14/05/2024
"প্রজন্মের 'মা' ধ্বংসের মাষ্টার প্লান" পর্বঃ ৩
ভার্সিটি পড়ুয়া অধিকাংশ মেয়ে হরমোন উত্তেজনায় আবেগের বসবর্তী হয়ে অভিভাবক ছাড়া কয়েক মাসের প্রেমীককে বিয়ে করে ফেলছে। এটার ব্যপ্তী আমাদের অভিভাবকদেরও কল্পনার বাইরেঃ-
যারা ভাবছেন যে হিজাব পড়ে দ্বীন মেনে সহশিক্ষা কন্টিনিউ করব তাদের বোঝা উচিত যে, আমাদে মুসলিম পরিবারের যুবকরা এদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট। অনেক অনেক যুবক নগ্ন আর অর্ধনগ্ন নারীদের ফিতনা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারলেও হিজাবে আবৃত দু'চোখের মায়ায় আটকে যায়! ফলে তারা অল্প কিছুদিনের পরিচয়ে হালাল হওয়ার জন্য অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করে ফেলছে। বিয়ের পূর্বে খুঁজে খুঁজে বের করতেছে তাহেরী, দেওয়ানবাগী,মাইজভান্ডারী অভিভাবক ছাড়া বিয়েকে হালাল বৈধতা দিয়েছে কি না!
বেশ কয়েকজন ভার্সিটি পড়ুয়া সহপাঠী কয়েক মাসের প্রেমীকের সাথে প্রায় পার্কের চিপায়, ক্যামপাসের বাথরুমে আকাম করতে গিয়ে বিচ্ছিরিভাবে কট খায়। টোকাইদের টাকা দিয়ে নিজেকে ভাইরাল হওয়া থেকে বাঁচায়। যৌনতা প্রকাশ্যে এভেইলেবল হলেও এখনো যেহেতু মুসলিম পরিবার বা দেশের ঐতিহ্যগত সীমাবদ্ধতার রেশ আছে, আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতা, অধিকার নিয়েই লড়াই করে। তাই তাঁরা অপকর্মের অধিকারের সার্টিফিকেট প্রস্তুতির দিকে এগিয়ে চলে!
এবং তাঁরা কমিটমেন্টের মাধ্যমে অভিভাবক ছাড়াই দু একজন বন্ধুর সাপোর্টে কোর্টে বিয়ে করে ফেলে। ছেলে-মেয়ে যেহেতু প্রাপ্ত বয়স্ক তাই আইন তাদের এতে বাঁধা দেয়না। এই শহরেই এমন অনেক বিয়ের মেয়ে পক্ষের সাক্ষীর ভূমিকা আমি পালন করেছি। আল্লাহুম্মাগফিরলি। এজন্যই ক্ষমা চাচ্ছি যে, তারা তখন অবাধে মেলামেশা শুরু করে। প্রেগনেন্ট হয়। যেহেতু বাসায় জানেনা তাই অ্যাবরশন করে নিষ্পাপ সন্তানকে হত্যা করে! আহ তাঁরা যদি জানতো কিভাবে ছিঁড়ে ছিঁড়ে নিজের নিষ্পাপ সন্তানের শরীরের মাংসগুলো টুকরো টুকরো করে হত্যা করা হয়।
এই নিষ্ঠুরতা শেষে তাদের মধ্যে ছোট ছোট বিষয়ে তিক্ততা শুরু হয়। যেহেতু গার্ডিয়ান নেই, তাই এসব সমস্যার সমাধান হয় না। কারণ তারা প্রথম এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন। এসব মানিয়ে নেওয়ার থেকে ডিভোর্সকে ইজি মনে করেন। অতঃপর দুজনের কমিটমেন্টে আলাদা হয়ে যান। যেহেতু পরিবারের কেউ কিছু জানেনা তাই মামলা ঢিসমিশ। ছেলেকেও দিতে হলো না মোহরানা মাঝখানে উপভোগ করে ফেললো অন্যকারও হক! এরকম সংখ্যাটা অনেক বেশি, অনেক বেশি, অনেক বেশি। আমি কতজনের চেষ্টা করেছি যাতে বিচ্ছেদ না হয়। অথচ ঠুনকো বিষয়গুলো এরা মানিয়ে নিতে না পেরে আলাদা হয়ে যায়। আপনার নিজের বন্ধু-বান্ধুবীর খোঁজ নিয়ে দেখুন একবার সত্যতা পান কি না!
বিচ্ছেদের পর এই নারী পরবর্তীতে আবার পারিবারিক ভাবে অন্যকারও ঘরের বউ হয়ে যায়! এদের একটা অংশ "মা" হওয়ার অর্থাৎ সন্তান জন্ম দেওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে। আরেকটা অংশ সারাজীবন অতীতের ডিপ্রেশনে কঠিনভাবে ট্রমায় আক্রান্ত হয়। এর ফলে সংসারে নেমে আসে ভয়ংকর অশান্তি! হানাফি মাযহাব অনুযায়ী প্রাপ্ত বয়স্ক নর-নারীর অভিভাবকহীন বিয়ের বৈধতা দিলেও। এটাকে সর্ব নিকৃষ্ট হালাল বিয়ে বলা হয়েছে। সেই সাথে বলা হয়েছে, এই বিয়েতে আল্লাহতায়ালার কোনো বরকত থাকেনা।
যেখানে রবের রহমত, বরকত থাকেনা সেটার দিকে ধাবমান হওয়া কতটা ভাল কাজ ভাবেন একটু?
এভাবেই সহশিক্ষা কার্যক্রম উম্মাহর মায়েদের ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের পরিবারগুলো ভাঙছে, সমাজের ঐক্য বিনষ্ট হচ্ছে, পিতা-মাতাকে পাঠানো হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে এই সকল স্বাধীনতাকামী, অধিকার প্রিয় নারীদের জন্য। পুঁজিবাদী মস্তিষ্ক এসবকিছুকে গ্লোরিফাই করে নাম দিয়েছে "বাস্তবতা"। আসলে এরা জানেনা চূড়ান্ত বাস্তবতা তা, যা মহান আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন দুনিয়ার জীবন নিয়ে এবং অসীম পরকালের পথ নিয়ে।
আহ কবে বুঝবে এই উম্মাহর মায়েরা? কবে? কবে?...
ধারাবাহিক পর্ব কন্টিনিউ হবে...
🖋️একরামুল হক আবির
ঈষৎ পরিমার্জিত
©️From: Mohammad Mainul Hoque Riaz