04/07/2025
ধরুন, আপনার থেকেও ১৫-১৬ কেজি কম ওজনের একজন আপনাকে বললো, ‘তুমি এত শুকনা কেন!’। আপনার তখন মুখে উত্তর চলে এসেছে যে, ‘তোমাকে তো দেখতে নরকঙ্কালের মতো লাগে’। কিন্তু সেই উত্তর আপনি গিলে নিয়েছেন, মুখে আর বলেননি। বরং সামান্য হেসে চুপ থেকেছেন।
ধরুন, আপনার চুল উশকো-খুশকো দেখে কেউ একজন খোঁচা দিয়ে বললো, ‘তোমাকে তো পাগলের মতো লাগছে!’। আপনার তখন মুখে চলে এসেছে যে, ‘নিজের চুলের দিকে দেখো, সেগুলো তো হাতে গোনা যায়’। কিন্তু সেই উত্তর আপনি গিলে নিয়েছেন, মুখে আর বলেননি। বরং প্রসঙ্গ পাল্টে গিয়েছেন।
ধরুন, আপনার অসাধারণ রান্না খেয়ে কেউ একজন হিংসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এটাসেটা ভুল ধরতে লাগলো, অথচ তার রান্না খাওয়ার যোগ্যই হয় না। আপনার তখন মুখে চলে এসেছে যে, ‘আপনার রান্না খেয়ে আমার অনেকবার বমি চলে আসার উপক্রম হয়েছে, আপনি কষ্ট পাবেন দেখে বলিনি’। কিন্তু এবারও আপনি কিছু না বলে চুপ করে থাকলেন, কারণ তিনি কষ্ট পাবেন।
ধরুন, কেউ একজন নতুন নতুন সম্পদশালী হয়ে আপনাকে খোঁচা দিয়ে কথা বলছে। আপনার তখন মুখে চলে এসেছে যে, ‘তোর তো টাকা থাকলেও ক্লাস নাই, যেটা আমার আছে, আর যেটা টাকায় কখনো কেনা যায় না’। কিন্তু এবারও আপনি চুপ থেকে এড়িয়ে গেলেন।
এই যে আপনি উত্তর দিতে চেয়েও অপরজন কষ্ট পাবে বলে এড়িয়ে গেলেন (তাও আবার এমন একজনের কথা ভেবে, যিনি কথা দিয়ে আপনাকে আঘাত করে চলেছেন), এটা মোটেও কোনো ছোট বিষয় নয়। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনার বিনয়ের পরীক্ষা। এবং অভিনন্দন, অজান্তেই আপনি পাস করে গেছেন!
সূরা আল-ক্বাসাসের ৫৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন, ‘আর তারা যখন অসার বাক্য শোনে তখন তা উপেক্ষা করে চলে এবং বলে, আমাদের আমল আমাদের জন্য এবং তোমাদের আমল তোমাদের জন্য; তোমাদের প্রতি সালাম। আমরা অজ্ঞদের সাথে জড়াতে চাই না।’
মানুষ কটু কথা বলুক। কেউ অভিযোগ বা অপবাদ দিলেই আপনি অপরাধী হয়ে যাবেন না। কেউ খোঁচা দিলেই আপনার কোনোকিছু কমে যাবে না। তাদের ‘সালাম’ বলে চলে আসুন। দুনিয়া ও আখিরাতের প্রশান্তিই তো আমাদের লক্ষ্য!