02/08/2025
আমি একটা মধ্যেবিত্ত পরিবারের মেয়ে আমারআব্বা কিন্তু আগে সিঙ্গাপুর থাকতো ,,তখন গ্রামের মধ্যে আমার আব্বাই একটু সচ্ছল সাবলম্বি তখন আমি খুব ছোটো,,,একটা সময় আমার আব্বার অনেক বড়ো একটা রোগ ধরা পরে ,,বাত জ্বর ,সরিরের পুরো রক্ত খারাপ ,,গিটা বাত বলে আর কি কোনো ভাড়ি কাজ করতে পারতো না ,,এজন্যে আব্বা বিদেশ থেকে চলে আসে দেশে অনেক চিকিৎসা করেছে ঢাকায় বড়ো বড়ো ডক্টর দেখাইছে বলছে এই রোগ ভালো হবেনা পুরো পুরি সারাজীবন ঔষধ খেতে হবে আব্বার পিছনে এ পর্যন্ত ২০/২৫ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়ে গেছে ,,,তারমধ্যে আপনারা জানেনই তো আমাদের নদীর পারে বাড়ি নদী ভাঙা এলাকা বাড়িটা ৪বার নদীতে ভাঙছে ,,,কখনো রুপ অর্থসম্পদ এগুলো নিয়ে বড়াই করতে হয়না কারন এর কোনোটাই কিন্তু চিরস্থায়ী নয়,মানুষের কখন কি হয় বলা যায় না ,যাইহোক আমার মা খুবি সংসারি একজন মানুষ আব্বা অসুস্থ হওয়ার পরে আমার মা-ই সংসারের হাল ধরেছে ,,,,আব্বা তেমন ভাড়ি কাজ করতেও পারেনা তেমন ,,সংসারে শাকসবজী বুনে ,,গরু ,ছাগল,কবুতর মুরগী সবি কিন্তু মা পালে ,,,যাইহোক আমরা তিন বোন আমাদের কোনো ভাই নাই ,আমি সবচেয়ে বড়ো পরিবারের ,,,,আব্বা মা চিন্তা করলো মেয়ে তো বড়ো হয়ে যাচ্ছে আরো দুইটা আছে ওদেরও তো বিয়ে দিতে হবে অনেক ভালো ফ্যামিলি থেকে বিয়ের কাজ আসতো আমার ,,,তখন আমার হাসবেন্ড এর সাথে সম্পর্ক ছিলো ,,,এদিকে হাসবেন্ড পড়াশোনা করে বেকার বাড়িতে ভাঙা চোড়া একটা ছাপড়া ঘর ছিলো রান্না করার মতো একটা রান্না ঘর ও ছিলোনা তাদের বাড়িতে তখন ,কিন্তু আমার দাদা শশুর এর চোক ভড়া সম্পদ ছিল অনেক যাইহোক আমাদের দুই ফ্যামিলি থেকেই একটা সময় আমাদের সম্পর্কের কথা জানতে পারে,,আমার আব্বা মা তো একটুও রাজি না ঐখানে বিয়ে দিবেই না কোনো মতেই না ,ছেলে তো বেকার বাড়িতে একটা থাকার ঘর নাই একঘরে সবাই থাকে ,,,এর থেকে কতো ভালো ভালো বিয়ের কাজ আসতো আমার তাই আমার আব্বা রাজি ছিলো না ,,এরপর আমি তো আমার হাসবেন্ড কে ছাড়া বিয়ে করবই না বলে দিলাম আমি গাছ তলাতেই থাকবো তবুও ওখানেই বিয়ে করবো ,,এদিকে আমার একটা খালা ছিল সোসাইড করে মা* রা গিয়েছে ,,,,এজন্যে পরিবারের সবাই ভয় ও পেতো যদি এখানে বিয়ে না দিলে কিছু একটা করি ,,,ঐ দিকে আমার হাসবেন্ড ওনেক ভালো স্টুডেন্ট ছিলো সে তো পড়াশোনা করবে একটা জব হবে এরপর বিয়ে করবে ,,কিন্তু এদিকে আমার পরিবার আমাকে বিয়ে দিয়ে দিবে অন্যে জায়গায় কোনোভাবেই মানছেনা ,আমি তখন সিদ্ধান্ত নিলাম আমি ম* রে যাবো ,,,এমন সময় আমার হাসবেন্ড ও বাড়িতে ঘর যাপ দিয়ে অনেক কান্না কাটি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে সেও মরে যাবে ,আমার শাশুড়ী প্ল্যান করে রাখছিলো ভাইয়ের মেয়ে দিয়ে ছেলে বিয়ে করাবে কিন্তু আমার হাসবেন্ড কিছুতেই তো আমাকে ছাড়া বিয়ে করবেনা,,এরপর যাইহোক অনেক কষ্টের পর দুই ফ্যামিলি থেকেই রাজি হলো আমাদের বিয়ে চাপ এ পড়ে ,,,,,,এদিকে আমাদের বিয়ের কথা শুনে আমার শাশুড়ীর সাথে বাপের বাড়ির সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় তাদের মেয়ে আনেনাই এজন্য ,,,,,,যাইহোক এখন বিয়ের পর থাকবো কই তাই বাড়িতে একটা টিনের ঘর দিলো,,একটা ঘর মাঝখানে একটা টিনের বেড়া দিয়ে দুই রুম বানিয়ে ছিলো ঐ ঘরেতেই আমরা থাকতামর,,,বিয়ের পর বেকার হাসবেন্ড আর আমি ঐ বাড়ির বউ আমাকে তো চাপে পরে মেনে নিয়েছিলো ,তখনকার কষ্টের কথা আর নাইবা বললাম,,প্রেম করে বিয়ে করেছি শশুর বাড়ির দুঃখের কথা কোনোদিন বাপ মা কে বলতে পারতামনা হাজার কষ্টে থাকলেও মা বাবা কে বলতাম ভালো আছি সুখে আছি ,কিন্তু তখন আমার ওপর দিয়ে কি গেছে আমি শুধু জানি আমার হাসবেন্ড এর চাকরির জন্য অনেক কান্না কাটি করতাম আল্লাহর কাছে ,,,আমার একটা মোবাইল ও ছিলোনা যে হাসবেন্ড এর সাথে একটু কথা বলবো একটা বাটন ফোন ছিলো তাও নষ্ট ছিলো হাসবেন্ড চাকরির খোঁজে কতো যায়গায় যেতো কথা বলতে পারতামনা,,,আমার হাসবেন্ড শুরু থেকেই আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে বাড়ি থাকতে তিন বেলাই আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিতো ,,যদি কোনো সময় না খেয়ে ঘুমিয়ে যেতাম তাহলে ভাত নিয়ে যেতো আমার রুম এ জোর করেই গুম থেকে তুলেই আমায় নিজের হাতে খাইয়ে দিতো অনেক ভালোবাসতো আমায় অনেক বেশি কেয়ার করতো ,,,,এগুলা কেও সহ্য করতে পারতোনা তখন থেকেই ভেবেছিলাম চাকরি হলে সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে ,ভালোবেসে বিয়ে করেছি সবাই কে মুখ ফুটে বলতাম শশুর বাড়িতে অনেক ভালো আছি কিন্তু কতো অত্যাচার আমি সহ্য করেছি আমি সে জানি বিয়ে হইছে ৮বছর আমি হাসবেন্ড কে সব মিলিয়ে কাছে পেয়েছি মাত্র এক বছর বিয়ের পর চাকরির জন্য দুরে থাকতো বেশির ভাগ সময় ,,,,এরপর চলেগেলো প্রবাসে বাবুকে পেটে রেখে তারপর থেকে কতো কষ্ট কতো সেক্রিফাইস করেছি জীবন এ ,,,,আরেকদিন নাহয় বাকি গল্প বলবো ,,,,,,,।🙂