
14/10/2024
'একজন ডাক্তার মুসলিম উদ্দিন সবুজ ও তার একাডেমিক প্রতারণার ইতিবৃত্ত। দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই। '
https://amarpranerbd.com/archives/106222
ডাক্তার মুসলিম উদ্দিন সবুজ। নামের আগে অধ্যাপক লিখেন, শিশু রোগের স্পেশালিষ্ট! দেশ ( DESH - Development for Education, Society and Health ) এক্সিকিউটিভ কমিটির সেক্রেটারির পদে থেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ৬ টা স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সেবা সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান এর দন্ড মুন্ডের কর্তা তিনি- চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল নার্সিং কলেজ ও চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল নার্সিং ইনস্টিটিউট।
এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় তার দরকার ছিল দেশের মেডিক্যাল শিক্ষার সর্বোচ্চ পদবী 'অধ্যাপক' পদটি। আর তাই যেন, তেন ভাবে তার অধ্যাপক হওয়া চাইই!
এবার তার অধ্যাপক হবার পথের আমলনামা দেখুন। এ যেন এক 'বারো হাত কাঁকুড়ের তের হাত বিচি'!
তিনি চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ, চট্টগ্রামে চাকুরীতে জয়েন করেন ২০০৮ সালে , এসেই একাডেমিক ডাইরেক্টর এর পদ বসে যান। যদি ও তার পূর্বের কর্মস্থল ইউ এস টি সি, চট্টগ্রামে ইতিপূর্বে তার একাডেমিক কোন এক্সপেরিয়েন্স নেই। এখানে এসে তিনি চিন্তা করলেন কিভাবে দ্রুত উপরে উঠে সবার উপর ছড়ি ঘুরানো যায়!
২০০৮ সালে এসেই ( ২০.০৩.২০০৮) তিনি এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হলেন। সাবজেক্ট 'জেনারেল মেডিসিন'! অথচ, তিনি হলে চাইল্ড হেলথ এ ডিসিএইচ করা, যেটা বি এম ডি সি রিকগনাইজড। উল্লেখ্য, তিনি চাইল্ড হেলথ এ এমডি কোর্স সম্পন্ন করেছিলেন ইউ এস টি সি, চট্টগ্রাম হতে, যা বি এম ডি সি স্বীকৃতি দেয় নি আজ পর্যন্ত ( ভদ্রলোকের বিএমডিসি স্ট্যাটাস নীচে সংযুক্ত , ভিজিটিং কার্ড এ তিনি এই এমডি ডিগ্রি টা লিখে রেখেছেন, যা বি এম ডি সি আইনের ও পরিপন্থি ) আর এর আগের এক্সপেরিয়েন্স দেখিয়েছেন ইউ এস টি সি, চট্টগ্রামে আর পি, পেডিয়াট্রিক্স হিসেবে। প্রমোশন নিলেন জেনারেল মেডিসিন এ!
২০১১ সালে ( ০৮.০৫.২০১১ ) মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে এর পরের প্রমোশন নিলেন তিনি এসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে, এবার কিন্তু পেডিয়াট্রিক্স এ। বি এম ডি সি 'র রুলস এর ব্যত্যয় ঘটেছে; কারণ, ডিপ্লোমা পোস্ট গ্রাজুয়েশন নিয়ে এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হতে পদোন্নতি পেতে হলে মিনিমাম ৭ বছর ব্যবধান থাকতেই হবে। এক্ষেত্রে মাত্র ৩ বছর পর তা কিভাবে সম্ভব হলো? তাছাড়া সাবজেক্ট পরিবর্তন করে 'জেনারেল মেডিসিন' থেকে পেডিয়াট্রিক্স এ- কিভাবে সম্ভব , কোন নিয়মে?
তাছাড়া, ক্যাম্পাসে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সরকারি অনুমোদন পায় ২০১০ সালে ( ২৮.১০.২০১০ ) এবং চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ সরকারি অনুমোদন পায় ২০১৩ সালে ( ০২.১০.২০১৩ )। তাহলে বিগত ৩ বছর (২০১১- ২০১৩) তিনি পেডিয়াট্রিক্স এ কোথায় এক্সপেরিয়েন্স দেখিয়েছেন?
এরপর আরো ৩ বছর পর তিনি ২০১৪ ( ০৯.১০.২০১৪ ) সালে এসে পেডিয়াট্রিক্স এ 'প্রফেসর' হলেন। এখানে ও বি এম ডি সি রুল ব্রেক করা হয়েছে (৭ বছরের জায়গায় ৩ বছর)। এখানে ও এসোসিয়েট প্রফেসর এর জব এক্সপেরিয়েন্স কোথায় দেখালেন তিনি ( চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ সরকারি অনুমোদন লাভ করে ২০১৩ সালে)?
এতসব অনিয়ম করে ও তিনি নীচের পদ গুলো অলংকৃত করেছেন বিভিন্ন সময়ে:
১. ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ ( ১২.০১.২০১৭ - ২১.০৬.২০১৭ )
২. অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজ ( ২২.০৬.২০১৭- ২০.১২.২০২৩ )
৩. ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ( ০৩.০৯.২০১২- ১৫.০২.২০১৪ )
৪. ভারপ্রাপ্ত ডাইরেক্টর , চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ( ০১.০৪.২০১৮- ০১.১১.২০১৮ )
৫. উপাধ্যক্ষ , চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ( ২১.১২.২০২৩ - আজ অবধি )
বছরের পর বছর তিনি এক্সিকিউটিভ কমিটির সেক্রেটারির পদে আছেন। ট্রাস্টি আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের বেতন ভুক্ত কেউ উক্ত ট্রাস্টের সদস্যা হতে পারেন না। উপরে উল্লেখিত তালিকানুযায়ী তিনি ২০০৮ সাল হতে আজ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান হতে বেতন- ভাতা , যাতায়াতের জন্য পার্সোনাল গাড়িসহ সকল সুবিধা নিয়ে চলেছেন রীতিমতো , যা অনৈতিক।
তাছাড়া , তিনি একাধারে DESH এক্সিকিউটিভ কমিটির সেক্রেটারি , আবার এই প্রতিষ্ঠান এর অন্তর্ভুক্ত চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষ থাকাবস্থায় আরেকটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের পেডিয়াট্রিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে ও দায়িত্ব পালন করেছেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও ভারপ্রাপ্ত ডাইরেক্টর , চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হিসেবে ও দায়িত্ব পালন করেছেন ও সুযোগ, সুবিধা নিয়েছেন- যা বিধিসম্মত নয়।
৫ ই আগষ্ট এর ছাত্র- জনতার এক রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থান এর মাধ্যমে এক নতুন বৈষম্যহীন এক বাংলাদেশে আমরা আজ বাস করছি। তাই, এই অপরাধ প্রবণ লোকের উপরোল্লিখিত অনিয়মগুলোর ব্যাপারে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই বৈষম্যহীন এই নতুন বাংলাদেশ এ। মেডিক্যাল সেক্টরকে কলংকিত করার কোন অধিকার উনার নেই।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত মাননীয় ঊপাচার্য মহোদয় আশা করি এ ব্যাপারে যথাযথ ভাবে যাচাইপূর্বক উদ্যোগ নেবেন ও স্বাস্থ্য খাতকে কলংকমুক্ত করবেন। সাথে উচ্চতর মহলের অধিকতর স্বচ্ছ তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এহেন অন্যায্য , অসৎ ও দুর্নীতি আশ্রয়ী কর্মকান্ডে লিপ্ত হতে সাহস না করে।