Labib Uddin Adil

Labib Uddin Adil Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Labib Uddin Adil, News & Media Website, Dhaka.

কে? আমি? আমি তো তুমি! তোমার ভেতরেই লুকিয়ে থাকা এক চমৎকার বিবেক সত্তা!
আমার কাঁধে উঠো। তোমাকে আজ তেপান্তর পেরিয়ে অ্যান্ড্রোমিডার শেষপ্রান্তে নিয়ে যাব যেখানে শব্দরা খেলা করে না– তুমি আজ নিজ মুখে স্বীকার করবে কী অন্যায় তুমি করেছ যেটা কেউ দেখেনি, কেউ জানে না?

07/06/2025

অধম, হীন, ক্ষীণ, তুচ্ছ, নিন্দিত, অপকৃষ্ট।
আর?
জঘন্য, মন্দ, নীচ।
কে?
আমি।
কেন?
রক্তাক্ত এই নিকৃষ্ট পাপীর হাত।

০৭/০৬/২০২৫
টানা দুইদিন রক্তে রঞ্জিত হয় যার হাত, সে কি অধম নয়?

06/06/2025

বসে থাকতে থাকতে হাজারো জীবন কেড়ে নেওয়ার নীরব সাক্ষী সেই পাপী দেওয়াল, যেখানে জমাট রক্ত আর পানের পিকে কালচে হয়ে যাওয়া খাড়া পৃষ্ঠে নিজের অজান্তেই ঢলে পড়তো আমার নিশ্চল নিস্তব্ধ নিথর দেহ। হয়তো কখনো আবেশ আমাকে টেনে নিয়েছে সাড়ে এগারো ইঞ্চি প্রস্থের সেই বিছানায়, যেখানে চিত হয়ে শোয়ারও জায়গা নেই। প্রতিটা ভোর আমাকে প্রস্তুত করতো নতুন রঙ্গের জন্য। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা সহ বেশকিছু বৈদেশিক নিরাপত্তা কমিশনের হস্তক্ষেপের কারণে কেউ আমার গায়ে হাত দিতে পারতো না, সরকার আমাকে বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে বাধ্য হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যেকটা দিন পুলিশ, ডিজিএফআই থেকে লোকজন আসতো জিজ্ঞাসাবাদ করতে। প্রথমদিকে মাইক্রোফোন এনে রেকর্ডার চালু করে ইনিয়েবিনিয়ে চেষ্টা করতো যেন অন্তত একবার হ্যাঁবোধক স্বীকারোক্তি দিই। কয়েকদিন এভাবে চলার পর তারা বুঝতে পারল অ্যাপ্রোচ বদলানো উচিত। এরপর থেকে তারা আমার সামনে কোনো ডিভাইস বের করতো না। এসেই আমার ক্যারিয়ার প্ল্যান, আমার চিন্তাধারা, আমার পরিবার ইত্যাদি নিয়ে আলাপ করতো আর ভাব জমানোর চেষ্টা চলতো দিনের পর দিন। কখনো সঙ্গে আনা হতো আমার পছন্দের খাবার যেটা আমি ছুঁয়েও দেখিনি কখনো। এরপর কোনো এক মুহূর্তের নীরবতা ভাঙিয়ে বন্ধুতার খাতিরে জিজ্ঞেস করা হতো, “বের হতে চাও তো? শুধু একবার স্বীকার করে নাও, কালই তোমাকে বের করে দেওয়া হবে।”

তারা হয়তো জানতো না, আদিলকে মেরে ফেলা সম্ভব কিন্তু মিথ্যা স্বীকারোক্তি আমার মুখ থেকে বের করা সম্ভব নয়। প্রতিদিন দেখতাম কয়েকজন করে নিয়ে যাচ্ছে ওরা। যাচ্ছে সুস্থ, অথচ রাতে ফেরানো হচ্ছে রক্তাক্ত অবস্থায়— ঠিকমতো দাঁড়াতেও পারতো না। পরদিন আবার নিয়ে যাওয়া হতো মেডিক্যালে। পুরোনো ক্ষত সেরে উঠার আগে কদিন পরপর আবারও ডাক পড়তো নতুন ক্ষতের জন্য। রাতে যখন ফিরতো, দেখতাম কারো জখম বেশি হয়েছে কি না, জখম বেশি হলে পরদিন মেডিক্যালে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যান্ডেজ-ড্রেসিং আমি করে দিতাম নিজ ইচ্ছায় যেভাবে পারি। এদের কাউকেই আমি চিনি না, কখনো আর দেখাও হবে না কারো সাথে কিন্তু তাও আমার মনে করুণা হতো ওদের জন্য; চোখে পানি টলমল করতো, ভেতর থেকে একটা রব ধ্বনিত হতো বারবার, “হে মাতৃকা, হে জন্মভূমি— তোমাকে আমি প্রচণ্ডরকম ঘৃণা করি।”

জেলার বার কাউন্সিল গোটা কিনে ফেলেছিলেন বাবা, আমাকে যে-কোনো মূল্যে উনি অক্ষত অবস্থায় মুক্ত করবেন। আদালতে যেদিন শুনানি, আমার পক্ষে অন্তত ৩০ জন উকিল দাঁড়িয়েছে ফাইল নিয়ে। আর সরকারি পক্ষে মাত্র একজন, উনিও মামার বন্ধু, তাই কোনো কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেন। মামা বিভাগীয় জজ হওয়ার সুবাদে আইন কবজায় নিতে আমাদের তেমন বেগ পেতে হয়নি। আবারও শিখলাম আমি, এদেশে নির্দোষ মানুষ কোনো দলের, নিয়মের বা বিষয়বস্তুর গঠনমূলক সমালোচনা করলে সরকার যেমন তাকে মিথ্যা অজুহাতে বন্দি করতে পারে ঠিক তেমনি কেউ বন্দি হলে তাকে মুক্ত করার জন্যেও আহামরি কিছু লাগে না, শুধু টাকা আর ক্ষমতা থাকলেই হয়। আমি শিখলাম, এদেশের আইন টাকা দিয়ে কেনা যায়।

মিথ্যার বেড়াজাল ভেঙে যেদিন মুক্ত হব, আসার সময় আমার জন্য পাঠানো সকল আসবাব ভাগ দিয়ে দিয়ে এসেছি। শুধু গায়ের জামা, একটা ছোটো ডায়েরি আর পরনের প্যান্ট নিয়ে আস্তেধীরে হেঁটে বেরিয়ে এলাম।
বাইরে অনেকেই অপেক্ষা করছিল, সবাই এসে এসে অভিনন্দন জানাচ্ছে। বাবাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম আমি। কিছুক্ষণ পর মেজো চাচ্চু এসে জিজ্ঞেস করলেন, তোর জুতো কই?
– দিয়ে এসেছি।
– কী! জুতোও দিয়ে আসতে হয়?
– আমার জুতোজোড়া ওখানে একজনের খুব পছন্দ হয়েছিল, তার নাকি স্যান্ডেল ছিঁড়ে গিয়েছে। তাই।

কিছুই আনিনি, কোমরের বেল্ট এমনকি আন্ডারওয়্যার অবধি দিয়ে এসেছি— কারো যদি ব্যান্ডেজ হিসেবে কাজে লাগানো যায়!
ঠিক এর পরদিন বিকেলে বাগানে হাঁটতে হাঁটতে বাবা নিজহাতে তুলেছিলেন এই ছবিটা।

স্বৈরশাসক এখন আর নেই। ২০২৪ এর আন্দোলনে গুলি করেও আমাকে শেষ করা যায়নি, বারবার উঠে দাঁড়িয়েছি আমি। কিন্তু আমি ভুলে যাইনি কে আমার পাশে ছিল, এটাও ভুলিনি কে পিছনে ছুরি মারতে চেয়েছে। সময় এগিয়েছে আপন গতিতে, এখন কিছু লোক খুব অনুতপ্ত, কেউ কেউ খুব সমীহ করে চলে আমাদের। যারা ভুল করেছে আমি সবাইকে ক্ষমা করে দিয়েছি বহু আগেই। পবিত্র শবে বরাত আর কদরের রাতে আমি কখনো নিজের জন্য কিছু চাই না। শুধু বিগত একটা বছরে আমাকে যারা কষ্ট দিয়েছে, ওদের জন্য দোয়া করি। এত কষ্ট দিয়েও তারা ক্ষমা পেয়েছে, এর চেয়ে সৌভাগ্য ওদের জন্য আর হয় না। মোটামুটি সবাই জানে আমি বেঁচে থাকলে একদিন ঠিকই অনেক যোগ্য হব। সেদিন আমি চাইলে এর প্রতিটা বিন্দুর প্রতিশোধ নিতে পারব। কিন্তু আমার সাথে যেই অন্যায় হয়েছে সেটা আমি ওদের সাথেও করতে চাই না। কিন্তু কিছু মানুষ ঠিকই ক্ষমার অযোগ্য থেকে যায়। এই মাতৃকার মতো, এদেশের আইনের মতো ওদেরকেও আমি এক আকাশ পরিমাণ ঘৃণা করি। প্রতিশোধ শুধু তাদের জন্যই। মানুষ কেউ পুরোপুরি বিশুদ্ধ হয় না। আমার মতো সংবেদনশীল কারো এক রাতের কান্নার সমান কষ্ট যদি ওদের কারো গোটা জীবন জুড়ে ভাগ করে দেওয়া হয়, তারার মতো খসে পড়বে ওদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য। ভালো যে বাসতে জানে, ঘৃণাও তার অধিকার। আমার স্পষ্ট মনে আছে সেই ইদের কথা। একটা রুমে আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল সেদিন। একটা পাইপ দিয়ে ছাদে জমা বৃষ্টির পানি গড়িয়ে পড়ছিল বাইরে। গ্রিলের ফাঁক দিয়ে হাত বাড়ালে পানির ধার ছোঁয়া যায়। খাবার জলের একটা প্লাস্টিকের মগ ছিল ওখানে। ওটা দিয়েই সেই ছাদ থেকে পড়া নষ্ট পানির ধার থেকে একটু একটু করে এনে আমি অজু করেছিলাম রুমের ভেতর সেদিন ইদের নামাজ পড়ার জন্য। এই স্মৃতি কী করে ভুলে যাই বলুন? আপনি মায়ের সন্তান, আমি কি কারো সন্তান নই? আমার কষ্ট হয় না?

লেখা:
একটি আধপোড়া চাঁদ
০৬/০৬/২০২৫
লাবিব উদ্দিন আদিল

31/05/2025

২০২১ সালের পহেলা জুন, ঠিক ৪ বছর আগের কথা। আমি অনূর্ধ্ব-২০ আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড ফরম্যাটে খেলতে গিয়েছি। হোটেলে আমার রুমমেট বন্ধুপ্রমিত বাংলাদেশের অন্যতম মেধাবী প্লেয়ার জনাব ‘ক’ (নামটা সংগত কারণে গোপন রাখছি)। ‘ক’ আমার ক্লাসমেট ছিল কিন্তু পড়াশোনা ছেড়ে পুরোপুরি দাবায় মনোনিবেশ করেছে। আমি এর ঠিক উলটোটা করেছিলাম। ইতোমধ্যে তার ঝুলিতে যুক্ত হয়েছে দু দুটি আন্তর্জাতিক নর্ম। ছেলেটা হিন্দু, মুক্তমনা এবং যথেষ্ট প্রতিবাদী। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের অযাচিত কর্মকাণ্ড এবং বণ্টন নিয়ে কথা বলায় তৎকালীন কমিটি তাকেও বহিষ্কার করেছিল, পরবর্তীতে সে চলে যায় ভারতে। যারা দাবার সাথে জড়িত আছেন তারা ইতোমধ্যে বুঝতে পেরেছেন আমি কার কথা বলছি।

একদিন রাতে আমি ম্যাচ শেষ করে দ্রুত হোটেলে ফিরলাম। সুইচ লীগ চতুর্থ রাউন্ডের খেলা ছিল সেদিন। আমার রুমমেট পয়েন্ট টেবিলে তখন ১ম স্থানে লিড করছে বাংলাদেশের হয়ে। আগেরদিন আমার ঘুম হয়নি, ঘুমানো দরকার। গোসল সেরে যেই বিছানায় গা এলিয়ে দিতে যাব অমনি দরজায় নক, “আদিল ভাই”।
“আসছো? দাঁড়াও।” দরজা খুলে দিলাম। দেখি তার জামাকাপড় এলোমেলো, গলার বো-টাই হাতের মুঠোয়।

– কী ব্যাপার, গেম শেষ? রেজাল্ট কী?
– আরে, আর বোলো না; আমি একটা আস্ত মাদারচোদ।
– কী? ব্লান্ডার করেছ?
– পুরাই!
– কার সাথে?
– এক নেপালি প্লেয়ার।
– ডেম!
এরপর তার হাত থেকে নোটেশন পেপারটা নিলাম। মুভ টু মুভ প্রত্যেকটা স্টকফিশে আপলোড করলাম বসে বসে। অ্যাকুরেসি ৮৯.৭%, খারাপ না। কিন্তু বেচারা শেষের দুটো চাল খেয়াল করেনি। ষষ্ঠ সারিতে পন সেক্রিফাইস করতে গিয়ে নিশ্চিত জেতা গেম স্টেলমেট করে চলে আসছে। স্বান্তনা দিয়ে বললাম, “আরে, সমস্যা নেই। হাফ পয়েন্ট তো পেয়েছই। এখনো যৌথভাবে দ্বিতীয় পজিশনে আছো তুমি।”

এরপর কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকলাম আমরা। নীরবতা ভেঙে সে বলল, অমুক তোমার লিস্টে এখনো আছে তাই না?
– হ্যাঁ।
– আমার ব্যাপারে কিছু বলেছে তোমাকে?
– সব জানি আমি।
– কই, কখনো তো বলোনি আমায়!
– বলে কী হবে? সে তোমার বিপক্ষে বলে, তুমি তার বিপক্ষে বলো। আমি কারোটাই কানে নিই না।
– হুঁ।

জনাব ‘ক’ তার প্রেমিকার কথা জিজ্ঞেস করছিল। সেও ভালো প্লেয়ার কিন্তু মুসলিম। এতদিন ধরে সব ঠিকঠাক যাচ্ছিল কিন্তু হঠাৎ মেয়েটা ধর্মের অযুহাতে তাকে ছেড়ে দিয়েছে। এখন মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয়ে ‘ক’ এমন কোনো নেশা নেই যা করে না।

– আচ্ছা আদিল ভাই, আমাকে একটা কথা বলো তো।
– হুঁ।
– হিন্দু-মুসলিম প্রেম করলে হিন্দুকেই কেন সবসময় ধর্মান্তরিত হতে হবে? মুসলিমকে কেন নয়?

কী বলব ভেবে পাচ্ছি না। অনেক্ষণ চুপ থেকে বললাম— যারা উদার, যারা ভালোবাসতে জানে উৎসর্গ শুধু তাদেরই অধিকার। মুসলিম তুলনামূলক স্বার্থপর সম্প্রদায়, তারা প্রেমের জন্য ধর্মকে উৎসর্গ করতে চায় না।

– তাহলে তো মুসলিমদের জন্য সত্যিকার ভালোবাসা আসেনি।
– শুধু মুসলিম কেন? কোনো ধর্মান্ধের জন্যই আসেনি।
– একটা কথা বলব?
– বলো।
– নাহ, বাদ দাও।
– আচ্ছা।
– নাহ, বলি।
– বলো।
– আমি মুসলিমদের অনেক ঘৃণা করি।
– আচ্ছা।
– তোমাকে করি না, অন্যদের করি।
– আমাকে করলেও আমি অবাক হব না। গত ৮ দিন ধরে আমার সাথে আছো অথচ আমার সামনে রুমের ভেতর সিগারেট ধরাতে দিইনি বলে নিশ্চয় ক্ষোভ জমে আছে আমার উপর?
– না, নেই। বরং আমি খুশি হয়েছি। খেলতে এসে পট করলে গেমে সমস্যা হতো আমার।
– আসলেই?
– হ্যাঁ, সত্যি নেই। আর তুমি ধর্মান্ধও নও, আমি জানি।
– কীভাবে জানো?
– তোমার কন্টেন্ট দেখে, লেখা পড়ে, তোমার সাথে চলে, তোমাকে অনুভব করে।
– বাহ!
– তুমি রাগ করোনি, তোমার ধর্মকে ঘৃণা করি বললাম তাই?
– না, করিনি।
– কেন?
– ধর্ম আর ধার্মিক এক না। আর আমি ফান্ডামেন্টালিস্ট নই। কাউকে ভালোবাসার অধিকার যার আছে, কাউকে ঘৃণা করার অধিকারও তার থাকা উচিত।
– আদিল ভাই, তুমি খুব সুশীল।
– কেন?
– তোমার সামনে মন খুলে কথা বলা যায়, তোমার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া যায়, তর্ক করা যায়, তোমার মতবাদ বা আইডিয়োলজি নিয়ে সমালোচনা করা যায়, তুমি বাধা দাও না— কখনো তোমাকে মন খারাপ করতেও দেখিনি।
– হুঁ।
– খেতে নামবে?
– হুঁ। তুমি গোসল সেরে আসো আগে।
– ঠিক আছে।
– আচ্ছা শুনো, তুমি কি গোরুর মাংস খাও?
– না, খাই না।
– গোরু বাদে বাকিসব তো খাও।
– তোমরা গোরু জবাই করো, এতেই আমার খারাপ লাগে।
– আমারও লাগে।
– তোমার লাগাটা স্বাভাবিক।
– সুশীল হওয়া এত সোজা না।
– যেমন?
– যে সভ্য, যে সুশীল সে বলিদান, হত্যা, যুদ্ধ, রক্ত সবকিছুর বিপক্ষে থাকবে। সেটা মানুষ হত্যা হোক অথবা কোনো জীবহত্যা।
– আমিও সেটাই মনে করি।
– তুমি মনেও করো, আবার তুমি পাঁঠাও বলি দাও পূজায়।
– দিই, কিন্তু খারাপ লাগে।
– প্রাণ কোনো ভগ্নাংশ নয়, জনাব। প্রাণের কোনো ক্লাসিফিকেশান হয় না। তুমি মানুষ হত্যা করলেও অপরাধী, একটা নিরীহ মাছি হত্যা করলেও সমান অপরাধী। যে কুরবানির আগে গোরুকে খাওয়ানোর ছবি আপলোড দেয়, একই ব্যক্তি আবার পরদিন গোরুর মাংসে ছুরি চালায়। সমাজ-সভ্যতা আজ তাদের পক্ষে, তারাই কথিত ধনাঢ্য সুশীল ব্যক্তি, আজ তারাই সমাজের ত্রাতা। একটা প্রাণীকে হাসতে হাসতে নিজহাতে জবাই করছে অথচ নিজের মধ্যে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই, উলটো দাঁত কেলিয়ে হাসছে— এর চেয়ে জঘন্যতা আর আছে না কি?

– তার মানে তুমি বলছো, যারা কুরবানি দেয় তারা কেউ ভালো মানুষ নয়?
– তারাই ভালো মানুষ। বরং আমরাই খারাপ। আমরা সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারি না। সহিংসতা আমাদের কষ্ট দেয়।
– তোমরা কুরবানি করো না?
– দুঃখজনকভাবে প্রতি বছরই করে আমার পরিবার। খুব ঘটা করেই করা হয়।
– তাহলে তুমিও তো ভালো নও।
– আমরা কেউ ভালো নই। সভ্য মানুষ কখনো পৃথিবী থেকে কাউকে সরিয়ে দেওয়ার পক্ষে নয়। স্পেশালি আমি সরিয়ে দিতে চাই না কাউকে। এই পৃথিবী আমার একার নয়, এটুকু বুঝার মতো বিবেক আমার থাকা উচিত। এতে মানুষ যেমন আছে, গোরুও থাকবে, পাঁঠাও থাকবে, ক্ষুদ্র যে আণুবীক্ষণিক জীব— সেও থাকবে।

স্মৃতিচারণ
৩১/০৫/২০২৫

30/05/2025

তো মশাই, আপনি কোথায় থাকেন যেন?
চানগাঁও থাকি, দাদা।
ওখানে ইলেক্ট্রিসিটির কী অবস্থা?
আরে, ও তো আমার ছোটো ছেলের মতোই। একদমই নাদুসনুদুস!
কীরকম?
যখন ইচ্ছা আসে, যখন ইচ্ছা যায়। কারো সাথে কোনো কথাবার্তা নেই, আপনমনে যাওয়া-আসা করে। রাগ করে কিছু বলাও যায় না, সেও যদি অভিমান করে অনেকদিন না আসে আবার!
ওহ, আচ্ছা, আপনার শখের জিনিস বলে কথা! আমি আবার খাগান মডেল টাউনে থাকি, আমাদের ইলেক্ট্রিসিটি খুব নম্র-ভদ্র; ঠেলে বের করে দিলেও যায় না।

দশ মিনিটের দূরত্বে খুব সুখে আছি।
চানগাঁওবাসীর জন্য সমবেদনা।

About a year ago.Please ignore the awful background, just like you so easily ignore your studies. ·_·
30/05/2025

About a year ago.

Please ignore the awful background, just like you so easily ignore your studies. ·_·

26/05/2025

গ্যাঞ্জাম ভালো লাগে না, এর আগে যাওয়া হতো না। প্রতি সপ্তায় এরকম ইভেন্ট চলতেই থাকে এখানে। সেদিন কী ভেবে যেন ফুডকোর্ট থেকে আসার সময় মনে হলো কাছে কোথাও জেমসের গান বাজছে, পরে AB4-এ না এসে ওই সাইডে গেলাম, ভালোই ছিল। ভিডিয়োগুলো আমার নিজহাতে করা।

‘A Wrinkle in Time’ বই ও সিনেমা নিয়ে—ম্যাডেলিন এলএঙ্গলের লেখা A Wrinkle in Time বইটি লাইব্রেরিতে বসেই ৩০ পৃষ্টার মতো পড়ল...
24/05/2025

‘A Wrinkle in Time’ বই ও সিনেমা নিয়ে—

ম্যাডেলিন এলএঙ্গলের লেখা A Wrinkle in Time বইটি লাইব্রেরিতে বসেই ৩০ পৃষ্টার মতো পড়লাম। ভালোই লাগছিল। কিছুক্ষণ পর বইয়ে দেওয়া বারকোড স্ক্যান করলাম। ওমা, ‘Let's read’ নামের একটা অ্যাপ ডাউনলোড হয়ে গেল। একটু ঘাঁটাঘাঁটি করতেই অ্যাপের ভেতর এই বইয়ের অডিয়ো ভার্সন পেয়ে গেলাম। তখন মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি আসলো, অডিয়ো যেহেতু পেয়েছি তাহলে এত সময় নিয়ে বই পড়ব কেন? অডিয়ো শুনেই কাজ হয়ে যাবে। প্রায় আধঘন্টার মতো অডিয়ো শোনার পর মনে হলো দৃশ্যগুলো ভিজ্যুয়াল হলে অনেক চমৎকার হবে। যাই, নেটে একবার সার্চ করে দেখি ডিজনি প্লাসের মুভি কোনোভাবে ফ্রিতে দেখা যায় কি না! অনেক আগে একসময় নেটফ্লিক্সের সাবস্ক্রিপশন কেনা ছিল আমার, এখন সেমিস্টারের চাপে ১০ মিনিট গান শোনারও সময় হয় না, সাবস্ক্রিপশন কিনে কী হবে?
নাহ, ফ্রিতে কোথাও পাচ্ছিলাম না প্রথমে। কিন্তু খুঁজতে খুঁজতে একটা জায়গায় গিয়ে হিন্দিতে ডাবিং করা একটা ভার্সন পেয়ে গেলাম। আমি আবার হিন্দি ভালো বুঝি না। বাংলা আর ইংরেজি আমার জন্য বেস্ট। তাও দৃশ্যগুলোর জন্য বই আর অডিয়ো ছেড়ে ৪ দিন পর আজ মুভিটাই দেখে শেষ করলাম। আগে বইয়ের মূল কাহিনিটা বলি।

মেগ মারি, তার ভাই চার্লস ওয়ালেস এবং বন্ধু ক্যালভিনের সঙ্গে সময় ও মহাকাশ পেরিয়ে বাবাকে খুঁজে বের করার এই কাহিনি কেবল একটি বিজ্ঞান কল্পকাহিনি নয় বরং এটি আত্ম-অন্বেষণ, সাহস এবং ভালোবাসার এক অনন্য গল্প। বইটির গভীরতা, চরিত্রগুলোর জটিলতা এবং দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি পাঠককে মুগ্ধ করে। বইটা আসলেই পড়ার মতো ছিল। ক্লাইমেক্সগুলো জোস। এবার মুভির কথা।

২০১৮ সালে এভা ডুভার্নে পরিচালিত সিনেমা সংস্করণটি এই কাহিনিকে ভিজ্যুয়াল রূপে উপস্থাপন করেছে। অপরা উইনফ্রে (আমি যখন ক্লাস সিক্সে বা সেভেনে, সঠিক মনে নেই— ঐ সময় বাড়িতে রেগুলার খবরের কাগজ আনা হতো। ওখানেই সম্ভবত আমি একটা নিউজ দেখেছিলাম এরকম ❝ধর্ষণের শিকার হওয়া ‘অপরা উইনফ্রে’ এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের একজন।❞ উনার সম্পর্কে শুধু এটুকুই মনে ছিল আমার। কিন্তু মুভি দেখতে গিয়ে বিস্তারিত আবার সার্চ করলাম নেটে। হ্যাঁ, ভদ্রমহিলা আসলেই তা ছিলেন, আমি ভুল নই। উনি একজন টকশো উপস্থাপিকা। টকশোর নামটাও উনার নামের সাথেই লাগানো, কিন্তু এখন ঠিক মনে পড়ছে না।) অভিনীত মিসেস হুইচ চরিত্রটি একাধারে মমতাময়ী ও প্রজ্ঞাবান, যা সিনেমায় একটি বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে। তবে সিনেমাটি বইয়ের গভীরতা এবং জটিলতা পুরোপুরি ধারণ করতে পারেনি। রটেন টমেটোজে ৪৩% স্কোর এবং মেটাক্রিটিকে ৫৩/১০০ স্কোর পাওয়া সিনেমাটি সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে।

আর্থিক দিক থেকে বিবেচনা করলে, সিনেমাটি নাকি $১০৩ মিলিয়ন বাজেটে তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বব্যাপী আয় করেছে মাত্র $১৩৩.২ মিলিয়ন, যা ডিস্ট্রিবিউশন ও মার্কেটিং খরচসহ মোট $২৫০ মিলিয়ন ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম। ফলে ডিজনির জন্য এটি একটি আর্থিক ক্ষতির প্রকল্প হয়ে দাঁড়ায়। আই মিন লস প্রজেক্ট! 🫥

সার্বিকভাবে বলতে গেলে বইটি একটি চিরন্তন ক্লাসিক, যা পাঠককে ভাবায় এবং অনুপ্রাণিত করে। সিনেমাটি ভিজ্যুয়াল দিক থেকে চমকপ্রদ হলেও, বইয়ের গভীরতা ও জটিলতা পুরোপুরি উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। যারা মূল গল্পের গভীরতা অনুভব করতে চান, তাদের জন্য বইটি রিকমেন্ড করা যায়। মুভি দেখে মজা পাবেন না খুব একটা। আমি সম্ভবত কমেন্টে মুভির free watch লিংকটাও দিয়ে রাখব, অডিয়ো বুকের বারকোডের ছবিও দিয়ে দিচ্ছি। একইসাথে মুভির সুন্দর একটা ভিজ্যুয়াল সিনের ভিডিয়ো দিয়ে দিচ্ছি। মেটা ফিল্টারিং প্রসেস আই হোপ এজন্য আমাকে রেস্ট্রিকশন দেবে না। দিলেও এক ঘণ্টার মধ্যে আপিল করে তুলে ফেলব! 😒

আম্মুর বয়স এখন ৫৫+ কিন্তু দেখে বুঝা যায়? আমরা জিনগতভাবেই এমন, বয়স বেশি হলেও দেখতে কমই লাগে। বিশেষকরে আমার মুখটা, শিট, এখ...
23/05/2025

আম্মুর বয়স এখন ৫৫+ কিন্তু দেখে বুঝা যায়? আমরা জিনগতভাবেই এমন, বয়স বেশি হলেও দেখতে কমই লাগে। বিশেষকরে আমার মুখটা, শিট, এখনো বাচ্চাদের মতো দেখতে! এজন্য বাধ্য হয়ে দাড়ি-গোঁফ রেখেছি অল্প। আমার সমবয়সী অনেকের কিন্তু বাচ্চাও আছে। সেদিন গ্রামে গেলাম, আমার প্রাইমারি স্কুলের এক ক্লাসমেটের সাথে দেখা হলো, লুঙ্গি পরে বাচ্চা কোলে নিয়েছে, দুটো সন্তানের জনক সে, যা বেশভূষা— পুরোদস্তুর বাচ্চার কারিগর!

ওহ, আমার মা আবার খুব ধার্মিক। ছবি-টবি তোলা উনার পছন্দ না। আম্মুর সাথে আমার এর আগে তেমন কোনো ছবিই ছিল না বলতে গেলে। সেদিন ফোনে বললেন, অনেকদিন ধরে নাকি বিচে যাওয়া হচ্ছে না, আমিও বাসায় নেই। শুনেই আমার কেমন যেন খারাপ লাগল। বিকেলেই এসেছি বরিশাল থেকে ঢাকায়, একটা কাজে গিয়েছিলাম, ভীষণ ক্লান্ত। এর উপর রুমে এসে দেখি যাচ্ছেতাই অবস্থা। সব ঠিকঠাক করে রাতেই আবার ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম। পরদিন ভোরে উঠে কক্সবাজারের টিকিট কেটে সোজা বাসায়। এরপর মন দিয়ে শুনলাম আম্মুর কী কী ইচ্ছে। উনি হজ করতে চান, বাবা তো করেছেনই কয়েকবার, উনি চান আমি ছেলে হিসেবে তাঁর সফরসঙ্গী হই, এতে উনি নিরাপদ বোধ করবেন। তো সেদিন রাতেই বাসায় বসে আম্মুর পাসপোর্টের জন্য অ্যাপ্লাই করলাম। পরদিন সকালে আম্মুকে নিয়ে গেলাম পাসপোর্ট অফিসে। ওখান থেকে কাজ সেরে সারাটা বিকেল ঘুরিয়েছি কক্সবাজারের এমাথা থেকে ওমাথায়। নতুন করে দেখার কিছু নেই, কিন্তু তাও আম্মুর চাপা উত্তেজনা আমি খেয়াল করছিলাম— এতদিন পর ছেলের সাথে ঘুরতে বের হয়েছে এ নিয়ে আম্মু মহা খুশি!

আই উইশ, আমি নিজেই আম্মুকে হজ করাতে নিয়ে যাচ্ছি কিছুদিনের মধ্যে। নিজের জীবনের তেমন কোনো নিশ্চয়তা আমার কাছে নেই, কিন্তু আমি চাই আমাকে আগলে রাখা প্রতিটা মানুষের আমাকে ঘিরে লালন করা সবটুকু শখ যেন পূর্ণতা পায়। সেটা আমার মায়েরও, আমার পানে করুণ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকা রাস্তার কোনো অনাথ শিশুরও।

ছবি তো নিজেই কথা বলছে, ক্যাপশন এখানে বাহুল্য!
21/05/2025

ছবি তো নিজেই কথা বলছে, ক্যাপশন এখানে বাহুল্য!

এটা নন-ফিকশনাল বই। লেখক আমার ফেভারিট একজন টিচার। মূলত লেখকের নিজের জীবনকাহিনী নিয়েই লেখা হয়েছে বইটি। সেখানে আছে রোমান্স,...
08/05/2025

এটা নন-ফিকশনাল বই। লেখক আমার ফেভারিট একজন টিচার। মূলত লেখকের নিজের জীবনকাহিনী নিয়েই লেখা হয়েছে বইটি। সেখানে আছে রোমান্স, আছে বিষাদের তিক্ততা, আছে উৎসর্গ করার প্রেরণা, আছে দায়বদ্ধতা, আছে প্রাপ্তি এবং সবকিছুকে পূর্ণতা দিতে যুক্ত হয়েছে বিসর্জনও। আজকাল বাজারে কুড়ি টাকার কাঁচামরিচ কিনতে গেলেও কজন লেখকের সাথে ধাক্কা লাগে তার কোনো হিসেব নেই। এখন ঘরে ঘরে লেখক, শহর-বন্দর ছেয়ে গেছে লেখকের ঝুঁটিওয়ালা টুপিতে, অথচ মানসম্মত লেখার অভাব এখনো আছে।

অপূর্ব স্যার একটা কথা বলেছিলেন, ❝সাধারণ লেখাগুলো চাইলেই লেখা যায়, আমি-আপনি যে-কেউ লিখতে পারি। এককথায়, সাধারণ সব লেখা সৃষ্টি করা সম্ভব কিন্তু সত্যিকার সাহিত্য যেটাকে বলে, সেটা সৃষ্টি করা যায় না। কালের বিভিন্ন বাঁকে একেকজনের হাতে সেগুলো জন্ম নেয়। সেই সাহিত্যকর্মের জন্ম দিতে গিয়ে লেখককে পুড়তে হয়, পুড়াতে হয়, ছড়াতে হয় তবেই না সেটা জাতসাহিত্য! এটা লেখা যায় না, এটাকে জন্মাতে হয়।❞

অনেকেই কয়েকজন লেখকের অর্থবিত্তের বহর দেখে মনের কোণে লেখক হওয়ার বাসনা লালন করেন। কিন্তু দুচারটে ছোটোগল্প বা কবিতা লিখতে জানলেই, ফেসবুকে সিরিয়াল ছাপতে পারলেই যে লেখক হওয়া যায় না; অথবা হাজারও তদবির করে বই একটা বের করা গেলেও যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কারো লেখক হিসেবে সুখ্যাতি অর্জিত না হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি— এই বই আপনাকে সেটা প্রতি পরতে পরতে বুঝাবে। একইসাথে লেখকের মতে লেখার মান আসলে কেমন হওয়া উচিত, কী ধরনের লেখা সাহিত্যে অমর হয়ে থাকে সেসব বিষয়ও খুব সুক্ষ্মভাবে তুলে ধরেছেন। আছে তরুণ লেখকদের জন্য কিছু উপদেশ আর আশ্বাসের বাণী।
একদিকে একজন লেখক খেয়ে না-খেয়ে সামান্য বেতনের চাকরি অথবা টিউশন করে বই ছাপার জন্য টাকা জমাচ্ছেন আর অন্যদিকে সবগুলো টাকা শেষমেশ বাটপাড়ের হাতেই চলে গেল— এমন নির্মম সত্য ঘটনার এক নিরেট সাক্ষীও এই 'লেখক'।

মানুষের জীবন আসলে থ্রিলার মুভি কিংবা নাটক উপন্যাসের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। প্রত্যেকটা মানুষের আলাদা কিছু স্বার্থ থাকে। সেই স্বার্থের পেছনে দৌড়াতে গিয়ে একজন মানুষ হাঁপিয়ে ওঠে, ক্লান্ত হয় কিন্তু স্বার্থের পাহাড় ডিঙানোর ইচ্ছে কখনো যায় না। সেই ইচ্ছে কখনো তীব্র হয়, আবার কখনো ক্ষীণ; তাড়া খেয়ে কখনো চাঙা হয়ে উঠে আবার কখনো মৌন—যেমন যখনি হোক স্বার্থের রেশ তার থেকেই যায়। নিজের ভাষায় বললে, কারো সাথে ভাব-প্রণয়ের সম্পর্ক যদি হয় মিষ্ট তবে স্বার্থের সম্পর্ক সুমিষ্টতর। কিন্তু আদর্শ লেখক হতে চাইলে যে এই সুমিষ্টতর জিনিস বিসর্জন দিতে হয়; অনেক আদর্শ লেখকের মনে প্রেম, মাথায় ছন্দ, হাতে কলম আর ঠোঁটে হাসি থাকলেও যে পেটে ভাত থাকে না; অন্তরের শ্মশানঘাটে হাজারও ইচ্ছে কবর দিয়ে শুধুমাত্র একঝলক আলোর প্রতিক্ষায়ও যে মানুষের জীবন দিব্যি কেটে যেতে পারে এই লেখকের জীবনকাহিনী সেটাই প্রমাণ করে।

শামসুল হকের মার্জিনে মন্তব্য যদি লেখার মানোন্নয়নের জন্য পাঠ্য হয় তবে এই ‘লেখক’ হবে লেখা শুরুর পর থেকে ছাপানো, এমনকি প্রচারণা অবধি এক নিরবচ্ছিন্ন গাইডলাইন।

কিছু বিষয়:
১. আমার হাইপোথ্যাটিক্যাল বইয়ের চেয়ে নন-ফিকশনাল বই ভালো লাগে, অনেক কিছু শেখা যায়। তাই এটা মোটামুটি ভালো লেগেছে।
২. হয় তাড়ায় নয়তো প্রুফ রিডারের অবহেলায়, ঠিক জানি না। তবে লেখার প্রতি মনোযোগের কমতি ছিল, যেটা চোখে পড়ার মতো। অনেক জায়গায় বানান ভুল আছে। আর আমি বানান ও ব্যাকরণ নিয়ে অতিরিক্ত স্পর্শকাতর, তাই বিষয়টা আমাকে ভালোই পীড়া দিয়েছে।
৩. শুরু থেকে দুটি ঘটনা ভিন্নভাবে পর্বে ভাগ হয়ে সামনে এগিয়েছে যা প্রথম দিকে ধরতে একটু কষ্ট হতে পারে বা সময় লাগতে পারে। বিষয়টা মাথায় রাখলে আশাকরি সমস্যা হবে না।
৪. যারা বইয়ের ওভার-প্রাইজিং নিয়ে অতিষ্ঠ তাদের আশাকরি এটা ভালো লাগবে। দামটা ন্যায্য আছে। প্রথমা প্রকাশনের বই বা সাদাত হোসাইনের বই যারা পড়েছেন তাদের অভিজ্ঞতা থাকার কথা প্রাইজিং সম্পর্কে। আনিসুল হক তো সেদিন ‘রক্তে আঁকা ভোর’ লিখে দাম হাঁকিয়েছেন ১০৭০ টাকা। তখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের এমন বই লিখবেন যেটা উনাকে গুলশানে দুই বিঘা জমির মালিক করে দেবে আরেফিন শুভর মতো! যায় হোক, টপিকের বাইরে না যাই আর।
৫. রেটিং দিতে আমার বিবেকে বাঁধে। নিজে লেখক না হয়ে (অথবা কখনো হলেও) অন্যের লেখা নিয়ে দাঁত খিঁচিয়ে সমালোচনা করা নিশ্চয় খুব একটা সুন্দর কাজ না। তবে জীবনে অসংখ্য বই পড়েছি, সেই হিসেবে তুলনামূলক ভালোই অভিজ্ঞতা আছে যার উপর ভিত্তি করে রেটিং দিতে হয়। কিন্তু আমি দিতে চাই না আসলে, ঐ যোগ্যতা খাটানোর দরকার নেই।
………………………………
বইয়ের নাম: লেখক
লেখকের নাম: আব্দুল্লাহ আল সুমন
প্রকাশকাল: একুশে বইমেলা ২০২১
প্রকাশনী: গ্রন্থকুটির
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯৬
মূল্য: ১৮০৳

Address

Dhaka

Website

https://www.facebook.com/labibuddinadil

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Labib Uddin Adil posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share