
09/10/2025
হালদা নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান : জাল, বরশি জব্দ, অর্থদণ্ড।
যীশু সেন এর পাঠানো তথ্য মতে।
হালদা নদী, দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। এই নদীর জীববৈচিত্র্য ও মৎস্য প্রজনন রক্ষায় নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৯ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার সকালে রাউজান উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হালদা নদীতে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সকাল ১১টার দিকে হালদা নদীর সর্ত্তারঘাট এলাকা থেকে নদীর মোহনা পর্যন্ত এ ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিসান বিন মাজেদ। অভিযানে সহায়তা করেন রাউজান উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন ফাহিম এবং নৌ পুলিশের এএসআই রমজান আলী।
অভিযানের সময় ১৫০০ মিটার ভাসা জাল ও ১২টি বড়শি জব্দ করা হয়। এইসব সরঞ্জাম ব্যবহার করে অবৈধভাবে মাছ ধরা হচ্ছিল বলে নিশ্চিত হওয়ার পর সেগুলো জব্দ করা হয়। পরে জব্দকৃত ভাসাজাল নদীর পাড়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এ সময় অবৈধ মাছ শিকারের সাথে জড়িত দুই ব্যক্তিকে আটক করে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে প্রত্যেককে ১ হাজার টাকা করে মোট ২ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
রাউজানের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন ফাহিম বলেন, “হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য ও মৎস্য প্রজননক্ষেত্র রক্ষা করতে উপজেলা প্রশাসন অত্যন্ত আন্তরিক। প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র হওয়ায় এখানে বিভিন্ন জাতীয় মাছের ডিম আহরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি এই নদীতে অবৈধভাবে কারেন্টজাল মাছ শিকার করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে।”
তিনি আরও জানান, হালদা নদীর সংরক্ষণে নিয়মিত মনিটরিং ও অভিযান চালানো হচ্ছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
স্থানীয় প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশবাদী ও মৎস্যজীবীরা। তাদের মতে, হালদা নদী শুধুমাত্র একটি নদী নয়; এটি বাংলাদেশের একটি গর্ব, যা জীববৈচিত্র্যের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। প্রশাসনের এমন পদক্ষেপের ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নদীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও মাছের প্রজনন প্রক্রিয়া সুরক্ষিত থাকবে।
উল্লেখ্য, এই নদীকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনগণের জীবিকা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ নিবিড়ভাবে জড়িত। এজন্য হালদাকে রক্ষা করা শুধু প্রশাসনের নয়, বরং সকল নাগরিকের দায়িত্ব।