13/10/2025
🪔দামোদর লীলা 🪔
~পর্ব – ১
🏵️যশোদা মায়ের দধিমন্থন লীলা🥰
শ্রীল সনাতন গোস্বামীর মতে, দামবন্ধন লীলাটি সংঘটিত হয়েছিল দীপাবলি উৎসবের দিনেই। তখন কৃষ্ণের বয়স ছিল ন্যূনাধিক তিন বছর চার মাস। শ্রীকৃষ্ণ তখন গোকুল মহাবনে ছিলেন।
শ্রীল বিশ্বনাথ চক্রবর্তীপাদ-এর মতে, শ্রীকৃষ্ণ গোকুলে ছিলেন তিন বছর চার মাস। তারপর নন্দবাবা বৃন্দাবনে, যমুনার পশ্চিম তীরে ছটিকরাতে চলে যান। সেখানে আরও তিন বছর চার মাস থাকার পর কাম্যবন এবং পরিশেষে নন্দগ্রামে অবস্থান করেন।
একদিন মাতা যশোদা চিন্তা করলেন—কৃষ্ণ কেন অন্যান্য গোপীদের দধি, নবনী ইত্যাদি চুরি করছে? নিশ্চয়ই তাঁর ঘরের তৈরি মাখন সুস্বাদু লাগছে না। হয়তো দাসীরা ভালোভাবে দধি মন্থন করছে না। এজন্য কৃষ্ণের মধ্যে ভয়ঙ্কর চৌর্যবৃত্তি দেখা দিয়েছে।
“আমি যদি সুস্বাদু ননী তৈরি করি,” ভাবলেন যশোদা, “তাহলে গোপাল আর অন্যের বাড়িতে ননী চুরি করতে যাবে না।”
এখানে ‘যশোদা’ নামটির অর্থ খুবই প্রাসঙ্গিক—যশোদা অর্থাৎ যিনি যশ দান করেন। মা যশোদাই কৃষ্ণকে ভক্তবশ্যতার যশ প্রদান করেছেন। তাই মহীয়সী যশোদা মাতা ঠিক করলেন, তিনি আজ নিজেই দধি মন্থন করবেন।
পিতা নন্দ মহারাজের নবলক্ষ গাভী ছিল। তার মধ্যে সাত-আটটি গাভী ছিল দুষ্প্রাপ্য পদ্মগান্ধিনী গাভী। তাদের বিশেষ প্রকারের ঔষধি ও সুগন্ধি তৃণ-গুল্মাদি খাওয়ানো হতো। যশোদা মাতা ভাবলেন, এই গাভীদের দুধ থেকে অত্যন্ত উন্নতমানের সুস্বাদু মাখন তৈরি করা যাবে।
কৃষ্ণ তখনও ঘুম থেকে ওঠেননি। তাঁর জেগে ওঠার আগেই দধি মন্থন করতে হবে। তাই মা যশোদা গৃহপরিচারিকাদের অন্যান্য কর্মে নিযুক্ত করে ব্রাহ্মমুহূর্তে দধি মন্থন করতে বসলেন। তিনি আপন মনে দধি মন্থন করার সময় ইতোমধ্যে সংঘটিত বিভিন্ন কৃষ্ণলীলা মৃদুস্বরে গাইতে লাগলেন।
শ্রীল প্রভুপাদ বলেছেন, যাঁরা চব্বিশ ঘণ্টা কৃষ্ণভাবনায় ভাবিত থাকতে চান, তাঁদের পক্ষে এই অভ্যাসটি আয়ত্ত করা আবশ্যক। কায়, মন ও বাক্য দ্বারাই সেবা করতে হয়।
শ্রীমন্মহাপ্রভুও তাই বলেছেন—
কি শয়নে, কি ভোজনে, কিবা জাগরণে,
অহর্নিশি চিন্ত কৃষ্ণ, বলহ বদনে।
(চৈ.ভা. ম. ২৮/২৮)
আমরা সকল কাজ করার সময় মনে মনে জপ করবো—
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।
~~হরেকৃষ্ণ 🙏