03/07/2025
আজ, বিয়ের দুই বছর পর নিজের ‘হাজবেন্ড’কে প্রথমবার লাইভ দেখলাম।সেটাও আবার ইংল্যান্ডের একজন হাই-প্রোফাইল মিনিস্টার রুপে! তাও আবার যেই সেই নয় Foreign Secretary রুপে। এটা হওয়া মুখের কথা নয়।
বাট তাকে মিনিস্টার রুপে দেখে আমি মোটেও শকড না। কারণ তাদের পুরো পরিবারটাই তো পাওয়ার-পলিটিক্সে ইনভলভড। মিডিয়াতে তাদের ‘মিনিস্টার ফ্যামিলি’ নামেই সবাই চেনে।
আমি যে জায়গায় অবাক হচ্ছি, সেটা হলো এখন আমাকেই আমার চরম শত্রু আমার হাজবেন্ডেরি ওপর স্পাই গিরি করতে হবে!ইয়েস, ইউ হার্ড ইট রাইট।মাই ওন হাজব্যান্ড।
ভাবছি, কিভাবে করবো? যদি রিকগনাইজ করে ফেলে? তো কি হবে? আসলে, চিনবে কী?সিরিয়াসলি, চিনতে পারবে উনি আমাকে?
কারণ, আমাদের একমাত্র ফেস-টু-ফেস দেখা ছিল বিয়ের দিনেই। ওদিন ছিল আমাদের ফাস্ট মিট এন্ড ওইদিনই ছিল লাস্ট মিট। ঠিক দুই বছর আগে।
ওনার নাম লিওনার্ড থমাস।একজন মুসলিম হয়েও এমন নাম? ভেবে পাই না!আর আমি?আই'ম তাজওয়ারা নাজ।
আমাদের বিয়েটা বিয়ে না, একটা ফুল-অন জোক ছিল সেটা অন্তত আমার কাছে মনে হয়।
পুরো ব্যাপারটা শুরু হয় আমার বড় বোন এলিসার মাধ্যমে। লিওনার্ড আর আমাদের ফ্যামিলির মধ্যে একটা বিজনেস অ্যালায়েন্স হচ্ছিল। সেই টাই আপ স্ট্রং করার জন্যই এলিসার সাথে লিওনার্ডের বিয়ে ফিক্সড হয়। সবকিছু একদম পারফেক্টলি প্ল্যানড ছিল।
বাট হেয়ার দ্য প্লট টুইস্ট আমার সিস্টার এলিসা, যাকে আমরা ছোট করে ‘এলিস’ বলি, ও ওর কলেজ প্রফেসরের সাথে সিরিয়াসলি ইনভলভড ছিল। আর বিয়ের ঠিক আগের দিন পালানোর বদলে, ও বিয়ের দিনই পালায় স্পেনে সেই প্রফেসরের সাথে!আহারে বইন, তুই পালাতি ঠিকই, কিন্তু বিয়ের আগের দিন করলেই তো হতো! তাহলে আমি বেঁচে যাই।
ওর পালানোর খবর শুনে লিওনার্ডের ফ্যামিলি তো একদম ফায়ার হয়ে যায়। তারা বলতে শুরু করে আমার বাবা-চাচারা নাকি ডেলিবারেটলি এসব প্ল্যান করেছে, যাতে তাদের রেপুটেশন ড্যামেজ হয়।
তখনই, পরিস্থিতি হ্যান্ডেল করতে, আমার বাবা আমাকে স্টেজে নিয়ে যান। আর কিছু মুহূর্তের মধ্যেই আমি হয়ে যাই লিওনার্ড থমাসের ওয়াইফ। না আমার কোনো কথা কেউ শুনে, না কিছু বুঝে। মুহুর্তেই আমার জীবনের চাকা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
বাট ওয়েট, ড্রামা এখানেই শেষ না।বিয়ের কনট্রাক্ট সাইন হওয়ার পরপরই লিওনার্ড ক্লিয়ারলি বলে দেন- হি উইল নেভার অ্যাকসেপ্ট মি অ্যাজ হিজ ওয়াইফ।
সে নাকি এই বিয়ে করেছে শুধু তার ফ্যামিলির অপমানের বদলা নিতে, যাতে আমার নামের সাথে “মিসেস লিওনার্ড থমাস” ট্যাগটা লেগে থাকে।
তারপর?সে বিয়ের আসর থেকেই চলে যায়। না কনফার্মেশন, না কোনো এক্সপ্লানেশন।শেষমেশ তার ওভারপ্রাউড ফ্যামিলি এসে আমাদের কাছে সরি বলে, আর পুরো ব্যাপারটা চেপে যায়।
এই ফ্যামিলির কাছে বিয়ে, ভালোবাসা, কমিটমেন্ট সবকিছুই সেকেন্ডারি।দেয়ার অনলি প্রায়োরিটি ইজ পাওয়ার অ্যান্ড ডিল-মেকিং।
আমি তখন ভীষণভাবে ট্রমাটাইজড ছিলাম। নিজের পরিবার কে দোষারোপ করছিলাম। এইসব আমায় ভেতর থেকে ভেঙে দিয়েছিল। কিন্তু যাই হোক, আমার বড় ভাইয়া আর ছোট চাচ্চু একটা ডিসিশন নেন এভাবে আর চলবে না। তারা আমাকে পাঠিয়ে দেয় এক স্পেশাল ট্রেনিং প্রোগ্রামে।সেখান থেকেই আমি ট্রেইন হই একজন ইলিট আন্ডারকভার এজেন্ট হিসেবে।
ছয় মাস ধরে আমি ফুল টাইম মিশনে। আমার নতুন টার্গেট মিনিস্টার লিইউ, ওরফে লিওনার্ড থমাস। তার অ্যাক্টিভিটিজ মনিটর করা, বিদেশি কানেকশন, করাপশন, ব্ল্যাকমার্কেট লিংক সবকিছুর ওপরে একটা ক্লিন, আনবায়াস্ট রিপোর্ট তৈরি করা আমার রেসপন্সিবিলিটি। সবকিছু হচ্ছে হাইলি কনফিডেনশিয়াল, হাইডেন অপারেশন।
এইসব ভাবতে ভাবতেই আমি লিওনার্ডের প্রাইভেট মেনশনে আয়োজিত হাই-প্রোফাইল পার্টিতে ঢুকি।
চারপাশে লাক্সারিয়াস অ্যাটমোসফিয়ার, প্রভাবশালী মানুষের আনাগোনা। যত গ্যাস্ট তার চেয়ে গার্ড আর সিকিউরিটি বেশি। এটাই স্বাভাবিক একজন মিনিস্টারের পার্টি বলে কথা। আমি আমার সিগনেচার লুকেই এসেছি ডার্ক হুডি, স্ট্রেইট ট্রাউজার আর ক্যাজুয়াল খাকি রঙের হিজাব, হালকা করে ঝুলানো পেছন ঘিরে।
আমি চারপাশে নিরবে সব পর্যবেক্ষণ করছিলাম এরমধ্যে
হঠাৎ চোখে পড়ে, লিওনার্ড দুইজন রাশিয়ান ব্যক্তির সঙ্গে বাগানের পিছন দিকে এগোচ্ছেন। যাদের সাথে যাচ্ছেন ওরা ফর্মালি ইনভাইটেড না, অথচ এদের নামে ইন্টারন্যাশনাল ব্ল্যাকমার্কেট লিংকস আছে। এটা সিরিয়াসলি রেড ফ্ল্যাগ।
আমি কিছু খটকা মনে করে তাদের সাইলেন্টলি ফলো করি। সিকিউরিটি ক্যামেরা কিংবা কারও দৃষ্টিতে না আসার জন্য কভার নিয়ে এগোই।কিন্তু বাগানের পিছনে গিয়ে দেখি কেউ নেই। পুরো জায়গাটা স্ট্রেঞ্জলি সাইলেন্ট।
"এই তো এরা গেলো, কিন্তু এখন কোথায়?"
আমার ইনটিউশন চিৎকার করে বলে কিছু একটা অফ হচ্ছে।ঠিক তখনই টাশ করে!কেউ আমার মাথায় হেভি কিছু দিয়ে হিট করে।আমার চোখের সামনে সব ব্লার হতে থাকে, শরীর ভারী হয়ে আসে।
আমার লাস্ট থট,
"আমি ফ্রেমড হয়েছি কিন্তু কে?"এরপর সব অন্ধকার। হয়ে যায়।
চোখে-মুখে ঠান্ডা পানির ছোঁয়া লাগতেই এক ঝটকায় রিয়ালিটি হিট করে চোখ খুলে দেখি আমি একটা অন্ধকার রুমে। মাথাটা হ্যাং করছে,চারপাশ ঝাপসা। মাথা মনে হচ্ছে কেউ শীলপাটায় পিষে দিয়েছে। বডি পুরো ঝিম ধরে গেছে। ধাতস্থ হতে একটু সময় লাগে আমার । চোখ ক্লিয়ার করে দেখি সামনে লিওনার্ড বসে আছেন একটা লেদার চেয়ারে, উনি নিজের নীল চোখে ঠাণ্ডা আগুন আর ঠোঁটে এক শয়তানি হাসি নিয়ে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে। চারপাশে হেভি সিকিউরিটি, আমার হাত-পা টাইটলি বাঁধা চেয়ারের সঙ্গে।
লিওনার্ডের ঠোঁটে কুটিল হাসি নিয়ে বলেন।
“Well well well, Miss Naz. হঠাৎ আপনার আমার পার্টি এই ভিজিটের কারণটা কি জানা যাবে?”
আমি চোয়াল শক্ত করে বলি,
“হোয়াট দি অ্যাকচুয়াল ফাক ইজ দিস? কেনো আমায় বন্দী করে রেখেছেন?”
এটা শুনে উনি ঠান্ডা হয়ে বলেন,
“তোমার দাঁতের সারি সব গুলো ফেলে দিতে সময় লাগবে না যদি এই অ্যাটিটিউড চালিয়ে যাও। বলো তোমার ফ্যামিলি পাঠিয়েছে এখানে তোমায়, তাই না? আমাকে ট্র্যাপ করার জন্য ?”
আমি হালকা হেসে কাঁধ ঝাঁকি দিয়ে বলি,
“মাই ফ্যামিলি হ্যাজ বেটার থিংস টু ডু দ্যান বেবিসিট সাইকোস, লাইক ইউ, মিস্টার লিউ।
এটা শুনে লিওনার্ড ঠোঁটে কাঁচা হাসি মেখে বলেন,
“ওহ রিয়েলি? তাহলে এক্সপ্লেইন করো তুমি আমার শহরে কেনো?”
আমি তাকিয়ে থাকি তার চোখে, তারপর স্পষ্ট করে বলি,
“ কম পানির মাছ বেশি পানিতে পড়লে এমনি উড়াউড়ির করে ঠিক আপনার মতো। মিনিস্টার হওয়ার আগে মেয়র ছিলেন বলে ভাবছেন শহরটা আপনার প্রাইভেট প্রপার্টি?
আমার এই কথা শুনে উনি হেসে উঠে বলেন,
““বাহ মিস নাজ! বাহ! ধন্যবাদ আপনায়। এতদিন জানতাম মাছ পানিতে থাকে - এখন আপনার থেকে শুনলাম মাছ আকাশেও উড়ে। ওয়াও আপনার IQ লেভেলের প্রসংশা করতে হয়। আপনার আইকিউ দেখে তো নাসা বিজ্ঞানও আপনায় গুরু মানবে।
এ কথা বলেই উনি ওয়েস্ট থেকে গান বের করে সরাসরি আমার বুক বরাবর পয়েন্ট করেন।আমি এতে কিছুটা অবাক হই বাট ভয় পাই না। কারণ আমি" তাজওয়ার নাজ"" আল্লাহর আযাব আর তাকে ছাড়া- মানুষ আর মানুষের দেওয়া আযাব কে তোয়াক্কা করি না। আমি গানের দিকে একপলক তাকিয়ে লিওনার্ডে দিয়ে বাঁকা চোখে তাকিয়ে হেসে বলি,
" সুট করবেন? সাহস থাকলে করে দেখান। আর যদি আপনি সুট না করেন তো আমি নাজ, আপনার কিচ্ছা এখানেই চিরতরে খতম করে দিবো।
To be continued,,,
Title:
Writer:
Genre: Thriller। Masterpiece | Mystery | Political | Love