অ'নু'ভু'তি

অ'নু'ভু'তি একদিন, কেউ আসবে,
আমার কবিতার প্রেমে পড়বে।
সেই কবিতার ভালোবাসায় গড়াবে,
আর তাকে আমি আমার কলমের কালি করে রাখবো।
(2)

01/06/2025

বিষাদ বৃষ্টি
সাজিম হোসেন

সবকিছুই যেন থমকে আছে—শ্বাসরুদ্ধকর বৃষ্টিতে আমি ভিজছি, প্রিয়তমা রুহির সাথে।
প্রিয় মানুষের সাথে বৃষ্টিতে ভেজা তো আনন্দের হওয়ার কথা।
হওয়ার কথা ছিলো এক অপার্থিব সুখের মুহূর্ত।
কিন্তু আজ নয়।
কারণ আজ আমার রুহি, আমার হৃদয়ের রানী—নিশ্চল পড়ে আছে, নিথর।
সে আর বেঁচে নেই।

সাড়ে তিন ঘণ্টা হয়ে গেছে রুহি মৃত।
আমি এখনও তার নিঃশ্বাস খুঁজি, তার চোখের পলক পড়া দেখার চেষ্টা করি,
তবুও মেনে নিতে পারছি না—রুহি নেই।

বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা যেন আমার হৃদয়ের কান্না হয়ে ঝরে পড়ছে।
আকাশের গর্জন যেন আমার বুক ফাটিয়ে দেয়, বাতাস কাঁদছে আমার মতোই।
আমি তার মৃতদেহের পাশে বসে আছি।
তাকে ছেড়ে যেতে পারছি না।

কল্পনায় দেখি, রুহি হঠাৎ উঠে বলছে,
“এই যে, আরেকটু ভিজি, এই বৃষ্টি তো এমন সহজে আসে না!”
তার হাতে একটুকরো কামিনী ফুল, চুলের খোঁপায় গুঁজে দেয় আমার জন্য।
সে হাসে, পায়ের নূপুর বৃষ্টির শব্দের সাথে একাকার হয়ে যায়।
তার সেই গন্ধ, সেই হাসি—সব এখন শুধুই স্মৃতি।

আজ রুহির গায়ে সেই কামিনী ফুলের ঘ্রাণও অন্যরকম।
ভেজা ফুলের পানি তার মৃত শরীর ছুঁয়ে যাচ্ছে, আমি অবাক হয়ে ভাবি,
যদি এখনই রুহির কানে আমার কণ্ঠস্বর পৌঁছে যায়,
সে কি উঠে বসবে না?
আবার বৃষ্টিতে আমার হাত ধরে হাঁটবে না?

আমি জানি, এটা সম্ভব না।
তবুও ভাবতে ভালো লাগে।
কল্পনা বড়ই সহজ, বড়ই নির্মল।
বাস্তব বড় নিষ্ঠুর।

আমি এখনও কাউকে কিছু জানাইনি।
এই বাড়িতে আজ আমি আর রুহি।
বৃষ্টিতে কেউ আসতেও পারছে না।
চারদিকে অন্ধকার, কাঁপুনি ধরা হাওয়া,
আর আমার নিঃসঙ্গতা।

হঠাৎ দূর থেকে কে যেন ডাক দেয়, “আদর, আদর! কথা বলিস না কেন?”
আমি জবাব দিতে চাইলাম।
কিন্তু গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বের হয় না।
আমার কণ্ঠ আটকে গেছে কান্নার গভীরে।

বৃষ্টি থেমে গেছে।
হয়তো রুহির বৃষ্টিভেজা শেষ।
এবার সে ঘুমাতে চায়।
চিরনিদ্রায়।

আকাশের পানি ফুরিয়েছে,
কিন্তু আমার চোখের পানি যেন শেষ হচ্ছে না।
পাঁচটা বাজে, আজান হচ্ছে।
ঠিক তখনই মা বাড়ি ফিরে এলেন।

আমাকে রুহির লাশের পাশে বসে দেখে,
একটা কান্নার চিৎকারে ভেঙে পড়লেন তিনি।
প্রশ্ন করলেন বারবার—“কি হয়েছে আদর? রুহি কীভাবে? কেন?”

আমার কোনো উত্তর নেই।
শুধু চোখে পানি।
মায়ের কান্না দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না।

একসময় সবাই জেনে গেল—রুহি আর নেই।
বাড়ি কান্নার সুরে ভরে উঠলো।
মানুষ আসছে একে একে—প্রতিবেশী, বন্ধু, আত্মীয়।
রুহিকে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
কেউ টেনে নিয়ে যাচ্ছে আমাকে ঘরের ভেতর।

কিন্তু আমি রুহিকে ছেড়ে যেতে চাই না।
তবুও বাধ্য হচ্ছি।
রাহাত ভাই টেনে নিয়ে যাচ্ছে গোসলখানায়।
আমার শরীরে শক্তি নেই।
কথা বলার মতো ভাষা নেই।

ভাঙা মগ দিয়ে আমাকে গোসল করানো হচ্ছে।
এই মগটাই আমি একদিন রাগ করে ভেঙেছিলাম—রুহির উপর অভিমান করে।
আজ সেই মগ দিয়েই চলছে বিদায়ের গোসল।

সব ভুলগুলো, রাগ, অবহেলা
এখন কাঁটার মতো বিঁধে যাচ্ছে মনে।
না করলেই হতো।
তাকে একটু বেশি ভালোবাসলেই হতো।

সাদা পাঞ্জাবি পরেছি
রুহি আমার জন্মদিনে এটা উপহার দিয়েছিল।
আজ সেটা পরে তার জানাজার নামাজে দাঁড়াবো।
রুহি দেখলে কি খুশি হতো?
নাকি কাঁদতো?

জানি না,
তবে আমি শুধু অনুমান করে নিচ্ছি,
হয়তো সে চাইতো আমি শক্ত থাকি।
তবুও পারছি না।

আজ যে রুহিকে কেউ সহ্য করতে পারত না,
সেই মানুষটাও এসেছে তাকে দেখতে।
তার চোখেও পানি।
মানুষ কতো বদলায় মৃত্যু দেখে!

আর আমি এখনো দাঁড়িয়ে আছি…
চোখের জল আর বৃষ্টির ফোঁটার মাঝে পার্থক্য ভুলে গিয়ে।
রুহির পাশে, নিঃশব্দে।

সবাই জড়ো হলো জানাজার জন্য।
মসজিদের উঠানে সাদা কাফনের কাপড়ে মোড়া রুহিকে রাখা হলো।
তার সেই নিঃসাড় মুখ—যার দিকে তাকাতে পারি না, তবুও চোখ ফেরাতেও পারি না।

আমি দাঁড়িয়ে আছি ইমামের পেছনে, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে।
কারণ আমি জানি, এই নামাজই শেষ,
এই প্রার্থনার পর আর কোনো “রুহি” থাকবে না আমার জীবনে।

আল্লাহু আকবার…
ইমামের কণ্ঠে ধ্বনিত হলো সেই চিরচেনা ডাক,
কিন্তু আজ যেন তা ছুরির মতো বিদ্ধ করছে আমার বুক।
প্রতিটি তাকবীরের মাঝে শুধু রুহির মুখ ভেসে উঠছে—
তার হাসি, তার অভিমান, তার ছোট ছোট আবদার।

জানাজা শেষ হলে সবাই এগিয়ে এলো রুহিকে কাঁধে তুলে নিতে।
আমি কিছুতেই ছাড়তে চাইছিলাম না তাকে।
একবার ছুঁয়ে দিলাম তার কাফনের কাপড়—
একটুখানি স্পর্শ, একটুখানি বিদায়।

তারপর ধীরে ধীরে চলে গেল রুহি কবরের দিকে।
আমি পিছনে পিছনে হাঁটছি, পা যেন জমে যাচ্ছে কাদায়।
বৃষ্টি থেমে গেছে, কিন্তু মাটিতে এখনো রুক্ষতা নেই—
কারণ আজ প্রকৃতি নিজেই কাঁদছে রুহির জন্য।

কবরের পাশে দাঁড়িয়ে আমি অসংখ্য মানুষের মধ্যে সবচেয়ে একা।
কারও চোখে পানি, কারও মুখে শোক,
কিন্তু আমার মনে হচ্ছে, আমি আমার পৃথিবীটাই হারিয়ে ফেলেছি।

রুহিকে শোয়ানো হলো মাটির গভীরে।
তারপর একে একে পড়ে যেতে লাগলো মাটি।
প্রথম মুঠোটা আমি নিজে ফেললাম—
হাত কাঁপছে, কিন্তু মন কাঁপছে আরও বেশি।

একটু আগে যে মুখটা দেখছিলাম,
সেই মুখটাই এখন চিরতরে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।
একটা একটা মাটি ঢেকে দিচ্ছে আমার স্মৃতিকে, আমার ভালোবাসাকে।

সব শেষ।
মানুষজন ফিরে যাচ্ছে।
কেউ মাথায় গামছা বেঁধে, কেউ ছাতা মাথায় নিয়ে।

আমি দাঁড়িয়ে থাকি একা।
রুহির কবরের সামনে।
চোখে জল নেই, কারণ সব কেঁদে ফেলেছি আগেই।
শুধু বুকের গভীরে জমে আছে এক যন্ত্রণার পাহাড়।

মনে পড়ছে রুহির শেষ কথাটা—
“আদর, আমাকে কখনো ছেড়ে যাস না, কেমন?”
আমি বলেছিলাম, “তুই না থাকলে আমি তো থাকতেই পারবো না।”
কথাটা মিথ্যে ছিল না, কিন্তু ভাগ্য বুঝি কানে শোনে না।

রাত বাড়ে, বাতাসের ঠাণ্ডা হিম হয়ে কাঁপিয়ে তোলে আমাকে।
তারপর ধীরে ধীরে আমি হাঁটতে থাকি বাড়ির দিকে।
প্রতিটি পদক্ষেপে শুধু একটা কথাই ঘুরে ফিরে আসে—
রুহি আর নেই।
কিন্তু রুহির স্মৃতি, রুহির বৃষ্টি, রুহির গন্ধ—এই হৃদয়ে চিরজীবী।

সন্ধ্যায় আমি.........

চলবে........ অ'নু'ভু'তি

11/03/2025

"হারকিউলিস "৷ (একটা সিরিয়াল কিলারের গল্প)

সাজিম হোসেন

একটা সিরিয়াল কিলার সম্পর্কে লেখার চেস্টা করছি

রাত গভীর, চারপাশ নিস্তব্ধ। ঢাকার উপকণ্ঠে ফাঁকা এক রাস্তায়, আধো আলোয় দেখা যায়, একটা মৃতদেহ পড়ে আছে। শরীর ঠান্ডা, মুখে আতঙ্কের ছাপ। তার হাতে বাঁধা একটা কাগজ—

"আমি হারকিউলিস। ধর্ষকের এই পরিণতি।"

এটাই ছিল প্রথম হত্যাকাণ্ড।

1 No. থেকে আমরা শুরু করি

রাত সাড়ে তিনটা। শহরের অপরাধ দমন শাখার কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন ফোন পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালেন। রাস্তার পাশে মৃতদেহ পড়ে আছে। গুলির চিহ্ন, গলায় দড়ির দাগ।

"এই নামটা কোথায় যেন শুনেছি," ফিসফিস করে বললেন ইকবাল।

তিনি কাগজটা পড়লেন আবার। "আমি হারকিউলিস। ধর্ষকের এই পরিণতি।"

সঙ্গে থাকা কনস্টেবল জামিল বলল, "স্যার, এই লোকটার নামে মামলা ছিল। এক মেয়েকে ধর্ষণের পর খুন করেছিল, কিন্তু প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায়।"

ইকবালের চোখে সন্দেহের ছাপ। "এটা তাহলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড?"

তিনি জানতেন, এভাবে কেউ বিচার করতে থাকলে শহরে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়বে।

২নাম্বার আরো ভয়ংকর ছিলো

এরপর এক সপ্তাহের ব্যবধানে আরও দুটো লাশ পাওয়া গেল। একই পদ্ধতি, একই বার্তা।

"আমি হারকিউলিস। ধর্ষকের এই পরিণতি।"

সারা দেশে আলোড়ন পড়ে গেল। সামাজিক মাধ্যমে লোকজন দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেল। কেউ বলল, "যদি আদালত বিচার না করতে পারে, তাহলে হারকিউলিস যা করছে, সেটা ন্যায়বিচার!"

আবার অনেকে বলল, "আইন নিজের হাতে নেওয়া ঠিক না। যদি ভুল করে নিরপরাধ কাউকে হত্যা করা হয়?"

প্রশাসন প্রচণ্ড চাপে পড়ে গেল।

৩ তারপর আরেকটা

ইকবাল হোসেন ও তার টিম তদন্তে নামে। সিসিটিভি ফুটেজ, কল রেকর্ড, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎকার—সবকিছু খতিয়ে দেখেও কোনো কূলকিনারা পাওয়া গেল না।

হারকিউলিস ছিল ছায়ার মতো, অদৃশ্য এক ন্যায়বিচারক।

তারপর একদিন, হঠাৎ করেই হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়ে গেল।

সারা দেশের মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে গেল—সে কি ধরা পড়েছে? না কি সে নিজেই উধাও হয়ে গেছে?

৪ থ থামবে কি?

বছরখানেক পর, এক বৃষ্টিভেজা রাতে ইকবাল নিজের কক্ষে বসে পুরোনো নথিপত্র দেখছিলেন। হঠাৎ তার চোখে পড়ল একটা অদ্ভুত তথ্য—

প্রত্যেকটি হত্যা হয়েছিল এমন ব্যক্তিদের, যাদের মামলা ছিল, কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তারা ছাড়া পেয়ে গিয়েছিল।

আর প্রতিটি ঘটনার পর একটা বিষয় মিল ছিল—একজন অজ্ঞাত দাতা নিহতদের পরিবারের জন্য বড় অঙ্কের টাকার সহায়তা পাঠিয়েছে!

ইকবালের মনে প্রশ্ন জাগল—"এই মানুষটা কি সত্যিই অপরাধী ছিল? নাকি সে অন্যায়ের বিরুদ্ধে একক সংগ্রাম চালিয়ে গিয়েছিল?"

কিন্তু এর উত্তর হয়তো কেউই কখনো জানবে না।

শেষ, নাকি শুরু?

হারকিউলিস কি সত্যিই থেমে গেছে?

নাকি ন্যায়বিচারের ছায়া এখনও কোথাও লুকিয়ে আছে, নতুন কোনো শিকারের অপেক্ষায়?

১৪ বছরের ছোট্ট মেয়েটি, রোজিনা। স্বপ্ন দেখার বয়স, হাসি-খুশি থাকার সময়। অথচ তার জীবন যেন রূপ নিয়েছে এক দুঃস্বপ্নে। মামা-মা...
10/03/2025

১৪ বছরের ছোট্ট মেয়েটি, রোজিনা। স্বপ্ন দেখার বয়স, হাসি-খুশি থাকার সময়। অথচ তার জীবন যেন রূপ নিয়েছে এক দুঃস্বপ্নে। মামা-মামির ভয়ংকর পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে সে।

ধর্ষণের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার ওপর চালানো হয়েছে অকল্পনীয় বর্বরতা। তাকে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে, জোর করে খাওয়ানো হয়েছে সাবানের ফেনা। হাতের আঙুল ভেঙে দেওয়া হয়েছে, শরীরের ৮০ ভাগ অংশ জখম। পা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে, খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে তার দেহের মাংস তুলে ফেলা হয়েছে, ব্লেড দিয়ে কেটে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে শরীর। এমনকি তার পাঁজরের হাড়ও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

এটা কোনো সাধারণ নির্যাতন নয়, বরং অমানবিকতার চূড়ান্ত রূপ। এমন নৃশংসতা যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। প্রশ্ন জাগে—আমরা কেমন সমাজে বাস করছি? কেন বারবার এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে?

এই অপরাধীদের কঠোরতম শাস্তির আওতায় আনা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অমানবিকতা করতে সাহস না পায়। বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ না হলে, রোজিনার মতো আরও কত শত মেয়ে এমন নৃশংসতার শিকার হবে! সমাজের সবাইকে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে, আওয়াজ তুলতে হবে, যেন ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়, যেন নিষ্পাপ কোনো শিশুর ওপর এমন বর্বরতা আর না ঘটে।

10/03/2025

মেঘের আড়ালে - পর্ব ১১: শেষ দিনের সন্ধ্যা

তিন মাস পর...

রাইসা জানালার পর্দায় হালকা বাতাসের উড়ে আসা শব্দে উঠে আসে সুমনের চোখ। তার শরীর ক্লান্ত, অবসন্ন, আর ভিতরে একটা অসহ্য যন্ত্রণা। সেদিন থেকে তার অবস্থা ক্রমাগত খারাপ হতে শুরু করেছে। মা আজ বাসায় নেই, তবে রাইসা তাঁর পাশে ছিল, ঠিক যেমন তাকে প্রতিদিন প্রয়োজন। কিন্তু আজ, সুমন জানতো, আর বেশি সময় নেই।

রাইসা বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিল। বাতাসে পাতা ঝরে পড়ছিল, কিন্তু তার মন ছিল একেবারে সুমনের কাছে। সে জানতো, কিছু একটা অদ্ভুতভাবে হয়ে যাচ্ছে—সুমনের হাসিটা কেমন যেন মিছে, চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে, আর মাঝে মাঝে সে কথা বলার সময় এমনভাবে কাঁপতে থাকে, যেন সমস্ত শরীর একদম নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। রাইসা অনুভব করতে পারছিল, কিছু একটা গণ্ডগোল হচ্ছে। কিন্তু সে কিছু বলতো না, শুধুমাত্র নিজের হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে থাকত।

রাইসা যখন রান্না ঘরে রান্না করছিল, তখন সুমন চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিল। তার মাথায়, শরীরে একপ্রকার অস্বাভাবিক শূন্যতা অনুভব হচ্ছিল। সে জানতো, এটা এখন একদম শেষ দিন। সেই ক্ষণটি তার জীবনে আসতে আর কোনো দেরি ছিল না।

বিলাসী পোশাক, বিয়ের সজ্জা, সমস্ত কিছু সুমনকে আর টানছিল না। তবে, রাইসার কাছে তার জানানো অসম্ভব সিদ্ধান্তটা এক মুহূর্তের জন্যও সহজ ছিল না। রাইসা রান্নাঘর থেকে বের হয়ে সুমনের কাছে চলে আসে। সে শান্তভাবে বলেছিল, "তুমি কি আমাকে কিছু বলবে না, সুমন?"

সুমন নিজেকে যতটা সম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করে, বলল, "রাইসা, আমি ঠিক আছি। শুধু একটু ক্লান্ত লাগছে, কিছু নয়।" কিন্তু তার কণ্ঠের অস্ফুট শব্দে বুঝতে পারছিলো রাইসা, কিছু একটা আছেই।

"তুমি মিথ্যে বলছো," রাইসা বলল, চোখে তীব্র প্রশ্ন। "তুমি এখন আর আগের মতো হাসো না, হুটহাট চুপ হয়ে যাও, ফোন ধরো না... এসব কিসের লক্ষণ, সুমন?"

সুমন কিছুক্ষণ চুপ ছিল। তবুও, একসময় সে ধীরে ধীরে বলল, "রাইসা, আমি অসুস্থ। আর এটা এমন এক অসুখ... যা কখনো ভালো হবে না।"

রাইসার হৃদয়ে হঠাৎ এক ভারী শূন্যতা নেমে এল। তার গলা বন্ধ হয়ে আসে, তার চোখে জল। তার সামনের ব্যক্তিটি, যার জন্য সে নিজের জীবনের সব স্বপ্ন দেখেছিল, সে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এই সত্যি মেনে নেওয়া তার পক্ষে কঠিন ছিল, কিন্তু সে জানতো, সুমন একা সেটা গ্রহণ করতে পারে না।

"আমি চাই না তুমি কষ্ট পাও, রাইসা," সুমন বলল, চোখের কোণে অশ্রু জড়াতে জড়াতে। "আমি চাই না তুমি আমার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করো। তুমি চলে যাও, রাইসা।"

এ কথাটা বলার পর, রাইসা চলে যায়নি। সুমন অনুভব করল, তার হাতটি শক্ত করে ধরেছে। রাইসার চোখে জল ছিল, কিন্তু তার কণ্ঠে দৃঢ়তা ছিল। "সুমন, আমি তোমার ব্যথা ভাগ করে নিতে পারব না, কিন্তু আমি তোমার পাশে থাকব। যতদিন পারি, যতদিন তুমি থাকতে চাও... আমি থাকব।"

এই মুহূর্তে সুমনের মনে এক অসীম শান্তি বিরাজ করেছিল। তাকে কোনো সাহায্য, কোনো দুঃখবোধের প্রয়োজন ছিল না। তার পাশে রাইসা ছিল, আর এটিই তার কাছে সবচেয়ে বড় শান্তি ছিল।

রাইসার পরিবার, বিশেষত তার মা-বাবা, এই সিদ্ধান্তটি কখনোই মেনে নিতে পারছিল না। তারা চাইছিল, রাইসা একজন সফল ব্যক্তিকে বিয়ে করুক, যার জীবন রাইসাকে কিছু দিতে পারবে। কিন্তু রাইসার দৃঢ় মনোভাব ছিল—সে সুমনের পাশে দাঁড়াবে, যতদিন তার জীবন থাকবে।
রাইসার আজ বিয়ে
তবে সুমনের সাথে নই
বিশাল বিজনেস ম্যান ফাহিম চৌধুরীর সাথে।

এদিকে, সুমনের মা শামিমা, জানতেন না কীভাবে তার ছেলের পরিস্থিতি মোকাবিলা করবেন। তিনি জানতেন, সুমনের রোগের শেষ মুহূর্তটা আসন্ন, কিন্তু তিনি একেবারে অজানা ছিলেন—কিভাবে তাঁকে সান্ত্বনা দেবেন? কীভাবে তাকে এই ভীষণ যন্ত্রণার সময় একা ছেড়ে দেবেন?

বিয়ের সাজে রাইসা।
শেষ দেখা করতে এসেছে
হ্যা শেষ দেখা

সুমন চোখ বন্ধ করে জেগে আছে।
রাইসা আসছে জেনেও চোখ খুলেনি।
সুমন যতটা পারছিল, রাইসার হাতটা শক্ত করে ধরেছিল। সে জানতো, এক সময় তার জীবন শেষ হয়ে যাবে।
কিন্তু শুধু জানতো না রাইসার সাথে তার শেষ দেখা হতে চলেছে।
রাইসা তার না হয়েই চলে যাবে।

রাইসা যখন শেষবার তার হাতে সুমনের হাতটি ধরেছিল সুমন আগে থেকে বেশি অসুস্থ ফিল করছে
বুকের যন্ত্রণা তীব্র ধারন করেছে, রাইসা চিতকার করে কান্না করতে পারছে না
তখন তার চোখের কোণে অশ্রু জমে গিয়েছিল। সুমন ধীরে ধীরে বলেছিল, "রাইসা, আমাকে কখনো ভুলবে না। আমি চাই না তুমি কষ্ট পাও... শুধু আমার ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যাও।"
ডাক্তার এসেছে রোগীকে শেষবার চেক করে বাসায় চলে যাবে।
সুমনের জন্য যেন সবই শেষ বার।

রাইসার হাত সুমন শক্ত করে ধরেছে সুমন গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে চুপ হয়ে গেল। তার শরীরের সমস্ত শক্তি যেন এক মুহূর্তে নিঃশেষ হয়ে গেল।

হি ইজ নো মোর
বাক্যটা পৃথিবীর সবচেয়ে কস্টের বাক্য।

সুমন বেঁচে গেছে মরে গিয়ে
তাকে এত কস্ট পেতে হয়নি
এখন কস্ট পেতে হবে রাইসার।

সুমন মারা যাওয়ার পর, সুমনের পরিবারের সুকের ছায়া ঠিক একই সময়ে, রাইসার পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। দুটো গাড়ি, এক গেট থেকে বের হয়ে আসছিল—একটি ছিল বিয়ের গাড়ি, আর অন্যটি ছিল এম্বুলেন্স।

এই দৃশ্যের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন ছিল রাইসার দাঁড়িয়ে থাকা। তার চোখে ছিল এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে শূন্যতা, কিন্তু অন্তরে ছিল সুমনের কথা। একদিন, এই জীবন তাকে শোকেও দাঁড়িয়ে থাকতে শিখাবে, কিন্তু সুমনের ভালোবাসা কখনোই তার হৃদয় থেকে চলে যাবে না।

সে চোখ বন্ধ করে, এক সাদা ফুলের মতো শান্ত হয়ে গেল।

03/03/2025

একদিন রোজা রাখলে
জাহান্নাম থেকে ৭০ বছরের দূরত্ব তৈরি হয়
"আলহামদুলিল্লাহ"
সহীহ মুসলিম -- ১২৬৯

02/03/2025

রমজান মোবারক ❤️

28/02/2025

"বসন্ত বিলাস "
সাজিম হোসেন

ধূলিতে লেগেছে রঙ, পড়েছে লাজ,
এ যেন এক বসন্তের সাজ।
ফুলের গন্ধে মিশেছে সুবাস,
এ তো আমারই বসন্ত বিলাস।

ফুটছে গোলাপ, ফুটছে পলাশ,
হাসছে কৃষ্ণচূড়ার লাল আভাস।
শিমুলের শাখায় দোল খায় বাতাস,
মনের কোণে জাগে বসন্তের বিলাস।

এসেছে চৈত্র, এসেছে ফাল্গুন,
পাখির কূজনে মাতিছে গুঞ্জন।
রোদে ছড়ায় সোনালী আভা,
হৃদয় জুড়ে রঙিন ছোঁয়া।

পরেছে আকাশ নীলের বাসর,
কোকিলের সুরে জাগে নতুন স্বর।
মাটির গন্ধে বয়ে চলে প্রাণ,
বসন্ত এসে ছুঁয়েছে অবিরাম।

পুষ্প-তোরায় জুটেছে রঙ,
হলুদে মাখা আমের মুকুল।
নতুন পাতার সবুজ হাসি,
বিলাসী তোমায় ভালোবাসি

দিগন্তপথে একলা আমি,
নিয়েছি মিষ্টি সুবাস।
কেড়েছে মন, কেড়েছে প্রাণ,
এ আমার বসন্ত বিলাস।

অ'নু'ভু'তি

24/02/2025

"ন্যায়বিচারের ছুটি "

সাজিম হোসেন

রক্তমাখা রাজপথে ঝরে কান্নার ধ্বনি
ধর্ষিতার আর্তনাদে কাঁপে বুকের ভূমি।
কে শোনে তার আর্তচিৎকার, কে দেয় আশ্রয়?
ন্যায়বিচারের দ্বার যে আজ একেবারে বন্ধ হয়!

ছিনতাইয়ের চকচকে ছুরি, আঁধারে জ্বলে
নিরীহ পথিক হারায় প্রাণ, রক্ত গেলে ঝরে
কে বাঁচাবে? কে রুখবে? কেউ তো নেই পাশে
অন্যায়ের এ দহনে দেশ পুড়ে কয়লা আসে।

ডাকাতের হাসিতে জ্বলে ঘরহারা মানুষের চোখ
শাসকের রাজ্যে অবিচার, ন্যায়বিচারের শোক।
জুলুম আর অনাচারে বন্দি আজ মানবতা
কে দেবে শান্তির বারতা, কে গড়বে সুবিচারতা?

তবু কি চুপ থাকব? নাকি জ্বালাবো আলোর শিখা?
অন্যায়ের এ অন্ধকারে আনবো কি ন্যায়ের দীক্ষা?
জেগে ওঠো! রুখে দাঁড়াও! ভাঙো ভয়ের দেয়াল
বাংলাকে করো পবিত্র, করো সত্যের কুরবাল!

অ'নু'ভু'তি

মেঘের আড়ালে – পর্ব ১০তিন মাস পর....... সন্ধ্যার হালকা বাতাস জানালার পর্দা উড়িয়ে নিচ্ছিল। সুমন বিছানায় শুয়ে ছিল, চোখের পা...
20/02/2025

মেঘের আড়ালে – পর্ব ১০
তিন মাস পর.......
সন্ধ্যার হালকা বাতাস জানালার পর্দা উড়িয়ে নিচ্ছিল। সুমন বিছানায় শুয়ে ছিল
, চোখের পাতা ভারী হয়ে এসেছে, যেন শরীর আর মস্তিষ্কের মধ্যে কোনো সংযোগ নেই। ব্যথাটা আজ একটু বেশিই তীব্র।
মা আজ বাসায় নেই।
সুমনে যন্ত্রণা দেখছেন না।
পাশে টুলবক্সের উপর রাখা বেথ্যার ট্যাবলেট
খালি পেকেট অসংখ্য।
রাইসা বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে ছিল। মনটা বিক্ষিপ্ত। গত কয়েকদিন ধরে সে লক্ষ্য করছে, সুমন আগের মতো নেই। ওর হাসিটা কেমন যেন কৃত্রিম লাগে, চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে, মাঝে মাঝে কথা বলার সময়ও শরীর কাঁপতে থাকে।
রাইসার মনে সাই দিচ্ছে না।
সুমনের আসলে কি হয়ছে?
রাইসার মা রাইসাকে ডাকছে তেমন সুবিধার লোক নয়
ভীষণ স্বার্থপর।
রাইসা রান্নাটা বসা আমার শরীর ভালো লাগছে না।
আচ্ছা আম্মু! আমি রান্না বসায়।
রাইসা রান্না ঘরে গেল কি রান্না করবে?
মন ভালো না থাকলে রান্না ভালো হয় না।
রাইসার মনে শুধু সুমনের কথা সারা দিচ্ছে।
তাড়াহুড়ো করে রান্না শেষ করলো ।
সুমনের বাসায় যাবে সে।
সুমনের পছন্দের রং সাদা জামা পড়েছে।
সাদা শান্তির প্রতৃক।
হয়তো এই সাদা সুমনের চোখে প্রশান্তি দিব।
উহু উহু আসতে পারি।
হ্যা আসো।
— "তুমি কি আমাকে কিছু বলবে না, সুমন?" রাইসার কণ্ঠ নরম, কিন্তু দৃঢ়।
সুমন উঠে বসার চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। শরীরের ভেতর একটা অসহ্য যন্ত্রণা বয়ে যাচ্ছে, যেন প্রতিটা স্নায়ু ধীরে ধীরে ছিঁড়ে যাচ্ছে। তবুও সে হাসল, "আমি ঠিক আছি, রাইসা।"
— "তুমি মিথ্যে বলছো।" রাইসা এগিয়ে এল, তার চোখের গভীরে প্রশ্ন জমে আছে।
সুমন চোখ নামিয়ে নিল। সে জানে, রাইসা যদি জানতে পারে, তাহলে ওর জীবনটা পাল্টে যাবে। কিন্তু কতদিন এই সত্যিটা লুকিয়ে রাখা সম্ভব?
— "তোমার কি মনে হয়, আমি বুঝতে পারছি না?" রাইসার কণ্ঠে ব্যথা, অভিমান মিশে আছে। — "তুমি এখন আর আগের মতো হাসো না, হুটহাট চুপ হয়ে যাও, ফোন ধর না... এসব কিসের লক্ষণ, সুমন?"
সুমন চুপচাপ বসে রইল।
একটা সময় পরে সে ধীরে ধীরে বলল, "রাইসা, আমি অসুস্থ। আর এটা এমন এক অসুখ... যা কখনো ভালো হবে না।"
রাইসার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এল। সে কিছু বলল না, শুধু তাকিয়ে রইল সুমনের দিকে।
— "আমি চাই না তুমি কষ্ট পাও। আমি চাই না তুমি আমার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করো। তুমি চলে যাও, রাইসা।"
এই কথা বলার পরই সুমন অনুভব করল, রাইসা তার হাত শক্ত করে চেপে ধরেছে।
— "সুমন, আমি তোমার ব্যথা ভাগ করে নিতে পারব না, কিন্তু আমি তোমার পাশে থাকব। যতদিন পারি, যতদিন তুমি থাকতে চাও... আমি থাকব।"
সুমন তাকিয়ে দেখল, রাইসার চোখে জল।
তারপর সে ধীরে ধীরে হাসল। একটা সত্যিকারের হাসি, অনেকদিন পর।
সুমন রাইসার হাতটা শক্ত করে ধরল। এই মেয়েটা কেন এত জেদি? কেন ওকে ছেড়ে যেতে চায় না?

রাইসা আস্তে আস্তে বলল, "তুমি জানো, সুমন? আমি ছোটবেলায় একটা গল্প শুনেছিলাম। সেখানে একজন রাজকন্যা ছিল, যে একটা অভিশাপ নিয়ে জন্মেছিল। সবাই তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল, কিন্তু একজন ছিল যে তাকে ভালোবেসেছিল, শেষ পর্যন্ত।"

সুমন বিস্মিত চোখে তাকাল। "তারপর?"

— "তারপর? সে রাজকন্যাকে নিয়ে কোথাও পালিয়ে যায়নি, তাকে পালিয়ে যাওয়ার কথাও বলেনি। শুধু পাশে থেকেছে, যতদিন তার জীবন ছিল। আমি তেমনই থাকতে চাই, সুমন।"

সুমনের চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এল। এই মেয়েটা কি সত্যিই বোঝে ওর কষ্ট? সত্যিই জানে, ওকে কতটা যন্ত্রণা সইতে হয় প্রতিদিন?

হঠাৎ ব্যথার একটা তীব্র ঢেউ সুমনের শরীর কাঁপিয়ে দিল। সে শক্ত করে চোখ বন্ধ করল, যেন শরীরের প্রতিটা স্নায়ু পুড়ছে।

রাইসা আতঙ্কিত হয়ে সুমনের কাঁধে হাত রাখল। "সুমন! কী হয়েছে? আমি ডাক্তার ডাকবো?"

— "না... না, প্লিজ। এটা চলে যাবে। একটু সময় দাও..."

রাইসা কাঁদো কাঁদো গলায় বলল, "আমি কিছুই করতে পারছি না, সুমন! আমি চাই, কিন্তু পারছি না...!"

সুমন ম্লান হেসে বলল, "তুমি পাশে আছো, সেটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় ওষুধ।"

পরবর্তী দিন

সকালবেলা, কলেজের মাঠে বসে ছিল রাইসা। ক্লাস শুরুর সময় হয়ে গেছে, কিন্তু তার মন ক্লাসে নেই।

সুমনের এমন অবস্থা দেখে সে কেমন যেন অসহায় বোধ করছে। কিছু একটা করতে হবে, কিন্তু কী করবে?

— "কি ব্যাপার, ক্লাসে ঢুকছো না?"

রাইসার বান্ধবী মিলি...

কি হয়েছে তোর?

নারে তেমন কিছু না।
কিছু তো একটা হয়েছে

আমার জীবনে আসলো আসার কথা ছিলো
এসেছে অন্ধকার।

"মেঘের আড়ালে"

আমার জীবনে আসার কথা ছিলো আলো,
এসেছে অন্ধকার।
স্বপ্নগুলো একে একে ঝরে পড়ে,
শুধু রয়ে যায় কিছু অসমাপ্ত হার।

তুমি ছিলে আমার আকাশের নীল,
আমি ছিলাম তোমার মেঘের ছায়া,
তবু কেনো হারিয়ে গেলে দূর অজানায়?
কেনো ফেলে গেলে অতীতের স্মৃতির মায়া?

বৃষ্টিভেজা সেই বিকেলের গল্প,
আজো হৃদয়ে কড়া নাড়ে,
তুমি কি জানো?
আমি আজও অপেক্ষায়,
মেঘের আড়ালে ঢাকা একলা চাঁদ হয়ে...

চলবে........

অ'নু'ভু'তি

মেঘের আড়ালে – পর্ব ৯সাজিম হোসেনবিকেলটা আজ অন্যরকম সুন্দর। আকাশজুড়ে রঙিন সান্ধ্যকণা, হালকা বাতাস বইছে। কলেজের কাছের সেই প...
19/02/2025

মেঘের আড়ালে – পর্ব ৯
সাজিম হোসেন
বিকেলটা আজ অন্যরকম সুন্দর। আকাশজুড়ে রঙিন সান্ধ্যকণা, হালকা বাতাস বইছে। কলেজের কাছের সেই পুরোনো রাস্তা ধরে হাঁটছে সুমন আর রাইসা। পাশেই একটা ছোট পার্ক, যেখানে সূর্যের শেষ আলো লেগে চারপাশ সোনালি হয়ে উঠেছে।
"এমন বিকেল মনে হয় অনেক দিন পাইনি," রাইসা বলে উঠল, বাতাসে চুল উড়ছিল তার।
সুমন তার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল, "তোমার সঙ্গে সময় কাটালে সব বিকেলই সুন্দর লাগে।"
রাইসা একটু লজ্জা পেল, কিন্তু মুখে হাসি চাপিয়ে বলল, "তুমি কি সবসময় এত মিষ্টি কথা বলো, নাকি আজ বিশেষ কিছু?"
সুমন হাসল, "বিশেষ কিছু না, শুধু সত্যিটা বললাম।"
ওরা দু'জন ধীরে ধীরে হাঁটতে থাকল। রাস্তায় কিছু বাচ্চা খেলছে, আর একটু দূরে এক দম্পতি বেঞ্চে বসে গল্প করছে। চারপাশে একটা প্রশান্তি ছড়িয়ে আছে।
"তুমি কি কখনো ভেবেছো, আমাদের প্রথম দেখা হওয়ার দিনটার কথা?" সুমন জানতে চাইল।
রাইসা চোখ পিটপিট করে তাকাল, "হঠাৎ কেন?"
"কারণ আজকের বিকেলটা সেই দিনের মতো লাগছে," সুমন মৃদু স্বরে বলল।

রাইসা একটু থেমে গেল, তারপর হালকা হাসল। "তুমি সব মনে রেখেছো?"
সুমন মাথা ঝাঁকালো, "তুমি কি মনে করো, তোমাকে প্রথম দেখার দিনটা আমি ভুলতে পারব?"
তুমি আমার কাছে আমার বাড়ির এ্যাড্রেস জিজ্ঞেস করছিলে।

রাইসা চোখ সরিয়ে সুমনের দিকে তাকাল, "আর তুমি তখন থেকেই...?"
সুমন মৃদু হাসল, "হয়তো, তখনই আমার মন বলে দিয়েছিল, তুমি অন্যরকম।"
রাইসা এবার একটু হেসে বলল, "বড্ড সিনেমাটিক কথা বলো তুমি।"
সুমন কাঁধ ঝাঁকালো, "ভালোবাসা কি কখনো সিনেমার চেয়ে কম রঙিন হয়?"
রাইসা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, "তুমি কি জানো, আমি সেদিন ঠিক কী ভাবছিলাম?"
সুমন কৌতূহলী হয়ে বলল, "কি?"
"আমি ভাবছিলাম, পৃথিবীটা কতটা বিশাল, আর আমরা কত ছোট... কিন্তু এখন বুঝি, কিছু কিছু সম্পর্ক আমাদের বিশালতার চেয়েও বড় করে তোলে।"
সুমন রাইসার দিকে তাকিয়ে ছিল। তার চোখে এক ধরনের মুগ্ধতা।
বাতাস আরও একটু ঠান্ডা হয়ে এল। পার্কের ভেতরে থাকা বাচ্চারা ধীরে ধীরে বাড়ির পথে ফিরতে শুরু করল। সুমন আস্তে করে বলল, "চলো, একটু বসি।"
ওরা পার্কের একটা বেঞ্চে বসে পড়ল। সামনে একটা ল্যাম্পপোস্ট জ্বলছিল, তার হলুদ আলোয় রাইসার মুখটা যেন আরও উজ্জ্বল লাগছিল।
সুমন ধীরে বলল, "তুমি কি কখনো ভেবেছো, আমাদের গল্পটা কোথায় গিয়ে শেষ হবে?"
রাইসা একটু চুপ থেকে বলল, "গল্পের শেষ নিয়ে ভাবতে চাই না, সুমন। আমি শুধু চাই, গল্পটা সুন্দর হোক... দীর্ঘ হোক..."
সুমন রাইসার হাতের দিকে তাকিয়ে ছিল, কিন্তু ছুঁয়ে দেখার সাহস করল না। শুধু বলল, "তাহলে চলো, এই গল্পটাকে আরও সুন্দর করি।"
রাইসা মৃদু হাসল, বাতাসে তার হাসিটা যেন ছড়িয়ে পড়ল...
চলবে...
অ'নু'ভু'তি

মেঘের আড়ালে – পর্ব ৮সাজিম হোসেনসকালটা আজ বেশ ঠান্ডা। কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ, কিন্তু রোদের আভা আস্তে আস্তে ফুঁটে উঠছে। ক...
19/02/2025

মেঘের আড়ালে – পর্ব ৮
সাজিম হোসেন

সকালটা আজ বেশ ঠান্ডা। কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ, কিন্তু রোদের আভা আস্তে আস্তে ফুঁটে উঠছে। কলেজ শেষে ক্যান্টিনের এক কোণে বসে আছে সুমন। তার সামনে রাখা এক কাপ চা আর কিছু বিস্কুট। কিন্তু খাওয়ার ইচ্ছে নেই, মনটা অন্য কোথাও পড়ে আছে।

তখনই সামনে এসে বসলো রাইসা।

"চুপচাপ বসে আছো কেন?" সে জানতে চাইল।

সুমন হালকা হেসে বলল, "ভাবছিলাম, মাঝে মাঝে সম্পর্কগুলো অদ্ভুত না?"

রাইসা ভ্রু কুঁচকালো। "মানে?"

সুমন এক চুমুক চায়ে দিল, তারপর বলল, "কখনো কখনো আমরা কাছের মানুষদের ভুল বুঝি, কখনো বা তারা আমাদের ভুল বোঝে। কিন্তু দিনশেষে, ভালোবাসা যদি সত্যি হয়, তাহলে সব ভুল বোঝাবুঝিরও শেষ থাকে।"

রাইসা কিছু বলল না, শুধু চুপচাপ তার দিকে তাকিয়ে থাকল। তার চোখের গভীরে কিছু অনুভূতি খেলা করছিল, কিন্তু সে প্রকাশ করছিল না।

"তুমি কি কিছু খাবে?" সুমন জানতে চাইল।

রাইসা মাথা নাড়ল, "হ্যাঁ, একটু ক্ষুধা পেয়েছে।"

সুমন ক্যান্টিনের কাউন্টারে গিয়ে ভেজিটেবল রোল আর এক কাপ কফি নিয়ে এলো।

"চা না নিয়ে কফি আনলে?" রাইসা জিজ্ঞাসা করল।

সুমন মুচকি হাসল, "তোমার জন্য আনলাম। কফি না খেলে দুপুরের ঘুম চলে আসে, তাই না?"

রাইসা হালকা হাসল, "তুমি তাহলে লক্ষ্য করো আমাকে?"

"হুম, খুব বেশি," সুমন মৃদু স্বরে বলল।

রাইসা একটু চুপ থেকে কফির কাপ হাতে নিল। "সুমন, তুমি জানো... আমি কখনো এমন করে ভাবিনি যে, কেউ আমার ছোট ছোট ব্যাপারগুলো এভাবে খেয়াল করবে।"

সুমন চুপচাপ রইল, কিন্তু তার চোখের ভাষা বলে দিচ্ছিল—সে সবসময়ই খেয়াল করে।

কিছুক্ষণ নীরবতার পর রাইসা বলল, "চলো, আজ বিকেলে একটু হাঁটতে যাবো?"

সুমনের মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল। "তুমি ডাকলে কি না যাওয়া যায়?"

রাইসা হেসে মাথা ঝাঁকালো, "ঠিক আছে, তাহলে বিকেলে দেখা হবে।"

বিকেলের অপেক্ষা যেন দীর্ঘ হয়ে উঠল...

চলবে...

অ'নু'ভু'তি

Address

Dhaka Division

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when অ'নু'ভু'তি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share