পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ - পানছড়ি থানা শাখা

  • Home
  • Bangladesh
  • Khagrachari
  • পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ - পানছড়ি থানা শাখা

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ - পানছড়ি থানা শাখা পিসিপি পানছড়ি শাখার মূখপত্র।

27/06/2025
কল্পনা চাকমা অপহৃতা: অতঃপর সুশ্রী পল্লবীবাংলাদেশের ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে বিগত ১১ই জুন ও ১২ই জুনের মধ্যরাত...
08/06/2025

কল্পনা চাকমা অপহৃতা: অতঃপর
সুশ্রী পল্লবী

বাংলাদেশের ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে বিগত ১১ই জুন ও ১২ই জুনের মধ্যরাতে বাঘাইছড়ি থানার কজোইছড়ি আর্মি ক্যাম্পের লেঃ ফেরদৌস এর নেতৃত্বে সেনা ও ভিডিপি সদস্যদের একটি চিহ্নিত দল নিউ লাইল্যাঘোনায় আকস্মিক হানা দিয়ে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদিকা মিস কল্পনা চাকমাকে অপহরণ করে। সাধারণ পোষাকে ছদ্মাবরণে উক্ত সশস্ত্র দলটি রাতের অন্ধকারে ন্যাক্কারজনক এই কার্য সমাধা করার অপচেষ্টা করলেও কল্পনা চাকমার বড় দুই ভাই কালীচরণ (কালিন্দী কুমার) ও ক্ষুদিরাম (লাল বিহারী) সহজেই দুর্বৃত্তদের চিনে ফেলে। অপহরণকারীরা যখন কল্পনাদের বাড়ী ঘেরাও করে দরজা খুলে দেয়ার নির্দেশ দিচ্ছিল তখন বাড়ীতে ছিলেন কল্পনা চাকমা, তার মা বাধুনী চাকমা, বড় দুই ভাই কালীচরণ ও ক্ষুদিরাম এবং কালীচরণের স্ত্রী। ক্ষুদিরাম ঘুম থেকে জেগে উঠে লণ্ঠন হাতে দরজা খুলতে যাবার আগেই লেঃ ফেরদৌস ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা জোরপূর্বক দরজায় আঘাত করে বাড়ীতে ঢুকে পড়ে শক্তিশালী টর্চ লাইটের আলোয় তার দৃষ্টিশক্তি সাময়িক অচল করে দেয় এবং তার হাতের লৈন্ঠন নিভিয়ে ফেলে। সাথে সাথে অপহরণকারীদের একজন ক্ষুদিরামের চোখে কাপড় বেঁধে দেয়ার আগেই ক্ষুদিরাম হাত দিয়ে টর্চে'র উজ্জ্বল আলো খানিকটা বাধা দিয়ে এক পলক দেখে তিনজনকে চিনতে পারে। তারা হচ্ছে কজোইছড়ি ক্যাম্পের লেফটেনান্ট ফেরদৌস এবং ভিডিপি কম্যান্ডার নুরুল হক (মুন্সী মিঞার ছেলে) ও অপর ভিডিপি সদস্য সালেহ আহম্মেদ। অতপর কোন কিছু বুঝে উঠতে না উঠতেই ক্ষুদিরামকে টেনে হিচড়ে পার্শ্ববর্তী কাপ্তাই হ্রদের পানির কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হয়। একই সময়ে অপর তিন অপহরণকারী কল্পনা চাকমা ও তার অন্ত ভাই কালীচরণকে একইভাবেই চোখ ও দ্রুত বাঁধা অবস্থায় একই দিকে নিয়ে যেতে থাকে।

ইতিমধ্যে ক্ষুদিরামকে হাঁটু বরাবর জলে নামতে বাধ্য করে সশস্ত্র অপহরণকারীরা। অসহায় ক্ষুদিরাম জলে নামার সাথে সাথে লেঃ ফেরদৌস গুলি করার নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশের কথা শুনে ক্ষুদিরাম মুহুর্তে বিলম্ব না করে হ্রদের পানিতে ঝাঁপ দেয়। সঙ্গে সঙ্গে গুলির আওয়াজ শোনা যায় এবং কালীচরণ নিজেও একই পরিণতির কথা ভেবে চোখের বাঁধন এক ঝটকায় খুলে পালাতে থাকে। এই সময় তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ার শব্দ ও তার ছোট বোন কল্পনার "দাদা" "দাদা" চিৎকার শুনতে পান কালীচরণ। সৌভাগ্যবশতঃ এদিকে ক্ষুদিরাম ও কালীচরণ অক্ষত অবস্থায় প্রাণে বেঁচে নিজ বাড়ীতে ফিরে আসতে সক্ষম হলেও তাদের আদরের ছোট বোন কল্পনা ফিরেনি। দুর্বৃত্ত সেনা কর্মকর্তা লেঃ ফেরদৌস কর্তৃক আজ অবধি কল্পনা চাকমা অপহৃতা রয়েছে। মৃত বা জীবিত কোন অবস্থাতেই কল্পনার খোঁজ মিলেনি। এই হল কল্পনা চাকমা অপহরণের সাম্প্রতিক চাঞ্চল্যকর ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ।

জানা গেছে ফেব্রুয়ারী মাসের ১১ তারিখ গ্রামে নিজেদের মধ্যে অনুদ্বন্দ্বের জের হিসেবে নিউ লাইল্যাঘোনার আশেপাশে ইসহাক নামের এক অনুপ্রবেশকারী নিখোঁজ হয়ে যায়। সেনাবাহিনীর তরফে উক্ত নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে শান্তি-বাহিনীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে এলাকায় সাম্প্রদায়িক উস্কানী দেয়া হয়। ফলে একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বাঘাইছড়িতে আগে থেকেই বিরাজ করছিল। এদিকে খাগড়াছড়িতে মার্চ মাসের ৭ ও ৩১ তারিখ যথাক্রমে অমর বিকাশ চাকমা ও ক্যজয় মারমা পুলিশের গুলিবর্ষণে নিহত হওয়ার ঘটনায় সারা পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন চলতে থাকে। বাঘাইছড়িতেও পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কর্মীদের সাথে একযোগে আন্দোলনে অংশ নেয় হিল উইমেন্স ফেডারেশনের ছাত্রী কর্মীরা। আগের যে কোন সময়ের মত সেবারও কল্পনা চাকমা অগ্রণী ভূমিকা নেয়।

ইতিমধ্যে ইসহাকের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিউ লাইল্যাঘোনা গ্রামের নিকটবর্তী সেনা ছাউনী কজোইছড়ি ক্যাম্পের কুখ্যাত লেঃ ফেরদৌসের নেতৃত্বে এলাকাব্যাপী সামরিক দমন পীড়ন চলতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে ১৯শে মার্চ লেঃ ফেরদৌসের নেতৃত্বে ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী নিউ লাইল্যাঘোনা গ্রামে একদল সেনাবাহিনী গ্রামবাসীদের অত্যাচার ও ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে দিয়ে এক সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। উক্ত ঘটনায় আর্মিরা ১০ জন নিরীহ জুম্ম গ্রামবাসীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ও ৭টি বাড়ীতে আগুন লাগিয়ে দেয়। এসময় কল্পনা চাকমা সেনাবাহিনীর উক্ত নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং লেঃ ফেরদৌসের সাথে তার বাকবিতণ্ডা হয়। সেইদিনের কল্পনার জোড়ালো প্রতিবাদ সেনা অফিসারকে যথেষ্ট বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিলেও তাৎক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেনি। অতপর অনেক দিন গড়িয়ে গেছে। জুম্ম জনগণের উপর সরকারী অত্যাচারের বিরুদ্ধে, জুম্ম জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনে, জুম্ম নারী সমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে বরাবরই কল্পনা চাকমা সক্রিয় ও সোচ্চার থাকে। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও নিজের সংগঠন হিল উইমেনস ফেডারেশনের অবিরাম সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকতে থাকতে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সামনে এসে হাজির হয়। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসাবে কল্পনা চাকমাও সংগঠনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাঙামাটি আসনের এক নির্দল প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা সার্বক্ষণিক কাজে জড়িয়ে যায়। ঘটনার আগের দিনই সে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে বাড়ীতে ফিরে যায়। ১২ই জুন বাংলাদেশের ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দেশের সকল জনগণের দৃষ্টি তখন নির্বাচনের দিকে। নির্বাচনী মৌসুমে সবার মনোযোগ নির্বাচন ও তার ফলাফলের দিকে থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। দেশের প্রচার মাধ্যমসমূহও তখন নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত। তাছাড়াও আরো একটি বিষয় এখানে উল্লেখ করা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ যে, নির্বাচন পূর্ব মুহূর্তে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায়ে তখন চলছিল সেনা টানাপোড়ন এবং অস্থিতিশীল অবস্থা। সেনাপ্রধানকে বাধ্যতামূলক অবসর দান এবং সামরিক প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের আকস্মিক রদবদল সার্বিক করে তোলে। অতএব এটাই ছিল মোক্ষম সময়। লেফটেনান্ট ফেরদৌস তার পদস্থ কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সম্ভবত এই সুযোগটাই সহ্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে লেঃ ফেরদৌস চট্টগ্রাম সেনা নিবাসের তদানিন্তন জিওসি মেজর আজিজুর রহমানের ঘনিষ্ট আত্মীয়। একথা আজ নিঃসন্দে বলা যায় যে লেঃ ফেরদৌস এই সুযোগের অপেক্ষাই করছিল। অপহরণ ঘটনাটি তাই কোন আকস্মিক বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। ইহা একটি সুপরিকল্পিত অপহরণ। কল্পনার দুই ভাইকেও চোখ বাঁধা অবস্থায় নিয়ে গিয়ে গুলি করার নির্দেশ অনেকটা নাটকীয়। হয়তো বা কল্পনার ভাইদের গুলি করে হত্যার কোন কথাই ছিল না। তবে গোলাগুলির শব্দে আতংকগ্রস্থ করে তাঁদের পালিয়ে যাবার সুযোগ দিয়ে কল্পনার অপহরণকে সহজতর করার ব্যাপারটিও উড়িয়ে দেয়ার কোন অবকাশ নেই। অপহরণের নায়ক লেঃ ফেরদৌস ও তার দল নিজেদের পরিচয় গোপন রাখার চেষ্টা করে যেমন ব্যর্থ হয়েছে তেমনি ব্যর্থ হয়েছে গোটা ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার ক্ষেত্রেও। ঘটনাত্তোর সাময়িক কর্তৃপক্ষের ভূমিকাটা অনেকটা কুলো দিয়ে মরা হাতী ঢেকে রাখার অপচেষ্টার মতই। অপরদিকে কল্পনাকে উদ্ধারের দাবীতে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে।

১২ই জুন ক্ষুদিরাম ও বাঘাইছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান সম্রাটসুর চাকমা কল্পনার খোঁজে কজোইছড়ি ক্যাম্পে গেলে লেঃ ফেরদৌস কিছুই না জানার ভান করে এবং গালিগালাজ করতে থাকে। নির্বাচনী দায়িত্বের অজুহাত দেখিয়ে ব্যস্ত সমস্ত উক্ত সামরিক কর্মকর্তা কল্পনা বিষয়ে কোন কথাই শুনতে বা বলতে আগ্রহ দেখায়নি। অগত্যা ক্ষুদ্রিরাম ও সম্রাটসুর ক্যাম্প থেকে ফিরে আসে। এদিকে কল্পনার অপর ভাই কালীচরণ বাঘাইছড়ি থানার নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে দেখা করে পুরো ঘটনা বর্ণনা করে। বাঘাইছড়ি থানার ওসি সালাউদ্দীনের সাথেও দেখা করে কালীচরণ এফ আই আর (First Information Report) নথিভুক্ত করার অনুরোধ জানান। কালীচরণ যখনি ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে চিহ্নিত অভিযুক্তর মধ্যে লেঃ ফেরদৌস ও ভিডিপি সদস্যদের নাম উল্লেখ করে তখন ওসি বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যান এবং কালীচরণের মৌখিক বর্ণনা লিখতে গিয়ে বড় ধরণের ঘাপলাটা করে বসেন। অর্থাৎ কালী চরণ ঠিক যেভাবে ঘটনাটি সংঘটিত হওয়ার বর্ণনা এবং দোষীদের নামোল্লেখ করে সেভাবে ওসি সাহেব না লিখে নিজের সুবিধামত নিজের ভাষায় এফ আই আর লিখে নেন। কাজেই কালীচরণের জবানবন্দীর সাথে দায়েরকৃত এফ আই আর এর বক্তব্যে অমিল রয়ে যায়।

১৪ই জুন, ১৯৯৬ ইং সদ্য বিবাহিত সূর্যসেন চাকমা গ্রাম বাঘাইছড়ি, থানা-বাঘাইছড়ি হাটের দিনে দুরছড়ি বাজারে কেনাকাটার জন্য যায় ও বেলা থাকতে সে বাড়ীতে ফিরে আসে। কিন্তু ভুলক্রমে সে ক্রয় করা জিনিষপত্র বাজারে ফেলে আসে। ফলে সে উক্ত জিনিষপত্র নিয়ে আসার জন্য পুনরায় বাজারে যেতে বাধ্য হয়। ইতিমধ্যে গ্রামের অধিকাংশ লোক নিজ নিজ বাড়ীতে ফিরে আসে। তাকে দেখে একাকী দুরছড়ি বাজারের ভিডিপি (Village Defence Party) এর পোষ্ট কমান্ডার মোহম্মদ শাহাজাহান ও বাজারস্থ অন্যতম অনুপ্রবেশকারী মোহম্মদ আলী সূর্যসেন চাকমাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। ১৭ই জুন, ১৯৯৬ ইং সূর্যসেন চাকমার লাশ তার গ্রামের পাশের ঝোঁপঝাড়ে পাওয়া যায়। প্রসংগত উল্লেখ্য যে, জমি বেদখল নিয়ে সূর্যসেন চাকমার সাথে ভিডিপি কম্যাচার মোহাম্মদ শাহজাহানের বিবাদ ছিল বলে প্রকাশ।

তারপর দেশে সাধারণ নির্বাচনের হাওয়ায় সবাই তালমাতাল হয়ে যায়। নির্বাচন ও তার সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে কম বেশী সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, পাহাড়ী গণ পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন সহ কতিপয় ব্যক্তির প্রতিবাদ ও বিবৃতির মধ্যে নির্বাচনোত্তর বেশ কিছুদিন পর্যন্ত চাপা পড়ে থাকে কল্পনা অপহরণের বিষয়টি। ১৪ দিনের মাথায় ২৫শে জুন উক্ত তিনটি সংগঠনের উদ্যোগে সারা পার্বত্য চট্টগ্রামে কল্পনার অপহরণের প্রতিবাদে ও তার দ্রুত উদ্ধারের দাবীতে প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ২৬শে জুন ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয় এবং পরদিন অর্থাৎ ২৭শে জুন সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামে অবরোধের ডাক দেয়া হয়। একইদিন ঢাকার প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচী পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যান্য স্থানের মত বাঘাইছড়িতেও ২৭শে জুন অবরোধ কর্মসূচীর সমর্থনে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কর্মীরা সকাল থেকে স্থানীয় যানবাহন শ্রমিক মালিক সমিতির সাথে দেখা করতে যায়। ছাত্র কর্মীরা যানবাহন শ্রমিক ও মালিক সমিতির সদস্যদের সেদিন যানবাহন চালনা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান। যদিও তাদের কাছ থেকে ছাত্ররা ইতিবাচক সাড়া পায়নি। তবুও যানবাহন স্টেশনগুলোতে তারা ধর্ণা দেয়। এরপর ছাত্র কর্মীরা যখন রাস্তা অবরোধ কর্মসূচী সফল করতে পিকেটিং করতে যায় তখনি এক বাঙালী মুসলিম অনুপ্রবেশকারীর সাইকেল আরোহী পিকেটিংরত ছাত্রদের একজনকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধাক্কা দেয়। এতে বাঙ্গালী যুবক ও জুম্ম ছাত্রদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত অনুপ্রবেশকারীদের একটি দল জীবঙ্গছড়া (বাবুপাড়া) নামক স্থানে পাহাড়ী ছাত্রদের উপর আক্রমণ করে। লাঠিসোটা, দা, বর্শা, বল্লম ইত্যাদি ধারালো অস্ত্রসজ্জিত অনুপ্রবেশকারীদের দলটি জীবতলী মৌজার জীবংগছড়াতে একটি জুম্ম গ্রামবাসীর বাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এই সময় বাড়ীর মালিক তার বাড়ীর উপর আক্রমণ প্রতিহত করতে গিয়ে এক অনুপ্রবেশকারীকে আহত করে। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কর্মীরাও তাদের আহুত কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে আক্রমণকারীদের উপর পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করলে বাঙালী মুসলিম অনুপ্রবেশকারীদের অসংখ্য অস্ত্রধারী লোক ভিডিপি'দের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় আরো সংঘটিত হয়ে জুম্ম ছাত্রদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় এই সংঘর্ষের এক পর্যায়ে সংঘর্ষ থামাতে আসা পুলিশের হাত থেকে নুরুল ইসলাম নামের ভিডিপি সদস্য রাইফেল কেড়ে নিয়ে জুম্ম ছাত্রদের দিকে গুলি ছুড়তে থাকে। ফলে ঘটনাস্থলেই রূপম চাকমা (রতন), ১৮ বৎসর, পিং-হিরংগ চাকমা, গ্রাম-ঝগড়াবিল, ৩৭৬ তিনটিলা মৌজা, বংগলতলী ইউনিয়ন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। স্থানীয় রূপকারী হাইস্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র রূপম চাকমা গুলিবিদ্ধ মাটিতে লুটিয়ে পড়ার সাথে সাথে অনুপ্রবেশকারীরা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার দেহ টুকরো টুকরো করে ফেলে। তার মৃতদেহ উদ্ধারের চেষ্টা করলে আরো তিনজন জুম্ম ছাত্র আহত হয়। একইদিন অবরোধ কর্মসূচীতে যোগ দিতে আসার পথে দুই জুম্ম ছাত্র মনতোষ চাকমা (২০), পীং- পূর্ণেন্দুলাল চাকমা, গ্রাম বংগলতলী, পিন্টু (সুকেশ) চাকমা (২০), পীং- হামেশ কুমার চাকমা, গ্রাম-খেদারাছড়া এবং এক কৃষকের ছেলে সমর বিজয় চাকমা (২২), পীং- প্রতি চাকমা, গ্রাম মরিজাবন ছড়া তুলাবান নামক স্থানে মুসলিম ব্লক পাড়ায় অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা অতিক্রান্ত ও পরে নিখোঁজ হয়ে যায়। তাদের লাশ আজো পাওয়া যায়নি।

এভাবে ঘটনা প্রবাহক্রমে মারাত্মক আকার নেয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিবাদের ঝড় বয়ে যায়। ঢাকাতেও জুম্ম ছাত্রছাত্রীরা বিরামহীনভাবে বিভিন্ন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালায়। অবশেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মানবাধিকার সংস্থা, নারী সংগঠন এবং প্রচার মাধ্যমের মনোযোগ আকর্ষণ করা সম্ভব হয়। ইতিমধ্যে ২৩শে জুন SHED (Society For Environment and Human Development)-এর সরকারী গবেষক এফ, এম, এ, সালাম, শিশির মোড়ল, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সহায়তায় বাঘাইছড়ির নিউ লাইল্যাঘোনা কল্পনাদের বাড়ীতে তথ্য সংগ্রহে আসেন। তারা স্থানীয় প্রশসানের সাথেও কথাবার্তা বলেন এবং ঢাকায় ফিরে তাদের সরেজমিনে প্রতিবেদন ও লেখালেখি প্রকাশ করেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মানবাধিকার গোষ্ঠী কল্পনার মুক্তির দাবীতে বক্তৃতা ও বিবৃতি প্রদান করতে থাকে, ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়ে যায়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

১) ৯ই জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। কমিটির আহবায়ক ব্যারিষ্টার লুৎফর রহমান শাহজাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত বৈঠকে বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের দিলীপ বড়ুয়া, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের ফয়জুল হাকিম, গারো সংগঠনের রেমন আরেং, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কবিতা চাকমা, আইনজীবী খালেদা খাতুন ও আবু সাইদ খান এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ও বিশিষ্ট বামপন্থী আনু মোহাম্মদ।

২) ১৪ই জুলাই ১২টি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলামের সাথে দেখা করেন।

-অবিলম্বে কল্পনা চাকমাকে উদ্ধার করা,
-অপহরণ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত,
-দোষীদের আইনানুগ শাস্তির ব্যবস্থা
-কল্পনার পরিবারবর্গের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, গত ২৭ জুন নিখোঁজ চার ব্যক্তিকে অবিলম্বে উদ্ধার করা,
-ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দান ও

-এ ধরণের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে তার বাবস্থা করা ইত্যাদি দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করে ১২ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ১২টি সংগঠনের মধ্যে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, অধিকার, উবিনীপ, মহিলা পরিষদ, ল' রিভিউ, নারী গ্রন্থনা প্রবর্তনা লিগ্যাল এইড এবং সার্ভিসেস ট্রাষ্ট, নাগরিক উ্যোগ, সম্মিলিত নারী সমাজ, ছিল উইমেন্স ফেডারেশন, পাহাড়ী গণ পরিষদ, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ।

৩) ২২শে জুলাই নারী সংগঠনসমূহের একটি সম্মিলিত গোষ্ঠী 'সম্মিলিত নারী সমাজের' পক্ষ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ফারদা আক্তার, শিরীন খালেদা খাতুন, ফোজিয়া খন্ধকার ইভা, বর্তিকা চাকমা, সঞ্চয় চাকমা।

৪) ৭ জুলাই বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত সভায় কল্পনা চাকমা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানানো হয়।

৫) ২৫শে জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ জাতীয় কমিটির উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকারকে কল্পনা চাকমার উদ্ধারের দাবী জানিয়ে স্মারকলিপি দেয়া হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন খুশী কবীর, সুলতানা কামাল, আনু আহম্মদ, ফরিদা আওশর, নাজমা নাজনিন প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন যেমন ওয়ার্কার্স পার্টি, বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলন ও বিপ্লবী ছাত্র আন্দোলন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদ বিবৃতির মাধ্যমে কল্পনা অপহরণের তাঁর প্রতিবাদ ও তার মুক্তির দাবী জানান।

দেশের বিভিন্ন সংগঠনের জোড়ালো প্রতিবাদ চাপের ও পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের দূতাবাস সমূহ বাংলাদেশ সরকারের উপর প্রচণ্ড চাপ দিতে থাকে। দেশে এবং দেশের বাহিরে থেকেও বহু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা কল্পনা চাকমার বিষয়ে বর্তমান সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। দেশে বিদেশে যখন কল্পনার অপহরণ ঘটনায় ব্যাপক চার শুরু হয়ে যায় ঠিক তখন নাটকীয়ভাবে সামরিক কর্তৃপক্ষের দৌড়ঝাপ লক্ষ্য করা যায়।

১৮ই জুলাই রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির আকাশে আকস্মিক দেখা যায় প্রচারপত্র বৃষ্টি। দূর আকাশ থেকে নেমে আসে হাজার হাজার প্রচারপত্র। সামরিক হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া হয় এই প্রচারপত্র। "কল্পনা চাকমার খোঁজ দিন, ৫০,০০০.০০ টাকা পুরস্কার নিন" শিরোনামযুক্ত ও কল্পনার ছবিসহ এই প্রচারপত্রে কল্পনা চাকমার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে সঠিক ও নিশ্চিত সংবাদ প্রদানকারীকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণার পাশাপাশি বলা হয়েছে সঠিক সংবাদ নিকটস্থ নিরাপত্তা বাহিনীর জোন/ক্যাম্প/থানা/জেলা প্রশাসন অথবা ২৪ পদাতিক ডিভিশন, সদর দপ্তর, চট্টগ্রাম সেনানিবাসে জানাতে। সদর দপ্তর ২৪ পদাতিক ডিভিশন, চট্টগ্রাম সেনানিবাস, টেলিফোন ৬২৪২৭৮ (চট্টগ্রাম) ঠিকানা সম্বলিত উক্ত প্রচার প্রচারপত্রে কল্পনার সঠিক সংবাদদাতার পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে আশ্বাস ব্যক্ত করা হয়েছে। দেশে সদ্য ক্ষমতাসীন সরকার ও বেসামরিক প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সেনাবাহিনীর বিভাগীয় সদর দপ্তরের পক্ষে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণায় পার্বত্যাঞ্চলের জনমনে ব্যাপক সন্দেহ ও ষড়যন্ত্রের আভাস পরিলক্ষিত হয়। পত্র পত্রিকা সমূহে এই প্রচারপত্র বিলির ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর দেশবাসীর মনেও নানা সন্দেহ ঘনীভূত হতে থাকে। সবাইকে হতবাক করে দেয়া উক্ত প্রচারপত্রে কিছু ইচ্ছাকৃত প্রিন্টিং মিসটেক (ছাপার ভুল। লক্ষ্য করা যায়। যেমন কল্পনা চাকমার অপহরণের ঘটনাটি ২৮শে ফেব্রুয়ারী সংঘটিত হওয়ার কথা বলা হয়। কল্পনা চাকমার পিতার নামও গুণ রঞ্জনের জায়গায় লেখা হয় কুন রঞ্জন। এই প্রচারপত্রে রহস্যের জাল ছড়িয়ে পড়তে না পড়তেই ২২শে জুলাই কল্পনার অপহরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন খবর প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সদর দপ্তর, চট্টগ্রাম সেনানিবাস থেকে দপ্তরের তথ্য অফিসার মোঃ জসীমউদ্দিনের স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি সারাদেশে প্রচণ্ড চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তি "উদ্ভূত সন্দেহ দূরীকরণার্থে ও পরিপূর্ণ ঘটনা বিশ্লেষণের স্বার্থে ইস্যু করার কথা বলা হলেও মূলতঃ তার প্রতিক্রিয়া হয়ে যায় উল্টো। সামরিক কর্তৃপক্ষের এই প্রেসবিজ্ঞপ্তি সন্দেহ দূরীকরণের পরিবর্তে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি জনগণের সন্দেহই বাড়িয়ে তোলে। দীর্ঘ ১ পৃষ্ঠাব্যাপী এই প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেনা কর্তৃপক্ষ নিজেদের নিরপরাধ প্রমাণিত করার জন্য পরিপূর্ণ ঘটনা বিশ্লেষণে ব্যর্থ হয়েছে। অসংখ্য বানোয়াট ও মিথ্যার ফুলঝুড়িতে ভরা তাদের প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে নিজেদের ধোয়া তুলসী পাতা হিসেবে জনগণের কাছে তুলে ধরার প্রাণপন চেষ্টা করেও প্রকারান্তরে কল্পনা অপহরণ ঘটনায় সেনাবাহিনী জড়িত থাকার এবং তাদের দুর্বলতার অবস্থানকেই প্রকাশ করেছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তির প্রথমেই উল্লেখ করা হয়েছে যে ১২ই জুন কল্পনা চাকমার ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা বাদী হয়ে বাঘাইছড়ি থানায় যে অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন তা পুলিশের তদন্তাধীন রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাঙামাটি আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কেতন চাকমার পক্ষে পাহাড়ী গণ পরিষদ, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নির্বাচনী প্রচারণায় জড়িত থাকা এবং এক্ষেত্রে শান্তিবাহিনীর সংশ্লিষ্টতার সাজানো অজুহাত দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলের নির্বাচিত প্রার্থী দীপংকর তালুকদারের জনপ্রিয়তার কারণে শংকিত উক্ত তিন সংগঠনের কথিত হুমকি ও হয়রানিমূলক মিথ্যা ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বর্তমান নির্বাচিত সরকারের সহানুভূতি আদায়ের প্রয়াস ফুটে উঠেছে। নির্বাচন পূর্ব বিভিন্ন নির্যাতন, অপহরণ ঘটনার উল্লেখ করে এসব ঘটনায় পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ এমনকি শান্তিবাহিনী জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে কল্পনা অপহরণের বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিয়ে যাবার অপচেষ্টা দিবালোকের মত স্পষ্ট। এসব অভিযোগের ধারণা অবশ্য স্থানীয় অধিবাসীদের বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

আরো একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় যে. কান অপহরণের নায়ক যে লেঃ ফেরদৌসের কথা বলা হচ্ছে তাকে শান্তিবাহিনী ও পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের অবৈধ কার্যকলাপ- এর বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনায় একজন সফল অফিসার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। ১১ই জুন রাতে লেঃ ফেরদৌস নির্বাচন উপলক্ষে উগলছড়ি ক্যাম্পে যায় এবং সেদিন উক্ত ক্যাম্পে একজন মেজর, একজন ক্যাপ্টেন ও একজন লেফটেনান্ট পদের অফিসারসহ মোট চার জন অফিসার ও ৮০/৯০ জন সৈনিক উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করা হয়। একই সাথে সামরিক কঠোর শৃংখলার দোহাই দিয়ে এবং এত লোকের উপস্থিতিতে ক্যাম্প থেকে মাত্র ৮০০ গজ দূরে কল্পনা চাকমার বাড়ীতে অপহরণের ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে যে-সেদিন রাতে উগলছড়ি ক্যাম্পে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় লেঃ ফেরদৌস নির্বাচনী দায়িত্বে আগত প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ বেশ কয়েকজন নির্বাচনী কর্মকর্তার প্রাইমারী স্কুলে রাত্রি যাপন করে থাকে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তির উক্ত বর্ণনার ঠিক পরের অনুচ্ছেদে আরো উল্লেখ করা আছে যে, ১১ জুন রাতে উগলছড়ি ক্যাম্পে চারজন অফিসারসহ একসঙ্গে অফিসার বাসস্থানে উক্ত লেঃ ফেরদৌস রাত্রি যাপন করেছে উপস্থিত উর্দ্ধতন অফিসারের বিনানুমতিতে এবং সকলের অগোচরে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ব্যাপারে তোয়াক্কা না করেও চাকুরিচ্যুতির ঝুঁকি নিয়ে একা একা একজন অফিসারের পক্ষে ক্যাম্পের ৮০০ গজ দূরে যাওয়া যুক্তিগ্রাহ্য হতে পারে না।

এখানেই অপেক্ষাকৃতভাবে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে উক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তি কত বড় বানোয়াট। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত উপরোক্ত অফিসারের রাতের অন্ধকারে ৮০০ গজ দূরে একা একা বাওয়ার বিষয়টি যুক্তিগ্রাহ্য নয় কথাটি কত হালকা। উক্ত লেঃ ফেরদৌস আদৌতে ১১ই জুন রাতে কার সাথে কোথায় রাত্রি যাপন করেছে? এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি ২৪ পদাতিক ডিভিশনের কর্তৃপক্ষ। এক জায়গায় লেখা হচ্ছে যে ক্যাম্পের জায়গ। সংকুলান না হওয়াতে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সাথে উগলছড়ি প্রাথমিক স্কুলে রাত্রি যাপন করে। ঠিক কয়েক লাইন পরে আবার বলা হচ্ছে যে অন্তত তিনজন সামরিক অফিসারের সাথে অফিসার ম্যাচে রাত্রি যাপন করে। তাহলে কোনটা ঠিক? কল্পনা 'অপহরণের ব্যাপারে উদ্ভূত সন্দেহ দূরীকরণার্থে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের এ কোন, মিথ্যার বেসাতি? এক মিথ্যা ঢাকতে গিয়ে দশ মিথ্যা ঢাকার ব্যর্থ চেষ্টা করায় আরো গভীর সন্দেহ উদ্রেক করে।

কল্পনা চাকমার অপহরণ বিষয়ে পি জি পি, পিসিপি, ও এইচ ডব্লিউ এফ- এর বিবৃতির সাথে এফ আই আর এর কোন মিল খুঁজে না পাওয়ার কথাও ২৪ পদাতিক ডিভিশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। তা মিলবেই বা কিভাবে। কল্পনার ভাই কালীচরণের মৌখিক বর্ণনা লিখতে গিয়ে বাঘাইছড়ি থানার ওসি অন্যতম যোগসাজসকারী সলোউদ্‌দীন তো ইচ্ছা করে সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি লিপিবদ্ধ করেননি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো দাবী করা হচ্ছে যে কল্পনার বাড়ীতে সেনাবাহিনীর তদন্তকারীরা কল্পনার পরিধেয় বস্ত্র, বই পুস্তক ও নিত্য ব্যবহার্য কোন সামগ্রী খুঁজে পায়নি। কাজেই কল্পনা নিজেই গা ঢাকা দিতে পারে কিংবা কে বা কারা সীমান্তের ওপারেও নিয়ে যেতে পারে। পাহাড়, পর্বত গহীন বনজঙ্গলে ঢাকা পার্বত্য চট্টগ্রামে কোথায় খুঁজে পাবে সেনাবাহিনী কল্পনাকে। আবার কল্পনার পাসপোর্ট আছে দোহাই দিয়ে তাকে বিদেশে কোথাও পাঠিয়ে দিয়ে দেশী বিদেশী বিভিন্ন ফোরামে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষয়টি তুলে ধরার অপচেষ্টা বলেও সন্দেহ করছে সেনা কর্তৃপক্ষ। কল্পনার হারিয়ে যাওয়ার জন্য অনেকের সাথে সেনা কর্তৃপক্ষও গভীর চিন্তিত ও উৎকণ্ঠিত বলে দাবী করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাসবাণী রেখে প্রয়োজনে উগলছড়ি ক্যাম্পে তল্লাসী চালাতেও বলেছে সেনাবাহিনী। ২৪শে জুন তারা নাকি রাঙামাটি জেলা প্রশাসককে বিশেষভাবে তদন্ত করার অনুরোধ জানিয়েছে যদিও জেলা প্রশাসক ৮ই জুলাই লিখিতপত্রে এরকম আলাদা তদন্ত অনুষ্ঠানের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেনা কর্তৃপক্ষ পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ এনেছে। ১৯৭৬ সাল থেকে পার্বত্য এলাকায় তাদের পেশাগত কর্তব্য পালন করতে গিয়ে হতাহতের হিসাব দেখিয়ে দেশের অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীর তথাকথিত ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে না দেওয়ার জন্য সকলের প্রতি সনির্বন্ধ অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মোদ্দাকথা ২৪ পদাতিক ডিভিশনের উপরোক্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তি বিভ্রান্তিকর, স্ববিরোধী ও ভাওতায় পরিপূর্ণ। ধান ভানতে শিবের গীত গাইতে গিয়ে সেনা কর্তৃপক্ষ নিজেদের সাধুতা ও অন্যদের দোষী প্রমাণে প্রাণপণ অপপ্রয়াস চালিয়েছে মাত্র। বস্তুতঃ সেনা কর্তৃপক্ষ যেমনি প্রত্যক্ষভাবে এই রহস্যের ভেতর নিজেদের জড়িত করেছে তেমনি একইভাবে তাদের ও সরকারের জারজ সন্তান পার্বত্য গণ পরিষদ, নাগরিক কমিটি, পার্বত্য চট্টগ্রাম জাতীয় শান্তি ও সমন্বয় পরিষদ, ব্যংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, পিসিপি পিজিপি সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি ইত্যাদি ভূঁইফোড় ও নামসর্বস্ব সংগঠনগুলির মাধ্যমে গোটা পরিস্থিতিকে ভিন্ন খাতে চালিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যেমন বিগত ৪ঠা আগষ্ট বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন এক সাংবাদিক সম্মেলনে কল্পনা চাকমা সম্পর্কে যে তথ্য প্রদান করেছে তাতে বলা হয়েছে যে কল্পনা চাকমাকে সেনাবাহিনী কর্তৃক অপহরণ করা হয়নি, কল্পনা চাকমা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে অবস্থান করেছে, কল্পনা চাকমা নিখোঁজ হওয়ার পর তার মা বাধুনী চাকমার সাথে দু'বার যোগাযোগ করেছে ইত্যাদি। অথচ ১৮ই আগস্ট, ১৯৯৬ইং তারিখে কল্পনা চাকমার মাতা শ্রীমতী বাধুনী চাকমা জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তার বরাত দিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে ইহা অত্যন্ত সুস্পষ্ট যে সরকার ও তার সেনাবাহিনীর জারজ সন্তান ও মদদপুষ্ট বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতি সম্পূর্ণ বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। লেঃ ফেরদৌস কর্তৃক কল্পনা চাকমাকে অপহরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনাকে আড়াল করার হীন উদ্দেশ্যেই তথাকথিত মানবাধিকার কমিশন এসব তথ্যাদি প্রকাশ করেছে। শ্রীমতী বাধুনী তার বিবৃতিতে বলেন যে বিগত ৪ঠা আগষ্ট বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের একটি দল ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি সেনা জোনে যায়। এই দলটি সেখান থেকে তার বাড়ীতে যায়। মানবাধিকার কমিশনের দলের সঙ্গে২০ জন বি ডি আর ও ৭/৮ জন স্থানীয় অনুপ্রবেশকারী বাঙালী মুসলমান ছিল। মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা চাকমা ভাষা জানা স্থানীয় এক বাঙালীর মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে কথা বলে। শ্রীমতী বাধুনী বলেন, মানবাধিকার কমিশনের পরিবেশিত তথ্যের সঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা প্রশ্নের কোন মিল নেই। কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত তথ্যাদি সম্পূর্ণ বানোয়াট। অপরদিকে বর্তমানে ভারতে আশ্রিত ৫০ সহস্রাধিক জুম্ম শরণার্থীদের পক্ষে জুম্ম শরণার্থী কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে ১২ই আগষ্ট, ১৯৯৬ইং প্রদত্ত ও বি বি সি- তে প্রচারিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায় যে কল্পনা চাকমা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের জুম্ম শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছে এ তথ্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক। ফলে সেনাবাহিনী মহাবিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। দেশব্যাপী কানাঘুষা চলতে থাকে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে। এমত পারস্থিতিতে সেনা কর্তৃপক্ষ আবার বক্তব্য দেয়ার প্রয়োজন বোধ করে এবং ৬ই আগষ্ট পত্র পত্রিকায় আই এস পি আর- এর মাধ্যমে আরো একটি ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হয়। এতে বলা হয়েছে যে, কল্পনা চাকমা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি ইস্যু করার ব্যাপারে চট্টগ্রাম এরিয়া সদর দপ্তরে কর্তৃত্ব সম্পর্কে কোন কোন পত্র পত্রিকা ও সাময়িকীতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এ ব্যাপারে যে কোন ধরণের ভুল ঝাবুঝির অবসান ঘটানোর জন্য সেনা সদর দপ্তর বিষয়টির ব্যাখ্যা দেয়া যথার্থ বিবেচনা করেছে। এ সম্পর্কিত পেস বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশের আগে সেনা সদর দপ্তর পুংখানুপুংখ পরীক্ষা করেছে ও অনুমোদন দিয়েছে।

অপহৃতা কল্পনাকে নিয়ে পুরো ঘটনার তালগোল পাকানো এবং সভ্যকে ধামাচাপা দেয়ার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ একজন সামরিক কর্মকর্তার বক্তব্য এতদিন চাপা থেকে যাচ্ছে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন অন্যতম উপদেষ্টা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ডঃ ইউনুস কল্পনা চাকমা অপহরণ বিষয়ে টেলিফোনে উচ্চপদস্থ সামরিক অফিসারের কাছ থেকে জানতে চান। প্রতি-উত্তরে ঐ সামরিক কর্মকর্তা বিষয়টি 'হৃদয় ঘটিত' বলে উড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেন। এই 'হৃদয় ঘটিত' বিষয়টি নয় পৃষ্ঠার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অস্বীকার করা হয়েছে। তাই কল্পনা অপহরণের ঘটনাটির বিষয়ে সেনাবাহিনী যত কিছুই বলছে সবই গোজামিল ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

এদিকে বাঘাইছড়ি থানার ওসি ঢাকা থেকে আগত মোর্শেদ আলী খান নামে এক তদন্তকারীর কাছে স্বীকার করেছেন যে কল্পনার ভাই কালীচরণের দেয়া জবানবন্দিতে চিহ্নিত অপহরণকারীদের নাম থাকলেও বিভিন্ন অসুবিধার কারণে তদন্ত পরিচালনার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে কি সেই অসুবিধা যার কারণে ওসি সাহেব অনেক কিছু মুখ খুলে বলতে অপারগ? উক্ত তদন্তকারী যখন রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপারের সাথে কল্পনার অপহরণ বিষয়ে কথা বলতে যান তখন আরো একটি হাস্যকর ঘটনা ঘটে। রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার মোঃ নুবুল আনোয়ার বলেন যে তিনি একশভাগ নিশ্চিত কল্পনাকে ছেড়ে দেয়া হবে। এই অপহরণ ঘটনার তদন্ত করার ক্ষেত্রে স্থানীয় কোন বাঁধা বিপত্তি নেই। রাঙ্গামাটি আর্মির ব্রিগেডিয়ারও তাকে এলাকার একশ আশিটি সেনা ক্যাম্পের যে কোনটাতে সফর করার অনুমতি দিয়েছেন। কিন্তু তদন্তকারী প্রতিবেদক যখন পুলিশ সুপারের কাছে জানতে চান যে তিনি এযাবৎ কয়টি সেনা ক্যাম্পে তল্লাসী চালিয়েছেন। প্রতি উত্তরে তিনি বলেন একটিও না। পাহাড় পর্বতের দুর্গম এই এলাকায় সফর করা যথেষ্ঠ দূরহ। কষ্টসাধ্য বলে তিনি স্বীকার করেন। স্বভাবতই আমাদের প্রশ্ন জাগে পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে তেমন তৎপর নয় কেন? সেনা প্রশাসনের তরফ থেকে কেবল রাঙ্গামাটি এলাকার এ

প্রেস বিজ্ঞপ্তিপার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা শাখার যৌথ সম্মেলন অনুষ্ঠিত......
06/06/2025

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা শাখার যৌথ সম্মেলন অনুষ্ঠিত......

১৯ তম খাগড়াছড়ি ও ২০ তম রাঙ্গামাটি যৌথ জেলা সম্মেলন সম্পন্ন "জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় সকল প্রতিক্রিয়াশ...
06/06/2025

১৯ তম খাগড়াছড়ি ও ২০ তম রাঙ্গামাটি যৌথ জেলা সম্মেলন সম্পন্ন

"জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় সকল প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ ঐক্যবদ্ধ হোন"
এই স্লোগানটি সামনে রেখে খাগড়াছড়িস্থ তেঁতুলতলা পিসিজেএসএস কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অদ্য ৬ জুন ২০২৫ ইং রোজ শুক্রবার সকাল ১০.০০ ঘটিকার সময়ে ১৯ তম খাগড়াছড়ি ও ২০ তম রাঙ্গামাটি যৌথ জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সুভাষ চাকমার সঞ্চালনায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ,খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি মৃনাল চাকমা সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, কেন্দ্রীয় কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্র নেতা ও পিসিজেএসএস খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রত্যয় চাকমা, সাবেক ছাত্র নেতা ও পিসিজেএসএস রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জগদিশ চাকমা, সাবেক ছাত্র নেতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি, খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি সোনামনি চাকমা, পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুজন চাকমা, হিল ইউমেন্স ফেডারেশন আহ্বায়ক মায়া চৌধুরী প্রমুখ।

সর্বশেষ পুরাতন পিসিপি খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা শাখা বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ যৌথ জেলা সম্মেলনে
১৯ তম পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখায় জেসলেন চাকমাকে সভাপতি, ধনঞ্জয় ত্রিপুরাকে সাধারণ সম্পাদক ও নিটিন চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২৩ বিশিষ্ট পুর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

২০ তম পিসিপি রাঙ্গামাটি জেলা শাখায় সুকেশ চাকমাকে সভাপতি, রাখেশ চাকম সাধারণ সম্পাদক ও পূর্ণ চাকমা
সাংগঠনিক সম্পাদক করে ২১ বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

পিসিপি যৌথ খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা শাখার প্যানেল ঘোষণা ও শপথ বাক্য পাঠ করান পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুজন চাকমা।

০৬ জুন ২০২৫ খ্রিঃ
#পার্বত্যচট্টগ্রামপাহাড়ীছাত্রপরিষদ

"জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় সকল প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ ঐক্যবদ্ধ হোন"১৯ তম খাগড়াছড়ি...
06/06/2025

"জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠায় সকল প্রতিক্রিয়াশীল অপশক্তির বিরুদ্ধে ছাত্র সমাজ ঐক্যবদ্ধ হোন"

১৯ তম খাগড়াছড়ি ও ২০ তম রাঙ্গামাটি যৌথ জেলা সম্মেলন-২০২৫

প্রধান অতিথি: সুদর্শন চাকমা- ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, কেন্দ্রীয় কমিটি।

সভাপতি: মৃনাল চাকমা- সভাপতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ,খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।

০৬ জুন ২০২৫ খ্রিঃ খাগড়াছড়ি সদর।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা শাখা

আজকের দিনটি কি ভুলে গেছেন.? আজ রাঙামাটি লংগদু ট্রাজেডির ৮ বছর। আমি এখনও ভুলিনি। সালটা ছিল ২০১৭। এদিনে লংগদু উপজেলা সদরে ...
02/06/2025

আজকের দিনটি কি ভুলে গেছেন.? আজ রাঙামাটি লংগদু ট্রাজেডির ৮ বছর। আমি এখনও ভুলিনি। সালটা ছিল ২০১৭। এদিনে লংগদু উপজেলা সদরে শত শত পাহাড়ী পরিবার বহিরাগত সেটেলার বাঙালি কর্তৃক সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়। উপজেলার তিনটিলা, মানিকজোড় ছড়া ও বাত্যাপাড়া গ্রামের আদিবাসীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাং চু র, লুটপাত করে
হামলা কারীরা।

শিক্ষা   সাম্য   সংহতি   প্রগতিসারাদেশে সংঘটিত সকল ধর্ষণের বিচার করমহালছড়ির মাইসছড়িতে মোঃ আনিসুর রহমান কর্তৃক এক আদিবাসী...
30/05/2025

শিক্ষা সাম্য সংহতি প্রগতি

সারাদেশে সংঘটিত সকল ধর্ষণের বিচার কর

মহালছড়ির মাইসছড়িতে মোঃ আনিসুর রহমান কর্তৃক এক আদিবাসী গৃহবধুকে ধর্ষণচেষ্টার প্রতিবাদ ও অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ এর বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

সংহতি প্রকাশ পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ - পানছড়ি থানা শাখা।
26/05/2025

সংহতি প্রকাশ পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ - পানছড়ি থানা শাখা।

পাহাড়ে পিসিপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
21/05/2025

পাহাড়ে পিসিপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

21/05/2025

ই/উ/পি/ডি/এ/ফ সরকারের তল্পিবাহক একটি সন্ত্রাসি সংগঠন! পিসিপির ছাত্র সমাবেশে প্রত্যয় চাকমা।
২০মে ২০২৫ https://www.facebook.com/share/1Axd5fRvWz/

প্রেস বিজ্ঞপ্তি২০ মে ১০২৫ খ্রি.পিসিপি'র ৩ যুগ পূর্তিতে খাগড়াছড়িতে র‍্যালী ও ছাত্র সমাবেশপার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণা...
21/05/2025

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
২০ মে ১০২৫ খ্রি.

পিসিপি'র ৩ যুগ পূর্তিতে খাগড়াছড়িতে র‍্যালী ও ছাত্র সমাবেশ

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবী

আজ ২০ শে মে ২০২৫ খ্রি. পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)- এর ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী তথা ৩ যুগ পূর্তিতে খাগড়াছড়িতে র‍্যালী ও ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্র সমাবেশ থেকে অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবী জানানো হয়।

সকাল ৯.৩০ ঘটিকার সময় খাগড়াছড়ি সদরের মহাজন পাড়াস্থ সূর্যশিখা ক্লাব প্রাঙ্গণ হতে র‍্যালীতে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে খাগড়াছড়ি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে সমাবেশ অনুষ্ঠিত করে।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী সুধাকর ত্রিপুরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রাম শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক শ্রী সাথোয়াই অং মারমা; বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পরিষদ সদস্য শুভ দেবনাথ।

সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিশান চাকমা সঞ্চালনায় ও সভাপতি সুজন চাকমা'র (ঝিমিট) সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী সহ সাধারণ সম্পাদক শ্রী কৃতিত্ব চাকমা। উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সংগ্রামী আহ্বায়ক মায়া চৌধুরী; সাবেক ছাত্র নেতা ও যুব সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শ্রী জগদীশ চাকমা; সাবেক ছাত্র নেতা ও জনসংহতি সমিতির খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী প্রীতি খীসা; সাবেক ছাত্র নেতা ও প্রত্যয় চাকমা। এছাড়াও মঞ্চে আসন অলংকৃত করেছেন সাবেক ছাত্র নেতা ও যুব সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্রী জ্ঞান প্রিয় চাকমা; পিসিপি'র সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শ্রী রাজ্যময় চাকমা; মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রীমতি ববিতা চাকমা প্রমূখ।

শুরুতে জাতীয় ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সমাবেশের প্রধান অতিথি শ্রী সুধাকর ত্রিপুরা। দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন শ্রী সুজন চাকমা (ঝিমিট)। বেলুন উড়িয়ে ছাত্র সমাবেশের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি শ্রী সুধাকর ত্রিপুরা ও অতিথিবৃন্দরা।

এরপর গণসঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। জাগরণের গান মুক্তিরো মন্দিরো সোপানো তলে, কালায়ন চাকমার আগাজত হালা মেঘ উদিবো, আমি আদিবাসী- মাদল, লারমা-পুং সহ বেশ কয়েকটি গান পরিবেশন করা হয়। সমাবেশের শুরুতে আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মবলিদানকারী সকল বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট মৌনব্রত পালন করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রী সুধাকর ত্রিপুরা বলেন জুম্ম জনগণের জাতীয় অস্তিত্ব ও জন্মভূমির অস্তিত্ব সংরক্ষণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই সংগ্রাম করে আসছে। পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ তেমনি একটি সংগঠন, যারা জনসংহতি সমিতির সহযোগী হয়ে দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজকের এই পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। এই ছাত্র সংগঠনটি যেমনি জুম্ম সমাজে শিক্ষার বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে তেমনি জুম্ম জনগণের আত্মত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার আন্দোলনে মরনপণ লড়াই চালিয়ে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ দুই যুগের অধিক সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তির আজকে ২৭টি বছর অতিক্রান্ত হলেও চুক্তি মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছে বহু রক্তের বিনিময়ে, বহু ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত এই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ফলে পার্বত্য জেলা পরিষদ গুলোকে বিশেষ ক্ষমতায়ন করার কথা, স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তখন সে সরকারের দালালদের-লেজুরদের দিয়ে জেলঅ পরিষদ গঠিত হয়েছে। ফলে অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্যের মত কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালিত হয় এবং জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন হয়না। সে রকম জেলা পরিষদ আমাদের প্রয়োজন নেই।

তিনি প্রয়াত নেতা সুধাসিন্ধু খীসার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, এই জুম্ম জনগণের পুরো পৃথিবীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত সূচাগ্র পরিমাণ ভূমিও নেই। সুতরাং এই মাটিকে আকড়ে ধরেই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন আমাদেরকে বহিরাগত, বার্মা, ইন্ডিয়া থেকে আসা ইত্যাদি আখ্যা দেওয়া হয়। অথচ বার্মা স্বাধীন হয় ১৯৪৮ সালে, পাকিস্তান-ভারতের জন্ম হয় ১৯৪৭ সালে, বাংলাদেশের জন্ম হয় ১৯৭১ সালে। এর আগে এ অঞ্চলে রাষ্ট্রের কোন চিহ্নই ছিলনা, তারও হাজার বছর আগে থেকেই আমরা এ অঞ্চলে বসতি গড়েছি। এই অঞ্চলের ভূমিপুত্র জুম্মরা।

অতিথি বক্তব্যে শুভ দেবনাথ বলেন, পাহাড়ী মানুষদের অধিকার আদায়ের জন্য পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ তার সংগ্রামী লড়াই জারি রেখেছে। তাদের অধিকারের জন্য ১৯৯৭ সালে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে কিন্তু আজও বাস্তবায়ন হয়নি। আজকে বাংলাদেশে বাম প্রগতিশীল সংগঠনগুলোকে পাহাড়ীদের দালাল বলে আখ্যায়িত করা হয়। হ্যাঁ আমরা দালাল সমতলের কেটে খাওয়া মেহনতি মানুষদের দালাল, পাহাড়ের অধিকার হারা মানুষদের দালাল। রাজা আসে যায়, রাজা বদলায় কিন্তু দিন বদলায় না। বহুবার শাসকের পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু পাহাড়ী মানুষদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। চুক্তি বাস্তবায়ন তথা অধিকার আদায়ের জন্য বিভেদের রেখা ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে পাহাড়ী মানুষদের সংগ্রাম করতে হবে।

অন্যান্য বক্তারাও দীর্ঘ ৩৬ বছরে পিসিপি'র নানান সংগ্রামী ইতিহাসের কথা তুলে ধরেন। তারা অতীতে যেমনি পিসিপি জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে আপোষহীনভাবে সংগ্রাম করে এসেছে আগামীতেও চুক্তি বাস্তবায়নের সংগ্রামে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ তার ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।

পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সংগ্রামী সভাপতি সুজন চাকমা বলেন, ১৯৮৯ এর অগ্নিগর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ দীর্ঘ ৩৬ বছরের পথ পরিক্রমা করেছে। দীর্ঘ সময়ের এই লড়াই-সংগ্রামে অসংখ্য মানুষের আত্মবলিদানের উপর দাঁড়িয়ে এই পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, তাই জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ে তথা চুক্তি বাস্তবায়নে জুম্ম ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। ১৯৯৭ সালে চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের প্রতিক্রিয়াশীল অংশটি চুক্তির বিরোধীতা করে ইউপিডিএফ নামক দল গঠন করে। সেই থেকে রাষ্ট্রের তল্পিবাহক হয়ে জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের সনদ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি নিয়ে নানা অপব্যাখ্যা নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। চুক্তি মোতাবেক পাহাড় থেকে অস্থায়ী সেনাক্যাম্পগুলো যখন অপসারণ করা হচ্ছিল ঠিক তৎসময়ে ২০০৩ সালে নানিয়াচরে তিন বিদেশী অপহরণ করে পাহাড়ে নতুন করে "অপারেশন উত্তরণ" নাম দিয়ে অঘোষিত সেনাশাসন শুরু হয়। যা ইউপিডিএফ রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রকে বাস্তবায়ন করেছে বলে আমরা মনে করি। এবারের খাগড়াছড়ি থেকে চবি'র ৫ ছাত্র অপহরণও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সংগ্রামী সভাপতি সুজন চাকমা বলেন, ১৯৮৯ এর অগ্নিগর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ দীর্ঘ ৩৬ বছরের পথ পরিক্রমা করেছে। দীর্ঘ সময়ের এই লড়াই-সংগ্রামে অসংখ্য মানুষের আত্মবলিদানের উপর দাঁড়িয়ে এই পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, তাই জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ে তথা চুক্তি বাস্তবায়নে জুম্ম ছাত্র সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

১৯৯৭ সালে চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের প্রতিক্রিয়াশীল অংশটি চুক্তির বিরোধীতা করে ইউপিডিএফ নামক দল গঠন করে। সেই থেকে রাষ্ট্রের তপ্নিবাহক হয়ে জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের সনদ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি নিয়ে নানা অপব্যাখ্যা নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। চুক্তি মোতাবেক পাহাড় থেকে অস্থায়ী সেনাক্যাম্পগুলো যখন অপসারণ করা হচ্ছিল ঠিক তৎসময়ে ২০০৩ সালে নানিয়াচরে তিন বিদেশী অপহরণ করে পাহাড়ে নতুন করে "অপারেশন উত্তরণ” নাম দিয়ে অঘোষিত সেনাশাসন শুরু হয়। যা ইউপিডিএফ রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রকে বাস্তবায়ন করেছে বলে আমরা মনে করি। এবারের খাগড়াছড়ি থেকে চবি'র ৫ ছাত্র অপহরণও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

১৯৮৯-এ সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর হতে সংগঠনের সাথে থেকে যারা শহীদ হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন তাদের সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন সভাপতি সুজন চাকমা (ঝিমিট)।

সুজন চাকমা তার বক্তব্য শেষে ৪টি দাবী তুলে ধরেন। দাবীগুলো হল:

১) পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।

২) আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।

৩) দেশের সকল উচ্চমান সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ১ম-২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে ৫% কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।

৪) পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি মোতাবেক সকল আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর স্ব-স্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

বার্তা প্রেরক

সুভাষ চাকমা
তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ
কেন্দ্রীয় কমিটি।

Address

Khagrachari

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ - পানছড়ি থানা শাখা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category