
29/01/2024
শিক্ষাব্যবস্থা কী বেকারত্বের মূল কারণ?
আমার মতো হয়তো আপনারা অনেকেই মানেন, এটাই যে শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের দেশের বেকারত্বের মূল কারণ। আর যারা মানেন না!! তাদের জন্যে আমার এই লেখা।দেখুন শিক্ষাব্যবস্থা হওয়া দরকার কর্মমুখী, তত্ত্বীয় নয়।সারাজীবন যদি শুধু বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করার হয়, তাহলে তা বাস্তবমুখী প্রয়োগ হবে কি করে?
দেশের বাহিরের দেশ গুলো খেয়াল করলে দেখবেন, তাদের পড়াশোনার স্কিল বাস্তবমুখী হয়ে থাকে।যার কারণে মুখস্ত করে নিজেকে জর্জরিত করতে হয় না বইয়ের তাকে মাথা কুটে।
অনেকাংশে আমাদের দেশে নতুন কারিকুলামের শিক্ষাব্যবস্থা -র পাশাপাশি দরকার কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা!যা নেই, এই কারনে বেকারত্বের হার বেড়ে গিয়েছে আমাদের দেশে।কারন শিক্ষার্থীরা অফিসিয়াল কাজের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করলেও তেমন কাজ আমাদের দেশে খুব কম।
অন্যদিকে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা -র নাম শুনলেই সমাজে নাক ছিটানো লোকদের অভাব হয় না।কারন আমাদের দেশে ৮৫% শিক্ষিত বেকাররা প্রথম অপশন হিসেবে চাকরিকে প্রাধান্য দেন।অথচ এটার বিপরীত টাই হওয়ার উচিত ছিলো।তাই নই কী??
কারণ এই যে পরাধীনতা শব্দটি আমাদের অস্থির সাথে মিশে গেছে, যার জন্যে ইংরেজরা আমাদের ১৯০ বছর সু-আদরে শাসন করে গেলো।তাও আমাদের সুবোধ জেগে উঠতে একটা দীর্ঘ সময় লেগে গেলো, এই যে এখন সময় প্রতিবাদের। সময় এখন নতুন কিছু উদ্ভাবনের!এই গরীবের দেশে শৌখিন বিলাসিতার ঠাই কম।শুনতে হাস্যকর তাই না!! কিন্তু এটাই বাস্তব।
আমরা বাংলাদেশিরা বিল্ড-ইন চিন্তাভাবনা নিয়ে জন্মায়।উদ্ভাবনী কাজের তুলনায় ডেস্কের পিছনে বসে ডেস্কের নিচ দিয়ে আয় করা আমাদের পছন্দের পেশা হয়ে দাড়িঁয়েছে।
বাংলাদেশ হলো গলদের দেশ। লেখাপড়ায় গলদ,খাদ্যদ্রব্য গলদ,ব্যবসায় গলদ,রাজনীতিতে গলদ,মানুষেও গলদ।আমাদের শুধু কাজে শিক্ষিত হলে হবে না, কর্মদক্ষতা, গুণ,মেধা,আধুনিক বিশ্ব সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
বেকারত্ব থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় আছে কী!
অবশ্যই আছে!শুরুতেই বলেছিলাম শিক্ষাব্যবস্থা তত্ত্বীয় নই, কর্মমুখী হওয়া উচিত।যেমন-
১.জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রুপান্তর করা।
২.আত্নকর্মসংস্থানে আগ্রহী হওয়া।
৩.লিঙ্গ বৈষম্য না রাখা।
৪.নতুন কারিকুলাম শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আসা।
৫.উচ্চশিক্ষাকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া।
৬.ছোটবেলা থেকে শুদ্ধভাবে মাতৃভাষা এবং ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে পারা।
৭.প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক (lecturer) পদ বিলুপ্ত করতে হবে। পিএইচডি (PhD) বিহীন কাউকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে নেয়া যাবেনা (সারা বিশ্বে তাই করা হয়ে থাকে)।
৮.জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করা।
৯.ক্রিটিকাল থিংকিং এ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া, যাতে বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষায় উৎসাহিত হতে পারে।
১০.দর্শন ও নৈতিকতা শিক্ষাব্যবস্থা রাখা।
১১.প্রতিবন্ধীবান্ধব শিক্ষা ব্যবস্থা হবে। কেউ যেন কোন শারীরিক বা মানসিক সীমাবদ্ধতার জন্য শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সেই ব্যবস্থা থাকবে।
আমি মনে করি,আমার স্বপ্নের শিক্ষাব্যবস্থায় সবাই বৈশ্বিকভাবে চিন্তা করবে। দেশ, ধর্ম, জাতির উর্ধ্বে চিন্তা করা শিখবে। পশ্চিমা সভ্যতা মানেই খারাপ এধরণের কুপমুন্ডুকতা কখনো তাদের স্পর্শ করবে না। নিজেকে বড় ভাবার জন্য অন্যকে ছোট করবে না।এতেই দেশের বেকারত্বের কমবে।
ধন্যবাদ।
কলমে- এরিকা নন্দী।
পুনশ্চঃ ছবিটি দেওয়া হয়েছে যাতে পোস্টটি আকর্ষিত হয়।