Olpo Solpo Golpo -অল্প সল্প গল্প

Olpo Solpo Golpo -অল্প সল্প গল্প 🍁
আমি লেখিকা নই,
আমি কেবল বাস্তবটাকে আমার কল্পনার মাঝে ;
এবং কল্পনাকে আমার অল্প সল্প লেখার মাঝে ফুটিয়ে তুলি,
তাইতো আমার নাম অল্প সল্প গল্প🙂
🍁
(1)

22/06/2025

ট্রাম্পের আজকের সিদ্ধান্ত—একদিন তাঁর নিজের ধ্বংস ডেকে আনবে

আজ ডোনাল্ড ট্রাম্প যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা শুধু যুক্তরাষ্ট্র কিংবা মধ্যপ্রাচ্য নয়—সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্যই এক গভীর সংকটের বার্তা নিয়ে এসেছে। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার চলমান উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে এক চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন পদক্ষেপ। ইতিহাস আমাদের বারবার শিখিয়েছে—যখনই কোনো পরাশক্তি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে মাথা ঘামিয়েছে, তখন তার পরিণতি এসেছে রক্তপাত, ধ্বংস এবং ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় হিসেবে।

ট্রাম্পের এই হঠকারী ও একপাক্ষিক সিদ্ধান্ত আজ আমাদের পৃথিবীকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রান্তসীমায় এনে দাঁড় করিয়েছে। একজন নেতার অহংকার, আত্মম্ভরিতা ও অবিবেচক নেতৃত্ব কিভাবে কোটি কোটি মানুষের জীবনে অন্ধকার নেমে আনতে পারে, তার নির্মম উদাহরণ হয়ে থাকছে এই সিদ্ধান্ত।

ইরান আজ শুধু একটি রাষ্ট্র নয়, এটি প্রতিরোধের প্রতীক। যুগের পর যুগ ধরে তারা জুলুমের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে লড়াই করেছে। অন্যদিকে, নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনসহ আশপাশের রাষ্ট্রগুলোতে আগ্রাসন চালিয়ে এক ভয়ঙ্কর দানবে পরিণত হয়েছে। তাদের এই আগ্রাসন এখন আর কেবল রাজনৈতিক নয়—এটি নিপীড়নের, বর্ণবাদ ও মানবতা বিরোধিতার এক নগ্ন রূপ।

ট্রাম্প হয়তো মনে করছেন, আবারও বিশ্বরাজনীতির মঞ্চে তিনি হিরো হয়ে উঠবেন। কিন্তু তিনি ভুলে গেছেন—আল্লাহ মানুষকে সময় দেন, সুযোগ দেন, কিন্তু চিরকাল ছেড়ে দেন না।
ফিলিস্তিনের রক্তাক্ত শিশুর মুখ, মা-বাবার আর্তনাদ, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া স্বপ্ন—এই সবই একদিন প্রশ্ন তুলবে, একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে এই অন্যায়-অত্যাচারের মূল কারিগরদের।

নেতানিয়াহু আজকের দুনিয়ার এক ভয়াবহ রূপধারী রাক্ষস, যাকে শুধু মুসলিম বিশ্ব নয়, নিরপেক্ষ ও বিবেকবান মানুষরাও এখন চিনে ফেলেছে। আর ট্রাম্প? তিনি কখনোই নেতৃত্বের মাপকাঠিতে গ্রহণযোগ্য ছিলেন না। তাঁর চরিত্র, বক্তব্য, রাজনৈতিক কৌশল—সব কিছুতেই বিদ্বেষ, বর্ণবাদ, বিভাজন ও আত্মম্ভরিতার ছাপ স্পষ্ট।

আজকের এই ভয়াবহ সিদ্ধান্ত ট্রাম্পকে ইতিহাসের কালো পাতায় স্থান দেবে, একজন ধ্বংসসৃষ্টি করা নেতার প্রতীক হিসেবে।

তিনি হয়তো বিশ্বাস করেন, যুদ্ধই শক্তির আসল পরিচয়। কিন্তু এই শতকে যুদ্ধ মানে শুধুই মৃত্যু, বাস্তুচ্যুতি, মানবিক বিপর্যয় এবং সভ্যতার বিনাশ। তিনি ভুলে গেছেন—আত্মার শক্তি, ন্যায়ের ওপর বিশ্বাস, ঈমানের দৃঢ়তা এবং আল্লাহর ওপর নির্ভরতাই প্রকৃত শক্তির পরিচয়।

যদি মুসলিম বিশ্ব আজ সত্যিকার অর্থে ঐক্যবদ্ধ হয়, তবে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মতো নেতৃত্ব বুঝে যাবে—অস্ত্র দিয়ে সব কিছু দমন করা যায় না। নিপীড়িত জাতি একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়, আর শোষকেরা ইতিহাসে ধ্বংসের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।

সুতরাং আজ যে আগুন ট্রাম্প জ্বালালেন, কাল তারই লেলিহান শিখায় পুড়তে হবে তাকেই। ইতিহাস তা বারবার প্রমাণ করেছে—এবং এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।

Send a message to learn more

01/06/2025

#নীহারিকা_মন্জিল

#লেখনীতে_অল্প_সল্প_গল্প

( কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ । এবং নিয়মিত গল্প পেতে আমার পেজ ফলো দিয়ে রাখুন)

পর্ব : ৪১

-

এখন বিকেল, নিরব আর নিশিকে একটি ঘরে মাটিতে শীতল পাটি বিছিয়ে বসতে দেয়া হয়েছে। তাদের পাশে গোল হয়ে বসেছে নিশির বান্ধবীরা, আপারা, আর মতিন। তারা নিশিকে একটু পরপর কানে কানে কী যেন বলছে আর হাসছে। মোরিয়ম বেগম ধান-ধূপ আনতে গেছেন বাড়ির পেছনের ধানক্ষেত থেকে। রহিম মাস্টার পাশের ঘরে অতিথিদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলাপ করছেন।

মতিন নিরবের দিকে মোহভরা চোখে তাকিয়ে আছে। মতিনকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নিক মতিনকে জিজ্ঞেস করল,

— কী দেখছো? (নিরব)

মতিন বোকার মতো হেসে বলল,

— কারে আর দেখমু! আপনে'রে দেখতেছিলাম দুলাভাই! কত সুন্দর আপনে! বিশ্বাস করেন, এত সুন্দর মানুষ আমি আর চক্ষে দেখি নাই। (মতিন)

— এটা ভুল বলেছো মতিন! তোমার আপা কি কম সুন্দর? তোমার আপা কিন্তু আমার থেকেও সুন্দর। (নিরব)

— আপা তো মাইয়ার মধ্যে সুন্দর। আর আপনে পোলার মধ্যে সবথেকে সুন্দর। (মতিন)

— উঁহু, তুমি কি জানো আমার থেকেও সুন্দর আরও কত মানুষ আছে? আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সকল সৃষ্টি সুন্দর। এই পৃথিবীতে কেউ অসুন্দর নয়। জানো, আমার একটা খুব ভালো বন্ধু আছে, ও আমার থেকেও বেশি সুন্দর...

নিরব কথা শেষ করার আগেই মোরিয়ম বেগম ধান-ধূপ নিয়ে হাজির হন।

— অই মতিন, এতক্ষণ ধইরা কি এত বকবক করস? নাত জামাইরে বিরক্ত করিস না। সর দেহি, ছইর‍্যা বয়!
নাত জামাই আমি বুজতাম পারসি। এহন খালি একটা নিয়ম বাকী আছে। এইটা পালন করলি তুই বাড়ি চইলা যাইতে পারবি। (মোরিয়ম বেগম)

— সমস্যা নাই দাদি! আমার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। আপনি নিয়ম পালন করুন। (নিরব)

— আচ্ছা। (মোরিয়ম)

মোরিয়ম বেগম নিরব ও নিশিকে দিয়ে বাকি নিয়ম পালন করান।

রিং... রিং... রিং...

এই সময় নিরবের ফোনে একটি অজানা নম্বর থেকে কল আসে। সে একটু দূরে গিয়ে কলটি রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে পুরুষালি কণ্ঠ ভেসে আসে,

— We catch them. But ওরা কিছুতেই মুখ খুলছে না! তুমি যত তারাতারি সম্ভব চলে আসো। It's urgent. (অজ্ঞাত)

— Ok. তোমরা ট্রিটমেন্ট চালিয়ে যাও, আমি আসছি। (নিরব)

নিরব এইটুকু বলেই কলটি কেটে দিল। তারপর 'S' নাম দিয়ে সেভ করা একটি নম্বরে একটি মেসেজ পাঠিয়ে ফোনটি পকেটে ঢুকিয়ে ফেলল। তারপর সে ইশারায় নিশিকে ডাকল। নিরবের ইশারা পেয়ে নিশি সবার মাঝ থেকে উঠে এল।

— কী হল? সবার মাঝ থেকে ডেকে আনলেন যে! (নিশি)

— নিশি, আমায় এখন একটু বের হতে হবে। It's urgent. (নিরব)

— মানে? এখন কোথায় যাবেন আপনি? সবাইকে আমি কী বলব? আর আব্বাকে আমি কী বলব? (নিশি)

— চাচাকে আমি ম্যানেজ করে নেব। তুমি শুধু বাকিদের কিছু একটা বলে ম্যানেজ করে নিও, প্লিজ। আমায় এখনই বের হতে হবে। টেনশন কোরো না, আমি খুব তাড়াতাড়ি চলে আসব। ঠিক আছে? বাই। (নিরব)

— কিন্তু...

— কোনো "কিন্তু" না। প্লিজ, একটু বোঝার চেষ্টা করো। প্লিজ। বাই। আল্লাহ হাফেজ। (নিরব)

নিরব নিশিকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে গেল।

-

এখন সন্ধ্যা হওয়ার আগমুহূর্ত। প্রায় সব অতিথি চলে গেছেন। ‘নিহারিকা মঞ্জিল’-এ এখন শুধু প্রান্ত, প্রিয়া, প্রান্তর পরিবার ও মি. শিকদার রয়েছেন। সবাই হল রুমে বসে আছেন কৌতূহল নিয়ে। কারণ আরফান শিকদার সব অতিথির সাথে মি. শিকদারের টুকটাক পরিচয় করালেও, বাড়ির কারও সাথে এখনো তার পরিচয় করাননি। উপস্থিত সবার দৃষ্টি আরফান সাহেবের দিকে থাকলেও, প্রেমার দৃষ্টি শাওনের দিকে।

মি. শিকদার বাড়িতে পা রাখামাত্রই তার চোখ-মুখ শক্ত হয়ে গেছে, এটা সে অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছে। প্রমা সবার আড়ালে শাওনের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। সে মৃদু স্বরে শাওনকে জিজ্ঞেস করে,

— শাওন ভাই, আপনি ঠিক আছেন? (প্রেমা)

— হ্যাঁ... ঠিক আছি। ঠিক আছি আমি। (শাওন)

— আপনি সত্যি বলছেন তো? (প্রেমা)

— তোমাকে মিথ্যে বলবো কেন? (শাওন)

— কিন্তু, আমার মনে হচ্ছে আপনি ঠিক নেই। মি. শিকদারকে দেখার পর আপনি কেমন যেন করছেন! কিছু কি হয়েছে? (প্রেমা)

— তোমার কি মনে হচ্ছে না, তুমি আমায় নিয়ে একটু বেশি ভাবছো আজকাল! আমায় নিয়ে এত ভেবো না প্রেমময়ী। পরে নিজেই নিজেকে ঘৃণা করবে।
কে বলতে পারে আজ যাকে নিয়ে তুমি এত ভাবছো,
কাল তার নামটাই হয়তো তুমি মুখে নিতে চাইবে না। (শাওন)

শাওনের মুখে এত কঠিন কথা শুনে প্রমা ভেতরে ভেতরে নিজের উপর রাগ হল ঠিকই, কিন্তু মুখে একটি শব্দও করলো না। রাগ, অভিমান গুলো অশ্রুকণা হয়ে তার চোখ থেকে ঝরে পড়লো। মনে মনে নিজের ১৪ গুষ্টি উদ্ধার করলো সে।

"কেন বারবার বেহায়ার মতো গিয়ে কথা শুনতে যাচ্ছিস প্রেমা? জানিস না, উনি কখনো তোর কথার সোজা উত্তর দেয় না। তবুও কেন?"

প্রেমার চোখে পানি দেখে আরফান সাহেব প্রেমাক জিজ্ঞেস করেন,

— প্রেমা কী হয়েছে? চোখে পানি কেন? (আরফান)

— কিছু না, আব্বু! চোখে কী যেন পড়েছে, তাই! (প্রেমা)

— ও আচ্ছা। সবাই শুনুন, আপনারা অনেকেই মি. শিকদার কে সেটা জানার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছেন। তো, আপনাদের এতক্ষণ অপেক্ষা করানোর জন্য আমি দুঃখিত।
এখন আসি মূল কথায়— উনি কে?
উনি হচ্ছেন মি. শিকদার, পুরো নাম কাইফ শিকদার।
ঈশা, তুমি আমায় অনেকবার জিজ্ঞেস করেছিলে না, এত কম দামে এত সুন্দর, এত বড় বাড়িটা আমাদের কে দিলো?
এই যে, উনি আমার কাছে এই বাড়িটা বিক্রি করেছেন। উনি এই বাড়ির মালিক। (আরফান)

— এক মিনিট, মি. চৌধুরী! একটা ভুল আছে। আমি এই বাড়ির মালিক আগে ছিলাম, এখন এই বাড়ির মালিক কিন্তু আপনারা। (কাইফ)

— তা না হয় বুঝলাম। কিন্তু আমার একটা প্রশ্ন ছিল। আপনার অনুমতি পেলে প্রশ্নটা করবো! (প্রেমা)

— এতে অনুমতি নেওয়ার কী আছে! কী জানতে চাও বলো। (কাইফ)

— আচ্ছা, এত বড় বাড়ি, এত বিলাসবহুল — নিশ্চয়ই অনেক টাকা খরচ করে বানিয়েছেন! তাহলে এত কম দামে আমাদের দিলেন কেন? (প্রেমা))

— গুড কোয়েশ্চেন! তবে এই বিষয় নিয়ে বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে। এর থেকে বরং শর্টকাটে বলি...
আজ থেকে প্রায় ৯ বছর আগে, আমি এখানকার মন্ত্রী ছিলাম। এই বাড়িতে আমি আর আমার স্ত্রী নিহারিকা থাকতাম। এই বাড়িটা আমাদের বিয়ের পর আমার শ্বশুর মশাই আমায় উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত, বিয়ের ২ বছর পর এক অগ্নিকাণ্ডে আমার স্ত্রী মারা যায়। তারপর আমি খুব আপসেট হয়ে পড়ি। এই বাড়ির প্রতিটি কোণায় নিহারিকার স্মৃতি রয়ে গেছে, যা আমাকে বারবার ওর কথা মনে করিয়ে দিত। আমি কোনো কাজেই মন দিতে পারতাম না। কিন্তু আমার জন্য এই চট্টগ্রাম অচল হয়ে পড়ছিল। তাই সহকর্মীদের পরামর্শে আমি এই বাড়ি ছেড়ে অন্য জায়গায় শিফট হয়ে যাই এবং বাড়ির নিরাপত্তার জন্য কয়েকজন গার্ডকে বাড়ির দায়িত্ব দিয়ে যাই।
কিন্তু তারা কেউ বেশিদিন থাকল না। গ্রামের অনেক ভিতরে হওয়ায় তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা ছিল না। তার উপর তখন এখানে বাঘের প্রচুর উপদ্রব ছিল। তাই কেউ ১ মাসের বেশি থাকেনি।
এদিকে গার্ড না থাকায় চোর-ছ্যাঁচোরা বাড়ির অনেক কিছু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল। এজন্য আমি বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই।
প্রথমে অনেকেই এসেছিল, কিন্তু বাড়ি ঘুরে দেখার পর কেউ রাজি হচ্ছিল না বাড়ি কিনতে। তাদের মধ্যে অনেকেই দাবি করেছিল, এখানে নাকি তারা জ্বিন-ভূত দেখেছে। আমি নিজে এখানে এসে ঘুরে গেছি, কিন্তু তেমন কিছুই দেখিনি।
শেষে, দাম কমিয়েও যখন কাউকে পাচ্ছিলাম না, তখন আরফান সাহেব সব শুনে বাড়ি কিনতে রাজি হলেন— আমিও দ্বিমত পোষণ করলাম না।
এই হচ্ছে মূল কাহিনি। (কাইফ)

প্রেমা কাইফ শিকদারের কথায় বাঁকা হাসল। অতঃপর বলল,

— ও, তাহলে এই কাহিনি! সবকিছু কেমন সিনেমার মতো লাগলো না! থ্রিলার সিনেমা! (প্রেমা)

প্রেমা কথায় কাইফ তার দিকে একরকম ডেভিল স্মাইল দিয়ে এগিয়ে এসে বলল,

— তা বলতেই পারো! তবে একটা কথা কি জানো— আমাদের সবার জীবনই সিনেমার মতো।
কারোটা থ্রিলার সিনেমা,
কারোটা রোমান্টিক সিনেমা।

কাইফের কথার মাঝেই শাওন খেয়াল করল, কাইফ প্রেমার কোমরের দিকে হাত বাড়াচ্ছে। সে কাইফ শিকদারের কাছে এগিয়ে গিয়ে তার হাতটা শক্ত করে ধরে বলল,

— কার জীবন কেমন হবে, তা তো আল্লাহই ভালো জানেন— তাই না, মি. শিকদার? (শাওন)

শাওনের কথায় কাইফ অপ্রস্তুত বোধ করল। সে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলল,

— হুঁম। ইউ আর রাইট! (কাইফ)

শাওন কাইফের দিকে তির্যক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,

— I know!
By the way, খুব ভালো লাগলো পরিচিত হয়ে। Nice to meet you!
আচ্ছা, আমি এখন বের হচ্ছি— আমার একটা জরুরি কাজ পড়ে গেছে। কাজ সেরে আমি বাসায় চলে যাব। মামনি, এখন কিছু জিজ্ঞেস করো না। কোন কাজে যাচ্ছি, কোথায় যাচ্ছি— সব পরে বলব। (শাওন)

শাওন কাউকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বেরিয়ে গেল।

চলবে...

Send a message to learn more

18/05/2025

আজকের মধ্যে এই পোষ্টে যদি ১কে + রিয়েক্ট ও কমেন্ট পড়ে তাহলে আমি ফেইস রিভিল করবো। 😎

#সিরিয়াস_পোস্ট

13/05/2025

#নীহারিকা_মন্জিল
#লেখনীতে_অল্প_সল্প_গল্প

পর্ব- ৪০ এর বর্ধিতাংশ

কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ⛔

[নিয়মিত গল্প পেতে আমার পেইজ Olpo Solpo Golpo -অল্প সল্প গল্প ফলো দিয়ে রাখুন]

-

প্রান্ত আর প্রিয়া বর বউয়ের আসনে বসে আছে। তাদের একপাশে দাঁড়িয়ে আছে প্রেমা, চৈতি, ফাহিম, দিয়া, কথা আর অন্যপাশে দাঁড়িয়ে আছে শাওন, ফাহাদ, রাহা।

রেজিস্টার এসেছিলো কিছুক্ষণ আগে। রেজিস্ট্র পেপারে সাইন করা হয়ে গেছে। সবাই এখন কাজীর অপেক্ষায় আছে। কিছুক্ষনের মধ্যে কাজীও চলে আসে। কাজী আসলো। তিনি এসে বর বউয়ের একপাশে একটি চেয়ারে বসলো। তারপর বললো,

- আসতে একটু দেরি হয়ে গেলো। আসলে রাস্তায় এত জ্যাম! আরফান সাহেব আপনার রেজিস্ট্রি সেরে নিয়েছেন তো? (কাজী)



- হ্যাঁ! আপনি বিয়ে পড়ানো শুরু করুন। (আরফান)

আরফান সাহেবের সম্মতি পেয়ে কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করলো। তিনি প্রথমে প্রিয়াকে বললেন,

- মোসাম্মৎ রাত্রিপ্রিয়া চৌধুরি, আপনি কি আজ থেকে মোহাম্মদ প্রান্ত মাহমুদের সব সময়ের সঙ্গী, একজন স্ত্রী হিসেবে তার প্রতি আপনার দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে সেগুলো পালন করতে এবং তার সাথে এই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি আছেন? যদি রাজি থাকেন তাহলে তিন কবুল বলুন। (কাজী)

প্রিয়া কবুল না বলে চুপ করে থাকে।

প্রিয়াকে চুপ থাকতে দেখে কাজী আবার কবুল বলতে বললো। কিন্তু প্রিয়া চুপ।

এবার প্রেমা প্রিয়াকে একটা মৃদ্যু ধাক্কা দিয়ে বললো,

- এই আপু, কিরে! কবুল বলছিস না কেনো? সারাক্ষণ তো বিয়ের জন্য লাফিয়ে বেড়াতি। এখন কবুল বলছিস না কেনো? (প্রেমা)

প্রিয়া নিশ্চুপ। প্রিয়াকে চুপ করে থাকতে চৈতি বললো,

- ও বলআপাই, কবুল বলো না! বলো! (চৈতি)

প্রিয়াকে চুপ থাকতে দেখে সবাই প্রিয়াকে কবুল বলতে বলে। কিন্তু প্রিয়া নিশ্চুপ। প্রিয়া যখন কেউ কিছুতেই কবুল বলাতে পারছে না ঠিক সেসময় প্রান্ত এমন এক কান্ড ঘটালো যাতে সবাই চমকে গেলো।

প্রিয়া যখন কিছুতেই কবুল বলছে না ঠিক তখন প্রান্ত পকেট থেকে একটা টুকটুকে লাল গোলাপ বের করে প্রিয়ার সামনে হাটু গেড়ে বসলো। প্রিয়ার সামনে লাল গোলাপটা ধরে বললো,

প্রিয়র চেয়েও প্রিয় তুমি আমার রাত্রিপ্রিয়া💝

যেদিন প্রথম দেখেছিলাম তোমায়
নিজেকে লেগেছিলো বড়ো অসহায়,

সারাদিন ভাবিতাম আমি তোমারে

আরো ভাবিতাম,

ওহে কি করিলে পাইবো তোমারে।

অবশেষে এলো সেইদিন

যেদিন আমার জীবন তুমি করলে রঙিন।

ওহে আমার রাত্রিপ্রিয়া, তুমি কি হবে আমার অর্ধাঙ্গিনী? যদি রাজি থাকো তাহলে বলো কবুল!

প্রিয়া লাজুক হেসে প্রান্তর হাত থেকে লাল গোলাপটা নিয়ে বললো,

- কবুল! কবুল! কবুল! (প্রিয়া)

প্রিয়া কবুল বলার পরপর সবাই করতালি দিলো।

প্রিয়ার মুখে কবুল শোনার পর প্রান্ত মুখে বিজয়ের হাসি নিয়ে বললো,

- আলহামদুলিল্লাহ! (প্রান্ত)

প্রেমা খুশিতে প্রিয়াকে জড়িয়ে দরে বললো,

- ওরেএএ! কি সুন্দর জুটি রে তোরা! ভাইয়া কি সুন্দর সবার সামনে শায়েরি বলে তোকে প্রোপোজ করলো! হাউ সুইট! (প্রেমা)

- এবার বুঝলাম আপু! তুমি কেন এতক্ষন কবুল বলছিলে না। ভাইয়ার সারপ্রাইজের জন্যই অপেক্ষা করছিলে তুমি তাই না! (দিয়া)

- হাউ সুইট কাপল! নাজার না লাগ যায়! (কথা)

- বলো কি! নজর লাগবে না মানে! এত কিউট একটা কাপলের দিকে তো সবাই নজর দিবে। (ফাহিম)

ফাহিমের কথায় সবাি হো হো করে হেসে উঠলো। কাজী সাহেব এবার প্রান্তকে বললো,

- মোহাম্মদ প্রান্ত মাহমুদ, আপনি কি মোসাম্মৎ রাত্রিপ্রিয়া কে নিজের স্ত্রী মর্যাদা দিতে, সবসময় তার পাশে থাকাতে, সকল দায়িত্ব নিতে এবং তার সাথে এই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি আছেন থাকলে তিন কবুল বলুন। (কাজি)

প্রান্ত কবুল বলবে এমন সময় দরজায় টোকা পড়লো। সবার নজর চলে গেলো দরজার দিকে। দরজার বাইরে একজন পুরুষ হাতে কিছু গিফট ব্যাগ আর দুটি ফুলের তোড়া হাতে দাড়িয়ে আছে । পরনে কালো কোর্ট প্যান্ট। কাধ সমান কোঁকড়া চুলগুলো পেছন থেকে ঝুটি করা। শ্যামবর্ণের সুঠামদেহি।

আরফান সাহেব লোকটির দিকে চমৎকার হেসে এগিয়ে গেলো।

- মি: শিকদার! আসুন! আসুন! ভেতরে আসুন। দেরি করলেন কেনো আসতে? আরেকটু দেরি হলেতো বিয়েটা পেতেন না! (আরফান)

- ওহ হো! একটু বেশিই লেট হয়ে গেলো! আ'ম সরি! বিয়ে কি শেষ? আমি কি বেশি লেট করে ফেলেছি? আসলে এত জ্যাম না রাস্তায়! (মি: শিকদার)

- আরে না! না! তেমন দেরি হয়নি! আমাদের জামাই কবুল বলবে মাত্র। কি হলো প্রান্ত? থামলে কেনো? এবার তুমি কবুল বলে ফেলো! হা হা হা হা..। (আরফান)

- কবুল! কবুল! কবুল! (প্রান্ত)

- আলহামদুলিল্লাহ! বিয়ে সম্পন্ন হলো। (কাজী)

চলবে...

( হে হে। পাঠক - পাঠিকারা নতুন টুইস্ট দিয়ে গেলাম। এবার আপনারা খুঁজতে থাকেন কে এই মি: শিকদার 😁।)

09/05/2025

#নীহারিকা_মন্জিল
#লেখনীতে_অল্প_সল্প_গল্প

পর্ব-৪০

কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ⛔

(নিয়মিত গল্প পেতে আমার পেইজে ফলো দিয়ে রাখেন)

-

প্রান্তরা ঘরে ঢোকার আগেই প্রেমা নিচে গিয়ে দরজার সামনে দুহাত মেলে দাঁড়িয়ে পড়ে। প্রেমাকে কাকতাড়ুয়ার মতো দাঁড়াতে দেখে প্রান্ত ভ্রু কুচকে প্রেমার দিকে তাকিয়ে বলে,

- এসব কী, প্রেমা? লক্ষী বোন আমার! আজকের দিনে দুষ্টুমি করতে নেই পুঁচকু! সরো সামনে থেকে! ভাইয়াকে ঢুকতে দাও! (প্রান্ত)

- না! না! দুলাভাই না! আজকে আমি কারো বোন না, আর কেউ আমার ভাইও না! আজকে থেকে আপনি আমার দুলাভাই আর আমি আপনার শালি। আর একটা কথা আপনি ভুল বলেছেন! আজকের দিনেই তো শালিরা দুষ্টুমি করবে।আজকে করবে না তো কবে করবে?
যাকগে, আপনাকে তো আমরা এত সহজে ঢুকতে দেবো না! আমার আপুকে আপনি সারাজীবনের মতো নিয়ে যাবেন। এমনি এমনি তো আমরা মেয়ে দেবো না! প্যায়সা লাগে গা প্যায়সা! (প্রেমা)

প্রেমার কথায় তার দাদি আমিনা বেগম প্রেমাকে শাসন করে বললেন,

- প্রেমা, এইসব কি অসভ্যতামো? আমরা তো তোমায় এই শিক্ষা দেই নি। নাতজামাই কতক্ষণ বাইরে দাড়িয়ে থাকবে? সরে যাও, ওকে ঢুকতে দেও! ( আমিনা)

- না দাদি! একদমই না! দুলাভাই আমাকে কথা দিয়েছিলো আপুর ছ...

প্রেমা বাকিটুকু বলার আগেই শাওন বললো,

- হ্য..হ্যাঁ! ও ঠিক বলছে! একদম ঠিক বলেছে ও! প্রান্ত ওকে বলেছিলো তো ওদের বিয়ের দিন দশ হাজার টাকা বকশিশ দেবে। ইনফ্যাক্ট আমার সামনে বলেছে! কি ভাই বল? (শাওন)

শাওনের কথায় প্রান্ত গো-বেচারা ভঙ্গিতে শাওনের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে,

- আমি তো পাঁচ হাজার বলেছিলাম। তুই দশ হাজার বললি কেন, ভাই?(প্রান্ত)

- তোর ভালোর জন্যই বলেছি। প্রেমা যদি সবার সামনে গায়ের হলুদের দিনে যে তুই লুকিয়ে ভিডিওকলে ভাবিকে দেখেছিস বলে দেয় তখন কি হবে ভেবেছিস? সবার সামনে বড় আম্মু আর মামনি আমাদের ইজ্জতের ফালুদা করবে। এর থেকে ভালো, ওরা যা চায় তার ডাবল দিয়ে দে। (শাওন)

প্রান্ত দীর্ঘশ্বাস ফেলে শাওনকে বলে,

- কি আর করা যাবে? মুখ থেকে যখন বেরই করে ফেলেছিস তখন তো দিতেই হবে। ( প্রান্ত)

তাদের কথার শেষ এশা চৌধুরি বললেন,

- দেখো প্রান্ত, তুমি প্রেমাকে কি বলেছো সেটাতো আমি জানি না! কিন্তু আমি বলছি তোমায় তোমার টাকা পয়সা দেয়া লাগবে না। প্রেমার বেয়াদবির জন্য আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। ( শাওন)

- ছিঃ! ছিঃ! বেয়াইন! আপনি ক্ষমা চাচ্ছেন কেনো? ও তো আপনার ছেলের বয়সিই। আর দোষ তো আমার ছেলেরই! এত কিপ্টেমি যে ও কার কাছ থেকে পেয়েছে আল্লাহ মাবুদ ভালো জানে! আমাদের বংশের কউ তো এমন না। এত কথা হলো তাও দেখুন পকেট থেকে এক টাকাও বের করলো না! (লায়লা)

- মা! তোমার এই কথাটা কিন্তু আমি মানতে পারলাম না! আর কেউ জানুক বা না জানুক অন্তত তোমার জানা উচিত ছিলো যে তোমার ছেলে কথা দিয়ে কথা রাখে। শালিসাহেবাকে যখন আমি কথা দিয়েছি তখন কথা রাখবোও। তুমি যদি আমার দিকে ভালো করে তাকাতে তাহলে দেখতে যে আমি এতক্ষণে পকেট থেকে এক হাজার টাকার দশটা চকচকে নোট বের করে ফেলেছি।

প্রান্ত প্রেমার হাতে টাকা গুজে দিয়ে একটা ভেটকি দিয়ে বলে,

এই নাও শালিসাহেবা তোমার বকশিশ। (প্রান্ত)

প্রেমা টাকাটা নিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো,

- অসংখ্য ধন্যাবাদ, দুলাভাই! এবার আপনি আসতে পারেন। সুস্বাগতম আপনাকে । (প্রেমা)

প্রান্ত অপ্রস্তুত হেসে ঘরে ঢুকতে ডুকতে ডুকতে বললো,

- ধন্যবাদ।(প্রান্ত)

অতঃপর সে ভিতরে গিয়ে বর - বউয়ের জন্য রাখা সিংহাসনাকৃতির একটি চেয়ারে গিয়ে বসলো। প্রান্ত ঢোকার পর শাওন ও বাকিরা ঢুকলো। শাওন ঢোকার সময় প্রেমা তাকে ডাক দিয়ে বললো,



- শাওন ভাই! (প্রেমা)

প্রেমার ডাকে শাওন ঘাড় ঘুড়িয়ে প্রেমার দিকে তাকিযে মুচকি হেসে বললো,

- কি প্রেমময়ী? (শাওন)

প্রেমা শাওনের দিকে কয়েক পা এগিয়ে গিয়ে মিষ্টি হেসে বললো,

- থ্যাংকস। আপনি না থাকলে ভাইয়ার থেকে টাকাটা পেতামই না। ( প্রেমা)

প্রেমার কথায় শাওন একটা ডেভিল স্মাইল দিযে বলে,

- এতে থ্যাংকস বলার কিছু নেই। আমি তোমার জন্য কিছু করিনি। যা করেছি আমার জন্য করেছি। প্রান্ত টাকা না দিলে তুমি তো সব বলেই দিচ্ছিলে। বাই দ্যা ওয়ে সরো! এতক্ষণ দাড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যাথা হয়ে গেছে! ( কথাটা বলেই শাওন প্রেমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়।)

শাওন যাবার পর প্রেমা তার দিকে তাকিয়ে থাকে। অভিমানে তার মুখ কালো হয়ে আসে। মনে সে ভাবে,

" কাকে আমি কি বলছি? হাহ্! উনি তো এরকমই। আপনি এতো জটিল কেনো, শাওন ভাই? আপনাকে দেখলে কখনো মনে হয় আপনি আট - দশজন মানুষের মতো সহজ সরল।আবার কখনো মনে হয় না! আপনি মোটেও সহজ সরল নন! আপনি কখন কার জন্য কি করছেন বোঝা মুশকিল! আপনি হলেন মরীচিকার মতো।

যা দেখা যায় তা সত্য না, যা দেখা যায়না তাই সত্য!

যদিও আমি এখনো আপনান রহস্য উদঘাটনে সফল হইনি! কখনো হবো কি না জানি না!

চলবে........

07/05/2025

আসলেই মনে থাকে না😅🥀

কি? চুন্দর না?😁🌚
05/05/2025

কি? চুন্দর না?😁🌚

02/05/2025

#নীহারিকা_মন্জিল
#লেখনীতে_অল্প_সল্প_গল্প

পর্ব- ৩৯ এর বর্ধিতাংশ

(কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ⛔)

[নিয়মিত গল্প পেতে আমার পেইজ Olpo Solpo Golpo -অল্প সল্প গল্প তে ফলো দিয়ে রাখুন]

-

প্রিয়া প্রেমাকে ভেঙ্গিয়ে বললো,

- এ্যাহহ! বিয়েটাই হবে না। আমার বিয়ে তো এমনিও হবে না। (প্রিয়া)

- মানে? কেন? কি হয়েছে? (দিয়া)

- মানে আবার কি? তোরা বিয়ে হতে দিলে তো বিয়ে হবে! আমার তো মনে হয় তোরা আমায় ভুতই সাজাচ্ছিস। এক ঘন্টা ধরে বসে আছি এখনো তোদের সাজানো শেষ হলো না। কি এমন সাজাচ্ছিস তোরা? (প্রিয়া)

প্রেমা কোমরে হাত দিয়ে চোখ মুখ কুঁচকে বলে,

- ওমনি না! একেই বলে নাচতে না জানলে উঠোনের দোষ। আমরা তো ঠিকই সাজাচ্ছিলাম তুই এ তো বারবার নড়াচড়া করে মেকাপের তেরোটা বাজিয়ে দিলি। দেখ, চুল বেধে দিয়েছিলাম সেটাও খুলে ফেলেছিস। (প্রেমা)

- যত দোষ প্রিয়া ঘোষ। জানতাম তুই আমাকেই দুষবি। এতক্ষন ধরে বসে থাকতে থাকতে কোমরটা ধরে গেলো। তাড়াতাড়ি সাজানো শেষ কর। (প্রিয়া)

- তুই চুপ করে বসে থাক। তাহলেই হবে। (প্রেমা)

-

নিরব ও রহিম মাস্টাররা জুমার নামাজ পড়ে চলে এসেছে।কাজী ও চলে এসেছে। নিরব বাইরে উঠোনে বসেছে। নিশিকে তার থেকে খানিকটা দুরে বসানো হয়েছে। সে মাথা নিচু করে আছে। কাজী সাহেব সব নিয়ম পালন করে নিশিকে বললো,

- মোসাম্মৎ আফরোজা নিশি, আপনি কি মোহাম্মদ নিরবকে নিজের স্বামী হিসেবে স্বীকার করতে, তার স্ত্রি হিসেবে যা যা করণীয় তা পালন করতে এবং তার সাথে এই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি আছেন? যদি রাজি থাকেন তাহলে তিনবার কবুল বলুন। (কাজী)

নিশি কবুল না বলে চুপ করে থাকে। তাকে চুপ থাকতে দেখে দেখে কাজী সাহেব আবারও বললেন,

- রাজি থাকলে বলুন কবুল,কবুল কবুল। (কাজী)

নিশি নিশ্চুপ। নিশিকে চুপ মেরে বসে থাকতে দেখে মরিয়ম বেগম বললো,

- ওই ছেড়ি চুপ কইরা আছোস ক্যা? ক কবুল! (মরিয়ম)

নিশি মরিয়ম বেগমের কথায় লাজুক হেসে ধীরকন্ঠে বললো,

- কবুল, কবুল, কবুল। (নিশি)

নিশির মুখে কবুল শুনে সবাই আলহামদুলিল্লাহ বললো। এরপর কাজী সাহেব নিরবের মুখোমুখি বসে তাকে বললো,

- মোহাম্মদ নিরব, আপনি কি মোসাম্মৎ আফরোজা নিশিকে নিজের স্ত্রী রুপে স্বীকার করতে, তার সব দায়িত্ব নিতে ও তার সাথে এই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে রাজি আছেন? থাকলে তিন কবুল বলুন। (কাজী)

- কবুল, কবুল, কবুল। (নিরব)

- আলহামদুলিল্লাহ! বিবাহ সম্পন্ন হইলো।(কাজী)

------

প্রিয়া বউ সেজে নিজ ঘরে বসে আছে। প্রেমা, দিয়া, কথা, চৈতি,রাহা প্রিয়ার সাথে আছে। আরফান চৌধুরি, মাহবুব, ফাহিম, শাওন, প্রান্ত, ইফতেখার ফাহাদরা মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে গেছে। শিরিন, রাবেয়া, প্রান্তর মা, এশা ও ওনার শ্বাশুড়ি মিলে আরেকটা ঘরে বসে গল্প করছে।

কিছুক্ষনের মধ্যেই প্রান্তরা এসে পড়ে। তারা আসলে এশা চৌধুরি প্রেমাকে বলে প্রিয়াকে নিচে নিয়ে আসতে।

- এই, প্রেমা।প্রান্তরা এসে গেছে। প্রিয়াকে নিয়ে আয়। (এশা)

- আসছি.......(প্রেমা)

- এই চল! চল তাড়াতাড়ি চল! দুলাভাইর রাস্তা আটকাতে হবে নয়তো এক টাকাও পাবো না। যা কিপ্টে! (প্রেমা)

- হুম! ঠিক বলেছো আপু! জানো আমাকে একটা চকলেট পর্যন্ত কিনে দিতে চায়না। বলে দাঁতে পোকা হবে। (রাহা)

- তোমার সাথেও কিপ্টেমি। তাহলে তো আজ দুলাভাইকে একদম ছাড়া যাবেনা। চলো সবাই! (প্রেমা)

- ধর! আজ ভালোভাবে চেঁপে ধরবি। এক টাকাও কমাবি না! (প্রিয়া)

- ওকে। বন্ধুগণ পারমিশান পেয়ে গেছি। লেটস গো। (প্রেমা)

প্রেমা প্রিয়া ও সবাইকে নিয়ে গিয়ে প্রান্তর পথ আটকে ধরে।

চলবে...

( সবাই লাইক, কমেন্ট করবেন কিন্তু। নয়তো গল্প দেরিতে দেবো🌚)

28/04/2025

#নীহারিকা_মন্জিল

#লেখনীতে_অল্প_সল্প_গল্প

পর্ব- ৩৯

[কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ⛔]

{নিয়মিত গল্প পেতে আমার পেইজে ফলো দিয়ে রাখুন}

-

দুপুরের আগমুহূর্ত। সকাল থেকেই রহিম মাষ্টারের বাড়িতে সাজসাজ রব। ভোর হতে না হতেই আশেপাশের বাড়ির অনেকেই আসা শুরু করেছে তার বাড়িতে। তবে অনেকেই আবার আসেনি।

কালকের ঘটনায় আব্দুল ঘটক ও জসিমের অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যে প্রমাণ হওয়ার পর তারা পালানোর চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু চেষ্টা সফল হয়নি। নিশি ও নিরব কে বিনাদোষে মারধর, নিশির বাড়ির লোকদের ওপর অতর্কিত হামলার অভিযোগে পুলিশ জসিম, আব্দুল ও তাদের সাথে আর যারা জড়িত ছিলো তাদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। তাদের নিয়ে যাবার পর রহিম মাস্টার চেয়ারম্যান ও বাদ বাকিদের নিশির বিয়ের দাওয়াত দিয়ে আসে।

-

আজ নিশির বিয়ে। বউ সেজে নিজ ঘরে বসে আছে নিশি। কিছুক্ষণ পর রেজিস্টার আসবে। আর জুমার দিকে কাজী এসে বিয়ে পড়িয়ে যাবে। নিশি খাটের উপর বউ সেজে বসে আছে আর তাকে ঘিরে বসেছে তার বান্ধুবি কলি, বকুল, নয়নতারা, ফাতেমা। তাদের মধ্যে থেকে কলি বলে উঠলো,

- কিরে নিশু! তোর কপাল তো খুলে গেলো। কত সুন্দর রাজপুত্রের মতো দেখতে জামাই হয়েছে তোর। দেখিস শ্বশুরঘরে গিয়ে আমাদের আবার ভুলিস নে যেনো। হি হি হি হি। (কলি)

- ধুর! তোরাও না! তোরা আমার ছোটবেলার বন্ধু। তোরা কি করে ভাবলি তোদের আমি এত সহজে ভুলে যাবো। (নিশি)

- এই শোন, বিয়ের আগে না এমন কথা অনেকেই বলে। কিন্তু বিয়ের পর স্বামী সোহাগ পেয়ে সে কথা কারো মনে থাকেনা। ওইতো গেলো বছর আমাদের দলের শেফালির বিয়ে হলো। কত বলেছিলো আমাদের কথা নাকি ওর খুব মনে পড়বে। রোজ আমাদের সাথে ফোনে কথা বলবে। কাঁচকলা! ফোনে কতা বলা তো দুর, বাপের বাড়ি এলেও সারাক্ষণ জামাইর সাথে ঘুরে বেড়ায়।আমাদের বাড়ির আশেপাশেও তো আসেনা। (বকুল)

- তোরা থাম তো ! শেফালী তো আগেও আমাদের সাথে অত মেলামেশা করতো না। ওর আবার বিয়ের আগে কি আর পরে কি! সব হচ্ছে বাহানা! কিন্তু নিশু তো অমন নয়। নিশু ঠিক আমাদের মনে রাখবে। হুমম! (নয়নতারা)

- আচ্ছা, এসব কথা এখন বাদ দে দেখি। নিশু তুই ওদের কথা এত কানে নিস না। তুই আমায় একটা কথা বল তো, এরকম রাজপুত্র পেলি কোথায়? আমাদেরও বল! তাতে করে যদি আমাদেরও কপাল খুলে যায়! তাতে ক্ষতি কি! হি হি! (ফাতেমা)

- খুব না! তোদেরও যেমন কথা ! ওনাকে আমি কোথায় খুঁজে পাবো ! পেয়েছে তো আব্বা। তবে আমি না একবার এক সিনেমায় দেখেছিলাম জঙ্গলের মাঝখানে গিয়ে ধ্যান করলে মনের ইচ্ছে পুরণ হয়। তোরা চাইলে জঙ্গলে গিয়ে ধ্যানে বসতে পারিস। (নিশি)

- সত্যিইই ! তাহলে আমি বরং আজই গিয়ে ওইযে পুরোনো জমিদার বাড়িটা আছে না! কি যেন নাম?(বকুল)

- নীহারিকা মন্জিল? (ফাতেমা)

- হ্যাঁ। হ্যাঁ। ওখানে যে ছোট জঙ্গলটা আছে সেখানে ধ্যানে বসব ! এই তোরাও যাবি নাকি? (বকুল)

- পাগল নাকি ! ওখানে যেতে যাবো কোন আক্কেলে? জানিস না ওই বাড়ির আশপাশ দিয়েও কেউ যেতে তেমন সাহস করে না। ওখান থেকে নাকি রাতের বেলা চিৎকারের আওয়াজ, কান্নার আওয়াজ শোনা যায়। (কলি)

- আরেহ্ ! তোরা ভয় পাস না ! ওখানে এখন মানুষ থাকে। আমার আব্বা একদিন বাজারে যাবার সময় ওবাড়িতে মানুষ ঢুকতে বেরোতে দেখেছে। ওই বাড়ির একজনের সাথে কথা বলে জেনেছে, তারা শহর থেকে এসেছেন। বাড়িটা ওনারা কিনে নিয়েছেন। এখন থেকে এখানেই থাকবে। (বকুল)

- থাকলেও আমরা যাবো না। তোর কি কখনো মাথায় বুদ্ধি হবে না? নিশু, বললো আর তুইও বিশ্বাস করে নিলি! (নয়নতারা)

- ওমা! বিশ্বাস করবো না কেন? ও কি মিথ্যে বলছে নাকি? (বকুল)

- কেন ওর চোখ মুখ দেখে বুঝতে পারছিস না ও মজা করেছে ! দেখ কিরকম মুখ টিপে টিপে হাসছে। ( কলি)

- তুই বোকা বানালি আমাকে, নিশু! (বকুল)

- হ্যাঁ, ও তোকে বোকা বানিয়েছে ! সাধে কি তোকে গাধা বলি ! (ফাতেমা)

তাদের কথার মাঝেই মরিয়ম বেগম ঘরে ঢুকে সবাইকে তাড়া দিতে লাগলেন।

- এ্যাাই! বহুত বকবক করছোস! এবার তোরা সর দেহি আর নাতনিডার লগে দি আমি কদ্দুর বই।

মরিয়ম বেগম সবাইকে সরিয়ে নিজে গিয়ে বসলেন নিশির পাশে। অতঃপর নিশির চিবুক ধরে বললো,

মাশাল্লাহ! কি ছুন্দর লাগতাছে। পুরা আসমানের চান্দের লাহান !

(তিনি কনে আঙুলে কাজল নিয়ে নিশির কানের পিছনে লাগিয়ে দেয়।)

- আরে দাদি কি করো? (নিশি)

- নজরটিকা দিলাম। যেন কাউর নজর না লাগে! চাইরদিগে যা বদনজর পড়ছে! (মরিয়ম)

- আসতে পারি।

তাদের কথার মাঝে রহিম মাষ্টার রেজিস্টারকে নিয়ে আসে।

- হ আয়। আয়! নিরবের সই করা হই গেছে? (মরিয়ম)

- হ আম্মা! হয়ে গেছে ওর। (রহিম)

রেজিস্টার এসে একটা চেয়ারে বসে। তারপর নিশির হাতে একটা কাগজ দিয়ে সই করার জায়গাটা দেখিয়ে দিয়ে বললো,

- নাও মা! এখানে সই করো। তুমি চাইলে একবার পুরোটা পড়ে নিতে পারো। (রেজিস্টার)

নিশি কিছু বলে না। শুধু ঘাড় কাত করে আচ্ছা বলে। সে রেজিস্ট্রি পেপারটা একবার পড়ে সাইন করে দেয়।

-

চৌধুরি বাড়িতে বেজেছে বিয়ের সানাই। সকাল থেকে অতিথিতে ভরপুর। মহিলামহল ব্যাস্ত রান্নাঘরে। আরফান চৌধুরি, ফাহিম ও মাহবুব সাহেব (শিরিনের হাসবেন্ড) মিলেও বাইরের সব কাজ সামলাতে পারছেনা। হিমশিম খাচ্ছে। কিছুক্ষনের মধ্যেই প্রান্তরা এসে যাবে। প্রিয়া ঘরে বসে আছে। এশা চৌধুরি প্রিয়াকে ঘুরঘুর করতে মানা করেছে। প্রেমা, আর দিয়া মিলে প্রিয়াকে সাজাচ্ছে। আর কথা খাটের এককোণে বসে চৈতির সাথে খেলছে। সাজার মাঝে প্রিয়াকে বারবার নড়তে দেখে বিরক্ত হয়ে বললো,

- এই আপু! তুই নড়াচড়া করা বন্ধ করবি! নয়তো আমি কিন্তু তোকে ভুতের মতো সাজিয়ে দেবো। তখন এই তুলতে গিয়ে দিন পেরিয়ে যাবে। বিয়েই হবেনা। সেটা ভালো হবে? (প্রেমা)

প্রিয়া প্রেমাকে ভেঙ্গিয়ে বললো,

- এ্যাহহ! বিয়েটাই হবে না। আমার বিয়ে তো এমনিও হবে না। (প্রিয়া)

- মানে? কেন? কি হয়েছে? (দিয়া)

- মানে আবার কি? তোরা বিয়ে হতে দিলে তো বিয়ে হবে! আমার তো মনে হয় তোরা আমায় ভুতই সাজাচ্ছিস। এক ঘন্টা ধরে বসে আছি এখনো তোদের সাজানো শেষ হলো না। (প্রিয়া)

চলবে..

23/04/2025

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে❤️,

কেমন আছেন সবাই? আপনাদের একটা এনাউন্সমেন্ট নিয়ে আসলাম। আজ আমি একটু ফ্রি আছি তাই আমি আজ আপনাদের কথা শুনতে চাই।

আমার লেখা যেকোন গল্পের কোন চরিত্র আপনাদের ভালো লাগে আর কোনটা খারাপ? কোন গল্পটা আপনাদের বেশি ভালো লাগে? আর যদি আমার গল্পের কোন চরিত্রের সাথে বাস্তবে দেখা করার সুযোগ হয় কখনো কার সাথে দেখা করতে চাইবেন?

#আড্ডা_পোস্ট

23/04/2025

Shout out to my newest followers! Excited to have you onboard! Thatira Monsur, Lucky Akter

Address

Chittagong

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Olpo Solpo Golpo -অল্প সল্প গল্প posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Olpo Solpo Golpo -অল্প সল্প গল্প:

Share