28/06/2024
আমাদের শিকলবাহার শুক্রবার:
এই সেই পুকুর। আমাদের স্বর্গ ❤️
শিকলবাহা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আবাসিক কলোনিতে থাকা একমাত্র পুকুর, প্রতি শুক্রবার সিনিয়ার বনাম জুনিয়রদের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ হত, খেলা শেষে স্কুলের ডাব গাছ থেকে ডাব পাড়া।
এরপর দল বেধে ৫লিটার তেলের ডিব্বা, কলা গাছ নিয়ে যে যার মত পুকুরে ঝাপিয়ে পড়তাম। শুক্রবার থাকায় জুম্মার নামাজেও পড়তে হবে এই বিষয় মাথায় রেখে গোসল তাড়াতাড়ি সারতে হত। কিন্তু অনেক সময় বেশি লেইট হয়ে গেলে এক এক জনের বাবা, মা, ভাই এসে ডাকার জন্য আসত। অনেক সময় অনেক বাবা অথবা মা লাঠি নিয়ে দৌড়ানি দিত। বাকিরা ডুব মেরে পুকুরের এক কোনায় লুকায় থাকত৷ কি যে একটা অবস্থা 😆 লাফ দিয়ে পুকুরে ঝাপ মারা, একজন আরেকজনকে পানিতে চুবানো। যারা সাতার জানত না তারা বেশি চুবানি আর থ্রেট খাইত। 🤨 অনেকে পুকুরের মাঝখানে গিয়ে পুকুরের গভীরে চলে যেত। মাছ ধরত। অনেকে ডুব সাতার প্রতিযোগিতা করত৷ আহারে শৈশবের শিকলবাহা।
আমি নিজেও আব্বুর মাইর কম খাই নাই। আগে থেকেই শুকনা কাপড় লুকিয়ে রাখতাম যাতে গোসল শেষে পরিবর্তন করে বাসায় গেলে যেন বুঝতে না পারে৷ কিন্তু কি করব 🙄 চোখ লাল দেখলে যে কেউ বুঝবে কই ছিলাম এতক্ষন। অত:পর মাইর ও খাইতাম। বাসায় এসে পুনরায় টেপের কল ছেড়ে গোসল দিয়ে পাঞ্জাবী পড়ে রেডি হয়ে মসজিদে যেতাম। কিন্তু না কই হুজুর আর কই আমি? আমি আর বাকিরা ত বকুল গাছে চড়ে টসটসা পাকা বকুল খুজে সময় পার করতাম। ঐদিকে হুজুর শুক্রবারের বয়ান ও শুনতাম গাছে বসে বসে। এরপর একদম খুতবার সময় হুজুরের শেষ লাইন শুনার সাথে সাথে গাছ থেকে নেমে দৌড় দিয়ে মসজিদে নামাজ ধরতাম। নামাজ পড়তাম শেষ কাতারে। আর নামাজে শান্তিমত নামাজ পড়তে পারতাম না৷ বন্ধুরা কিল, ঘুষি, ধাক্কা একনাগাড়ে চলত নামাজ এর শেষ বৈঠক পর্যন্ত৷
আহা সে সময়, সেই শুক্রবার আর জীবনেও আসবে না..... শুক্রবারের সকালের শুরুটা না হয় অন্য একদিন শেয়ার করব। শিকলবাহার জনগন পারলে শেয়ার করুন আপনাদের শৈশব 🫡
পোস্টটি রফি উদ্দীন রাফি ভাইয়ার প্রোফাইল হতে নেয়া