
29/06/2025
গল্পের নাম: "শেষ চিঠি"
রাত ৩টা। শহরের একটি ছোট্ট বাসার জানালার পাশের টেবিলে বসে ছিল রায়হান। হাতে কাঁপা কাঁপা কলম, চোখে জল। সামনে একটি পুরনো খাম।
এই চিঠিটা লিখে সে আরেকবার মায়ের কাছে যেতে পারবে কি না, জানে না।
রায়হানের মা গ্রামের একজন গরিব সেলাই মেশিনের কাজ করা মহিলা। কত স্বপ্ন ছিল ছেলেকে মানুষ বানাবেন। ভাঙা ঘরের প্রতিটি কোণ জুড়ে ছিল মায়ের হাসি, আর রায়হানের প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার ব্যস্ততা।
কিন্তু সময় বদলে গেল।
ঢাকায় এসে রায়হান চাকরি পায়, নতুন জীবন পায়। ধীরে ধীরে ব্যস্ততা, অহংকার আর বড়লোক বন্ধুরা তাকে বদলে দেয়। একসময় নিজের মাকেও ফোন দেওয়া বন্ধ করে দেয় সে। মা বারবার ফোন দিতেন — “বাবা কেমন আছিস?”
রায়হান বলতো, “আমি মিটিংয়ে আছি মা, পরে কথা বলি।”
এভাবে ‘পরে’ বলতে বলতে এক বছর কেটে যায়।
মা আর ফোন দেন না।
একদিন হঠাৎ গ্রামের প্রতিবেশী ফোন করে জানায়—“রায়হান ভাই, তোমার মা হাসপাতালে। হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। শেষবারের মতো তোমার নাম নিচ্ছেন।”
রায়হান ছুটে যায়।
হাসপাতালে পৌঁছে দেখে, মায়ের নিঃশেষ নিঃশ্বাস চলেছে মাত্র কিছুক্ষণ আগে। মায়ের হাতে ধরা ছিল একটি চিঠি, যার ওপরে লেখা:
“রায়হান, যদি একদিন তুই ফিরে আসিস, জানবি মা সব ক্ষমা করে দেয়।”
রায়হান সেই চিঠির পাশে বসে রাতভর কাঁদতে থাকে। পৃথিবীর সবচেয়ে আপন মুখটা আর কোনোদিন ডেকে বলবে না—
“বাবা খেয়েছিস?”
---
📌 শিক্ষণীয়:
জীবনের দৌড়ে কখনও কখনও আমরা যাদের ভালোবাসা সবচেয়ে বেশি পাওয়ার যোগ্য, তাদেরই সবচেয়ে বেশি অবহেলা করি।
আজই সময়—একবার ফোন করে বলো, “মা, আমি তোমায় ভালোবাসি।”