
09/05/2025
পলাশ স্যার, সিনিয়র এএসপি
আর তার সুন্দরি বৌ:আমার কিছু কথা
পলাশ দাদার এই মরে যাবার পিছনে আমার যেগুলি মনে হয় এবং এখান থেকে আমরা যা শিখতে পারি :
১) জেনারেশন গ্যাপ। দাদার বৌ / মেয়েটি অন্ততপক্ষে ১৪/১৫ বছরের ছোট। দাদার অবস্থান বোঝার ক্ষমতা তার নাই। আর এই প্রজন্ম শুধু একক পরিবার বুঝে।আমাদের প্রজন্মের সাথে রাত আর দিন পার্থক্য এ প্রজন্মের। স্ট্রাগল করে মানুষ হওয়া আর কোনো মতে নিজের সুন্দর চেহারা দিয়ে জিতে নেয়া এক কথা নয়।
২) সাহা বনাম সাহা বিবাহ হতেই হবে। দাদাকে অনেক পাত্রী দেখিয়েছিলাম। সাহা না হবার জন্য কিংবা একটু কম সুন্দরী হবার জন্য দাদা রিজেক্ট করতেন। সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। সাহা সব পাত্রী যে ভালো হবে এমন নয়।
৩) দাদার মাতৃভক্তি বেশি ছিলো। আমি তার মুখোমুখি রুমে ঢাবির জগন্নাথ হলে থাকতাম। দাদা খুব ভোরে উঠেই মায়ের সাথে ১০/১৫ মিনিট কথা বলতেন। আমার নিজেরই ঘুম ভেঙ্গে যেতো। আমি দুচারদিন বলছি দাদা এমন কথা প্রতিদিন বলা লাগে নাকি!! উনি হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। এমন কি দুপুরে / রাতে কথা বলতেন। এটা যে খারাপ সেটা বলছি না। কিন্তু মায়ের থেকে সে কখনো একা থাকতে পারতো না।
৪) পারিবারিক কূটনীতি : এগুলি তো আমরা দাদার চিঠি থেকেই বুঝি। হয়তো বোন এখানে ইনটারফেয়ার করতে পারে। মা + ভাই + বৌ কেউ সাধু নয়। বৌয়ের হয়তো দোষ বেশি।
৫) পুলিশের কর্মক্ষেত্র: এটা সব সময় চাপের। নাইট ডিউটি। মেজাজ খিট খিটে হয়ে যায়। স্যারেরও স্যার থাকে। এই চাপ। পোস্টিংয়ের চাপ। বর্তমান প্রেক্ষাপট এসবও কাজ করে। পুলিশের বৌ যারা হবেন দয়া করে এসব মাথায় রাখবেন। না হলে বিয়ে করতে আসবেন না।
৬) পলাশ স্যার একটু সীমিত সার্কেল মেইনটেইন করতেন। ঢাবি/হল দাদা ছিলেন নির্ভেজাল। ১০০% অরাজনৈতিক। সামাজিক সংগঠন খুব কমই করতেন। আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটালীপাড়া সংগঠন- ডুসাকের আমি যখন সেক্রেটারি দাদাকে অনেক ফোন করলেও খুব বেশি আসতেন না। মিশুক তবে নিজের চাপের কথা কখনো বলতেন না। তো আমার মনে হয় চাপের কথা দুচারজন বন্ধু বান্ধবকে বলা উচিত। সে যত প্রাইভেট কথা হোক না কেনো।
৭) ভুল কর্মে যাওয়া :
★কয়েকটা প্রাইভেট ব্যাংক জব পান
★৩৫ এসআই জব হয়
★সাবরেজিস্টার হন
★ শিক্ষা ক্যাডার হোন
★এডি হোন
★ যেহেতু এসআই হয়েছিলেন তাই পুলিশ ক্যাডারের প্রতি দাদার আগ্রহ ছিলো তাই তিনি প্রথম চয়েজ পুলিশ দেন। অথচ তিনি ফরেন কিংবা এডমিন দিলেই পেয়ে যেতেন। এডমিন তো নরমালি পেতেন। এই বিষয় নিয়ে দাদা কয়েকবার আপসোস করেছেন। কারন পুলিশের ছুটি/ ট্রেনিং+ প্রেশার+ পোস্টিং নিয়ে অনেক প্রেশারে থাকতে হয়।
৮) অন্য কোনো যদি কারন থাকে তাহলে সেটার সুষ্ঠ তদন্ত হোক। সব কারন বের হয়ে আসুক।
৯) সব মিলে আরো অনেক কারন থাকতেই পারে । তবে দাদা নিজের কাছে হেরেছেন। হেরেছেন বৌ, মা, বোন সহ আমাদের কাছে। দাদা হেরে গিয়ে জিতে গেলেন। সারাটা দিন এত্ত প্রখর রৌদ্র অথচ আমাদের আকাশ অনেক ভারী। এই ক্ষতি কাটানো কঠিন।
১০) দিন যাচ্ছে। রাত আসছে। নাইট ডিউটি চলছে। রাত বাড়ছে। গভীর সে রাত। হাজার বছরের সেই রাত।
সুব্রত শোভন
আইআর, ঢাবি।