19/10/2025
#টোকাই_থেকে_কোটিপতি_গুজা_মুনাফ
কক্সবাজার এর শীর্ষ যুবলীগ নেতা ও জুলাই আন্দোলনে ছাত্র জনতার উপর প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণকারী মুনাফ সিকদার প্রকাশ গুজাইয়া মুনাফ কে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিগত ১৬ বছর আওয়ামী সরকারের আমলে তার বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ইয়াবা লুট, সহ ইয়াবা সংক্রান্ত যাবতীয় শালিস বিচার মুনাফ নিজে করে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায়। চুক্তিতে ও মোটা অংকের কমিশনে ইয়াবার বকেয়া টাকা উদ্ধার করে দিত ও অধিকাংশ সময় পুরো টাকা একাই গিলে ফেলত।
শারীরিক অক্ষমতা থাকা স্বত্বেও কক্সবাজার এর একটি শীর্ষ আওয়ামী পরিবারের সাপোর্টে সে টোকাই থেকে জেলা যুবলীগের অন্যতম শীর্ষ নেতায় পরিণত হয়। ১০-১৫ টি মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে সর্বদা শহর দাপিয়ে বেড়াত। কক্সবাজার শহরের সমস্ত জায়গা থেকে বিভিন্ন ছোটখাটো ও কিশোর গ্যাং এর সন্ত্রাসীদের বিশ্বস্ততা, সামর্থ্য যাচাই-বাছাই করে মুনাফ তার বাহিনী গড়ে তুলে। কক্সবাজার শহরে ফ্যাংগস ক্লাবের পতনের পর, পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে একমাত্র তার বাহিনীর দাপট ছিল বেশী।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জনসভায় জনসমাগম বাড়ানোর জন্য বিরাট মিছিল নিয়ে শোডাউন করে মুনাফ সিকদার তার অস্তিত্বের জানান দিত। এতে সে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের সুনজরে আসে।
তার এতটা দাপট ছিল প্রকাশ্যে মেরিন ড্রাইভ সহ কক্সবাজারের বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনের মত তার নিজের সোর্সের ইনফরমেশন মোতাবেক বিভিন্ন কার,সিএনজি সহ বিভিন্ন পরিবহনে তল্লাশি করত, এমনকি বিভিন্ন ইয়াবা ব্যাবসায়ীদের বাড়িতে হানা দিয়ে ইয়াবা লুট করত। জোরপূর্বক ইয়াবা উদ্ধারের স্বীকারোক্তি সহ ভিডিও বানিয়ে ব্লাক-মেইলিং করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিত। এই জালে যে একবার আটকেছে তার আর রক্ষা নাই। যখনই মুনাফের টাকা দরকার হত তখনই মুনাফকে টাকা দিতে হত,না হলে তার বাহিনী দিয়ে ধরে এনে নির্যাতন করত। প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সে ঐ টাকার একটা ভাগ দিত।
টেকপাড়ার জনৈক মিজানের হাতে উলঙ্গ করে পিটানোর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর, উক্ত ঘটনার প্রতিশোধ নিতে একজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে গুজা মুনাফ অপরাধ জগতের লাইম লাইটে চলে আসে। ঐ মামলায় কারাভোগ করে জামিনে বের হওয়ার পর মুনাফকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কাউন্সিলর নির্বাচন সহ যুবলীগের শীর্ষ পদ পেতে কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলার শীর্ষ আওয়ামী লীগের নেতাদের চাহিদা মোতাবেক পকেট ভারী করতে বিন্দুমাত্র পিছপা হয়নি।
এছাড়া পেশকার পাড়ায় এক মহিলাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে দীর্ঘদিন প্রায় ৬/৭ বছর যাবত অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। নিয়মিত যাতায়াত করত ও স্বামী-স্ত্রীর মত বসবাস করত। মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ দিলে ও অন্যত্র মুনাফ বিয়ে করতেছে শুণে ঐ মহিলা মুনাফকে সুকৌশলে তার ঘরে ডেকে আনে। ঐ দিনই উক্ত এলাকার সমাজের নেতা ও গণ্যমান্য মানুষেরা রাতে গুজা মুনাফ কে ঐ নারীর সাথে অবৈধ মেলামেশার সময় ঐ মহিলার ঘর হতে হাতেনাতে ধরে কাজী ডেকে বিয়ে করিয়ে দেয়। পরবর্তীতে সেই নারীকে কাবিনের বকেয়া টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে আপোষ রফা করে শেষ হয় সেই সম্পর্ক।
আওয়ামী সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন মানুষের জায়গা দখল সহ টাকার বিনিময়ে সকল ধরনের অবৈধ ও বেআইনি কাজ করে দ্রুত কোটিপতি বনে যায় এই আলোচিত গুজা মুনাফ।