18/10/2025
সালাহউদ্দিন আহমেদ এর গুম নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে, অনেকটা সালাহউদ্দিন আহমেদকে দমানোর জন্যই। সালাহউদ্দিন আহমেদ ঐক্যমত কমিশনে নিজের যোগ্যতা দিয়ে সব পক্ষের যুক্তিকে তুলোধুনো করার পরই এটা শুরু হয়েছে মূলত। সালাহউদ্দিন আহমেদ এর গুম ও দেশে ফেরা:
১. ২০১৫ সালে বিএনপির টানা ৬২ দিন অবরোধ চলাকালে বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে অজ্ঞাত স্থান থেকে বিবৃতি দেওয়ায় সরকারের অনেকটা মাথা ব্যথায় রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছিলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে ২০১৫ এর ১০ই মার্চ উত্তরার একটা বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়।
২. তুলে নেওয়ার ঠিক ৬২ দিন পর, ২০১৫ এর ১১ মে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে বর্ডার পার করে ভারতের মেঘালয়ের শিলংয়ে নিয়ে ছেড়ে দেয়। স্থানীয়রা তার কথাবার্তা শুনে আশ্চর্য হয়ে পুলিশ ডাকে, পুলিশ তাকে অবৈধভাবে ভারত প্রবেশের জন্য আটক করে। এবং প্রথমে পুলিশ তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ ভেবে মানসিক হাসপাতালে, পরে নিশ্চিত হয়ে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে সাধারণ হাসপাতালে ভর্তি করে।
৩. মেঘালয় পুলিশ অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য, তার নামে একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলার অভিযোগ গঠন হয় ২০১৫ এর ২২ জুলাই।
(সালাহউদ্দিন আহমেদ গ্রেফতার হলে, তার স্ত্রী ভারতে পৌছানোর পর উকিল নিয়োগ করেন এবং জামিনের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু জামিনের বিপরীতে কোর্ট তাকে একটা শর্ত দেয়, প্রত্যেকদিন তাকে পুলিশের কাছে হাজিরা দিতে হবে, পাশাপাশি প্রতি সপ্তাহে একবার কোর্টে হাজিরা দিতে হবে এবং অবশ্যই শিলংয়ের বাইরে যেতে পারবেন না। এভাবে প্রায় ১ বছর চলতে থাকে, তার বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জশিট আসার পর কোর্টে আবেদন করে পুলিশি হাজিরাটা মওকুফ করতে পারেন। কিন্তু শিলংয়ের বাইরে না যাওয়া ও নিয়মিত কোর্ট হাজিরার শর্ত থাকে। ঐ সময়ে মূলত উনি একটা হোটেলে ভাড়া থাকেন, স্বাভাবিক ভাবে ওনার স্ত্রী পরিবারের ও কিছু রাজনৈতিক লোকজনও ওনার সাথে দেখা করতে পারেন)
৪. সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০১৮ সালে এই মামলা থেকে খালাস পান। কিন্তু ভারত সরকার এই খালাসের রায়ের বিপক্ষে কয়েক মাসের মধ্যেই আপিল করে, সেজন্য বাধ্য হয়ে তাকে সেখানেই থাকতে হয়।
৫. ২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিলেও খালাস পান সালাহউদ্দিন আহমেদ, কিন্তু সালাহউদ্দিন আহমেদকে ভারত সরকার ২০২৩ এর ৮ মে আবেদন করা স্বত্তেও ট্রাভেল পাস দিচ্ছিলেন না। (২০২৩ থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদ নিয়মিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির মিটিং এ জয়েন করেন এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আনুষ্ঠানিক ভাবেই পালন করতে থাকেন, যদিও আরো অনেক আগে থেকেই উনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন সেখান থেক)
৬. ২০২৪ এর ৬ আগষ্ট ভারত সরকার সালাহউদ্দিন আহমেদকে ট্রাভেল পাস দেয় এবং ১১ আগষ্ট সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশে ফিরেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ হোটেলে কিছু শর্ত সাপেক্ষে থাকার সময়কালীন বিভিন রাজনৈতিক কর্মী পরিবারের সাথে দেখা করেন, কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সেই সময়কার ছবিগুলো ব্যবহার করে মূলত একটা গোষ্ঠী গত কয়েকমাস থেকে নানাভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে, তাদের উদ্দ্যেশ্য মূলত সালাহউদ্দিন আহমেদকে অপ্রাসঙ্গিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, কেননা ঐক্যমত কমিশনের মিটিং গুলোতে সালাহউদ্দিন আহমেদ ছিলো বিএনপিবিরোধীদের মাথাব্যথা।
সালাহউদ্দিন আহমেদকে ওরা নোংরা উপায়ে দমানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থই হয়েছে, কেননা সত্যের জয় অবধারিত। একটু দেরিতে হলেও।
- Rizwan Rizu