
10/10/2025
আগে বৃহস্পতিবার-শুক্রবার আসলে খুব ভালো লাগতো, কিন্তু এখন শুক্রবারের দিনটা আসলেই সেইদিনের সবকিছু মনে পড়ে। এমন এক শুক্রবারেই বাবা চলে গিয়েছিলেন।
বাবা(শ্বশুর) আমাদের মাঝে নেই আর ৪দিন পর ২মাস হয়ে যাবে। দিনগুলো কিভাবে কিভাবে যেন চলে যাচ্ছে, এভাবে দেখতে দেখতে মাস ঘুরে বছরও হয়ে যাবে। কিন্তু বাবাকে আর দেখতে পাবো না কখনোই। কাছের কোনো একজন মানুষ চলে গেলে সবচেয়ে কষ্ট কখন হয় জানেন, তার রুমে ঢুকলে, রুমটার দিকে তাকালে, সবকিছুতেই কেমন যেন হাহাকার একটা ভাব।বাবার ব্যবহার করা সবকিছুই ঠিক যেমন ছিল তেমন ভাবেই রয়ে গেসে শুধু বাবাই নাই এখন।
বয়স হয়ে গিয়েছিল, তাই সেভাবে নিজের জিনিসপত্রগুলো গুছিয়ে রাখতে পারতো না বাবা, আমি নিজ হাতেই ২/৩দিন পর পর রুমের সব গুছিয়ে দিতাম। আবার এলোমেলো করে ফেলতেন। এখন না ওই রুমের কোনো কিছুই আর এলোমেলো হয় না, যেমন করে গুছিয়ে রাখি সেভাবেই থেকে যায় সবকিছু।
বাবা-মার রুমটা এমন যায়গায় ছিল যে কিচেনে যেতে গেলেই তাদের রুমটার সামনে দিয়ে যেতে হয়, প্রতিবার কিচেনে গেলেই তাকিয়ে দেখতাম বাবা চেয়ারে বসে আছে, কুরআন পড়ছেন নইলে শুয়ে আছে, নইলে জোরে সাউন্ড দিয়ে মোবাইল দেখছে। এখনো যাওয়া আসা করি কিন্তু রুম থেকে আর কোনো সাউন্ড আসে না, বাবার চেয়ারটা খালি পড়ে থাকে।
বাবা কোনো দিন আমার নাম ধরে ডাকে নাই, সবসময় মা বলেই ডাকতো। আমি যখন আব্বু আম্মুর বাসায় বেড়াতে যেতাম, কিছুদিন থাকার পর যেদিন ব্যাক করতাম বাসায় আব্বু বাবাকে ফোন দিয়ে দিতো বিয়াই ওরা রওনা দিয়েছে সাথে ব্যাগ আছে অনেক নিচে থেকেন- গাড়ি গলিতে ঢুকতেই দেখতাম বাবা গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে। কিছুদিন আগেও আব্বু আম্মুর বাসা থেকে বেড়িয়ে আসলাম কিন্তু বাবা আর গেটে দাড়ায় থাকে নাই। আর কখনো থাকবেও না।
বাবার কথা মনে করতে গেলে প্রতিবার ই চোখ ভিজে আসে।