22/12/2025
সকালের রোধ গায়ে মাখাতে মাখাতে আঁকতে বসেছি
শুভ সকাল
সকাল মানেই আম্মুর ছোট খাটো একটা যুদ্ধ, সবার জন্য নাস্তা বানানো, আব্বুর অফিসের জন্য রান্না করা, টিফিন রেডি করা, নাস্তা নিয়ে সবার পেছনে পেছনে দৌড়ানো।
চাকুরীজীবি হাসবেন্ড হলে এটাই একটা সুবিধা সবকিছুই একটা নিয়মের মধ্যে থাকে। সারাদিন যে যার যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, এরপর আবার সন্ধ্যায় আব্বু ঘরে ফেরার অপেক্ষা। আবার ঘরটা জমজমাট, আবারো আম্মুর খাবার নিয়ে সবার পেছনে দৌড়ানো। মায়েদের মনে হয় স্বামী-সন্তানদের খেতে দেখলেই শান্তি লাগে। সেই ছোট থেকেই এই একই নিয়মেই বেঁধে থাকতে দেখছি আম্মুকে। কোন বিষয়ে বনিবনা না হলেও আব্বু আম্মুকে কখনো আলাদা থাকতে দেখিনি, উনারা একে অপরকে ছাড়া থাকতেই পারে না। আম্মু কোথাও থাকার উদ্দেশ্যে গেলেও আবারো ঠিক ফিরে আসে ঘরে, আব্বুও তা-ই। আব্বুকে কখনো দেখিনি আম্মুকে ছাড়া কোথাও যেতে। কেউ যদি দাওয়াত দেয় আম্মুকে না বললে আব্বুকে সেই দাওয়াতে যেতে দেখিনি কখনো, সেই দাওয়াত যতো আপন মানুষেরই হোক না কেন। এমন কি রমজানের ইফতারটাও একদিনের জন্যও বাইরে কোথাও করে না, হাতে একটা পানির বোতল থাকে, আজান দিয়ে দিলেও পানি খেয়ে রোজা ভেঙ্গে বাসায় এসেই ইফতার করে পরিবারের সাথে।
সেদিন আব্বুর কাছে জানতে চাইলাম, আচ্ছা আব্বু আম্মুকে দেখি আপনার নামে কত অভিযোগ করে, আপনি চুপ করে থাকেন, আম্মুরও তো অনেক সময় অনেক ভুল হয় আপনাকে কখনো দেখিনি নানুকে অভিযোগ করতে।
আব্বু বলেছিল, তোর আম্মুর দায়িত্ব আমি নিয়েছি দায়িত্বে অবহেলা হলে তো অভিযোগ করবেই, তোর আম্মুর অভিযোগ তোর নানুকে কেন করবো সে তো আমারই।
ভালোবাসা, শাসন, খুনসুটি, মনোমালিন্য সবকিছু মিলিয়ে আমার আব্বু আম্মুর সংসার জীবনটা দারুনভাবে কেটে যাচ্ছে।মাশাল্লাহ
দুজনই গুরুতর অসুস্থ এখন, বয়স হয়েছে, একে অপরের খেয়াল রাখে। আমরা সন্তানরা সবাই সবার পড়াশোনা আর কাজ নিয়ে ব্যস্ত, সংসার নিয়ে ব্যস্ত। উনারা দুজন একে অপরের সাথে এভাবেই পাশে আছে।
মানুষ বলে না যে, সন্তান তার বাবা মায়ের সংসার যেভাবে দেখে এসেছে ঠিক সেভাবেই নিজের সংসার সাজাতে চায়, এটা কিন্তু সত্য কথা।
H O O R