই বেঁচে গেছে সব শুয়োরছানা।
- এইজন্যই সাহায্য চাচ্ছিলো।
- কে?
- ঐ মেয়েটি।
- আমি জানতাম। আমি বুঝেছি ঝামেলা হয়েছিলো। তুমি হাইড কেন করতেছো বলবা?
- ভাই, আমি আমার ভাবির কষ্ট দেখতে পারছিলাম না। আমার পঙ্গু ভাইয়ের চোখের পানি প্রতিদিন ঝরে। বকুল ভাইয়ের টাকা শোধ করতে হবে। এখানে আমার উদ্দেশ্য টাকা কামানোর। তাই এসব বলেও লাভ কি। তাদের কাজ তারা করে, আমার কাজ আমি করেছি।
- আমাকে বলবা? মূলত কি হয়েছিলো?
- চায়ের দোকানে যাই চলুন।

রিয়াজ এম্বুলেন্স থেকে নেমে চায়ের দোকানে আসে। কালাম সাহেবও রিয়াজের সাথে দোকানে চলে আসে। আরো দুইটা চা,আর দুইটা সিগারেট নিয়ে বসে দুজন। রিয়াজ চায়ের কাঁপে চুমক দিয়ে বলতে শুরু করে," কাল শুরু থেকেই আমি অস্বাভাবিকতার সম্মুখীন হয়েছি। যখন ঢাকার ভিতরে,অর্থাৎ যাত্রাবাড়ীর আগে জ্যামে পড়েছিলাম। তখন থেকে আমার শরীর ভার হয়ে যায়। এসব আমলে না নিয়ে হেল্পারের থেকে সিগারেট নিয়েছি,আর ধরিয়েছি। জ্যাম ছেড়ে যখন দাউদকান্দি পার হয়েছি। তখন চলন্ত গাড়ির পাশে কেও খুব সাধারণ ভাবে দাঁড়িয়ে বলে সাহায্য করতাম। গাড়ি থামাতাম। আমি থামাইনি। কিন্তু কিছুটা সন্দেহ গেছে। এতো গতিতে গাড়ি চললো,বাহিরের লোকটা কিভাবে আমার জানালার পাশে দাঁড়াতে পারে। অবাক হয়ে আমি গাড়ি থামাই। এরপর নেমে যখন চারপাশে চোখ দিয়েছি। তখন দেখি,আমার সামনে থাকা বিলের মাঝে চাদর গায়ে কেও দাঁড়িয়ে আছে। যদিও সে অনেক দূরে ছিলো।আমি দূর থেকে চাদর গায়ে দেওয়া সেই অবয়বকে পর্যবেক্ষণ করছিলাম। কিন্তু স্পষ্ট কিছু বুঝে উঠিনা। এক নজরে তাকিয়ে থাকার পর বুঝলাম,চাদরের ভিতর থেকে দুইটা লাল চোখ জ্বলে উঠেছে। আমি তো মানুষ,ভয় মানুষরাই পায়। কিছুটা ভয় আমিও পেয়েছি। আর এই ভয় পাবার মাঝে খেয়াল করি,চাদর গায়ে দেওয়া অবয়বটা এক দৌড়ে ডান দিকে চলে গেলো। তার দৌড় এতোটাই দ্রুত ছিলো। যা আমি খেয়াল করে নজরবন্দি করতে পারিনি। বুঝে যাই অস্বাভাবিক কিছু ঘটবে। তাই হেল্পার আর ঐ লোককে নিয়ে আবার রওনা করতে যাই। কিন্তু দেখি এম্বুলেন্স এর চাকা লিক"। এতটুকু বলে রিয়াজ আবার চায়ের কাঁপে চুমক দেয়। কালাম সাহেবের চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে,সিগারেট জ্বলে যাচ্ছে। কিন্তু উনার খবর নেই,উনি এক দৃষ্টি আর মন দিয়ে রিয়াজের কথা শুনে যাচ্ছে। রিয়াজ চায়ের কাঁপ রেখে আবার বলতে শুরু করে," চাকা লিক সারানোর পর হেল্পার দিয়েছে চিৎকার। আমি ঐ লোকের সাথে মদ খাচ্ছিলাম।মদের বোতল ওটা উনিই এনেছে। গ্রামে এর চেয়ে পাওয়ার ওয়ালা মদ খেয়ে আমার কিছু হয়না। কিন্তু ওর এই সেভেন আপ মার্কা মদ খেয়ে আমাকে মাতাল সাজতে হয়েছে। এখানে অস্বাভাবিকতা হচ্ছে আমি জানি। কিন্তু ওরা যাতে ভয় না পায়,তাই মাতালের মত সব হেসে উড়িয়ে দিচ্ছিলাম।আমার এই চেষ্টাকে ব্যার্থ করে লাশ উঠে বসে গেছে। আমি ঐ মেয়ের দিকে তাকিয়ে ছিলাম শুধু। ভাবছিলাম, বক্সের ঢাকনা কে খুললো,আর মেয়েটিও বা কিভাবে উঠে বসলো। আমার ভাবনার মাঝে হেল্পার আর ঐ লোক এসে দেখে যায় সব। আর দৌড়ে পালায়। কিন্তু আমি আমার কাজ সম্পন্ন না করে যেতে পারিনা। আমার ভাবি আর ভাই আমার জন্য অনেক করেছে। অনেক খেটেছে। চাকরির প্রথম কাজটাই যদি পূরণ করতে না পারি,তবে জব চলে যাবে ভেবে আমি দৌড়াইনি। বসে থাকা লাশের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছি। আর সোজা এম্বুলেন্সে বসে টার্গেটে যাচ্ছিলাম। আপনার কল আমি দেখেছি,ভেবেছি হেল্পার আপনাকে সব বলেছে। এইজন্য ধরিনি।যদি আপনি আমাকে লাশ নিতে বাঁধা দেন,তবে আমি আমার কাজ সম্পন্ন করতে পারবো না। ওসব ভুতের চেয়ে আমার কাছে টাকা জরুরী বেশি। কুমিল্লাতে এম্বুলেন্স ঢুকার পর আচমকা পিছন থেকে ঐ মেয়ের চিৎকার ভেসে আসে।কান্না করে আস আমাকে ডাকছে। আমি যেনো তাকে নিয়ে না যাই। আমার কপাল বেয়ে ঘাম যাচ্ছিলো। ভয় মনে আছে, কিন্তু কাজ শেষ করার আগে আমি যাবোনা কোথাও। এই ধারণা মনে এনে গাড়ি থামাইনি আর। পিছনে সে পেটাপেটি শুরু করেছে,যেনো এম্বুলেন্স ভেঙ্গে ফেলবে। তবুও গাড়ি থামাইনি। এইভাবে প্রায় ৩০ মিনিট সে চিল্লাচ্ছিলো। আমি কোনো পরোয়া না করে এম্বুলেন্স চালিয়ে গেছি। কিন্তু যখন ফেনীতে যাই।তখন ভয় লাগেনি। মানুষজন ছিলো বাজারে। ফেনী শহর ছেড়ে যখন এলাকাতে ঢুকি। তখন আবার লাশটা চিৎকার শুরু করে। আমি আল্লাহ্‌র নাম মুখে নিয়ে এম্বুলেন্স তবুও থামাইনি। শেষে হাসেম মাস্টারের বাড়িতে ঢুকার আগে,লাশ চুপ হয়ে যায়। আমি দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে লাশ তাদের হাতে বুঝিয়ে দিলাম। কিন্তু কালাম ভাই,বিশ্বাস করুন।লাশ রেখে আসার সময় যা হয়েছে,তা অনেক ভয়ংকর ছিলো। আমি যেনো মৃত্যুর দরজা থেকে ফিরে এসেছি"।

এই কথাটা বলতেই,রিয়াজের গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়।

চলবে..........?

গল্প- #এম্বুলেন্স_রহস্য ( পর্ব-০৮)

লেখক- #রিয়াজ_রাজ

[ লাশের চিৎকার আপনি শুনতে পাচ্ছেন.....? খেয়াল করুন। সে চিল্লাচ্ছে]

08/11/2023

আমার স্ত্রীকে সেদিন খুব মা*রা*র পর আর তেমন একটা কথা বলে না। বেশিরভাগ সময় চুপচাপ থাকে । সংসারের কাজকর্ম চুকিয়ে চুপচাপ বসে কাঁথা সেলাই করে। আগের মত আর ফোন চাপে না, গুন গুন সুরে গান করে না।

পাড়ার কোনো মহিলার সাথেও সেভাবে কথা বলে না।যখন হাতে একেবারেই কোনো কাজ থাকে না তখন পুকুর পাড়ে গিয়ে বসে।

আমার বেশ ভালই লাগে। সারাক্ষণ হাসি আর বক বক করে মাথা খেতো। এতোটা বাঁচাল হওয়া কোনো বিবাহিত মেয়েরই ঠিক নয়। তাই ভাবলাম শুরুতেই ডগা ছেঁটে দেই। তাই সেদিন দিলাম কয়েক ঘা বসিয়ে। সেদিন অর্পি শুধু নির্বাক হয়ে তাকিয়ে ছিল। তার চোখের জল টলমল করে উপচে পড়তে চায়। আমি হাত উঁচু করে বলেছিলাম,
--- যদি সে কাঁদে তবে তাকে খু'*ন করে ফেলবো।
সেইযে চুপ ভয়ে এখন সে কাঁদতেও ভুলে গিয়েছে।

বেশ খেয়াল করে দেখছি যে তার ফোনে কোনো কলও আসে না৷ একটা আ*শং*কা নিয়ে অর্পির ফোন নিয়ে দেখি ফোনটা খোলাই আছে। আমি অবাক হলাম এই ভেবে ফোন খোলা অথচ কেউ ফোন করে না। অবশ্য ফোন করবে কে, বাবার বাড়ি থেকেই কোনো খোঁজ নেয় না তার আবার অন্য লোক! বিয়ের সময় বাবার বাড়ি থেকে যা যা দেবার কথা ছিলো করোনার জন্য তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না বলে দিতে পারেনি বলেই যোগাযোগ করে না তারা।কয়েকজন বান্ধবীর সাথে দেখতাম নিয়মিত কথা বলত।

এখন তাও বলছে না। কল লিস্ট এবং সেভ করা নম্বর চেক করে দেখি সেখানে শুধু আমার আর আমার আত্মীয়-স্বজনের নম্বর। ব্যাপারটা বেশ ভালই লাগলো। বিয়ের পর মেয়েদের নিজের বাপের বাড়ির সাথে অত কথা কিসের? বেশ তৃপ্তি নিয়ে সেদিন ঘুমাতে গেলাম।ঘুমের ঘোরে বিছানাটা ফাঁকা মনে হলো। হুট করেই জেগে দেখি পাশে অর্পি নেই। মুহুর্তেই ঘুম উধাও।
বিছানা ছেড়ে উঠে গেলাম।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম রাত তিনটার কাঁটা ছুঁয়ে গেছে। ঘর ছেড়ে বারান্দায় এলাম সেখানেও অর্পি নেই। পাশের কামরায় উঁকি দিয়ে দেখি জানালা দিয়ে সে আকাশ দেখছে। ঠিক বুঝতে পারলাম না ঘোরতর অমাব*স্যা*র রাতে আকাশে দেখার কি থাকে? ওর পিছনে দাঁড়িয়ে আমি নিজেও আকাশ পানে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলাম। অজস্র তারায় আকাশটা কেমন সেজে উঠেছে। তারার অস্পষ্ট আলোতেও প্রকৃতি সত্যিই মোহনীয় সাজের দ্যূতি ছড়াচ্ছে। যারা এই আকাশ দেখেনি তারা বুঝবে না এর কি দুর্নিবার আকর্ষণ। অর্পি আকাশ দেখায় এতটাই মগ্ন যে আমার উপস্থিতি তার অনুভবেই আসেনি। কিছু না বলে পিছনের পা পিছনে রেখেই শোবার ঘরে ফিরে আসি। ঘরে এসে কিছুতেই মন টিকছে না। মেয়েটার উপর হয়তো অবিচার করা হচ্ছে।

খুব মন খারাপ করে থাকে আজকাল। যা বলি শুধু তারই উত্তর দেয়। যা বাজার করি তাই রান্না করে। বিগত ছয় ছয়টি মাস ধরে সে মুখ ফুঁটে কিছুই খেতে চায়নি। কেমন যেন বোবা হয়ে গিয়েছে।আদরেও নির্লিপ্ত থাকে শাসনেও তাই। কেমন যেন জড় পদার্থের মতো হয়ে গিয়েছে। খাঁচায় ভরা পাখির মত মাঝে মাঝে ছটফট করে সে। তবে কি অর্পি মুক্তি চায়? মনটা খুব করে খারাপ হয়ে গেলো কারণ বিয়ের সময় আমি আর্থিক কিছু না পেলেও বলতেই হয় যে একটা খুব সাংসারিক বৌ পেয়েছি,আর মেয়েটা অসম্ভব লক্ষি ধরনের একটা মেয়ে ।

সারাদিন শেষে ও তো শুধু বান্ধবীর সাথেই কথা বলতো।বাস্তবিক পক্ষে অর্পি খুব ভালো মানুষ। খুব ভালো মনের সে। তবে ওকে হারাবার কিসের ভয় আমার?তবে কি আমি সন্দেহ বাতিক গ্রস্থ? না, আর দেরি করা চলবে না। আগামীকালই আমি একজন সাইক্রিয়েটিস্ট এর কাছ থেকে পরামর্শ নেবো। সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে কখনযে ঘুমিয়ে গিয়েছি জানি না। সকালে সবার চেঁচামেচিতে ঘুম ভেঙে বাইরে এসে দেখি ঘরের পূর্বদিকের খালপাড়ের কাত হয়ে পড়া জির গাছটির মোটা ডালে অর্পি কালো দঁ*ড়ি গলায় দিয়ে ঝু*ল*ছে।

"একটি সত্যি কাহিনী অবলম্বনে"

সমাপ্ত

শহিদুল ইসলাম সাইম জিসান

Address

Chittagong

Telephone

+8801854122370

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when MD Jisan posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share