ইসলামের আলোর পথ

ইসলামের আলোর পথ এসো সবাই দ্বীনের সঠিক জ্ঞান অর্জন করি নিজেকে পরিশুদ্ধ করি।

10/01/2025

ঘুমের কারণে ফজর নামাজ পড়তে না পারলে যা করবেন

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় নামাজ মুমিনদের উপর ফরজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।’ (সূরা নিসা ১০৩)

আর ফজরের নামাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় হল– সুবহে সাদিক হতে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত। সুতরাং কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এই সময়ের মধ্যে আদায় না করলে তার কবিরা গুনাহ হবে।

হাদিসে এসেছে, আবূ হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, মুনাফিকদের উপর ফজর ও এশার নামাজ অপেক্ষা অধিক ভারী নামাজ আর নেই। যদি তারা এর ফজিলত ও গুরুত্ব জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে বা পাছার ভরে অবশ্যই (মসজিদে) উপস্থিত হত।

(বুখারি ৬৫৭, ৬৪৪, ৬৫৭, ২৪২০, ৭২২৪, মুসলিম ৬৫১ তিরমিযি ২১৭ নাসায়ি ৮৪৮ আবু দাউদ ৭২৬০, ৭৮৫৬, ২৭৩৬৬, ২৭৪৭৫, মুওয়াত্তা মালিক ২৯৯ দারেমি ১২১২, ১২৭৪)

অপর হাদিসে এসেছে, আবূ যুহাইর ‘উমারাহ ইবনে রুআইবাহ (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে (অর্থাৎ ফজরের ও আসরের নামাজ) আদায় করবে, সে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। (মুসলিম ৬৩৪, নাসায়ি ৪৭১, ৪৮৭, আবু দাউদ ৪২৭, আহমদ ১৬৭৬৯, ১৭৮৩৩)

তাই প্রত্যেকের উচিত প্রতিদিন কষ্ট হলেও ফজর নামাজ জামাতের সঙ্গে মসজিদে এসে আদায় করা। তবে একান্ত যদি কোনও কারণে ফজরের সময় কেউ জাগতে না পারে এবং একেবারে সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ আগে ঘুম ভাঙে এক্ষেত্রে কিভাবে নামাজ পড়বে এ বিষয়ে আলেমদের দিক-নির্দেশনা হলো-

সূর্যোদয়ের কয়েক মিনিট আগে ঘুম থেকে ওঠার পর যদি মনে হয় যে, সংক্ষেপে ফজরের সুন্নত ও ফরজ উভয়টাই সূর্যোদয়ের আগেই আদায় করা যাবে তাহলে সুন্নত ও ফরজ উভয়টাই আদায় করে নিতে হবে।

আর যদি মনে হয় সুন্নত পড়তে গেলে এরমধ্যেই সূর্য ওঠে যাবে তাহলে সে ক্ষেত্রে শুধু ফরজ পড়ে নিতে হবে এবং সুন্নত সূর্যোদয়ের ১৫-২০ মিনিট পর আদায় করতে হবে। ফরজ আদায়ের পর সূর্যোদয়ের আগে সুন্নত নামাজ পড়বে না।

কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ফজরের দুই রাকাত সুন্নত (ফরজের পূর্বে) আদায় করতে পারেনি সে সূর্য উঠার পর তা আদায় করবে। -(তিরমিজি, ৪২৩)

আর কখনো যদি ঘটনাক্রমে সুন্নত পড়ার পর দেখা যায় যে সূর্য উঠার প্রায় নিকটবর্তী, তাহলে তখন আর ফরজ পড়বে না। কারণ সূর্য উঠার সময়ে ফজরের নামাজ পড়লে সেই নামাজ হয় না। -(সহীহ মুসলিম ১৩৭৩)

07/12/2024

ফজরের সুন্নত পড়তে না পারলে যা করবেন

ফজরের নামাজের সময় অনেকে মসজিদে গিয়ে দেখেন, জামাত শুরু হয়ে গেছে অথবা ইকামত চলছে। এক্ষেত্রে তারা দ্বিধা-দ্বন্ধে পড়ে যান সুন্নত পড়বেন কিনা? এই অবস্থায় তাদের দেখতে হবে সুন্নত পড়ে ফরজ নামাজের সময় ইমাম সাহেবকে কমপক্ষে দ্বিতীয় রাকাতে পাওয়ার সম্ভাবনা কতটা। যদি সম্ভব হয়, তাহলে সুন্নত পড়েই জামাতে শরিক হতে হবে।

এ প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এবং আবু দারদা (রা.)-এর মতো বিশিষ্ট সাহাবিদের থেকে বর্ণিত আছে, তারা ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে নিতেন। আবু দারদা (রা.) মসজিদে প্রবেশ করে মুসল্লিদের ফজরের জামাতে কাতারবদ্ধ পেলে মসজিদের এক কোণেসুন্নত পড়তেন। অতপর জামাতে শরিক হতেন। (শরহু মায়ানিল আসার)

তবে ইমাম সাহেবকে দ্বিতীয় রাকাতে পাওয়া না গেলে সুন্নত পড়া ছাড়াই জামাতে অংশ নেবে। এক্ষেত্রে পরে তা পড়ে নিতে হবে। কারণ, ফজরের দুই রাকাত সুন্নত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাদিস শরিফে যার প্রভূত ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছে। এছাড়া এর প্রতি যতটা তাগিদ দেয়া হয়েছে, অন্য সুন্নতের ক্ষেত্রে ততটা দেয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা ফজরের সুন্নত ছেড়ে দিও না। এমনকি শত্রুবাহিনী তোমাদের তাড়া দিলেও। ’ (আবু দাউদ, হাদিস নং : ১২৫৮) আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ফজরের সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে, সেটির চেয়ে উত্তম। (মুসলিম, হাদিস নং : ৭২৫)

আরেক হাদিসে আছে, নবী (সা.) ফজরের দুই রাকাত সুন্নতে এত গুরুত্ব দিতেন যে, অন্য কোনও নফল বা সুন্নত নামাজে তত দিতেন না। (বুখারি, হাদিস নং : ১১৬৩; মুসলিম, হাদিস নং : ৭২৪)

তাই, ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলে যদি মুসল্লিদের সঙ্গে দ্বিতীয় রাকাত পাওয়া যায়, তাহলে সুন্নত পড়ে নিতে হবে। কিন্তু সেটা সম্ভব না হলে জামাতে শরিক হয়ে যাবে। আর সূর্যোদয়ের পর সুন্নত পড়ে নেবে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ফজরের দুই রাকাত সুন্নত পড়তে পারে না, সে যেন তা সূর্যোদয়ের পর পড়ে নেয়। ’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ৪২৩)

কোনও কোনও ফকিহ অবশ্য ইমামকে তাশাহহুদে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সুন্নত পড়ে নেয়ার কথা বলেছেন। তবে ওপরে উল্লেখিত কথাগুলোই অধিকাংশ ফকিহ’র অভিমত

25/11/2024

দরুদ শরিফ পড়ার ফজিলত

একদিন এক লোক রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে নামাজ পড়ে দোয়া করল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার গুনাহ মাফ করো এবং আমার ওপর রহম করো!’ তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, ‘ওহে মুসল্লি! তুমি খুব তাড়াহুড়া করেছ। শোনো, যখন তুমি নামাজ পড়বে, তখন প্রথমে আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করবে, তারপর আমার ওপর দরুদ পাঠ করবে এবং (সবশেষে নিজের জন্য) দোয়া করবে।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসায়ি ও মিশকাত)

ভক্তির সঙ্গে দরুদ শরিফ পড়লে বান্দার গুনাহ মাফ করা হয়। দরুদ পাঠের অশেষ সওয়াব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর মাত্র একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করেন এবং কমপক্ষে তার ১০টি গুনাহ মাফ করেন। তার আমলনামায় ১০টি সওয়াব লিপিবদ্ধ করেন এবং আল্লাহর দরবারে তাঁর মর্যাদা ১০ গুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়।’ (নাসায়ি)

দরুদ ফারসি শব্দ। এর অর্থ শুভকামনা বা কল্যাণ প্রার্থনা। ধর্মের পরিভাষায় দরুদ বলতে বোঝায় ‘আস সালাত আলান নবি’, অর্থাৎ নবীজি (সা.)–এর জন্য শুভকামনা। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম উচ্চারণের সময় সর্বদা ‘সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ (অর্থ: আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর ওপর) বলা হয়। এটি একটি দরুদ। আল্লাহর কাছে ইবাদত-বন্দেগি গ্রহণযোগ্য করতে পরম ভক্তি ও ভালোবাসাভরা অন্তরে নিবিষ্টভাবে নবী করিম (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা একটি নেক আমল। দোয়া কবুলের জন্য মহানবী (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করা অত্যন্ত জরুরি। দরুদ শরিফ পাঠ করলে আল্লাহর দরবারে ইবাদতের বিনিময় সুনিশ্চিত হয়। দরুদ পড়া এমন এক ইবাদত, যা আল্লাহ অবশ্যই কবুল করেন।

পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা ও নবীর জন্য দোয়া করেন। হে বিশ্বাসীগণ, তোমরাও নবীর জন্য দোয়া করো ও পূর্ণ শান্তি কামনা করো।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৬)

হজরত কাব ইবনে ওজারা (রা.) বলেছেন, ‘একদিন আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার ওপর আমরা কীভাবে দরুদ পড়ব?

তিনি বললেন, বলো, আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ; আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাকতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।

অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর বংশধরদের ওপর এই রূপ রহমত নাজিল করো, যেমনটি করেছিলে ইব্রাহিম ও তাঁর বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর বংশধরদের ওপর বরকত নাজিল করো, যেমন বরকত নাজিল করেছিলে ইব্রাহিম ও তাঁর বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়’ (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তির নাক মাটিতে ঘেঁষে যাক, যার কাছে আমার নাম উচ্চারিত হয় অথচ সে আমার ওপর দরুদ পড়ে না।’ (তিরমিজি)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে, যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পড়ে।’ (তিরমিজি)

দৈনন্দিন জীবনে দরুদ শরিফ পাঠ করলে আল্লাহর দরবারে মানুষের দোয়া কবুল হয়। হাদিস শরিফে আছে, ‘কোনো দোয়াই আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না, যতক্ষণ সে দোয়ার আগে ও পরে নবী করিম (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়া না হয়।’

হাদিসে আরও আছে, ‘যে ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-এর পবিত্র নাম শোনার পর তাঁর ওপর দরুদ পড়ে না, সে ব্যক্তি সবচেয়ে বড় কৃপণ। তার ধ্বংসের জন্য জিবরাইল (আ.) দোয়া করেন।’

হজরত ওমর ফারুক (রা.) বলেন, ‘দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত আসমান ও জমিনের মধ্যখানে আটকে থাকে, ওপরে ওঠে না, যতক্ষণ পর্যন্ত নবী করিম (সা.)-এর ওপর দরুদ না পড়ে।’ (তিরমিজি ও মিশকাত)

28/08/2024

রিজিক নির্ধারিত, শর্ত তালাশ করতে হবে ,
প্রত্যেক মানুষের রিজিক নির্ধারিত। একজন মানুষ যা কিছু পান বা লাভ করেন, পূর্বনির্ধারিত ছিল বলে তিনি তা পেয়ে থাকেন। যা কিছু মানুষ পান না বা লাভ করেন না, নির্ধারিত ছিল না বলেই তিনি তা পাননি বা লাভ করেননি। নির্ধারিত রিজিকে কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। কেউ এক মুঠো বেশি রিজিক পাবে না, এক মুঠো কমও পাবে না। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তোমাদের পৃথিবীতে ঠাঁই দিয়েছি এবং তোমাদের জন্য তাতে রেখেছি জীবনোপকরণ। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ১০)

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আপন আপন মাতৃগর্ভে তোমরা প্রত্যেকেই চল্লিশ দিন পর্যন্ত (শুক্র হিসেবে) জমা ছিলে। তারপর চল্লিশ দিন রক্তপিণ্ড হিসেবে, এরপর চল্লিশ দিন গোশতের পিণ্ড হিসেবে জমা ছিলে। এরপর আল্লাহ–তাআলা একজন ফেরেশতা পাঠান এবং বান্দার রিজিক, মৃত্যু, দুর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য—এ চারটি বিষয় লেখার আদেশ প্রদান করেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৬৫৯৪)
রিজিক আল্লাহ–তাআলার পক্ষ থেকে নির্ধারিত। তার তালাশ করা বা অনুসন্ধান করা বান্দার দায়িত্ব। রিজিক আল্লাহ–তাআলার হাতে, চেষ্টা বান্দার হাতে। আল্লাহ–তাআলা রিজিক নির্ধারণ করে রেখেছেন বলে তার মানে এই নয়, সে রিজিক আপনা–আপনি আমাদের কাছে এসে হাজির হবে। আকাশ থেকে রিজিক নাজিল হবে, আর বান্দা কেবল তা গ্রহণ করে ধন্য হবে। আল্লাহ–তাআলার ওপর পূর্ণ ভরসা রেখে প্রয়োজন ও চাহিদা অনুয়ায়ী রিজিক অনুসন্ধান করতে হবে। আল্লাহ–তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘অতঃপর নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করবে, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।’ (সুরা জুমআ, আয়াত: ১০)

মুত্তালিব ইবনে হানতাব (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় জিবরাইল (আ.) আমার অন্তরে অহি ঢেলে দিয়েছেন, অবশ্যই রিজিক শেষ হওয়ার আগে কারও মৃত্যু হয় না। সুতরাং তোমরা হারাম ছেড়ে হালাল পথে রিজিকের অনুসন্ধান করো।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ২৫৪)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)–র বর্ণনায় আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হালাল রিজিক অন্বেষণ করা দ্বীনের ফরজগুলোর পর অন্যতম ফরজ।’ (সুনানুল কুবরা, বাইহাকি, খণ্ড ৬, হাদিস: ১১,৬৯৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘হে মানুষ! আল্লাহ–তাআলাকে ভয় করো এবং উত্তম ও ভারসাম্যপূর্ণ পন্থায় রিজিক অনুসন্ধান করো। কারণ কোনো প্রাণী তার জন্য বরাদ্দকৃত রিজিক প্রাপ্ত না হয়ে মৃত্যুবরণ করবে না। যদিও রিজিক লাভ করাটা তার জন্য বিলম্বিত হয়। সুতরাং আল্লাহকে ভয় করো ও ভারসাম্যপূর্ণ পন্থায় রিজিক তালাশ করো। যা হালাল, তা গ্রহণ করো; যা হারাম, তা পরিত্যাগ করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২,১৪৪)

31/03/2024

শবে কদরের নামাজের নিয়ত ও পড়ার নিয়ম

শবে কদর বা লাইলাতুল কদর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাত। পবিত্র কোরআন ও একাধিক হাদিসের ভাবার্থ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এ রাতে কোরআনে কারিম নাজিল হয়েছে বলে এ রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হয়।

রমজানের কোন রাতটি শবে কদরের তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি কোরআন ও হাদিসে। প্রতীকী ছবি
ধর্ম ডেস্ক

২ মিনিটে পড়ুন
শবে কদরের রজনিতে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সারা রাত নফল নামাজ, কোরআন ও হাদিসের আলোকে জিকির, কবর জিয়ারত এবং নিজের কৃত গুনাহর জন্য মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন।

তবে রমজানের কোন রাতটি শবে কদরের তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি কোরআন ও হাদিসে। তবে এ সম্পর্কে কতগুলো নিদর্শন দেয়া হয়েছে।

হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে কদর তালাশ করতে বলেছেন।

নামাজের নিয়ত আরবিতে

‘নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তায়া'লা রাকআ'তাই ছালাতি লাইলাতিল কদর-নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কা’বাতিশ্ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।’

অর্থ: আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য শবে কদরের দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

আরও পড়ুন: পবিত্র শবে কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত

শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম

লাইলাতুল কদরে বিশেষ কোনো নামাজের নিয়ম বা পদ্ধতি নেই। লাইলাতুল কদরের রাতে দুই রাকাত করে নফল নামাজ যত সুন্দর ও মনোযোগসহকারে পড়া যায় ততই ভালো। দুই রাকাত, দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি পড়তে পারবেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করবেন, দোয়া পড়বেন, ইস্তেগফার পড়বেন ও তওবা করবেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন।

এ ছাড়া বিশেষ কিছু সুরা পড়তে হবে, এটা লোকমুখে প্রচলিত আছে, তবে এর কোনো ভিত্তি নেই। তবে চাইলে বেশি বেশি সুরা কদর ও সুরা ইখলাস পড়তে পারেন।

নামাজ শেষে নিচের দোয়াটি কমপক্ষে ১০০ বার পড়া উত্তম

‘সুব্‌হানাল্লাহি ওয়াল হাম্‌দু লিল্লাহি ওয়া লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর, লা হা’ওলা কুয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহিল্‌ আলীয়্যিল আযীম।’

আরও পড়ুন: শবে কদরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল

এই রাতে যে দোয়া বেশি পড়বেন

হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ, শবে কদরের রাতে আমার কোন দোয়াটি পড়া উচিত?' তিনি তাকে পড়ার জন্য নির্দেশ দিলেন: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি।’ অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল এবং ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। তাই আমাকে ক্ষমা করুন।’ (সুনানে ইবনে মাজা)

22/01/2024

নামাজ পড়ার সময় সুরা আগে-পরে হলে কী করবেন

সুরা ফাতিহার পর প্রথম রাকাতে সুরা ইখলাস পড়ে পরের রাকাতে সুরা ফালাক বা সুরা নাস পড়া যাবে কি? নামাজে সুরা ‘আগে-পরে’ পড়ার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা কি আবশ্যক? নামাজে সুরা ফাতিহা পড়ার পর ফরজ কিংবা নফল নামাজের ক্ষেত্রে অনেকে একাধিক সমস্যায় পড়েন।

ইচ্ছাকৃতভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে সুরা বা কিরাত পড়া মাকরুহ। তবে অনিচ্ছায় হলে মাকরুহ হবে না। কিরাতের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার বিধান শুধু ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে। নফলের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য নয়। ‘দুররুল মুখতার’ গ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘নফল নামাজে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে পড়া মাকরুহ নয়।’ মাকরুহ হলে শাস্তি পেতে হবে না, তবে এ ধরনের কাজ এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

নামাজের রাকাতগুলোতে সুরা পড়ার ক্ষেত্রে মৌলিক কয়েকটি কথা স্মরণ রাখলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। যেমন সুরা ফাতিহা পড়ার পর প্রথম রাকাতে যে সুরা পড়বেন, পরের রাকাতে তার পরবর্তী সুরা পড়বেন। অথবা প্রথম রাকাতে যে সুরা পড়বেন, দ্বিতীয় রাকাতে দুই সুরা ছেড়ে দিয়ে তার পরের সুরা পড়া। যেমন প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কুরাইশ পড়া যায়। অথবা প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর দুই সুরা (মাউন, কাউসার) বাদ দিয়ে সুরা কাফিরুন পড়া যায়।

সুরা আগে-পরে পড়া

সুরা ফাতিহা পড়ার পর প্রথম রাকাতে যে সুরা পড়বেন, পরের রাকাতে তার পরবর্তী সুরা পড়বেন। কিন্তু প্রথম রাকাতে কোনো সুরা পড়ে পরের রাকাতে তার আগের কোনো সুরা পড়া মাকরুহ।

প্রথম সুরা শুরু করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন সেই সুরার পর পরের রাকাতে পড়ার মতো কোনো সুরা থাকে। যেমন প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে সুরা হুমাজাহ পড়া মাকরুহ। কারণ, এতে কোরআনের সুরার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। তবে এমনটা ভুলক্রমে ফেললে সমস্যা নেই।

উল্টোপাল্টা পড়া

সুরা ফাতিহা পড়ার পর সুরা মেলানোর ক্ষেত্রে প্রথম রাকাতে বড় কোনো সুরার মাঝখান থেকে কিছু অংশ পড়া এবং এরপরের রাকাতে আরেক সুরার মাঝখান থেকে পড়া উত্তম নয়। উত্তম হলো বড় সুরার যেখান থেকে শুরু করা হয়েছে, সেখান থেকেই তা ধারাবাহিকভাবে পড়ে নামাজ শেষ করা। এ ক্ষেত্রেও ভুলে উল্টাপাল্টা হয়ে গেলে সমস্যা নেই। তবে ইচ্ছা করে এমন করা যাবে না।

এক সুরা বাদ দিয়ে আরেক সুরা পড়া

এক সুরা পড়ার পর মাঝখানে এক সুরা বাদ দিয়ে পরের সুরা পড়া মাকরুহ। তবে দুই সুরা বাদ দিয়ে পরের সুরা পড়াতে কোনো সমস্যা নেই। যেমন প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কুরাইশ বাদ দিয়ে সুরা মাউন পড়া মাকরুহ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সুরা কাউসার বা কাফিরুন বা এরপরের সুরাগুলো পড়া যায়। তবে ভুলে এমন হলে সমস্যা নেই।

সুরার অংশবিশেষ পড়া

সুরা নাসের আয়াতসংখ্যা ৬। কেউ এর প্রথম অংশ দিয়ে এক রাকাত পড়ে বাকি অংশ দিয়ে দ্বিতীয় রাকাতে পড়তে চাইলে খেয়াল রাখতে হবে, যেন কমপক্ষে তিন আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করা হয়। তিন আয়াতের সীমা হলো কমপক্ষে ৩০ হরফ। কেউ যদি সুরা নাসের মতো করে নামাজ পড়ে, তবে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে উত্তম হলো পূর্ণ সুরা তিলাওয়াত করা।

কেউ কেউ ব্যতিক্রম সুরা পড়াকে মাকরুহ বলেন, আবার কেউ ধারাবাহিকতা রক্ষা করাকে ওয়াজিব বলেন। তবে এসবের যা-ই হোক না কেন, সবার নামাজই হবে।

24/10/2023

ইমামকে শেষ বৈঠকে পেলে তাশাহুদের পর করণীয়

নামাজের গুরুত্বপূর্ণ ফরজগুলোর একটি হলো শেষ বৈঠক। দুই রাকাত, তিন এবং চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজের শেষ রাকাতে দুই সিজদার পর তাশাহুদ পরিমাণ বসা ফরজ। তাশাহুদ পড়া ওয়াজিব। তাশাহুদের পর দরুদ শরিফ এবং দোয়ায়ে মাসূরা পড়া সুন্নত।

আর প্রথম বৈঠক অর্থাৎ, তিন ও চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজের দ্বিতীয় রাকাতে শুধু তাশাহুদ পড়া ওয়াজিব।

তবে কোনো ব্যক্তি যদি তৃতীয় অথবা চতুর্থ রাকাতে ইমামের সঙ্গে যুক্ত হন, তাহলে ইমামের শেষ বৈঠক তার জন্য প্রথম বৈঠক হিসেবে গণ্য হবে। তখন ইমাম তাশাহুদ শেষ করে দরুদ ও দোয়ায়ে মাসূরা পড়ার সময়টাতে এমন ব্যক্তি কী করবেন এ নিয়ে সন্দেহে পড়ে যান অনেকে।

বিজ্ঞাপন

এমন পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চেয়ে একজন প্রশ্ন করেছেন-

‘আমি সব সময় তাকবীরে উলার (প্রথম তাকবির) সঙ্গে নামাজ আদায় করি। গতকাল হঠাৎ জোহরের নামাজে তাকবীরে উলা ছুটে যায়। ইমামের সঙ্গে তৃতীয় রাকাতে শরীক হই। চতুর্থ রাকাতের বৈঠকে আমি সন্দেহে পড়ে যাই যে, আমি কি শুধু তাশাহহুদ পড়ব? নাকি দরুদ ও দোয়ায়ে মাসূরাও পাঠ করতে পারব? কারণ তা আমার জন্য প্রথম বৈঠক ছিল।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন

ইমামকে সিজদায় পেলে যেভাবে নামাজ পড়বেন

তাশাহুদ পড়ার নিয়ম

এমন পরিস্থিতির ব্যাপারে ইসলামি আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন, মাসবুক ইমামের সঙ্গে শেষ বৈঠকে শুধু তাশাহহুদ পড়বে। কারণ ইমামের এটি শেষ বৈঠক হলেও মাসবুকের তা প্রথম বৈঠক। অবশ্য এক্ষেত্রে মাসবুক তাশাহহুদ ধীরে ধীরে পড়বে। যেন তা ইমামের সালাম পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হয়। আর যদি সালামের আগেই পড়া শেষ হয়ে যায়, তাহলে সে পুনরায় শুরু থেকে তাশাহহুদ পড়তে পারে। আবার চাইলে সে চুপও থাকতে পারে। অবশ্য ইমামের অনুসরণ করে সে দরুদ ও দোয়া মাসুরাও পড়তে পারবে। ইমাম সারাখসী রাহ. এমনটিই বলেছেন।

(আলমাবসূত, সারাখসী ১/৩৫; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৪০৩; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৬৫; আলবাহরুর রায়েক ১/৩২৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫১১; রদ্দুল মুহতার ১/৫১১, আল কাউসার অনলাইন, ৬২৮০)

এনটি

30/09/2023

মহানবী সা. সপ্তাহে দুইদিন রোজা রাখতেন যে কারণে

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেসব নফল ইবাদত করতেন তার অন্যতম একটি হলো- সপ্তাহের দুই দিন অর্থাৎ সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা।

বিজ্ঞাপন

এই দুই দিনের রোজা সম্পর্কে হজরত আবু কাতাদা আনসারি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম-কে সোমবার দিনে রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এই দিন আমি জন্ম নিয়েছি, আর এদিনই আমার উপর কোরআন নাজিল হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস, ২৮০৭; ইবনে খুজাইমা, হাদিস, ২১১৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস, ২২৫৫০; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস, ২৪২৮)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর কাছে আমল উপস্থাপন করা হয়। তাই রোজা থাকা অবস্থায় আমার আমল উপস্থাপন করা হোক— এটা পছন্দ করি।’ (তিরমিজি, হাদিস, ৭৪৭; সুনানে নাসায়ি, হাদিস, ২৬৬৭)

রাবিআ ইবনুল গাজ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি আয়শা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর কাছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম-এর রোজা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন। তখন তিনি জবাবে বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসাল্লাম সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোজা রাখার ব্যাপারে খুবই মনোযোগী ছিলেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস, ১৭৩৯; ইবনে হিব্বান, হাদিস, ৩৬৪৩)

বিজ্ঞাপন

এই হাদিস থেকে বোঝা যায় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সোমবার তার জন্মদিন হওয়ার কারণে যেমন রোজা রেখেছেন তেমনি এ দিনটির মর্যাদার কারণেও রোজা রেখেছিলেন। কারণ, এ দিনে আল্লাহ তার ওপর ওহী নাজিল করেছেন। এ দিনে তার আমলনামা আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। তাই রোজা অবস্থায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আমলনামা আল্লাহর সামনে উপস্থাপন হোক তিনি এটাই চাইতেন। আর এই দিন রোজা রাখার অনেকগুলো কারণের মধ্যে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মও একটি কারণ ছিলো।

আরও পড়ুন :কোরআন তিলাওয়াতকারী সম্পর্কে যা বলেছেন মহানবী সা.

তাই কেউ ক্ষমা লাভ, আল্লাহ তায়ালার নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় এবং তার আগমন ও তার ওপর অর্পিত নবুয়তের শুকরিয়া হিসেবে রোজা রাখতে চাইলে তা প্রশংসনীয় এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নতের অনুকরণ হিসেবে গণ্য হবে।

তবে, এর বাইরে বিশেষ কোন সপ্তাহ, বিশেষ কোন মাসে এ আমলটি করা ঠিক হবে না। বরং সবার উচিত নিয়মিত এ আমল করার চেষ্টা করা অথবা সাধ্যানুযায়ী যেকোনো সময়, যেকোনো সপ্তাহ বা মাসে এই আমল করা। বিশেষ উপলক্ষে এই আমল করলে তা বিদয়াত বলে গণ্য হবে।

31/05/2023

নামাজের মধ্যেও মানুষ শিরক করে যেভাবে
প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। কিন্তু যথাযথভাবে নামাজ না পড়লে নামাজ কবুল হয় না। আবার আল্লাহর সন্তুষ্টি বাদ দিয়ে মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্য থাকলেও নামাজ কবুল হয় না। যেসব নামাজির অন্তরে মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্য থাকে, পবিত্র কোরআনে তাদেরকে মুনাফিক হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়, আর তিনিও তাদের ধোঁকায় ফেলেন। ওরা যখন নামাজে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায়—লোক দেখানোর উদ্দেশে। আর তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে।’ (সুরা নিসা: ১৪২)

মানুষের প্রশংসা, সামাজিক প্রভাব ও কারো দৃষ্টি আকর্ষণ ইত্যাদির মোহে ইবাদত করাকে ইসলামি পরিভাষায় ‘রিয়া’ বা প্রদর্শনপ্রিয়তা বলা হয়। এই প্রদর্শনপ্রিয়তাকে সামনে রেখে মানুষ যেভাবে নামাজে শরিক হতে পারে, একইভাবে নামাজের মধ্যেও এই প্রদর্শনপ্রিয়তা জেগে ওঠতে পারে। যেমন কাউকে দেখানোর উদ্দেশ্যে হঠাৎ সুন্দরভাবে নামাজ পড়তে শুরু করা, কেরাত সুন্দরভাবে তেলাওয়াত করা বা রুকু সেজদা ধীরেসুস্থে আদায় করা।

এটি শিরক। হাদিসে এ প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘..আমি কি তোমাদেরকে এমন বস্তু সম্পর্কে সংবাদ দেবো, যা তোমাদের জন্য দাজ্জালের চেয়েও অধিক ভয়ঙ্কর। (বর্ণনাকারী বলেন) আমরা বললাম, হ্যাঁ, অবশ্যই। তিনি (স.) বললেন, গোপন শিরক। যেমন, কোনো ব্যক্তি নামাজ পড়ছিলো, অতঃপর কেউ তাকে দেখছে বলে সে নামাজকে খুব সুন্দর করে পড়তে শুরু করল।’ (ইবনু মাজাহ: ৪২৭৯; আহমদ: ৩/৩০; হাকিম: ৪/৩২৯)
আরও পড়ুন: ছোট শিরক সবচেয়ে ভয়ঙ্কর

প্রিয়নবী (স.) উম্মতের এধরণের শিরকের ব্যাপারে ভীত থাকতেন। কারণ মুমিনের ইবাদত ধ্বংস করে তাকে জাহান্নামি বানানোর অন্যতম ফাঁদ এই ‘রিয়া’। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘আমি তোমাদের ব্যাপারে ছোট শিরক নিয়ে যত ভয় পাচ্ছি, অন্য কোনো ব্যাপারে এত ভীত নই।’ সাহাবিরা বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, ছোট শিরক কী? তিনি বলেন, রিয়া বা প্রদর্শনপ্রিয়তা। মহান আল্লাহ কেয়ামতের দিন বান্দার আমলের প্রতিদান দেওয়ার সময় বলবেন, ‘তোমরা পৃথিবীতে যাদের দেখানোর জন্য আমল করতে তাদের কাছে যাও। তাদের কাছে দেখো তোমাদের কোনো প্রতিদান আছে কি না?’ (মুসনাদে আহমদ: ২২৫২৮)

আবু উমামা বাহেলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি রাসুল (স.)-এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! অমুক ব্যক্তি যুদ্ধ করছে সওয়াব ও সুনামের জন্য। এমতাবস্থায় সে পুণ্য পাবে কি? রাসূল (স.) বললেন: সে কিছুই পাবে না। লোকটি রাসুল (স.)-কে এ কথাটি তিনবার জিজ্ঞেস করলো। আর রাসুল (স.) প্রতিবারই তাকে বললেন, সে কিছুই পাবে না। অতঃপর রাসুল (স.) বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা এমন আমলই গ্রহণ করে থাকেন, যা হবে একেবারেই নিষ্কলুষ এবং যা শুধু তার জন্য নিবেদিত”। (নাসায়ি: ৩১৪০; বায়হাকি: ৪৩৪৮)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা লোক দেখানো ইবাদত থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেন,‘..যে ব্যক্তি তার রবের সঙ্গে সাক্ষাতের আশা রাখে, সে যেন সৎ কাজ করে এবং তার রবের ইবাদতে কাউকে অংশীদার না করে।’ (সুরা কাহাফ: ১১০)
আরও পড়ুন: মসজিদে যেসব ভুল করা যাবে না

হাদিসে রিয়াকে শিরকে আসগর বা ছোট শিরক এবং শিরকে খাফি বা লুকায়িত শিরক বলা হয়েছে। এমন শিরকে লিপ্ত ব্যক্তি ইসলামের গণ্ডি থেকে সম্পূর্ণরূপে বের হয়ে যায় না বটে, তবে তা কবিরা গুনাহ তথা মহাপাপ অপেক্ষা জঘন্যতম। আল্লাহ তাআলা বলেন—فَلاَ تَجْعَلُوْا لِلهِ أَنْدَادًا وَّأَنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ ‘সুতরাং তোমরা আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কাউকে শরিক করো না। অথচ তোমরা এ সম্পর্কে সম্যক অবগত রয়েছো।’ (সুরা বাকারা: ২২)

উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় হজরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) বলেন— الْأَنْدَادُ هُوَ الشِّرْكُ أَخْفَى مِنْ دَبِيْبِ النَّمْلِ عَلَى صَفَاةٍ سَوْدَاءَ فِيْ ظُلْمَةِ اللَّيْلِ، وَهُوَ أَنْ تَقُوْلَ: وَاللهِ وَحَيَاتِكَ يَا فُلاَنُ!! وَحَيَاتِيْ، وَتَقُوْلَ: لَـوْلاَ كَلْبَةٌ هَذِهِ لَأَتَانَا اللُّصُوْصُ، وَلَوْلاَ الْبَطُّ فِيْ الدَّارِ لَأَتَى اللُّصُوْصُ، وَقَوْلُ الرَّجُلِ لِصَاحِبِهِ: مَا شَاءَ اللهُ وَشِئْتَ، وَقَوْلُ الرَّجُلِ: لَوْلاَ اللهُ وَفُلاَنٌ، لاَ تَجْعَلْ فِيْهَا فُلاَنًا، هَذَا كُلُّهُ بِهِ شِرْكٌ

“আনদাদ বলতে এখানে শিরককে বোঝানো হচ্ছে, যা অন্ধকার রাতে কালো পাথরে পিঁপড়ার চলার চেয়েও সূক্ষ্ম। যা টের পাওয়া কঠিন। যেমন এ কথা বলা যে—হে অমুক! আল্লাহ তাআলা এবং তোমার-আমার জীবনের কসম! অথবা এ কথা বলা যে, যদি কুকুরটা না হতো, চোর অবশ্যই আসত। যদি ঘরে হাঁসগুলো না থাকতো তাহলে অবশ্যই চোর ঢুকত। অথবা সঙ্গীকে এ কথা বলা যে, আল্লাহ তাআলা এবং তুমি না চাইলে কাজটা হতো না, অথবা আল্লাহ তাআলা এবং অমুক না থাকলে কাজটা হতো না। কারণ, এসব কথা শিরকের অন্তর্ভুক্ত।”

আরও পড়ুন: ‘নামাজ চুরি’ নিয়ে যা বলেছেন মহানবী (স.)

আল্লাহ তাআলা বলেন— قُلْ إِنَّمَآ أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوْحَى إِلَيَّ أَنَّمَآ إِلاَهُكُمْ إِلاَهٌ وَّاحِدٌ، فَمَنْ كَانَ يَرْجُوْ لِقَآءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا، وَلاَ يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا ‘আপনি বলে দিন, নিশ্চয়ই আমি তো তোমাদের মতোই একজন মানুষ। তবে আমার প্রতি এ প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের মাবুদই একমাত্র মাবুদ। সুতরাং যে ব্যক্তি তার প্রভুর সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরিক না করে।’ (সুরা কাহফ: ১১০)
উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনুল ক্বাইয়িম (রাহ.) বলেন— كَمَا أَنَّ اللهَ وَاحِدٌ، لاَ إِلاَهَ سِوَاهُ، فَكَذَلِكَ يَنْبَغِيْ أَنْ تَكُوْنَ الْعِبَادَةُ لَهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، فَكَمَا تَفَرَّدَ بِالْإِلاَهِيَّةِ يَجِبُ أَنْ يُفْرَدَ بِالْعُبُوْدِيَّةِ، فَالْعَمَلُ الصَّالِحُ هُوَ الْـخَالِصُ مِنَ الرِّيَاءِ الْـمُقَيَّدُ بِالسُّنَّةِ ‘যখন আল্লাহ তাআলা একক। তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তখন সকল ইবাদত একমাত্র তাঁরই জন্য হতে হবে। অতএব নেক আমল বলতে রাসুল (স.)-এর আদর্শসম্মত রিয়ামুক্ত ইবাদতকেই বুঝানো হয়। মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্য থাকলে তা নেকআমল বলে গণ্য হবে না।’

প্রিয়নবী (স.) শিরক থেকে আত্মরক্ষার জন্য দোয়া শিখিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘পিপড়ার নিঃশব্দ গতির মতোই শিরক তোমাদের মধ্যে গোপনে অনুপ্রবেশ করে। তিনি আরো বললেন, ‘আমি তোমাদের একটি উপায় বলে দিচ্ছি, যা করলে তোমরা বড় শিরক ও ছোট শিরক থেকে নিরাপদ থাকতে পারবে। তোমরা প্রতিদিন তিনবার পড়বে—اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ شَيْئًا وَأَنَا أَعْلَمُ وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকাবিকা শাইয়ান ওয়া আনা আঅলামু ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আঅলামু। অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার সঙ্গে কাউকে শরিক করা থেকে আশ্রয় চাই। জানা-অজানা (শিরক-গুনাহ) থেকেও ক্ষমা চাই।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৭২১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গোপন শিরক বোঝার তাওফিক দান করুন এবং তা থেকে হেফাজত করুন। আমিন

31/05/2023

কোনো কারণে জুমা ছুটে গেলে কী করবেন?...
আল্লাহ তাআলার নির্দেশ হলো জুমার নামাজ পড়া। শুক্রবার জোহরের ওয়াক্তে ৪ রাকাতের পরিবর্তে দুই রাকাত নামাজ পড়তে হয়। জুমার নামাজ পড়তে আল্লাহ তাআলা ঈমানদার বান্দাকে লক্ষ্য করে বলেন-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِذَا نُوۡدِیَ لِلصَّلٰوۃِ مِنۡ یَّوۡمِ الۡجُمُعَۃِ فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ ذَرُوا الۡبَیۡعَ ؕ ذٰلِکُمۡ خَیۡرٌ لَّکُمۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ

হে ঈমানদারগণ! জুমার দিন (শুক্রবার) যখন নামাজের জন্য (আজানের মাধ্যমে) আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা দ্রুত আল্লাহর স্মরণে ছুটে চল এবং বেচা-কেনা বন্ধ করে দাও। এটি তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা উপলব্দি করতে পার।’ (সুরা জুমা: আয়াত ৯)

হাদিসে পাকে এসেছে- প্রত্যেকে প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির জন্য জুমা আবশ্যক। হজরত হাফসা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জুমার নামাজ আদায় করা ওয়াজিব তথা অপরিহার্য কর্তব্য।’ (নাসাঈ)

কোরআনুল কারিম ও নবিজির সুন্নার আলোকে জুমা আদায় করা মানুষের জন্য আবশ্যক করা হয়েছে। এ জন্য প্রতিটি মুসলিমকে অবশ্যই জুমার নামাজ গুরুত্বসহ পড়া উচিত। কিন্তু কোনো কারণে যদি জুমা ছুটে যায় তবে সে ব্যক্তি কী করবে?

জুমার নামাজ ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেওয়া মারাত্মক অপরাধ। আল্লাহর বিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কেননা জুমার নামাপ পড়ার সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে আল্লাহ তাআলা। যারা এ নামাজ ছেড়ে দেবে, তাদের প্রসঙ্গে হাদিসের ভয়বাহ অপরাধ ও শাস্তির কথা বর্ণনা করা হয়েছে। হাদিসে পাকে এসেছে-

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অবহেলা ও অলসতা করে পর পর তিন জুমা ছেড়ে দেবে, মহান আল্লাহ তার অন্তরে মোহর মেরে দেবেন।’ (আবু দাউদ)

হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো ওজর এবং অনিষ্টের ভয় ছাড়া জুমা নামাজে অংশ গ্রহণ করে না, ওই ব্যক্তির নাম মুনাফিকের এমন দফতরে লেখা হয়, যেখান থেকে তার নাম কখনো মোছা কিংবা রদবদল করা হয় না।’ (নাউজুবিল্লাহ)

আর যদি কেউ জুমার নামাজে মাসবুক হয় তবে তার করণীয় হলো-

১. কোনো ব্যক্তি যদি জুমার নামাজ পড়তে এসে এক রাকাত পায় তবে সে ইমামের সালাম ফেরানোর পর বাকি এক রাকাত পড়ে নিলেই জুমা আদায় হয়ে যাবে।

২. অনুরুপভাবে কেউ দ্বিতীয় রাকাতের রুকুর আগে ইমামের সঙ্গে নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারলে ইমামের সালাম ফেরানোর পর ২ রাকাত আদায় করলে জুমার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু যদি কেউ-

৩. নামাজের দ্বিতীয় রাকাতে রুকুর পর জামাতে অংশগ্রহণ করে তবে তার এ অংশগ্রহণ জুমা হিসেবে বিবেচিত হবে না। বরং তাকে ইমামের সালাম ফেরানোর পর ৪ রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে। এক্ষেত্রে জামাতে অংশগ্রহণের সময় জোহরের ৪ রাকাত নামাজ আদায়ের নিয়তে শমিল হবে এবং তা আদায় করে নেবে। হাদিসে এসেছে-

হজরত ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার এক রাকাত পেয়ে যায়, সে ব্যক্তি যেন আর এক রাকআত পড়ে নেয়। কিন্তু যে (দ্বিতীয় রাকাতের) রুকূ না পায়, সে যেন জোহরের ৪ রাকআত পড়ে নেয়।’ (তাবারানি, বায়হাকি, মুসান্নেফে ইবনে আবি শায়বা)

৪. আর যদি কোনো ব্যক্তি জুমার নামাজ না পায় বা মসজিদে গিয়ে দেখে জুমা নামাজ শেষ হয়ে গেছে তবে ওই ব্যক্তি জোহরের ৪ রাকাআত নামাজ পড়ে নেবে। কারণ জামাত ছাড়া একা একা জুমার নামাজ পড়া যায় না।

মনে রাখতে হবে

যারা জুমা নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যাবে, তারা অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনবে। কোনো ধরনের কথা না বলে ইমামের খুতবায় গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা জুমার খুতবা শোনা মুসল্লির জন্য ওয়াজিব।

এমনকি কেউ কথা বললে, তাকে- ‘চুপ কর’- এ কথাও বলা যাবে না। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ইমামের খুতবা দেওয়া অবস্থায় যদি তুমি তোমার সাথীকে বল- ‘চুপ কর’, তাহলে তুমি অনর্থক কথা বললে।’

হাদিসের অন্য বর্ণনায় এসছে, ‘এ কথাটা বেশি আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রকম অনর্থক কাজ করল, তার জন্য ওই জুমায় আর কিছু রইল না।’

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত জুমার নামাজ গুরুত্বসহ আদায় করা এবং জুমার খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শোনা। একান্তই যদি কেউ নামাজ না পায় তবে জোহরের নামাজ আদায় করে নেওয়া।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনার এবং জুমার নামাজ যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন

Address

Oxygen, West Shahid Nagar
Chittagong
4213

Telephone

+8801914207015

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ইসলামের আলোর পথ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to ইসলামের আলোর পথ:

Share

Category