
12/06/2025
রোজনামচা -১
📅 ২ জুন ২০২৫ | রোজ সোমবার
☁️ গত কয়েকদিন ধরেই যেন আকাশ ভেঙে পড়ছে — অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে।
থামার নাম নেই। জানতাম বৃষ্টি হবে, কারণ আবহাওয়া অফিস ৫ তারিখ পর্যন্ত অত্যধিক বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল।
তবুও... দিনের পর দিন বৃষ্টির ধারা দেখে মনে হচ্ছিল, যেন প্রকৃতিও ভেতরে জমে থাকা কান্না ঝরিয়ে নিচ্ছে। 🌧️
এমন আবহাওয়ায় মনটাও কেমন গুমরে থাকে।
অনেকদিন হলো রোজনামচা লেখা হয় না —
আজ হঠাৎ যেন একটা টান অনুভব করলাম।
✍️ তাই ডায়েরি হাতে বসে পড়লাম।
কিন্তু হায়! ঠিক তখনই এক অভিভাবক এলেন একটা বিচার নিয়ে!
🧠 লেখার জন্য যেটুকু মানসিক প্রস্তুতি দরকার হয়,
যেটা আমরা বলি — "রিল্যাক্স মুড",
সেটা এক নিমিষেই উধাও হয়ে গেল!
যা লিখতে চেয়েছিলাম, তার কিছুই আর লিখতে পারলাম না।
মনে হলো, শব্দগুলো যেন মাথা থেকে সরে গিয়ে আকাশে মিশে গেলো।
ভাবলাম — বিচারটা আগে শেষ করি, পরে আবার কলম ধরা যাবে।
---
🩺 শরীরটাও খুব একটা ভালো যাচ্ছে না ইদানীং।
গত এক মাস ধরে একটা সমস্যা হচ্ছে —
দূর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি।
রাগান্বিত হয়ে গলা চড়ালে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়।
আর যদি কাউকে শাস্তি দিতে গিয়ে কিছুটা কঠোর হতে হয়,
তাহলে পরে গিয়ে শুয়ে পড়া ছাড়া উপায় থাকে না।
😔 এখনো শরীর সেই একই অবস্থায়।
তবুও জেদ করে বসে আছি — কারণ আজ লিখতেই হবে!
কলমে যেন জং ধরে গেছে এতদিনে...
তাকে ঝেড়ে-মুছে আবার সচল করতে হবে।
এটাও তো একটা আত্মশুদ্ধির কাজ।
---
🏫 এই মুহূর্তে আমি বসে আছি মাদরাসার ৫ম শ্রেণির ক্লাসরুমে।
বৃষ্টির কারণে আজ ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি খুবই কম —
১৩১ জনের মধ্যে এসেছে মাত্র ২৮ জন!
😞 এমন ফাঁকা ক্লাসরুমে মনটাও উদাস হয়ে পড়ে।
ছাত্রদের চেহারায়ও অদ্ভুত এক বিষণ্ণতা।
বন্ধুদের অনুপস্থিতিতে ওদের মন যেন একটু খারাপ।
এই সময়েই আরেকজন শিক্ষক চলে এলেন।
🧑🏫 আলহামদুলিল্লাহ — মনে একধরনের সান্ত্বনা পেলাম।
আমরা ৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে আজ মাত্র ২ জন উপস্থিত।
তবুও এই ক’জন ছাত্রকে নিয়ে মাদরাসায় কাজ চলবে ইনশাআল্লাহ।
ওদের বলেছি —
📘 “ক্লাসের পড়া শিখে নাও, তারপর পরীক্ষার প্রস্তুতি নাও।”
এখন সবাই চুপচাপ পড়ছে।
এই ফাঁকে আমি আমার কাজে মন দিচ্ছি।
---
🔖 সেই কাজটা কী?
আসলে গতকাল আমি ৫ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের বলেছিলাম —
রোজনামচা লিখে আনো।
📖 এটা শুধু লেখার অভ্যাস নয় —
এটা নিজের ভাবনা, অনুভূতি আর অভিজ্ঞতাকে প্রকাশ করার একটা উপায়।
তাদের কতটুকু আগ্রহ হয়েছে, তা আজই দেখে বোঝা যাবে।
যদি কেউ না লিখে থাকে বা কীভাবে লিখতে হয় না জানে,
তাহলে আমি ওদের শেখাবো —
💡 কীভাবে দিনলিপি লেখা যায়, কীভাবে নিজের অনুভূতিগুলো শব্দে প্রকাশ করা যায়।
তার আগে ভাবলাম —
আমি নিজেই একটা লিখে ফেলি, যেন ওরা একটা উদাহরণ পায়।
✍️ লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চাই ওদের মধ্যে।
এই অনুশীলন একদিন হয়তো ওদের জীবনের বড় শক্তি হয়ে দাঁড়াবে।
---
🕊️ বৃষ্টি যেমন প্রকৃতিকে ধুয়ে-মুছে নতুন করে গড়ে তোলে,
ঠিক তেমনই —
লেখালেখিও একজন মানুষকে ভেতর থেকে শুদ্ধ করে।
নিজেকে জানার, বোঝার, আর নতুন করে আবিষ্কারের এক শক্তিশালী মাধ্যম।
📌 ততক্ষণ সাথে থাকুন...
🫶 জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।