
03/08/2025
#শিরক ও বিদ'আতের বর্ণনা"!
------------
--------------
ঈমান অপেক্ষা মূল্যবান রত্ন ও অতিপ্রয়োজনীয় সামগ্রী জগতে আর নেই। মনে-প্রাণে এ অমূল্য রত্নের হেফাযত করা আবশ্যক এবং এর প্রয়োজনীয় সামগ্রীকে প্রাণের চেয়েও অধিক মুহাব্বত করা উচিত।
হাদীস শরীফের বর্ণনা মতে, আখিরী জামানায় ঈমান রক্ষা করা কঠিন হবে। তথাপি সাবধান! জীবন দিয়ে হলেও প্রত্যেক মু'মিনকে তার ঈমানের হেফাযত করতেই হবে। ঈমান চিরস্থায়ী জাহান্নাম থেকে বাঁচার রক্ষাকবচ।
আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন- 'যারা সরল পথ ইসলামের শিক্ষা। প্রকাশ পাওয়ার পর রাসূলের সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিরুদ্ধাচরণ করবে এবং মুসলমানের তরিকা ছাড়া অন্য তরীকা অবলম্বন করবে, আমি তাদেরকে সেই পথগামীই করব এবং পরিণামে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। জাহান্নাম ভীষণ মন্দ জায়গা। আল্লাহর সঙ্গে শরিক করার পাপ কিছুতেই আল্লাহ তা'আলা ক্ষমা করবেন না। এছাড়া অন্যান্য পাপ যার জন্যে যতটুকু ইচ্ছা করেন, ক্ষমা করবেন। যারা আল্লাহর সাথে শরীক করে, তারা মহাপাপী। তারা আল্লাহকে ছেড়ে স্ত্রী জাতির অর্থাৎ দেবীদের এবং খোদার অভিশপ্ত সেই পাপিষ্ঠ শয়তানেরই পূজা করছে, যে মানবজাতির সৃষ্টির লগ্নে বলেছিল- আমি মানবজাতির মধ্য হতে এক দলকে নিজের অনুসারী বানিয়ে তাদেরকে বিপথগামী করব, তাদেরকে নানা দুরাশায় আক্রান্ত করব, আর তাদেরকে গৃহপালিত পশুর কান কাটতে আদেশ করব।
আর তা-ই করবে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করতে "অর্থাৎ শ্মশ্রুমুগুণ বা দাড়িমুগুণ ইত্যাদি শরী'আত বিরোধী কাজ করতে। আদেশ করব, তারা তাই করবে। বস্তুত যারা আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানের আদেশ পালন করবে, তারা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শয়তান তাদের নিকট ওয়াদা করে এবং আশ্বাস বাণী শোনায়, কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে শয়তানের ওয়াদা ও আশ্বাস বাণী প্রবঞ্চনা ব্যতীত কিছুই নয়" সূত্র: সূরা নিসা,আয়াত ১৫-১৬"
শিরক, বিদ'আত, জাহিলিয়্যাতের রসম ও শয়তানের পায়রবি যে কত জঘন্য অন্যায়, নিন্দনীয় এবং ঈমানের জন্যে অনিষ্টকর, উপরোক্ত আয়াতগুলো দ্বারা তা স্পষ্টই বোঝা যায়। এসব কাজ করলে তাওহীদ ও রিসালাতের আক্বীদা নষ্ট হয় এবং ইমানের নূর ও রশ্মি চলে গিয়ে তথায় অন্ধকার বিস্তার লাভ করে।
তাই ঈমানের বিষয়াবলী ও ইসলামী আক্বায়িদ বর্ণনা করার পর সাধারণের মাঝে প্রচলিত বিভিন্ন বদ রসম ও বড় বড় গুনাহ "গুনাহে কবীরা।
বর্ণনা করে দেওয়া সমীচীন মনে করছি। ঈমানদারগণ উক্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে জেনে সেগুলো হতে বিরত থেকে নিজ নিজ ঈমানের হেফাযত করতে চেষ্টা করবেন বলে আশা করি।
প্রচলিত বদ রসমসমূহের মধ্যে কতগুলো কুফর ও শিরক পর্যায়ের, আর কতগুলো কুফর ও শিরক তো নয়, কিন্তু কুফর ও শিরকের কাছাকাছি, আর কতগুলো বিদ'আত ও গোমরাহী এবং কতগুলো হারাম, মাকরূহ ও গুনাহে কবীরা। সবগুলো থেকেই বেঁচে থাকা আবশ্যক। তবেই ঈমান গ্রহণীয় ও সর্বাঙ্গীণ সুন্দর হবে।
#শিরক কাজসমূহ
:::::::::::::::::::::::::::
নিম্নলিখিত কাজগুলো শিরক। এসব হতে দূরে থাকা অপরিহার্য কর্তব্য-
১..কোন বুযুর্গ বা পীর সম্বন্ধে এ রকম আক্বীদা রাখা যে, তিনি সবসময় আমাদের সব অবস্থা জানেন।
২..জ্যোতির্বিদ, গণক, ঠাকুরদের নিকট অদৃষ্টের কথা জিজ্ঞেস করা।
৩..কোন পীর-বুযুর্গকে দূরদেশ থেকে ডাকা এবং মনে করা যে, তিনি তা শুনতে পেয়েছেন।
৪..কোন পীর-বুযুর্গ, জিন-পরী বা ভূত-ব্রাহ্মণকে লাভ-লোকসানের মালিক মনে করা।
৫..কোন পীর বুযুর্গের কবরের নিকট আওলাদ বা অন্য কোন উদ্দেশ্যের কথা জানিয়ে প্রার্থনা করা।
৬..পীর বা কবরকে সিজদা করা।
৭..কোন পীর-বুযুর্গের নামে শিরনি, সদকা বা মান্নত মানা।
৮..কোন পীর-বুযুর্গের দরগাহ বা কবরের চতুর্দিক দিয়ে তওয়াফ করা।
৯..আল্লাহর হুকুম ছেড়ে অন্য কারো আদেশ বা সামাজিক প্রথা পালন করা।
১০..কারো সামনে মাথা নিচু করে সালাম করা বা হাত বেঁধে নিস্তব্ধ দাঁড়িয়ে থাকা।
১১. মুহাররমের সময় তাজিয়া বানানো।
১২. কোন পীর-বুযুর্গের নামে জানোয়ার যবেহ করা বা কারো দোহাই দেওয়া।
১৩. পীরের বাড়ির বা কোন বুযুর্গের দরগাহ বা তীর্থকে, কাঁবা শরীফের মতো আদব বা তা'যিম করা।
১৪. কোন পীর-বুযুর্গ বা অন্য কারো নামে ছেলের নাক, কান ছিদ্র করা, আংটি পরান, চুল রাখা, টিকি রাখা ইত্যাদি
১৫. আলী বখশ, হোসাইন বখশ ইত্যাদি নাম রাখা।
১৬. কোন জিনিসের বা ব্যারাম-পীড়ার ছুত লাগে বলে বিশ্বাস করা।
১৭. মুহররম মাসে পান না খাওয়া, নিরামিষ খাওয়া, খিচুড়ি খাওয়া ইত্যাদি।
১৮. নক্ষত্রের তাছির মানা বা তিথি পালন করা। ১৯. ভালো-মন্দ বা বার তারিখ জিজ্ঞেস করা। যেমন, অনেকে জিজ্ঞেস করে, এই চাঁদে বিবাহ শুভ কি-না? কোন দিন নতুন ঘরে যেতে হয়? রোববারে বাঁশ কাটা যায় কি-না? ইত্যাদি।
২০. গণকের নিকট বা যার ঘাড়ে জিন সওয়ার হয়েছে, তার নিকট হাত দেখিয়ে অদৃষ্ট জিজ্ঞেস করা।
২১. কোন জিনিস হতে কু-লক্ষণ ধরা বা কুযাত্রা মনে করা। যেমন, যাত্রামুখে কেউ হাঁচি দিলে অনেকে সেটাকে কু-যাত্রা মনে করে থাকে।
২২. কোন দিকে যাত্রা করার সময় ঘরের দুয়ারে মা খাকি বলে সালাম করে বিদায় গ্রহণ করা। ২৩. কোন দিন বা মাসকে অশুভ মনে করা।
২৪. কোন বুযুর্গের নাম ওজীফার মতো জপ করা।
২৫. এ রকম বলা যে, আল্লাহ ও রাসূলের মর্জি থাকলে এ কাজ হবে, বা আল্লাহ-রাসূল যদি চান, তবে এ কাজ হবে।
২৬. এ রকম, বলা যে, উপরে খোদা, নিচে আপনি।
২৭. কারো নামের কসম খাওয়া বা যিকির করা। কাউকে 'পরম পূজনীয়' সম্বোধন করে লেখা, 'কষ্ট না করলে কেষ্ট পাওয়া যায় না' বলা, 'জয়কালী নেগাহবান' ইত্যাদি বলা।
২৮. তেমাথা পথে ভেট দেওয়া, পূজা উপলক্ষে কর্ম বন্ধ রাখা, দোল-পূজায় আবির মাখানো, বিষকরম পূজায় ছাতু খাওয়া, পৌষ মাস সংক্রান্তিতে গরু দৌড়ানো, ঘোড়া দৌড়ানো, আশ্বিন মাস সংক্রান্তিতে গাশ্চি, গোফাগুণে পূজা উপলক্ষে আমোদ উৎসব, নতুন কাপড় ক্রয়, পার্বণী দেয়া, মনসা পূজা বা জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নৌকা দৌড়ানো। হিন্দুদের আড়ঙ্গে, মিছিলে, উৎসবে যাওয়া।
২৯. ছবি, ফটো বা মূর্তি রাখা, বিশেষ করে কোন বুযুর্গের ফটো তা'যিমের জন্য রাখা।
#বিদ'আতের বর্ণনা
""""""""""""""""""""'""''
নিম্নলিখিত কাজগুলো বিদ'আত। এগুলো থেকে দূরে থাকা কর্তব্য।
১..কোন বুযুর্গের মাযারে ধুমধামের সাথে উরস করা, মেলা বসানো, বাতি জ্বালানো।
২..মেয়েলোকের বিভিন্ন দরগায় যাওয়া।
৩..কবরের ওপর চাদর, আগরবাতি, মোমবাতি ও ফুল দেওয়া।
৪..কবর পাকা করা।
৫..কোন বুযুর্গকে সন্তুষ্ট করার জন্যে শরী'আতের সীমারেখার বেশি তাযিম করা।
৬..কবরে চুমো খাওয়া।
৭..কবরে সিজদা করা।
৮..দ্বীনের বা দুনিয়ার কাজের ক্ষতি করে দরগায়-দরগায় বেড়ানো।
৯..কোন কোন অজ্ঞ লেখক আজমীর শরীফ, বাজেবোস্তান, পীরানে কার্লিয়ার ইত্যাদিকে মুসলমানদের তীর্থস্থান বলে উল্লেখ করেছে, তা দেখে তীর্থ গমনের ন্যায় সেসব স্থানে যাওয়া। ১০. উঁচু উঁচু কবর বানানো।
১১. কবর সাজানো, সেখানে ফুলের মালা দেওয়া।
১২. কবরে গম্বুজ বানানো।
১৩. কবরে পাথর খোদাই করে কিছু লিখে লাগানো।
১৪. কবরে চাদর, শামিয়ানা ইত্যাদি টানানো। ১৫. মাযারে মিঠাই নজরানা দেওয়া।
゚viralシ2025