15/04/2025
তারিখঃ ১০/০৪/২০২৫ ইং,
"টেকসই উন্নয়ন কি দোয়ারের নিকট"
এক রাজ্যের রাজার হঠাৎ একদিন শখ হলো মাছ শিকার করার, তখন রাজা মশায় রাজ্যের আবহাওয়াবিদকে ডেকে বললেন, আমি আজ নদীতে মাছ শিকার করতে যাবো, আপনি আবহাওয়া পরিক্ষা করে বলেন আজ বৃষ্টি হবে, না কি আবহাওয়া ভালো থাকবে। আবহাওয়াবিদ ভাবলেন রাজা মশায় শখ করেছে মাছ শিকারের, আর আমি যদি বলি আজ আবহাওয়া খারাপ যাবে, তাহলে রাজা মশায়ের মন খারাপ হবে, তার চেয়ে বলি আবহাওয়া আজ খুবই ভালো থাকবে, পরে যা হওয়ার হবে। আবহাওয়াবিদ রাজা মশায়কে বললেন রাজা মশায় আজ আবহাওয়া খুব ভালো থাকবে এবং বৃষ্টি হবে না। ভিজে যাওয়ার কোন সম্ভবনা নেই। রাজা তার লোকবল ও সারঞ্জাম নিয়ে নদীর ধারে হাজির হলেন। নদীর ধারে যেতেই দেখলেন এক রাখাল বালক ছাগল চরাচ্ছে, সে রাজামশায়কে দেখে কাছে এসে বললো রাজামশায় মাছ শিকার করার আর সময় পেলেন না? কিছুক্ষণের মধ্যেই তো বৃষ্টি শুরু হবে। তখন রাজামশায় বললেন আমার আবহাওয়াবিদ বলেছে আজ বৃষ্টি হবে না আর তুমি বলছো বৃষ্টি হবে, তা কিভাবে হয়? কিন্তু দেখা গেলো কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। তখন রাজামশায় ফিরে এসে হুকুম দিলেন আবহাওয়াবিদকে বাদ দিয়ে তার পদে ঐ রাখাল বালককে বসাতে। যথারিতি রাখালবালককে ধরে আনা হলো এবং আবহাওয়ািদের চেয়ারে বসিয়ে দেওয়া হলো। কিন্তু রাখাল বালক ঐ চেয়ারে বসতে নারাজ, সে রাজামশায়কে বললো হুজুর আমি এই পদের দায়ীত্ব পালন করতে পারবো না, রাজামশায় বললেন তুমি তো আমার আবহাওয়াবিদের চেযে বেশী অভিজ্ঞ, তখন রাখাল বালক বললো হুজুর আমি কিছুই জানি না, আমার ঐ বড়ো ধাঁড়ী ছাগলটা বৃষ্টি শুরু হওয়ার আধা ঘন্টা আগে থেকে ঘন ঘন প্রসাব করে, আর তাই দেখে আমি বুঝতে পারি কিছুক্ষণ পরই বৃষ্টি শুরু হবে। আজও একই ঘটনা ঘটেছে, তাই আমি আপনাকে সেই অভিজ্ঞতা থেকেই বলেছিলাম কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি হবে। তখন রাজামশায় খুবদ্রুত ঐ ধাঁড়ী ছাগলটাকে আবহাওয়াবিদ হিসাবে নিয়োগ দিয়ে আবহাওয়াবিদের চেয়ারে বসিয়ে দিলেন! স্বাধীনতার পর ৫৪ বছর ধরে এই সম্ভবনার সোনার বাংলার গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলোতে সুযোগমত ঐ ধাঁড়ী ছাগল গুলো বসে পড়েছে, যার কারণে দিন দিন অযোগ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত আমলা এবং মুর্খ রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে এদেশের কোন সম্ভবনাকে এনালাইসিস করে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয় নি! যাদের হাতে আমলাতান্ত্রিক ক্ষমতা ও রাজনৈতিক ক্ষমতা ছিলো তাঁরা দেশের কথা, দেশের মানুষের কথা, দেশের সম্ভবনার কথা চিন্তা না করে শুধুমাত্র নিজ ব্যাক্তি স্বার্থ চটিতার্থ করেছে যুগের পর যুগ! দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সুশিল ও মেধাবী, জ্ঞানী মানুষ যারা রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক দিক থেকে অর্থনৈতিক ও ক্ষমতা কেন্দ্রীক ভাবে বেনিফিটেড ছিলো না, তারা এদেশকে এই জটিলতার বেঁড়াজাল থেকে মুক্তির একটা স্বপ্ন দেখতো আর হতাশার হাহাকার বুকে বয়ে নিরব থাকতো! আর এই সংকটের কারণেই এদেশের হাজার হাজার মেধাবী, বুদ্ধিজীবি, গবেষক, বিজ্ঞানী, আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও আন্তর্জাতিক প্রভাব সমৃদ্ধ ব্যাক্তি এ দেশ ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছে বিদেশের মাটিতে। এদেশের কয়টা মানুষ জানতো যে আমাদের একজন আশিক চৌধুরী আছে, যার ক্ষমতা আছে সমস্ত পৃথিবীর সেরা সেরা কোম্পানীর বিখ্যাত বিখ্যাত বিনিয়োগকারীদের একত্র করে এ দেশে বিনিয়োগ মেলা করে বিনিয়োগের সম্ভবনাময় খাত গুলোকে চোঁখে আঙ্গল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া! এখন দেশের মানুষ জেনে গেছে একজন ডঃ মহাম্মদ ইউনুছ আছে, যে কি না, জানে কিভাবে আশিক চৌধুরীর মত হাজার হাজার সম্পদ গুলোকে দেশে ফিরিয়ে এনে দেশের আমুল পরিবর্তনে কাজে লাগানো যায়। বাংলাদেশের জন্মের পর এই প্রথম দেখলাম এমন অকল্পনীয় উদ্দ্যোগ, অনেক বিনিয়োগকারি অলরেডি বিনিয়োগ শুরু করে দিয়েছে। আমি সবচেয়ে অবাক হয়েছি এমন একটি আইডিয়া দাঁড় করানো কতখানি জ্ঞানী, মেধাবি ও গবেষক না হলে সম্ভব! আর তা হলো বিনিয়োগ মেলার স্থান হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল এর ওয়ালে বাংলাদেশের ম্যাপ তৈরি করে বিভিন্ন জোনে ভাগ করে প্রত্যেকটা জোনকে সমান গুরুত্ব দিয়ে বিনিয়োগের সম্ভবনা গুলোকে বিনিয়োগকারিদের সামনে উপস্থাপন করার আইডিয়া! স্থলপথ, নৌপথ ও আকাশ পথে যাতায়াত ও পন্য পরিবহনের সুবিধা থেকে শুরু করে কাঁচা মাল সরবরাহ ও জনবলের সুবিধা সুচারু ভাবে বিনিয়োগকারীদের মাথায় ঢোকানো হয়েছে, যা আমার কাছে একটা অসাধারণ ও এক্সেপশনাল আইডিয়া বলে মনে হয়েছে। এখন রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক ভাবে বেনিফিটেড ব্যাক্তিগণ চাইবে এই উদ্দ্যোগকে বিভিন্ন ভাবে বাধাগ্রস্থ করতে। যারা নিজেকে ভালোবাসেন, নিজের পরিবারকে ভালোবাসেন, দেশকে ভালোবাসেন, দেশে একটা সভ্য জাতী চান তারা সবাই ধর্য সহকারে সহযোগীতার মনোভাব তৈরি করা উচিৎ। ধন্যবাদ ডঃ মহাম্মদ ইউনুছ, ধন্যবাদ আশিক চৌধুরী, রাজনৈতিক দল সমর্থন করা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি হওয়া সত্তেও সব বিসর্জন দিয়ে একবুক আশা নিয়ে চেয়ে থাকলাম আপনাদের মুখপানে!
গোলাম এহিয়া সবুজ
সাবেক সভাপতি,
এশিয়ান হিউম্যান রাইটস এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন,
জীবননগর উপজেলা শাখা, চুয়াডাঙ্গা।